মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মানবতার সৌভাগ্যের নিমিত্ত আরবদের ব্যক্তিগত কুরবানী
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/788/174
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের আবির্ভাব সে সময় হয়েছিল যখন মানবতার দুর্ভাগ্য চরম সীমায় গিয়ে উপনীত হয়েছিল। সে সময় মানবতার সংশোধনের সমস্যা ঐসব লোকের ক্ষমতার বাইরে ছিল যাদের জীবন বিলাস-ব্যসন ও প্রাচুর্যের মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছিল, যাদের পরিশ্রম করবার, সইবার, জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি বরদাশত করার যোগ্যতা ও সামর্থ্য ছিল না এবং যাদের নিমিত্ত সার্বক্ষণিক ভোগ-বিলাস ও আমোদ-ফুর্তির উপকরণ বিদ্যমান ছিল। সে সময় মানবতাকে এমন সব লোকের দরকার ছিল যারা মানবতার খেদমতে নিজেদের ভবিষ্যত কুরবান করতে পারত এবং স্বার্থ চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে নিজেদের জান-মাল ও আরাম-আয়েশ এবং নিজেদের সব রকম জাগতিক স্বার্থকে বিপদের মুকাবিলায় পেশ করতে পারত। তাদের নিজেদের পেশা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মন্দা এবং যে কোন ধরনের আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতি ও বিপদের কোনরূপ পরওয়া ছিল না। যাদের নিজেদের বাপ-দাদা, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিষ্ঠিত আশা-আকাঙ্ক্ষাকে হতাশায় পর্যবসিত করতে আদৌ কোন ইতস্তত বোধ ছিল না, ছিল না কোন প্রকার দ্বিধা কিংবা সংশয়। সালেহ আলায়হিস-সালামকে তাঁর সম্প্রদায় যা কিছু বলেছিল সে কথাই তাঁদের সম্পর্কিত জনদের মুখে ফুঠে উঠত।
“হে সালেহ! এর আগে তুমি ছিলে আমাদের আশাস্থল।” (সূরা হূদঃ ৬২)
যতদিন দুনিয়ার বুকে এ ধরনের মুজাহিদ তৈরি না হবে ততদিন পর্যন্ত মানবতার স্থায়িত্ব ও মজবুতি এবং কোন গুরুত্বপূর্ণ আদর্শ ও দাওয়াতের পক্ষে সফলতা লাভ করা সম্ভব হবে না। এ ধরনের কর্ম সম্পাদনকারী হাতে গোণা কয়েকজন মানুষ যাদেরকে দুনিয়ার বুকে বঞ্চিত ও হতভাগা মনে করা হয়, তাদের উন্নত মনোবল ও কুরবানীর আবেগদীপ্ত প্রেরণার ওপরই মানবতার কল্যাণ, সফলতা, সুখ-শান্তি ও শ্রীবৃদ্ধি নির্ভর করছে। সেই হাতে গোণা কিছু লোক যারা নিজেদের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে আল্লাহর হাজার হাজার বান্দাকে (আখেরাতের চিরস্থায়ী মুসীবত থেকে বাঁচাবার উপলক্ষে পরিণত হন। এবং দুনিয়ার এক বিরাট বড় গোষ্ঠীকে অকল্যাণ থেকে কল্যাণের দিকে টেনে নিয়ে আসেন। যদি কয়েক জন মানুষের বঞ্চনা ও ধ্বংস একটি গোটা জাতি ও সম্প্রদায়ের জন্য প্রাচুর্য ও সৌভাগ্যের কারণ হয় এবং সামান্য কিছু অর্থ-সম্পদ, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষির ক্ষয়-ক্ষতি যদি অসংখ্য ও অগণিত মানুষের ধর্মীয় ও পার্থিব কল্যাণের দরজা খুলে দেয় তাহলে একে সওদা হিসেবে সস্তাই বলতে হবে!
আল্লাহ তা'আলা যখন হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে দুনিয়ার বুকে প্রেরণ করেন তখন তিনি জানতেন, রোম ও পারস্য ও দুনিয়ার অপরাপর সভ্য জাতিগুলো যাদের হাতে তঙ্কালীন বিশ্বের (ক্ষমতার) চাবিকাঠি ছিল, কখনোই নিজেদের আরাম-আয়েশ ও আমোদ-ফুর্তি ছাড়তে পারত না। তারা তাদের বিলাসী জীবনকে বিপদের ঠেলে দিতে পারত না। অসহায় ও দুঃস্থ মানবতার খেদমত, দাওয়াত ও জিহাদের জন্য অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ-মুসীবত সইবার ক্ষমতা তাদের ছিল না। তাদের ভেতর এমন সামর্থ্যও ছিল না, নিজেদের আড়ম্বর ও জৌলুসপূর্ণ জীবনের একটি মামুলী অংশও কুরবান করবে। তাদের মধ্যে এমন একজনও ছিল না, যে নিজের কামনা-বাসনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, নিজের লোভ-লালসাকে রুখতে পারে এবং যে সভ্যতা-সংস্কৃতির আবশ্যকীয় অনুষঙ্গ ও ফ্যাশনের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত হয়ে যেটুকু না হলেই নয়, কেবল তার ওপর নির্ভর করে চলতে পারে। এজন্যই আল্লাহ তাআলা ইসলামের পয়গাম ও নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সাহচর্যের জন্য এমন এক জাতিগোষ্ঠীকে নির্বাচিত করলেন যারা দাওয়াত ও জিহাদের। বোঝা ওঠাতে পারত এবং ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের প্রেরণায় উজ্জীবিত ছিল, ছিল ভরপুর। এরা ছিল সেই আরব কওম, যারা ছিল শক্তিশালী, সহজ, সরল ও অনাড়ম্বর জীবনে অভ্যস্ত ও কঠোর পরিশ্রমী, যাদের ওপর কৃত্রিম সভ্যতা-সংস্কৃতির কোন আঘাতই কার্যকর হয়নি এবং দুনিয়ার চোখ ঝলসানো রঙীন চাকচিক্যের কোন যাদুই ক্রিয়া দর্শে নি। এ সমস্ত লোকই ছিলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের সাহাবা যারা হৃদয় সম্পদে সম্পদশালী, জ্ঞান ও বিদ্যাবত্তায় ভরপুর এবং লৌকিকতা থেকে ছিলেন শত সহস্র যোজন দূরে।
মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এই আজীমুশশান দাওয়াত নিয়ে দাঁড়ালেন এবং তিনি কঠোর চেষ্টা-সাধনা ও প্রাণান্তকর পরিশ্রমের হক পরিপূর্ণরূপেই আদায় করেন। তিনি এই দাওয়াতকে এমন সব কিছুর ওপর অগ্রাধিকার প্রদান করেন যা তার জন্য বাধা ও প্রতিবন্ধকতার কারণ হতে পারত। তিনি কামনা-বাসনা থেকে সম্পূর্ণরূপে পৃথক ছিলেন। দুনিয়ার চিত্তাকর্ষক ও মন ভোলানো কোন কিছুই তার চিত্ত বিভ্রম ঘটাতে পারে নি। এসবের কোন যাদুই তার ওপর কোন ক্রিয়া করেনি। এগুলোই ছিল সেসব জিনিস যা দুনিয়ার জন্য ‘সর্বোত্তম আদর্শ’ (উসওয়ায়ে হাসানা) ও পথ-প্রদর্শনকারী হয়। কুরায়শ প্রতিনিধিবৃন্দ যখন তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিল এবং সে সব জিনিসই তাঁর সামনে পেশ করেছিল যা একজন যুবকের চিত্ত বিভ্রম ঘটাতে এবং প্রবৃত্তির অধিকারী যে কোন মানুষের পরিতুষ্টি বিধান করতে পারত। যেমন ক্ষমতা ও রাজত্ব, ভোগ-বিলাস ও ধন-সম্পদ। তিনি সব কিছুকেই নির্দ্বিধায় প্রত্যাখ্যান করলেন। ঠিক তেমনিভাবেই যখন তাঁর চাচা তার সাথে কথা বললেন এবং চাইলেন তাঁর দাওয়াত বিস্তারে ও এতে অংশ গ্রহণে বাধা প্রদান করতে তখন তিনি পরিষ্কার ভাষায় বলেন, “চাচাজান! আল্লাহ্র কসম, যদি এরা আমার ডান হাতে সূর্য এবং বাম হাতে চাঁদ এনে দেয় তখনও আমি আমার এই কাজ থেকে বিরত হব না এবং আমি ততক্ষণ পর্যন্ত আমার প্রয়াস চালিয়ে যাব যতক্ষণ না আল্লাহ তাআলা আমাকে আমার এই প্রয়াসে সফলতা দান করেন এবং এই দাওয়াতকে বিজয়ী করেন অথবা এতেই আমি শেষ হয়ে যাই।” এই চেষ্টা-সাধনা ও ত্যাগ পার্থিব লাভ ও স্বার্থের সঙ্গে ছিল সম্পর্কহীন এবং আনন্দপূর্ণ জীবনের মুকাবিলায় কষ্টকর ও যাতনাপূর্ণ যিন্দেগীকে অগ্রাধিকার প্রদান দাওয়াত গ্রহণকারীদের জন্য চিরদিনের জন্য একটি নমুনা ও আদর্শে পরিণত হয়। তিনি এই ধারায় নিজের জন্য আরাম-আয়েশ ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দরজা বন্ধ করে দেন। কেবল নিজের জন্যই নয়, বরং নিজের গোটা পরিবার-পরিজন, গৃহবাসী ও আত্মীয়-এগানার জন্যও আরাম-আয়েশ ও বিলাসী জীবনের মওকাগুলো থেকে উপকৃত হবার সুযোগ রাখেন নি। সে সব লোক যারা ছিলেন তাঁর সর্বাধিক ঘনিষ্ঠ ও প্রিয়জন, জীবনের আরাম-আয়েশ ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের ক্ষেত্রে তাঁদেরই অংশ ছিল সবচে' কম, অথচ জিহাদের ময়দানে ও কুরবানীর ক্ষেত্রে তাঁদেরই রাখা হয়েছিল সবার আগে।
যখন তিনি কোন জিনিস নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে চাইতেন তখন তার সূচনাও করতেন নিজের গোত্র ও নিজের লোকদের দ্বারাই। যখন কাউকে তার প্রাপ্য অধিকার ও হক দিতে চাইতেন কিংবা কাউকে উপকৃত করতে চাইতেন তখন দূরের লোকদের থেকেই তা শুরু করতেন। এতে করে অনেক সময় তাঁর নিজের আত্মীয়-স্বজন ও গোত্রের লোকেরাই এ থেকে মাহরূম হয়ে যেত। যখন তিনি সূদী কায়-কারবার চিরতরে বন্ধ করার ইচ্ছা করলেন তখন সর্বপ্রথম তাঁর চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের কারবার বন্ধ করলেন এবং তাঁর সূদী কারবারের ভিত্তি উপড়ে দিলেন। এভাবেই জাহিলী যুগের প্রতিশোধ গ্রহণ ও দাবির প্রশ্ন যখন বাতিল করতে চাইলেন তখন রবীআ ইবনে হারিছ ইবনে আবদুল মুত্তালিবের রক্তের দাবি সর্বপ্রথম বাতিল করলেন। যাকাতের বিধান কার্যকর করতে গিয়ে (যা ছিল আর্থিক মুনাফা আহরণের এক বিরাট বড় মাধ্যম এবং যা কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকার মত বিষয়) সর্বপ্রথম নিজের গোত্র বনী হাশিমের জন্য কিয়ামত অবধি যাকাত গ্রহণকে নিষিদ্ধ করলেন। মক্কা বিজয়ের দিন যখন আলী ইবনে আবী তালিব (রা) তাঁর কাছে বনী হাশিমের জন্য যমযমের পানির সাথে সাথে কাবার চাবিরও অধিকার দাবি করলেন তখন তিনি তা প্রবলভাবে অস্বীকার করলেন এবং উছমান ইবনে তালহা (রা)-কে ডেকে কাবার চাবি তার হাতে তুলে দিলেন এবং বললেন, উছমান! দেখ, এই যে তোমাদের চাবি! নিয়ে নাও তুমি। আজ প্রতিদান ও সদয় ব্যবহারের দিন। আজ থেকে এটা তোমাদের পরিবারে সব সময় থাকবে, তোমাদের থেকে কেউ তা ছিনিয়ে নিতে পারবে না। তবে হ্যা, কোন জালিম ছিনিয়ে নিতে চাইলে ভিন্ন। কথা। তিনি তাঁর সহধর্মিনীদের যুহূদ ও অল্পে তুষ্টি এখতিয়ারের এবং দুঃখ-কষ্টপূর্ণ ও স্বাদহীন স্কুর্তিহীন জীবন অতিবাহিত করায় উৎসাহিত করেন। এবং পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেন, যদি তোমরা অনাহার ও দারিদ্রক্লিষ্ট জীবন যাপনের জন্য তৈরী থাক তাহলে আমার সান্নিধ্যে অবস্থান করতে পার। অন্যথায় প্রাচুর্য ও আরাম-আয়েশ চাইলে আমার সঙ্গে সহাবস্থান সম্ভব নয়। এ সময় তিনি আল্লাহ তাআলার এই নির্দেশ তাঁদের সামনে পাঠ করে শোনান।
“হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও এর ভূষণ কামনা কর, তবে এস, আমি তোমাদের ভোগ-সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদেরকে বিদায় করে দিই। আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল ও আখিরাত কামনা কর তবে তোমাদের মধ্যে যারা সর্মশীল, আল্লাহ তাদের জন্য মহাপ্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন” (সূরা আহযাব, ১৮-১৯ আয়াত)।
কিন্তু এই নির্বাচনে তাঁর গৃহবাসীরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকেই এখতিয়ার করেছেন। ঠিক তেমনি হযরত ফাতেমা (রা) যখন শুনতে পেলেন, তাঁর (আব্বার) কাছে কিছু গোলাম ও খাদেম এসেছে আর সে সময় যাতায় যব-গম পিষতে গিয়ে তাঁর হাতে ফোস্কা পড়ে গিয়েছিল। তিনি তার আব্বা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের খেদমতে গিয়ে বললেন, আব্বা! আমাকে একটি খাদেম দিন যাতে করে আমার কষ্টের লাঘব হয় এবং আমি একটু আরাম পাই। তিনি তাকে তসবীহ ও তাহমীদ (তসবীহে ফাতেমী) পাঠের উপদেশ দিলেন এবং বললেন, এ তোমার জন্য খাদেমের থেকে অনেক ভাল হবে। আত্মীয়-স্বজন ও প্রিয়জনদের সঙ্গে এ রকমই ছিল তার আচরণ। এক্ষেত্রে যিনি যত ঘনিষ্ঠ ও নিকটজন হতেন ঠিক সেই পরিমাণ তার দায়িত্বও বেড়ে যেত।
মক্কার লোকেরা যখন ঈমান আনল তখন তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিন্নভিন্ন। হয়ে যায়। তাদের ব্যবসা মন্দার শিকার হয়, এমন কি অনেকে তাদের পুঁজিটুকুও খুইয়ে বসে যা ছিল তাদের সারা জীবনের সঞ্চয়। তাদের মধ্যে এমন লোকও ঈমান এনেছিল যারা আরাম-আয়েশ ও সাজ-সজ্জার উপকরণ শেষ করে ফেলেছিল, অথচ এর আগে তাদের বৈশিষ্ট্যসূচক অবস্থাই ছিল এমন, তারা আরাম-আয়েশ ও প্রাচুর্যপ্রিয় ছিল। তেমনি এমন লোকও অনেকে ছিলেন যাঁদের ইসলামের প্রচার-প্রসারে এবং এ পথের বাধা-প্রতিবন্ধকতা দূর করতে গিয়ে ব্যবসাই শেষ হয়ে যায়। আবার অনেকে পিতৃ সম্পদ থেকে বঞ্চিত হয়।
ঠিক তেমনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম যখন মদীনায় হিজরত করেন এবং আনসাররা তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করল তখন এর প্রভাব তাদের ক্ষেত-খামার ও কৃষি কর্মের ওপর পড়ে। এ সময় যখন তারা এ সবের দেখাশোনা ও পরিচর্যার জন্য সময় চাইল তখন তাদের এতে অনুমতি মেলেনি। আল্লাহ তা'আলার তরফ থেকে তাদের উদ্দেশে সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়ঃ
“আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং তোমরা নিজের হাতে নিজেদের ধ্বংসের মাঝে নিক্ষেপ কর না” (সূরা বাকারা, ১৯৫ আয়াত)।
একই অবস্থা হয়েছিল আরব ও সেই সব লোকের যারা এই আহবানে প্রভাবিত হয়েছিল এবং এর অনুসরণে কোমর বেঁধে লেগেছিল। অনন্তর জিহাদের কষ্ট-কাঠিন্য ও জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি স্বীকারে তাদের হিস্যা এত বেশি ছিল যে, দুনিয়ার বুকে এত বেশি হিস্যা আর কারো ছিল না। আল্লাহ তাআলা তাদের সম্বোধন করে বলেনঃ
“বলুন, “তোমাদের কাছে যদি আল্লাহ, তাঁর রসূল এবং আল্লাহ্র পথে জিহাদ করা অপেক্ষা প্রিয় হয় তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভ্রাতা, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের স্বগোষ্ঠী, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যার মন্দা পড়ার আশংকা কর এবং তোমাদের বাসস্থান যা তোমরা ভালবাস, তবে অপেক্ষা কর আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত। আল্লাহ ফাসিক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না” (সূরা তাওবাঃ ২৪)।
“মদীনাবাসী ও ওদের পার্শ্ববর্তী মরুবাসীদের জন্য সঙ্গত নয় আল্লাহ্র রসূলের সহগামী না হয়ে পেছনে থেকে যাওয়া এবং তার জীবন অপেক্ষা নিজেদের জীবনকে প্রিয় জ্ঞান করা” (সূরা তাওবাঃ ১২০)।
আর তা এজন্যে যে, মানবীয় সৌভাগ্যের প্রাসাদ ঐসব লোকদের কুরবানীর খুঁটির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে এবং অবস্থার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এরই অপেক্ষা করা হচ্ছিল যে, এই সব মুহাজির ও আনসার নিজেদের অস্তিত্ব নিঃশেষ করে দিয়ে মানবতার সজীবতা এবং জাতিগোষ্ঠীসমূহের হেদায়েত ও কল্যাণের ফয়সালা লাভ করে নেবে।
“মানুষ কি মনে করে যে, আমরা ঈমান এনেছি' একথা বললেই ওদেরকে পরীক্ষা না করেই অব্যাহতি দেওয়া হবে?” (সূরা আনকাবুত, ২ আয়াত)।
এখন আরবরা যদি এই সম্মাননা গ্রহণ করতে ইতস্তত করত এবং মানবতার এই মহান খেদমতে দ্বিধার আশ্রয় নিত তাহলে দুর্ভাগ্য ও বিশ্বব্যাপী অরাজকতার মুদ্দত আরও দীর্ঘায়িত হতো এবং জাহিলিয়াতের ঘনঘোর অন্ধকার বহাল তবিয়তেই দুনিয়ার বুকে ছেয়ে থাকত। এজন্যই আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
“যদি তোমরা তা না কর তবে দেশে ফেতনা ও মহাবিপর্যয় দেখা দেবে” (সূরা আনফাল, ৭৩ আয়াত)।
খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে দুনিয়া এক দো-মাথা পথের ওপর দাঁড়িয়েছিল। সে পথ দুটোই ছিল। তার একটা হলো, আরবের লোকেরা তাদের জানমাল তথা জীবন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি ও সকল প্রিয়তম বস্তুকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে সম্মুখে অগ্রসর হবে এবং দুনিয়ার সর্বপ্রকার উৎসাহবর্ধক ও আকর্ষণীয় জিনিস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে সামাজিক কল্যাণের পথে নিজেদের সব পুঁজি কুরবান করে দেবে। এর ফলে দুনিয়ার ভাগ্যে সৌভাগ্য লাভ ঘটত এবং মানবতার ভাগ্যের পরিবর্তন হতো, জান্নাতের প্রতি আগ্রহ ঠেলে উঠত, ঈমানের প্রভাত সমীরণ প্রবাহিত হতো অথবা তারা নিজেদের কামনা-বাসনা, কাক্ষিত আনন্দদায়ক বস্তুসামগ্রী, নিজেদের ব্যক্তিগত আরাম-আয়েশ ও ভোগ-বিলাসকে মানবতার সুখ-সৌভাগ্যের ও কল্যাণের মুকাবিলায় অগ্রাধিকার দিত। এমতাবস্থায় দুনিয়া গোমরাহী, পথভ্রষ্টতায় ও দুর্ভাগ্যের পচা ডোবায় তলিয়ে যেত এবং গাফিলতি ও মাতলামীর মধ্যে পড়ে থাকত। কিন্তু আল্লাহ তাআলা মানুষের কল্যাণ চাচ্ছিলেন। এজন্যই তিনি আরবদের মধ্যে আশা ও উদ্দীপনার সঞ্চার করলেন। মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম তাদের মধ্যে ঈমানের রূহ সৃষ্টি করলেন এবং তাদেরকে আখেরাত ও এর অপরিমেয় সওয়াবের উৎসাহ দিলেন। এর ফলে তারা নিজেদেরকে মানবতার নিমিত্ত উৎসর্গ করবার জন্য পেশ করল এবং আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সওয়াবের প্রতিশ্রুতি ও মানব জাতির সুখ-সৌভাগ্যের আশায় তারা দুনিয়ার যাবতীয় আরাম-আয়েশ থেকে চোখ বন্ধ করে নিজেদের জানমাল আল্লাহর রাস্তায় ঠেলে দিল এবং সে সমস্ত জিনিস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল যেগুলোর দিকে মানুষ লোভাতুর দৃষ্টি নিক্ষেপ করত। তারা পরিপূর্ণ একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও সততার সাথে নিজেদের জান-মাল আল্লাহর রাস্তায় বিলিয়ে দিল এবং মেহনত করল। তখন আল্লাহ তাআলা তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতের সর্বোত্তম পুরস্কারে ভূষিত করলেন। “আর আল্লাহ সঙ্কৰ্মশীল বান্দাদেরকে ভালবাসেন।”
আজ দুনিয়া পেছনে হটতে হটতে আবার সেই একই জায়গায় গিয়ে উপনীত হয়েছে যেখানে সে খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে ছিল। আজ আবার দুনিয়া সেই একই রূপ দোমাথা রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে যেই দোমাথা পথের ওপর রসূলুল্লাহ (ﷺ) -র আবির্ভাবের সময় ছিল। আজ আবার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে, আরব জাতি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে যাদের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। আবার ময়দানে নেমে আসবে এবং পুনরায় দুনিয়ার ভাগ্য বদলাবার জন্য জীবনের বাজী ধরবে এবং নিজেদের যাবতীয় আরাম-আয়েশ ও সম্পদ-সামর্থ, দুনিয়ার নেমত, উন্নতি ও প্রাণ-প্রাচুর্যের অন্তহীন সম্ভাবনা ও সুখ-সৌভাগ্যের উপকরণরাজিকে বিপদের মাঝে ঠেলে দেবে যাতে দুনিয়া সেই বিপদ-মুসীবত থেকে নাজাত পায় যেই বিপদ-মুসীবতে সে গ্রেফতার এবং পৃথিবীর চিত্র পাল্টে যায়।
দ্বিতীয় সূরত হলো, আরবের লোকেরা নিয়মমাফিক নিজেদের নগণ্য স্বার্থ, ব্যক্তিগত উন্নতি-সমুন্নতি, পদ ও পদমর্যাদা, বেতন বৃদ্ধি, আয়-আমদানী বৃদ্ধি ও কায়-কারবারের শ্রীবৃদ্ধির চিন্তায় ডুবে থাকুক এবং আরাম-আয়েশ ও ভোগ-বিলাসের উপকরণাদির সরবরাহ নিয়ে মশগুল থাকুক। এর ফল হবে এই, দুনিয়া সেই বিষাক্ত ও পুঁতিগন্ধময় পুকুরে সাঁতার কাটতে থাকবে যার মাঝে সে শত শত বছর ধরে ধ্বংসের জাবর কাটছে। যদি ভাল ভাল মেধাবী ও তীক্ষ্ণধী আরব যুবকেরা বড় বড় নগর-বন্দরে প্রবৃত্তির গোলাম হয়ে বসে থাকে, যদি তাদের জীবনের লক্ষ্য ও কেন্দ্রবিন্দু হয় কেবল বস্তু ও পেট, এছাড়া যদি আর। কোন চিন্তা-ভাবনাই তাদের না থাকে, যদি তাদের সকল চেষ্টা-সাধনা কেবল। নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন ও প্রচলিত দায়মুক্ত যিন্দেগীর চারপাশে কলুর বলদের মত কেন্দ্রীভূত হয়, তবে এমত অবস্থায় মানবীয় সৌভাগ্যের আশা করাটাও দুরূহ ও কষ্টকর। কোন কোন জাহিলী সম্প্রদায়ের যুবক তো এদের চেয়ে অনেক বেশি উদ্যমী ছিল এবং তাদের মন-মানস এদের তুলনায় অনেক বেশি সমুন্নত ছিল। যারা নিজেদের পসন্দনীয় লক্ষ্যের পথে নিজেদের যাবতীয় আরাম-আয়েশ ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, এমন কি নিজেদের ভবিষ্যত পর্যন্ত কুরবান করে দিয়েছে। জাহিলী যুগের কবি ইমরুল কায়েস এদের তুলনায় অনেক বেশি হিম্মতের অধিকারী ছিল। সে বলতঃ
ولو اني اسعى لادنی معیشتة .
كفاني ولم اطلب قليل من المال
ولكنما اسعى لمجد موثل .
وقد يدرك المجد الموثل امثالی۔
“আমি যদি সাধারণ জীবনের জন্য চেষ্টা করতাম তাহলে অল্প সম্পদই আমার জন্য যথেষ্ট হতো এবং সেজন্য এত কঠোর কঠিন প্রাণান্তকর পরিশ্রমের প্রয়োজন হতো না।
“কিন্তু আমি তো এমনতরো সম্মান ও মর্যাদাপ্রার্থী যার গোড়া অত্যন্ত মজবুত। আর আমার মতো লোকেরাই এমনতরো মর্যাদা লাভ করে থাকে।”
দুনিয়ার সৌভাগ্য ও সফলতার মনযিল অবধি পৌঁছুবার জন্য জরুরী হলো, মুসলিম তরুণ ও যুবকেরা নিজেদের কুরবানী দ্বারা একটি সেতু নির্মাণ করবে। সেই সেতু পার হয়ে দুনিয়া সর্বোত্তম জীবনের মনযিল পর্যন্ত পৌঁছুতে পারে। মাটি তার উর্বরা শক্তি বৃদ্ধির জন্য সারের মুখাপেক্ষী। কিন্তু মানবতার যমীনের সার যা দিয়ে ইসলামের ক্ষেত-খামার শস্য-শ্যামল হতে পারে তা হলো সেই ব্যক্তিগত ও একক কামনা-বাসনা যা মুসলিম তরুণ ও যুবকেরা ইসলামের প্রাণ-প্রাচুর্য বৃদ্ধি এবং আল্লাহর যমীনে শান্তি ও নিরাপত্তার বিস্তার ঘটাবার জন্য কুরবান করবে। আজ মানবতার ঊষর ও অনুর্বর ভূমি সার চায়। এই সার হলো আরাম-আয়েশ ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের নানা মওকা, ব্যক্তিগত উন্নতির সমূহ সম্ভাবনা ও বিলাস উপকরণ যেগুলোকে মুসলমানেরা, বিশেষ করে আরব জাতিগুলো উৎসর্গ করার অভিপ্রায় গ্রহণ করুক! কয়েকজন মানুষের জীবনপণ চেষ্টা-সাধনা ও তাদের কুরবানী দ্বারা যদি এই মানবীয় শস্য আগুনের পথ থেকে বেরিয়ে এসে শান্তি সুখের জান্নাতের পথ ধরতে পারে তাহলে এ হবে বড় সস্তা ব্যবসা। এজন্য যেই নে'মত জুটবে তা হবে খুবই মূল্যবান ও দুর্লভ সম্পদ এবং এজন্য যা-ই কিছুই কুরবান করতে হোক তা হবে এর তুলনায় খুবই মামুলী।
اے دل تمام نفع ہے سودائے عشق میں
اك جاں کا زیاں ہے سواب ازياں نہيں
মুসলিম বিশ্ব আরব জাহানের দিকে আশা-ভরসা নিয়ে তাকিয়ে আছে। আরব জাহান আপন বৈশিষ্ট্য, অবস্থানগত সুবিধা ও রাজনৈতিক গুরুত্বের দিক দিয়ে ইসলামের দাওয়াতের যিম্মাদারী কাঁধে তুলে নেবার হকদার। তারা মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বভার নিজেদের কাঁধে তুলে নিক এবং পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণের পরই কেবল তারা য়ুরোপের (বর্তমানে আমেরিকা -অনুবাদক) চোখে চোখ রেখে কথা বলুক এবং নিজেদের ঈমান ও দাওয়াতের শক্তি এবং আল্লাহর সাহায্যের ওপর ভরসা করে তাদের ওপর বিজয় লাভ করুক। অতঃপর দুনিয়াকে মন্দ থেকে ভালোর দিকে, ধ্বংস ও বরবাদী থেকে শান্তি ও নিরাপত্তার দিকে নিয়ে আসুক ঠিক সেভাবে যেভাবে মুসলিম দূত ইয়াযদাগির্দ-এর ভরা দরবারে বলেছিলেনঃ
“মানুষের গোলামী ও দাসত্ব থেকে বের করে একক আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগীতে, দুনিয়ার সংকীর্ণ কাল কুঠরী থেকে বের করে ধর্মের বিশাল বিস্তৃত অঙ্গনে এবং ধর্মের নামে কৃত জুলুম ও বেইনসাফী থেকে মুক্ত করে ইসলামের ন্যায় ও সুবিচারপূর্ণ জীবনে টেনে নিতে আমাদেরকে এখানে পাঠানো হয়েছে।”
সমগ্র মানব বিশ্ব আজ মুসলিম বিশ্বের দিকে মুক্তিদাতা ও ত্রাণকর্তা হিসেবে তাকিয়ে দেখছে আর মুসলিম বিশ্ব আরব জাহানের দিকে তাদের লীডার ও রাহবার হিসেবে চোখ তুলে চেয়ে আছে। মুসলিম বিশ্ব কি সমগ্র মানব জগতের আশা-ভরসা পূরণ করতে পারে এবং আরব জাহান কি মুসলিম বিশ্বের প্রশ্নের জওয়াব দিতে পারে? দীর্ঘকাল থেকে নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানবতা এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত দুনিয়া ইকবালের ব্যথাপূর্ণ ও দরদভরা কণ্ঠে মুসলমানদের কাছে ফরিয়াদ জানাচ্ছে। তার আজও নিশ্চিত বিশ্বাস যে, যে নিঃস্বার্থ ও নিষ্ঠাপূর্ণ হাতগুলো কা'বা নির্মাণ করেছিল সেই হাতগুলোই দুনিয়াকে নতুন করে গড়ার দায়িত্ব বহন করতে পারে। তাঁর আহব্বান হলোঃ
কাবার নির্মাতা তুমি ঘুম থেকে জেগে ওঠো ফের
হাতে তুলে নাও ফের দায়িত্ব গড়া এ বিশ্বের।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/788/174
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।