hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

১৪৩
বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের অপব্যবহার
প্রকৃত ব্যাপার হলো, এই সব আবিষ্কার-উদ্ভাবন ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি স্বস্থানে সম্পূর্ণ নির্দোষ ও নিরপেক্ষ। সে মানুষের ইচ্ছা-অভিলাষ, তার জ্ঞান-বুদ্ধি ও তার নীতি-নৈতিকতাবোধের অধীন। সে নিজে থেকে আবিস্কৃত জিনিস স্বয়ং ভাল হলেও মানুষের ভুল, অন্যায় অপব্যবহার এবং আপন প্রকৃতি ও প্রশিক্ষণের খারাবী দ্বারা সেগুলোকেও খারাপ বানিয়ে দেয়। এজন্য সব চাইতে বেশি দেখা প্রয়োজন, এসব আবিষ্কৃত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তিগত উপকরণ ব্যবহারকারী লোকগুলো কেমন, কী রকম নৈতিক চরিত্র ও জীবনাচারের অধিকারী এবং কী ধরনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সে পোষণ করে।

পাশ্চাত্য জাতিগুলো দীর্ঘকাল থেকে এই বিশ্বাস পোষণ করে আসছে, আনন্দ-ফুর্তি, আরাম-আয়েশ, বস্তুগত সুযোগ-সুবিধা ভোগ, মাথা উঁচু করে চলা ও অন্যের ওপর প্রাধান্য লাভ করা ছাড়া পৃথিবীর বুকে মানুষের আর কোন অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নেই। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তারা নিজেদের সমগ্র শক্তি ও মেধা এসব লক্ষ্য অর্জনে ব্যয় করেছে এবং এমন সব যন্ত্রপাতি ও উপায়-উপকরণ আবিষ্কার করেছে যা দিয়ে এসব লক্ষ্য খুব সহজে ও দ্রুততার সঙ্গে অর্জন করা। যায়। ক্রমান্বয়ে উপকরণগুলো নিজেই একদিন লক্ষ্যে পরিণত হয়ে গেল এবং আবিষ্কার-উদ্ভাবন আপন জায়গায় নিজেই এক বিরাট ও মহান লক্ষ্য হিসাবে অভিহিত হলো। যে রকম একজন শিশু স্বভাবতই খেলনা ভালবাসে, ঠিক তেমনি এসব আবিষ্কার-উদ্ভাবনের প্রতি তার ভালবাসা জন্মাল। এ সবের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হলো। য়ুরোপে মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটতে লাগল। মানদণ্ড গেল বদলে। কিছুকাল আগে তাদের এই ধারণা প্রবল ছিল, আরামের নামই হলো সভ্যতা আর আরাম তথা প্রশান্তি ছিল তাদের সবচাইতে বড় আদর্শ। অতঃপর বিভিন্ন কার্যকারণের ওপর ভিত্তি করে এবং কিছুটা আরাম ও প্রশান্তি লাভের নিমিত্ত দ্রুততা ও দ্রুতগামিতার প্রয়াস গ্রহণ করা হয় এবং জীবনের সকল শাখায় দ্রুততা ও গতি সৃষ্টির প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়। লোকে এর মাঝে এভাবে মত্ত হয়ে যায় যে, ক্রমান্বয়ে তারা মনে করতে থাকে, গতি ও দ্রুততার নামই হলো সভ্যতা। এখন দ্রুততা তথা গতিই তাদের জীবনের আদর্শে পরিণত হল। অধ্যাপক জোড় বলেনঃ

“ডিজরেলী (Disraeli)-র কথা থেকে মনে হয়, সমসাময়িক যুগের সমাজ ও সোসাইটির বিশ্বাস ছিল, আরামপ্রিয়তার নামই হলো সভ্যতা। কিন্তু আমাদের যুগের সমাজ-সোসাইটির বিশ্বাস হলো, দ্রুততা তথা গতির নাম হলো সভ্যতা। দ্রুততা তথা গতি হলো বর্তমান কালের যুবকদের আরাধ্য। এর মণ্ডপ ও মন্দিরে তারা আরাম, প্রশান্তি, শান্তি এবং অন্যান্যের সাথে দয়ামায়াকে অত্যন্ত নির্দয়ভাবে বলি দেয়।”১

[1. Guide to modem wickedness, p, 241. ]

আমাদের এখন দেখতে হবে, সেই সব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী ছিল যার জন্য এসব যন্ত্রপাতি ও উপকরণ ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব থেকে কতটা উপকার লাভ করা হচ্ছে এবং একে মানব জাতির জন্য কতটা উপকারী ও কার্যকর বানানো হচ্ছে। মানুষের অবস্থা ঐসব শক্তি ও উপকরণের বর্তমানে কয়েক শতাব্দী পূর্বের লোকদের চাইতে কতটা উত্তম। এর উত্তর একজন পাশ্চাত্য মনীষী, লেখক ও সমালোচকের ভাষায় দেওয়াই সমীচীন হবেঃ

“নিঃসন্দেহে আমরা অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ও দ্রুত গতিতে স্থান থেকে স্থানান্তরে ভ্রমণ করতে পারি। কিন্তু এটাও দেখার বিষয়, যেসব স্থান আমরা ভ্রমণ করি সেগুলোর খুব কমই ভ্রমণ উপযোগী। এতে কোনই সন্দেহ নেই যে, পর্যটকদের জন্য পৃথিবী খুবই সংকীর্ণ ও তার রশি সংকুচিত হয়ে গেছে। এক জাতি অন্য জাতির কাছাকাছি এসে গেছে এবং তাদের পা একে অন্যের দহলিজে। কিন্তু এর ফল এই, জাতি-গোষ্ঠীগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক পূর্বের তুলনায় অনেক বেশী অসুন্দর ও অপ্রস্ফুটিত। সে সব উপকরণ যার সাহায্যে আমরা আমাদের প্রতিবেশী জাতিগোষ্ঠীগুলোর সম্পর্কে সরাসরি ওয়াকিফহাল হতে পারি সেগুলো উল্টো গোটা দুনিয়াটাকেই যুদ্ধের দাবানলের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। আমরা আওয়াজ পেঁৗছুবার জন্য যন্ত্র আবিষ্কার করেছি এবং এর সাহায্যে আমরা প্রতিবেশী জাতিগুলোর সঙ্গে কথা বলছি। কিন্তু এর পরিণতি হয়েছে এই, আজ প্রতিটি জাতিগোষ্ঠী বাতাসকে পূর্ণ শক্তিতে প্রতিবেশী জাতিগুলোকে উৎপীড়ন করতে ও বিরক্ত করতে কাজ লাগাচ্ছে। তারা এই চেষ্টায় থাকে যে, এগুলো অপরাপর জাতিগুলোকে তাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রাধান্য মেনে নিতে বাধ্য করুক।১

[1. Guide to modern wickedness. p. 247. ]

“উড়ো জাহাজকে দেখুন, বাতাসে ভর করে আসমানের বুকে উড়ে বেড়াচ্ছে। আপনি ধারণা করবেন, এর আবিষ্কারক তার জ্ঞান, নৈপুণ্য ও শিল্প-কুশলতার দিক দিয়ে মানুষ নয়, মনুষ্য-ঊর্ধ্ব কোন সত্তা ছিল এবং যারা এতে প্রথম আরোহণ করে আকাশে উড়েছিল। এতে কোনই সন্দেহ নেই, তাদের উচ্চ মনোবল, অটুট সংকল্প ও ইচ্ছাশক্তি ও দুঃসাহস অত্যন্ত প্রশংসনীয়। কিন্তু এখন আপনি একটু সেই সব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পর্যালোচনা করুন যার আওতাধীন এই উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে ব্যবহৃত হবে। সেসব উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কী? আকাশ থেকে বোমা বর্ষণ, মানব দেহগুলোকে খণ্ড-বিখণ্ডকরণ, জীবিতদের জীবন হরণ, মানব দেহগুলোকে ভস্মীভূতকরণ, বিমান থেকে বিষাক্ত গ্যাস নিক্ষেপণ এবং প্রতিরক্ষায় অসমর্থ দুর্বলদেরকে ধ্বংস করা। এসব লক্ষ্য তো কেবল আহমকদের হতে পারে অথবা শয়তানদের (কোন মানুষের কিছুতেই নয়)।

“এখন দেখতে হবে, ভাবী কালের ঐতিহাসিক এ সম্পর্কে কি রায় দেন, আমরা ধাতব পদার্থ ও স্বর্ণ কিভাবে ব্যবহার করতাম। ঐতিহাসিক লিখবেন, আমরা এমন উন্নতি করেছিলাম, আমরা বেতার টেলিগ্রাফীর মাধ্যমে স্বৰ্ণ সম্পর্কে তথ্য দিতে পারতাম। তিনি এমন চিত্র পেশ করবেন যা দেখাবে, ব্যাংকের লোকেরা কী নিপুণভাবে স্বর্ণের ওজন করত ও হিসাব রাখত। তিনি এই অস্বাভাবিক ও বিস্ময়কর পন্থা সম্পর্কে আলোচনা করবেন যার সাহায্যে আমরা প্রত্যহ অভিগমন প্রক্রিয়ার আইন ফাকি দিয়ে এক রাজধানী থেকে আরেক রাজধানীতে স্বর্ণ স্থানান্তরিত করতে থাকতাম। তিনি লিখবেন, এই অর্ধ বন্যরা শিল্প-প্রযুক্তিতে খুবই দক্ষ ও অভিজ্ঞ ছিল, ছিল দুঃসাহসী। কিন্তু এই আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ব্যর্থ ছিল যা স্বর্ণের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখবে এবং একে সঠিকভাবে বণ্টন করতে প্রয়াসী ছিল। তাদের কেবল এতটুকু চিন্তা ছিল, তারা মূল্যবান ধাতুসমূহকে সম্ভাব্য দ্রুততার সঙ্গে প্রোথিত করবে। তারা স্বর্ণ ও অন্যান্য ধাতব পদার্থ আফ্রিকায় যমীনের বুক চিরে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে উত্তোলন করত এবং লন্ডন, নিউ ইয়র্ক ও প্যারিসের পাতাল কুঠরিসমূহে প্রোথিত করত।১

[1. Guide to modem wickedness. p. ]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন