hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

অনুবাদকের আরয
আলহামদু লিল্লাহ্। আল্লাহ্ রাব্বল আলামীনের দরবারে লাখো কোটি হামদ ও শোকর যিনি তার এই অধম বান্দাকে বহু কাঙিক্ষত একটি কাজ সম্পন্ন করার তৌফীক দিলেন। বর্তমান শতাব্দীর অন্যতম প্রখ্যাত আলিম, লেখক, চিন্তাবিদ ও খ্যাতনামা বুযুর্গ আল্লামা সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.) লিখিত ‘মা যা খাসিরাল আলামু বি-ইনহিতাতিল-মুসলিমীন’-এর উর্দু অনুবাদ ‘ইনসানী দুনিয়া পর মুসলমা কে উরূজ ও যাওয়াল কা আছর' নামক গ্রন্থের বাংলা তরজমা মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?' পাঠকের হাতে তুলে দিতে পারা এক বিরল সৌভাগ্য বলেই মনে করি। এজন্য আমি পরম করুণাময়ের দরবারে যতই শুকরিয়া আদায় করি না কেন তা নেহাৎ অকিঞ্চিতকরই হবে।

মূল আরবী বইটি আরব বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি পুস্তক। এ পর্যন্ত অনুমোদিত ও অননুমোদিত মিলিয়ে সত্তরোর্ধ সংস্করণ কেবল আরব বিশ্বেই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় এর অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে এবং সবগুলোর একাধিক সংস্করণও বেরিয়েছে। বইটি সম্পর্কে এতটুকু বলাই যথেষ্ট যে, কেবল আরব বিশ্বের নন বরং মুসলিম বিশ্বের খ্যাতিমান লেখক ও সাহিত্যিক, ইসলামের অমর শহীদ মিসরের সাইয়েদ কুতুব (র.) এর ভূমিকা লিখেছেন। এমন একটি বই-এর তরজমা করার সৌভাগ্য জুটবে এমনটি ভাবতে পারাও অধমের পক্ষে কল্পনাতীত ছিল। অথচ সেই কল্পনাই আজ বাস্তবে রূপ। নেয়ায় মনটি আমার আনন্দে আপুত,- পরম প্রশান্তিতে মন-মস্তিষ্ক ভরপুর। কী 'ভাবে ও কোন ভাষায় আমি এর শুকরিয়া আদায় করতে পারি?

বইটির অনেক আগেই তরজমা হবার কথা ছিল। পরিচিত ও শুভাকাক্ষী মহল থেকে অধমের বরাবর অনেক বারই এজন্য তাকীদ এসেছিল। আমিও চাচ্ছিলাম আমার পরম শ্রদ্ধেয় শায়খ-এর এ বইটি, যে বইটি তাকে আরব বিশ্বে ব্যাপক খ্যাতি ও পরিচিতি দিয়েছে, তা বাংলা ভাষায় অনুদিত ও প্রকাশিত হোক। এসময় আমার পরম সুহৃদ বন্ধুবর হাফেজ মাওলানা আবু তাহের মেছবাহ এবইটির তরজমার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর আগে তিনি আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী (র.)-র ‘আরকানে আরবাআ তরজমা করে এক্ষেত্রে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণ করেন। তদুপরি ‘প্রাচ্যের উপহার' নামক পুস্তকের অন্তর্গত বাংলার উপহার’ ও ‘পাকিস্তানী ভাইদের উদ্দেশে’ নামক দু’টি অংশের অনুবাদের ক্ষেত্রেও তিনি অত্যন্ত সাফল্যের পরিচয় দেন। কাজেই তার আগ্রহের কারণে আমি এর থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হই। তদুপরি সে সময় আমি নবীয়ে রহমত' নামক মুহতারাম শায়খ (র.)-এর আরেকটি বই তরজমা করতে থাকায় এ বিষয়ে আর তেমন আগ্রহ দেখাইনি। তবে বরকত লাভের জন্য বই-এর প্রথম দুটো অধ্যায় তরজমার ব্যাপারে আমার আগ্রহের কথা তাকে কয়েকবার জানাই। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ বইটিই এককভাবে তরজমার আগ্রহ ব্যক্ত করায় আমি এর থেকে পুনরায় বিরত হই। কিন্তু তারপরও যখনই দেখা হয়েছে তিনি কাজ শুরু করেছেন কিনা কিংবা কাজ কতটুকু এগোল সে সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করেছি এবং এজন্য প্রয়োজনীয় তাকীদ দিয়েছি। কিন্তু এরপরও আকাঙিক্ষত অগ্রগতি না হওয়ায় আমি কি করব, আমাকে কী করা উচিত সে সম্পর্কে ভাবছিলাম। প্রধানত নিজের হাতে গড়া মাদরাসাতুল মদীনা' নিয়ে অত্যধিক ব্যস্ত সময় কাটাতে হওয়ায়, তদুপরি অতি জরুরী কিছু কাজ হাতে থাকায় এবং এসব কাজ করতে গিয়ে কোন কোন সময় অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি একাজের জন্য প্রয়োজনীয় অখণ্ড মনোযোগ দিতে পারছিলেন না। অথচ এ বই-এর প্রতি সুতীব্র আকর্ষণের দরুন এর ওপর তার দাবি হাত ছাড়া করতেও তিনি রাজী হতে পারছিলেন না। এ রকম টানা পোড়েন অবস্থার মাঝে আরও কিছুদিন কেটে যায়।

ইতিমধ্যে নবীয়ে রহমত' প্রকাশিত হয়েছে। আমার হাতে তখন কোন কাজ নেই। আমি আবারও তাকীদ দিলাম। কিন্তু লাভ হলো না। অথচ আমি এর বেশি কিছু করতেও পারছিলাম না। না পারার পেছনে কারণ ছিল হযরত নদভী (র.)-র প্রতি তার অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালবাসা, তার প্রতি আমার ব্যক্তিগত আকর্ষণ, সর্বোপরি জনাব হাফেজ মাওলানা আবু তাহের মেছবাহ আমার একমাত্র পুত্রের অত্যন্ত শফীক উস্তাদ।

মুহতারাম শায়খ (র.)-এর বরকতময় সান্নিধ্যে রমযান কাটাবার জন্য ১৯৯৮ সালে আমি ভারতের রায়বেরেলীতে যাই। ১লা শাওয়াল। ঈদুল ফিতরের বিকেল। মুহতারাম শায়খ (র.)-কে ঘিরে আমরা বাংলাদেশী কাফেলার লোকেরা বসেছি। এ কাফেলায় আছেন মাওলানা আবদুর রাযযাক নদভী, মাওলানা যুলফিকার আলী নদভী, মাওলানা ওবায়দুল কাদের নদভীসহ আরও কয়েকজন। যাদের নাম এই মূহূর্তে মনে পড়ছে না। হয়রত শায়খ (র.)-এর সঙ্গে আমরা কথা বলছি। এ সময় তিনি আমাকে লক্ষ্য করে এ পর্যন্ত কি কি বই বাংলায় তরজমা হয়েছে জানতে চাইলেন। এক পর্যায়ে তিনি মা যা খাসিরাল আলামু বি-ইনহিতাতি'ল- মুসলিমীন’ তরজমা হয়েছে কিনা জানতে চান। আমি মাথা নিচু করে মাওলানা আবদুর রাযযাকের দিকে চাইলাম, কি জবাব দেব এই আশায়।

তিনি গোটা ব্যাপারটা জানতেন। ইঙ্গিতে আমাকে তরজমার ব্যাপারে রাজী হবার জন্য বললেন। তার এই ইঙ্গিতের প্রেক্ষিতে আমি কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে দো'আ করার জন্য দরখাস্ত করলাম যাতে সফর থেকে দেশে ফিরে গিয়ে এর কাজ শুরু করতে পারি। এরপর হযরত বহুত আহম কিতাব, বহুত মুফীদ কিতাব, ইসকা তরজমা হোনা চাহিয়ে' বহুত বড়া খুলা হায় (খুবই গুরুত্বপূর্ণ বই, উপকারী বই, এর তরজমা হওয়া দরকার, বিরাট শূন্যতা রয়েছে) ইত্যাদি বলে আমাকে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করলেন। এরপর এ সম্পর্কে আরও কিছু দিক-নিদের্শনাও দিলেন। আর সেই উৎসাহ ও দিক-নির্দেশনা অবশেষে আমাকে এই দুরূহ কাজে হাত দিতে কেবল অনুপ্রাণিতই করেনি-এর সমাপ্তিতেও প্রেরণা জুগিয়েছে।

বই-এর মূল লেখকের ভূমিকা তরজমা করেছেন স্নেহভাজন মাওলানা আবদুর রাযযাক নদভী এবং সাইয়েদ কুতুব শহীদ (র.) লিখিত পুস্তক পরিচিতি সম্পর্কিত অংশটুকু তরজমা করেছেন আরেক স্নেহভাজন মাওলানা ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভী। দীনি ভাই ছাড়াও তারা আমার পীর-ভাইও বটেন। শায়খ (র.)-এর প্রতি পরম শ্রদ্ধা এবং অধমের প্রতি ভালবাসার তাকীদেই তারা এ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আল্লাহই এর জাযা দেবেন। সম্পাদনার দুরূহ দায়িত্বই কেবল নয়, উর্দু ও ফার্সী কবিতাংশের বাংলা তরজমা করে অধমকে চিরকৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন পরম শ্রদ্ধাভাজন বিশিষ্ট লেখক, অনুবাদক ও গবেষক মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী। এতে প্রশংসার কিছু থাকলে তা সম্পূর্ণটাই তাঁর আর ত্রুটি-বিচ্যুতির দায়-দায়িত্ব আমি আমার ঘাড়ে তুলে নিচ্ছি। এরপর পরবর্তী সংস্করণে আল্লাহ্ পাক যদি সেই কাফফারা আদায়ের সুযোগ দেন তবে সেটা হবে তারই অপার মেহেরবানী।

পরিশেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে আমার এককালীন সহকর্মী পরম শ্রদ্ধেয় ভাই আজিজুল ইসলামকেও আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি যিনি একটি প্রুফ দেখার পাশাপাশি বেশ কিছু ভাষাগত ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন করে দিয়েছেন। প্রকাশনার দায়িত্ব নেয়ায় মুহাম্মদ ব্রাদার্সের স্বত্ত্বাধিকারী বন্ধুবর মুহাম্মদ আবদুর রউফ ভাইয়ের কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ রইলাম। এছাড়া মুদ্রণের ব্যাপারে দৌড়াদৌড়ির জন্য স্নেহধন্য জাকিরকেও আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। তরজমার ব্যাপারে তাকীদ দিয়ে এবং অগ্রগতির ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ-খবর নিয়ে আমাকে অনুগৃহীত করেছেন বন্ধুবর মাওলানা ইসহাক ওবায়দী, মাওলানা সালমান, মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী প্রমুখ। অধিকন্ত আমার জীবন-সঙ্গিনী বেগম জেবুন্নেছাসহ আমার ছেলেমেয়েদের সকলের প্রতি একাজে বিশেষ করে নির্ঘন্ট তৈরির কাজে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা ও দোআ জানিয়ে এখানেই শেষ করছি।

মুহতারাম শায়খ আল্লামা নদভী (র.)-র যেই অপরিমেয় স্নেহ ও ভালবাসা লাভের সৌভাগ্য জুটেছে তা অধমের জীবনকে ধন্য ও গৌরবান্বিত করেছে। আমার আর কিছু চাইবার নেই। তবু এ মুহূর্তে কেবল একটি কথাই মনে হচ্ছে, যদি মুহতারাম শায়খ (র.)-এর জীবদ্দশায় তাঁর হাতে অনূদিত এ বইটি তুলে দিতে পারতাম। মেহেরবান মালিক! তুমি আমার মুহতারাম শায়খ আল্লামা নদভী (র.)-কে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব কর এবং আমাদেরকেও তাঁর নিবিড় সান্নিধ্যে একটুখানি স্থান দিও। হে আল্লাহ! এ দোআ ও মুনাজাত তুমি কবুল কর।

আল্লাহ রাব্বল আলামীনের রেযামী ও রসূল আকরাম (ﷺ) -এর শাফাআত লাভ, অতঃপর মুহতারাম শায়খ (র.)-এর দোআ প্রাপ্তি এবং বাংলার মুসলিম তরুণদের সুপ্ত দায়িত্বানুভূতি জাগিয়ে তোলার সুতীব্র তাকীদ থেকেই একাজে হাত দিয়েছিলাম। এক্ষণে উল্লিখিত লক্ষ্য হাসিলে অধমের এ প্রয়াস যদি বিন্দুমাত্রও সফলতা লাভ করে এবং মুসলিম তরুণদের হৃদয়ে সামান্যতম দায়িত্ব। অনুভূতিও সৃষ্টি হয় তাহলে আমাদের এ শ্রম সার্থক হবে। আল্লাহ্ রাব্দুল আলামীন আমাদের সকলের শ্রমকে তার অপার মেহেরবানীতে কবুল করুন। আমীন!

৯ সফর, ১৪২৩ হিজরী

১০ বৈশাখ, ১৪০৯ বাং

আহকার আবু সাঈদ মুহাম্মদ ওমর আলী

রহমতপুর, ঢাকা

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন