hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

১৫৩
পাশ্চাত্য নেতৃত্ব ও এর প্রভাব-প্রতিক্রিয়া
কিন্তু পেছনের মুসাফির মনযিলে পৌঁছুবার পূর্বেই হঠাৎ কাফেলা থেমে গেল। মনে হলো, কাফেলার নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটেছে। কাফেলার সালারকে এজন্যই নেতৃত্ব হারাতে হয়, তিনি কাফেলার নিরাপত্তার পরিপূর্ণ ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণে করেন নি।১ এক অপরিচিত মুসাফির২ যাকে কাফেলার কেউ চিনত না, জানত না, তলোয়ারের জোরে ও শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নেতৃত্বের বাগডোর। হাতে তুলে নিল।

নতুন দলপতি এই অসহায় মনুষ্য কাফেলাকে এমন এক রাস্তার দিকে নিয়ে যায় যে রাস্তা ছিল অত্যন্ত দুর্গম ও বন্ধুর, চড়াই-উত্রাইয়ে পরিপূর্ণ, দিনের বেলায়ও৩ যেখানে রাত্রির ঘন অন্ধকার। কাফেলার যাত্রীরা যেখানে বারবার হোঁচট খেত, হুমড়ি খেয়ে পড়ত এবং আর্তস্বরে ফরিয়াদ জ্ঞাপন করত। কিন্তু কাফেলার অধিনায়ক শক্তির দম্ভে, নেশায় ও দ্রুত পৌঁছুবার তাগিদে কাফেলা হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

[১. মুসলমানদের বস্তুগত দুর্বলতা ও শক্তির উপকরণের ব্যাপারে অলসতা ও অসতর্কতার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যদ্দরুন কার্যকারণ এই পৃথিবীতে শাস্তি হিসাবে তাদেরকে নেতৃত্ব হারাতে হয়। ]

[২. পাশ্চাত্য জাতিগোষ্ঠী; ]

[৩. বৈদ্যুতিক আলোয়। ]

এটা কোন রূপকথা নয়, বরং বাস্তব সত্য। দুনিয়ার নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের বাগডোর মুসলমানদের পর পাশ্চাত্যের সেই সব জাতিগোষ্ঠী নিজেদের হাতে তুলে নেয় যাদের কাছে প্রথম থেকেই হিকমতে ইলাহীর কোন পুঁজি ও সহীহ-শুদ্ধ ইলম-এর কোন স্বচ্ছ-সুন্দর ঝর্ণাধারা ছিল না। নবুওতের আলোক-শিখা সেখানে মূলত পৌঁছেই নি, পৌঁছুতে পারেনি। হযরত ঈসা মসীহ (আ)-র শিক্ষামালার আলোক-শিখা যা সেখানে পৌঁছে ছিল তা বিকৃতি ও মনগড়া ব্যাখ্যা-বিবৃতির অন্ধকার আবর্তে হারিয়ে যায়। তারা সেই আসমানী আলোর শূন্য স্থান রোম ও গ্রীসের দফতরে রক্ষিত অন্ধকার দ্বারা পূরণ করে। অজ্ঞ ও মূখ গ্রীস ও রোমের জাহিলী পরিত্যক্ত সম্পদ তাদের উত্তরাধিকার হিসেবে হস্তগত হয় এবং বংশগতভাবে তাদের সকল প্রকৃতিগত, মেধাগত, নৈতিক ও মেজগত বৈশিষ্ট্যসমূহ তাদের ভেতর স্থানান্তরিত হয়। ইন্দ্রিয় পূজা, আধ্যাত্মিকতা থেকে দূরত্ব, ভোগ-বিলাসপ্রবণতা, স্বদেশ নিয়ে বাড়াবাড়ি, সীমাহীন ব্যক্তিস্বাধীনতার আকাক্ষা গ্রীস থেকে এবং ঈমানী দুর্বলতা, আগ্রাসী জাতীয়তাবাদ, শক্তি সম্পর্কে পবিত্রতার ধারণা এবং সাম্রাজ্যবাদের প্রেতাত্মা রোম থেকে স্থানান্তরিত হয়। খ্রিস্টীয় শিক্ষামালার ছিটে-ফোটা পুঁজিটুকু (যা সম্ভবত মূলের এক-দশমাংশও নয়) রোমান মূর্তিপূজা এবং সেন্ট পল ও সম্রাট কন্স্টান্টাইনের মুনাফিকী ডুবিয়ে দেয়। আর যদি কিছু অবশিষ্ট থাকেও সেটুকু ধর্মীয় পণ্ডিতদের বিকৃতি ও মনগড়া ব্যাখ্যার ধূম্রজালের আড়ালে হারিয়ে যায়। বৈরাগ্যবাদের পাগলামী বস্তুবাদের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। গির্জাধিপতিদের ভোগ-বিলাস ও দুনিয়াদারী ধর্মাধিকারীদের প্রতি মানুষের অনাস্থা ও ঘৃণা সৃষ্টি করে। সরকার ও গির্জার মধ্যকার টানাটানি ও টানাপোড়েন জাতীয় মেয়াজের মধ্যে বিদ্রোহ ও ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে এবং ধর্ম ও রাজনীতির মধ্যে পার্থক্য সূচিত করে। ধর্ম ও বুদ্ধিবৃত্তির রক্তাক্ত দ্বন্দ্ব-সংঘাত, ধর্মীয় মহলের স্থবিরতা ও স্বল্প-বুদ্ধিতা এবং গির্জাধিপতি পোপ ও পাদরীদের লোমহর্ষক জুলুম-নিপীড়ন নামেমাত্র ধর্মের বিরুদ্ধে বংশীয় ও মৌরসী শত্রুতার বীজ বপন করে। অপব্ধ ও অপরিণত প্রগতিবাদীদের তাড়াহুড়া, গোড়ামি ও পক্ষপাতিত্ব ধর্মের শেষ তসমা তথা অবশেষটুকু কেটে দেয় এবং ধর্মের ছিটেফোঁটা কল্যাণটুকু থেকেও মানুষকে মাহরূম করে দেয়। শেষ পর্যন্ত সমগ্র পাশ্চাত্য জাতিগোষ্ঠীর ওপর বস্তুবাদের যুগ এসে হাষির হয় এবং গোটা পাশ্চাত্যের ওপর আল্লাহ-বিস্মৃতি ও এর স্বাভাবিক পরিণতি হিসেবে আত্মবিস্মৃতির জগত ছেয়ে যায়। অর্থপূজা ও বিত্তপূজা ধর্মের আসন গ্রহণ করে। বস্তুবাদের নির্ভেজাল অর্থনৈতিক ওয়াহদাতুল ওজুদের দর্শন জন্ম দেয় যার শ্লোগান হলো (আরবি) “(ভাত) রুটি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং পেট ব্যতিরেকে আর কিছুর অস্তিত্ব নেই।”

অন্যদিকে জীবনের সঠিক লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, মিশন ও বিশ্বজয়ী কোন পয়গাম থাকায় আগ্রাসী জাতীয়তাবাদ জীবনের লক্ষ্যে পরিণত হয়, পরিণত হয় জাতীয় বৃত্তি ও পেশায়। জাতীয় জীবন স্থায়ী রাখবার জন্য অপর জাতির প্রতি ঘৃণা ও ভীতির আবেগ প্রকাশ পায় এবং একদিকে সমগ্র প্রাচ্যকে পাশ্চাত্যের মুকাবিলায় প্রতিদ্বন্দী শিবির হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। অপরপক্ষে অভ্যন্তরীণ জাতীয়তার সীমারেখা গোটা পাশ্চাত্যকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খেলাঘরে রূপ দেয় এবং এক প্রতিবেশী আরেক প্রতিবেশীর মাঝে একটি সীমারেখা টেনে দেয়। এর বাইরে যে মানুষ থাকতে পারে তার কল্পনাও করা যেত না। সাম্রাজ্যবাদ সমগ্র বিশ্বকেই দাস বিক্রির এক বাজার (যেখানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর কেনাবেচা হতো) এবং বিভিন্ন সাম্রাজ্যের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা দুনিয়াটাকে কামারের চুলা বানিয়ে দেয়। যেখানে সব সময় আগুনের খেলা চলে, লোহা উত্তপ্ত করে ও পিটিয়ে প্রয়োজনীয় অস্ত্র বানানো হয়।

নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ও শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে প্রশিক্ষণবিহীনভাবে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্পের গবেষণা ও আবিষ্কার-উদ্ভাবনের ক্রমোন্নতির ফলে শক্তি ও নীতি-নৈতিকতার মধ্যে কোনরূপ ভারসাম্য বজায় থাকে নি। মানুষ পাখীর মত বাতাসের বুকে ভর দিয়ে আকাশে উড়তে শিখেছে আর মাছের মত পানিতে সাঁতার কাটতে শিখেছে বটে, কিন্তু যমীনের বুকে মানুষের মত চলা ভুলে গেছে। লাগামহীন ও বোধহীন বিদ্যা-বুদ্ধি চোর-ডাকাতের হাতে তালা ভাঙার হাতিয়ার এবং সকল মস্তানের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। বিংশ শতাব্দীর বখাটে ও অবুঝ পোলাপানের কাছে বিজ্ঞান খেলার জন্য শাণিত ও বিপজ্জনক হাতিয়ার বণ্টন করেছে যা দিয়ে সে নিজেকে যেমন ক্ষত-বিক্ষত করছে, তেমনি ক্ষত-বিক্ষত করছে নিজের ভাইকেও। অবশেষে অন্ধ ও বধির এই বিজ্ঞান পারমাণবিক ও হাইড্রোজেন বোমার আকারে মানুষের হাতে আত্মহত্যার হাতিয়ার তুলে দিয়েছে।

এই সব ধর্মহীন জাতিগোষ্ঠীর রাজত্বকালে মানুষ সেই ধর্মীয় অনুভূতি থেকেও মাহরাম হতে থাকে যা অপরাপর মানবীয় অনুভূতির সঙ্গে প্রাচ্যের হাজারো বছরের জীবনে অপরিহার্য প্রয়োজন হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আল্লাহপ্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষার সাধারণ রুচির স্থলে জাগতিক কামনার ব্যাধি বাসা বাঁধে। আচার-ব্যবহার, মৌলিক ও সত্যিকার মানবিক গুণাবলী ও উৎকর্ষের ক্ষেত্রে বিরাট রকমের অধঃপতন দেখা দেয়। মোটকথা, লোহা-লক্কড় ও ধাতব পদার্থের সর্বপ্রকার উন্নতি ঘটে আর মনুষ্যত্বের ঘটে সার্বিক অধঃপতন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন