hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

৮৩
জিহাদ ও ইজতিহাদের অভাব
আসল কথা হলো এই, ইসলামের ইমামত তথা নেতৃত্বের বিষয়টি বড়ই নাযুক ও স্পর্শকতার এবং তা ব্যাপক ও বিস্তৃত গুণাবলি দাবি করে। যেই ব্যক্তি বা দল এই আসনে বা পদে অধিষ্ঠিত হন তার জন্য ব্যক্তিগত উপদেশ-পরামর্শ, তাকওয়া ও ন্যায়পরায়ণতা ছাড়াও জিহাদ ও ইজতিহাদের যোগ্যতা আবশ্যক। এই শব্দ দুটি খুবই সরল ও হালকা ধরনের হলেও এর অর্থ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। জিহাদ বলতে বোঝায়ঃ প্রিয়তম ও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য বা কাম্য বস্তু হাসিলের উদ্দেশে নিজের চূড়ান্ত-শক্তি-সামর্থ্য ও উপায়-উপকরণ ব্যয় করা।

একজন মুসলমানের সব চাইতে বড় মকসূদ বা লক্ষ্য হলো আল্লাহর ফরমাবরদারী ও তার সন্তুষ্টি লাভ এবং তাঁর সার্বভৌমত্ব ও বিধি-বিধানের সামনে পূর্ণ আত্মসমর্পণ। এজন্য প্রয়োজন এমন প্রতিটি আকীদা-বিশ্বাস, প্রশিক্ষণ, একজন মুসলমানের সব চাইতে বড় মকসূদ বা লক্ষ্য হলো আল্লাহর ফরমাবরদারী ও তাঁর সন্তুষ্টি লাভ এবং তাঁর সার্বভৌমত্ব ও বিধি-বিধানের সামনে পূর্ণ আত্মসমর্পণ। এজন্য প্রয়োজন এমন প্রতিটি আকীদা-বিশ্বাস, প্রশিক্ষণ, নৈতিক চরিত্র, ইচ্ছা-অভিসন্ধি ও কামনা-বাসনার বিরুদ্ধে, দীর্ঘ জিহাদের যা এতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং জিহাদ ভেতর বাইরের ঐ সমস্ত উপাস্য ও মিথ্যা মা'বুদগুলোর বিরুদ্ধে যা আল্লাহর আনুগত্য ও ইসলামের ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বীরূপে দেখা দেয়। এসব লক্ষ্য যখন অর্জিত হবে তখন একজন মুসলমানের জন্য জরুরী হলো, সে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও তাঁর বিধানসমূহকে তার চারপাশের পৃথিবী এবং তারই মত আর সব মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেবার জন্য চেষ্টা-তদবীর করবে, প্রয়াস চালাবে। এটা তার ধর্মীয় দায়িত্ব ও আল্লাহর সৃষ্টিকুলের কল্যাণ কামনার স্বাভাবিক চাহিদা। এটা এজন্যও জরুরী, কোন কোন সময় ব্যক্তিগত দীনদারী ও পরিবেশের আনুকূল্য ব্যতিরেকে কঠিন হয়ে পড়ে। কুরআন মজীদের পরিভাষায় একেই ফেতনা বলে। পৃথিবীতে যত জড়বস্তু, প্রাণী, উদ্ভিদ ও মানুষ আছে তা আল্লাহর ইচ্ছা ও বিধানসমূহের তথা তাঁরই সৃষ্ট প্রাকৃতিক কানুনের সামনে মস্তকাবনত।

( أَفَغَیۡرَ دِینِ ٱللَّهِ یَبۡغُونَ وَلَهُۥۤ أَسۡلَمَ مَن فِی ٱلسَّمَـٰوَ  ٰ⁠ تِ وَٱلۡأَرۡضِ طَوۡع ا وَكَرۡه ا وَإِلَیۡهِ یُرۡجَعُونَ )

[Surah Aal-E-Imran 83]

“আর আসমানে ও যমীনে যা কিছু আছে সমস্তই স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় তাঁর নিকট আত্মসমর্পণ করেছে। আর তার দিকেই তারা প্রত্যানীত হবে।” (সূরা আলে ইমরানঃ ৮৩)

( أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ یَسۡجُدُ لَهُۥ مَن فِی ٱلسَّمَـٰوَ  ٰ⁠ تِ وَمَن فِی ٱلۡأَرۡضِ وَٱلشَّمۡسُ وَٱلۡقَمَرُ وَٱلنُّجُومُ وَٱلۡجِبَالُ وَٱلشَّجَرُ وَٱلدَّوَاۤبُّ وَكَثِیر مِّنَ ٱلنَّاسِۖ وَكَثِیرٌ حَقَّ عَلَیۡهِ ٱلۡعَذَابُۗ وَمَن یُهِنِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِن مُّكۡرِمٍۚ إِنَّ ٱللَّهَ یَفۡعَلُ مَا یَشَاۤءُ ۩ )

[Surah Al-Hajj 18]

“তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহকে সিজদা করে যা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে ও পৃথিবীতে, সূর্য, চাঁদ, তারকারাজি, পর্বতমালা, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকেঃআবার অনেকের প্রতি অবধারিত হয়েছে শাস্তি।” (সূরা হজ্জঃ ১৮)।

এ ব্যাপারে মানুষের কোন প্রকার চেষ্টা-তদবীরের ভূমিকা বা কোন প্রকারের চেষ্টা-সাধনার আবশ্যকতা নেই। প্রাণীকুলের জন্য জীবন-মৃত্যু ও লালন-পালনের যেই আইন-কানুন রয়েছে এবং তার শরীর ও প্রকৃতির জন্য আল্লাহ তাআলা যেই প্রাকৃতিক ব্যবস্থা নির্ধারণ করে দিয়েছেন এর ওপর তারা বিনা প্রশ্নে অবনত বিনা প্রশ্নে অবনত মস্তকে চলছে এবং চলতে থাকবে। এর থেকে চুল পরিমাণও ব্যত্যয় ঘটবে না। যেই উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের নিমিত্ত মুসলমানদের চেষ্টা-সাধনা কাম্য ও কাক্সিক্ষত তা হলো আল্লাহর এই কানুন তথা বিধানের বাস্তবায়ন ও এর প্রয়োগ যা আম্বিয়া আলায়হিমুস-সালাম নিয়ে এসেছেন এবং যার বিজয় ও। প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁদের অনুসারীরা আদিষ্ট। এর বিরোধী শক্তি ও আহ্বান দুনিয়ার বুকে হামেশা থাকবে। এই জিহাদ কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এর অনেক প্রকার ও রূপ রয়েছে যুদ্ধও যার অন্যতম যা কোন কোন সময় এর সর্বোত্তম প্রকারে পরিণত হয়। এর উদ্দেশ্য হলো এই যে, ইসলামের সমান্তরালে কোন প্রতিপক্ষ বা প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি যেন অবশিষ্ট না থাকে যারা মানব প্রকৃতিকে বিরোধী দিকের পানে টানবে এবং অসংখ্য মানুষের জন্য কুফর ও ইসলামের মাঝে সংঘাত হিসেবে দেখা দেবে।

( وَقَـٰتِلُوهُمۡ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتۡنَة وَیَكُونَ ٱلدِّینُ لِلَّهِۖ )

[Surah Al-Baqarah 193]

“আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যাবৎ না ফেতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠিত হয়।” (সূরা বাকারাঃ ১৯৩)

এই জিহাদের একটি দাবি এও যে, মানুষ সেই ইসলাম সম্পর্কে খুবই ওয়াকিফহাল হবে যার খাতিরে তারা জিহাদ করবে এবং কুফর ও জাহিলিয়াত সম্পর্কেও অবহিত থাকবে যার বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ করছে। তারা গভীরভাবে অবহিত হবে যাতে করে যেই পোশাকে ও যেই রঙেই তা জাহির হোক, দেখামাত্রই তা চিনবে। হযরত ওমর (রা)-এর একটি উক্তি হলোঃ আমার ভয় হয় যে, সেসব লোক ইসলামের শেকলের কড়াগুলো ছড়িয়ে দেবে , ইতস্তত বিক্ষিপ্ত করে দেবে, যারা ইসলামের ভেতর লালিত-পালিত হয়েছে, বর্ধিত হয়েছে, অথচ জাহিলিয়াতকে তার চেনে না। একথা নিশ্চিত যে, সকল মুসলমানের জন্য এটা জরুরী নয় যে, তারা কুফর ও জাহিলিয়াত সম্পর্কে গভীর ও বিস্তারিতভাবে অবহিত হবে এবং এর বিকাশ, অবয়ব ও রঙ-রূপ সম্পর্কে জানবে এবং চিনবে। কিন্তু এটা নিঃসন্দেহ, ইসলামের যারা দিক-নির্দেশনা দেবেন এবং কুফর ও জাহিলিয়াতের বিরুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর নেতৃত্ব দেবেন। তাঁদের জন্য এটা জরুরী যে, তারা সাধারণ ও মধ্যম শ্রেণীর মুসলমানদের। তুলনায় কুফর ও জাহিলিয়াত সম্পর্কে অধিক অবগত হবেন।

তেমনি এটাও জরুরী যে, যে সমস্ত লোক এই পদে অধিষ্ঠিত হবেন তাদের প্রস্তুতি পূর্ণ এবং শক্তি পূর্ণাঙ্গ ও পরিপূর্ণ হবে। তাদের কাছে লোহা কাটবার জন্য লোহা, বরং ততোধিক শক্ত ইস্পাত থাকবে। কুফরের মুকাবিলা করবে সে সমস্ত। উপায়-উপকরণ ও আসবাব দিয়ে যা তাদের নাগালের মধ্যে থাকবে যেগুলো। মানুষ আবিষ্কার-উদ্ভাবন করতে পেরেছে এবং যতদূর সম্ভব মানুষের জ্ঞানায়।

যেগুলো মানুষ আবিষ্কার-উদ্ভাবন করতে পেরেছে এবং যতদূর সম্ভব মানুষের জ্ঞানায়। এজন্য আল্লাহর নির্দেশ রয়েছেঃ

( وَأَعِدُّوا۟ لَهُم مَّا ٱسۡتَطَعۡتُم مِّن قُوَّة وَمِن رِّبَاطِ ٱلۡخَیۡلِ تُرۡهِبُونَ بِهِۦ عَدُوَّ ٱللَّهِ وَعَدُوَّكُمۡ وَءَاخَرِینَ مِن دُونِهِمۡ لَا تَعۡلَمُونَهُمُ ٱللَّهُ یَعۡلَمُهُمۡۚ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِن شَیۡء فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ یُوَفَّ إِلَیۡكُمۡ وَأَنتُمۡ لَا تُظۡلَمُونَ )

[Surah Al-Anfal 60]

“তোমাদের তাদের মুকাবিলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখবে, এর দ্বারা তোমরা সন্ত্রস্ত করবে আল্লাহ্র শত্রুকে, তোমাদের শত্রুকে এবং এতদ্ব্যতীত অন্যদেরকে যাদেরকে তোমরা জান না, আল্লাহ্ তাদেরকে জানেন। আল্লাহর পথে তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তার পূর্ণ প্রতিদান তোমাদেরকে দেওয়া হবে এবং তোমাদের প্রতি জুলুম করা হবে না” (সূরা আনফালঃ ৬০)।

ইজতিহাদ দ্বারা আমরা বোঝাতে চাই, মুসলমানদের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব (ইমামত) যে সমস্ত লোকের হাতে থাকবে যারা সামনে আসা জীবনের নতুন নতুন সমস্যা-সংকটকে এককভাবে অথবা সমষ্টিগতভাবে সঠিক ও যথাযথ ফয়সালা করবার যোগ্যতা ও সামর্থ্য রাখেন এবং ইসলামের স্পিরিট ও ইসলামের আইন প্রণয়নের মৌল নীতিমালা সম্পর্কে এতটা অবহিত এবং মসলা বের করবার ব্যাপারে এতটা পারঙ্গম হবেন যে, তারা মুসলিম উম্মাহর সামনে বিরাজমান সংকটগুলোর সমাধান করতে পারেন এবং দ্বিধাদ্বন্দ্বকালে ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় যিনি তাদের দিক-নির্দেশনা দিতে পারেন। অধিকন্তু তারা এতটা মেধা, কর্মক্ষমতা ও জ্ঞানের অধিকারী ও পরিশ্রমী হবেন যাতে আল্লাহতাআলা সমগ্র সৃষ্টিজগতে ও যমীনের বুকে যেই প্রাকৃতিক শক্তি, সম্পদ ও শক্তির উৎস রেখে দিয়েছেন তা থেকে তাঁরা কাজ নিতে পারেন এবং সেগুলোকে ইসলামের লক্ষ্য অর্জনের সহায়ক বানাতে পারেন। বাতিলপন্থীরা সেগুলোকে তাদের কামনা-বাসনা চরিতার্থ করার জন্যে ব্যবহার করবে এবং যমীনে ফেতনা-ফাসাদ, অশান্তি ও অরাজকতা সৃষ্টির কাজে এ সবের সাহায্য নেবে। পক্ষান্তরে সত্য পথের পথিক এসব থেকে কাজ নেবে যেজন্য আল্লাহ্ তাআলা এসব পয়দা করেছেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন