hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

৭৯
জীবন সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মপন্থা
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের অনুসারী এই প্রথম দলটি এমনই ছিলেন যে, তাদের ছায়ায় ও তাঁদের হকুমতে মানবগোষ্ঠী পরিপূর্ণ সফলতা ও সৌভাগ্য লাভ করে এবং তাঁদের নেতৃত্বে তাদের প্রতিটি পদক্ষেপই যথাযথ স্থানে পড়ে এবং যথার্থ মনযিলের দিকেই উত্থিত হয়। পৃথিবী সর্ব প্রকার প্রশান্তি, তুষ্টি ও প্রাচুর্য, কল্যাণ ও বরকত লাভ করে। মানুষের কল্যাণ সাধন, তত্ত্বাবধান ও হেফাজতের ব্যাপারে তাঁরা ছিলেন পরিপূর্ণ যত্নবান। তারা কোন কোন ধর্মানুসারীদের ন্যায়, পার্থিব জীবনকে অভিশাপের বেড়ি মনে করতেন না। আবার তারা একে আরাম-আয়েশ ও আনন্দ উপভোগের সর্বশেষ সুযোগ বলেও মনে করতেন না, বরং তারা এর এক একটি মিনিটকে দামী মনে করতেন। এর সুস্বাদু বস্তু-সামগ্রী ও নেয়ামতরাজিকে অন্য কোন দিনের জন্য তুলে রাখতেন। ঠিক তেমনি তাঁরা এই জীবনকে কোন সাবেক আমলের কৃত পাপের শাস্তিস্বরূপ অনিবার্য বিধিলিপিও মনে করতেন না। অধিকন্তু বস্তুপূজারী জাতিগুলোর ন্যায় তাঁরা দুনিয়াকে লুটের মালও মনে করতেন না যার ওপর বুভুক্ষের ন্যায় হুমড়ি খেয়ে পড়বেন এবং যমীনের বুকে মজুদ সম্পদ ও ধনভাণ্ডারকে তারা লাওয়ারিশ মালও মনে করতেন না যা লুট করবার জন্য আঁপিয়ে পড়বেন। তাঁরা পৃথিবীর দুর্বল জাতিগুলোকে শিকার ভাবতেন না যা শিকার করবার জন্য অন্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবেন। তাদের বদ্ধমূল বিশ্বাস ছিল যে, এই জীবন আল্লাহর দেয়া এক নেয়ামত যার মধ্যে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার এবং মনুষ্যত্বের সর্বোচ্চ স্তরে উপনীত হবার তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, অবকাশ দেওয়া হয়েছে কাজের ও চেষ্টা-সাধনার, যার পরে তার জন্য আর কোন অবকাশ নেই।

( ٱلَّذِی خَلَقَ ٱلۡمَوۡتَ وَٱلۡحَیَوٰةَ لِیَبۡلُوَكُمۡ أَیُّكُمۡ أَحۡسَنُ عَمَل اۚ وَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡغَفُورُ )

[Surah Al-Mulk 2]

“যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, তোমাদের পরীক্ষা করবার জন্য কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম?" (সূরা মুলকঃ ২ আয়াত)

( إِنَّا جَعَلۡنَا مَا عَلَى ٱلۡأَرۡضِ زِینَة لَّهَا لِنَبۡلُوَهُمۡ أَیُّهُمۡ أَحۡسَنُ عَمَل ࣰا)

[Surah Al-Kahf 7]

“পৃথিবীর ওপর যা কিছু আছে আমি সেগুলোকে ওর শোভা করেছি, মানুষকে এই পরীক্ষা করবার জন্য যে, ওদের মধ্যে কর্মে কে শ্রেষ্ঠ।” (সূরা কাহফঃ৭)।

তারা এই জগতকে আল্লাহর রাজ্য মনে করতেন যেখানে আল্লাহ তাদেরকে প্রথমত মানুষ, অতঃপর মুসলমান হিসেবে আপন প্রতিনিধি ও পৃথিবীবাসীর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করেছেন।

( هُوَ ٱلَّذِی خَلَقَ لَكُم مَّا فِی ٱلۡأَرۡضِ جَمِیع ࣰا)

[Surah Al-Baqarah 29]

“তিনি পৃথিবীর সব কিছু তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন।” (সূরা বাকারাঃ ২৯)।

( وَلَقَدۡ كَرَّمۡنَا بَنِیۤ ءَادَمَ وَحَمَلۡنَـٰهُمۡ فِی ٱلۡبَرِّ وَٱلۡبَحۡرِ وَرَزَقۡنَـٰهُم مِّنَ ٱلطَّیِّبَـٰتِ وَفَضَّلۡنَـٰهُمۡ عَلَىٰ كَثِیر مِّمَّنۡ خَلَقۡنَا تَفۡضِیل ࣰا)

[Surah Al-Isra’ 70]

“আমি তো আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি; স্থলে ও সমুদ্রে ওদের চলাচলের বাহন দিয়েছি, ওদেরকে উত্তম রিক দান করেছি এবং আমি যাদেরকে সৃষ্টি করেছি তাদের অনেকের ওপর ওদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি।” (সূরা বনী ইসরাঈলঃ ৭০)

( وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ مِنكُمۡ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَیَسۡتَخۡلِفَنَّهُمۡ فِی ٱلۡأَرۡضِ كَمَا ٱسۡتَخۡلَفَ ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡ وَلَیُمَكِّنَنَّ لَهُمۡ دِینَهُمُ ٱلَّذِی ٱرۡتَضَىٰ لَهُمۡ وَلَیُبَدِّلَنَّهُم مِّنۢ بَعۡدِ خَوۡفِهِمۡ أَمۡن اۚ یَعۡبُدُونَنِی لَا یُشۡرِكُونَ بِی شَیۡـٔ اۚ وَمَن كَفَرَ بَعۡدَ ذَ  ٰ⁠ لِكَ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ )

[Surah An-Nur 55]

“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎ কর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দীনকে যা তিনি তাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্য নিরাপত্তা দান করবেন। তারা আমার ইবাদত করবে, আমার কোন শরীক করবে।” (সূরা নূরঃ ৫৫)।

তাদেরকে আল্লাহ তা'আলা ভূপৃষ্ঠের সম্পদ থেকে কোনরূপ অপচয় না করে ও বাহুল্য ব্যয় না করে উপকৃত হবার অধিকার দিয়েছেন।

( ۞ یَـٰبَنِیۤ ءَادَمَ خُذُوا۟ زِینَتَكُمۡ عِندَ كُلِّ مَسۡجِد وَكُلُوا۟ وَٱشۡرَبُوا۟ وَلَا تُسۡرِفُوۤا۟ۚ إِنَّهُۥ لَا یُحِبُّ ٱلۡمُسۡرِفِینَ )

[Surah Al-A’raf 31]

“আহার করবে, পান করবে, কিন্তু অপচয় করবে না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না।” (সূরা আ'রাফঃ ৩১)

( قُلۡ مَنۡ حَرَّمَ زِینَةَ ٱللَّهِ ٱلَّتِیۤ أَخۡرَجَ لِعِبَادِهِۦ وَٱلطَّیِّبَـٰتِ مِنَ ٱلرِّزۡقِۚ قُلۡ هِیَ لِلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ فِی ٱلۡحَیَوٰةِ ٱلدُّنۡیَا خَالِصَة یَوۡمَ ٱلۡقِیَـٰمَةِۗ كَذَ  ٰ⁠ لِكَ نُفَصِّلُ ٱلۡـَٔایَـٰتِ لِقَوۡم یَعۡلَمُونَ )

[Surah Al-A’raf 32]

“বলুন, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য যেসব শোভার বস্তু ও বিশুদ্ধ জীবিকা সৃষ্টি করেছেন তা কে হারাম করেছে? বলুন, ‘পার্থিব জীবনে, বিশেষ করে কিয়ামতের দিনে এই সমস্ত তাদের জন্য, যারা ঈমান আনে।”(সূরা আরাফঃ৩২)

তাদেরকে দুনিয়ার তাবৎ জাতিগোষ্ঠী ও মানব সম্প্রদায়ের ওপর তত্ত্বাবধায়ক ও অভিভাবক নিযুক্ত করেছেন এবং এ ব্যাপারে তারা আদিষ্ট যে, তাঁরা তাঁদের জীবনের গতি, চরিত্র ও প্রবণতার পর্যালোচনা করতে থাকবেন, খতিয়ান গ্রহণ করবেন, যারা সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হবে তাদেরকে তাঁর সিরাতে মুস্তাকীমে টেনে আনবেন, যারা সীমা অতিক্রম করবে তাদের ভারসাম্যময় সীমারেখার মধ্যে ফিরিয়ে আনবেন, বক্রতা দূর করবেন, ফাঁক-ফোকর পূর্ণ করতে থাকবেন, শক্তিমানের কাছ থেকে দুর্বলের হক আদায় করে দেবেন, জালেম থেকে মজলুমের ইনসাফ করাবেন এবং আল্লাহর যমীনে ন্যায়, শান্তি ও সুবিচার কায়েন রাখবেন।

( كُنتُمۡ خَیۡرَ أُمَّةٍ أُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَتَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِۗ وَلَوۡ ءَامَنَ أَهۡلُ ٱلۡكِتَـٰبِ لَكَانَ خَیۡر ا لَّهُمۚ مِّنۡهُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَأَكۡثَرُهُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ )

[Surah Aal-E-Imran 110]

“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানব জাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে; তোমরা সৎ কাজের জন্য নির্দেশ দান কর, অসৎ কাজে নিষেধ কর আর আল্লাহয় বিশ্বাস কর।” (সূরা আলে-ইমরানঃ ১১০)

( ۞ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ كُونُوا۟ قَوَّ  ٰ⁠ مِینَ بِٱلۡقِسۡطِ شُهَدَاۤءَ لِلَّهِ )

[Surah An-Nisa’ 135]

“হে মুমিনগণ! তোমরা ন্যায় বিচারে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর সাক্ষীস্বরূপ।” (সূরা নিসাঃ ১৩৫)

একজন য়ুরোপীয় নও মুসলিম পণ্ডিত (মুহাম্মদ আসাদ) মুসলমানদের এই বৈশিষ্ট্যকে, জীবন সম্পর্কে এই ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মপন্থাকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। এখানে তার কিছু অংশ উদ্ধৃত করা সমীচীন মনে করছিঃ

“ইসলাম খ্রিস্ট ধর্মের মত দুনিয়াকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখে না। ইসলামের প্রদত্ত শিক্ষামালা এই যে, আমরা পার্থিব জীবনের মূল্য নিরূপণের ক্ষেত্রে বর্তমান পাশ্চাত্য সভ্যতার ন্যায় যেন বাড়াবাড়ি না করি। খ্রিস্ট ধর্ম পার্থিব জীবনের নিন্দা করে এবং এর প্রতি ঘৃণার ভাব পোষণ করে। বর্তমান য়ুরোপ তথা পাশ্চাত্য জগত খ্রিস্ট ধর্মের মূল প্রাণসত্তার পরিপন্থী জীবনের ওপর এমনভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে যেমন কোন ক্ষুধার্ত মানুষ দীর্ঘ অনাহারের পর আহার্যের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সে খাবার গোগ্রাসে গিলতে থাকে বটে, কিন্তু তাকে সে মর্যাদা দিতে জানে না। ইসলাম এই উভয়টির বিপরীতে জীবনকে প্রশান্তি ও সম্মানের দৃষ্টিতে দেখে। সে জীবনকে পূজা করে না, বরং এক উচ্চতর জীবনের পথে একটি অপরিহার্য মনযিল বলে গণ্য করে। সেজন্য মানুষের পক্ষে একে উপেক্ষা করা কিংবা অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখা এবং এই পার্থিক জীবনকে অসম্মান করা ও অমর্যাদা করা অনুচিত। জীবনের সফরে আমাদের এই দুনিয়া অতিক্রম করে যেতে হবে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তা নির্ধারিত হয়েই আছে। সুতরাং মানুষের জীবনের বিরাট মূল্য রয়েছে। কিন্তু আমাদের একথা ভুলে গেলে চলবে না যে, এটা কেবল একটা মাধ্যম ও যন্ত্রমাত্র। এর মূল্য কেবল ততটুকুই যতটুকু মূল্য হয় মাধ্যম ও যন্ত্রের; এর বেশি নয়। ইসলাম এই বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করে যে, আমার রাজত্ব কেবল এই দুনিয়াতেই সীমাবদ্ধ এবং সে খ্রিস্ট ধর্মের এই। ধারণাও সমর্থন করে না যে, আমার রাজত্ব এ পার্থিব জীবন নয়। আর তাই সে পার্থিব জীবনকে অবজ্ঞা করে। ইসলাম এই দুই চরম প্রান্তিক মতবাদের বিপরীতে মধ্যম পন্থার অনুসারী হিসেবে এ দুয়ের মাঝামাঝি অবস্থান করে।

কুরআনুল করীম আমাদেরকে এই ব্যাপক অর্থপূর্ণ দো'আ করতে শেখায়ঃ

( رَبَّنَاۤ ءَاتِنَا فِی ٱلدُّنۡیَا حَسَنَة وَفِی ٱلۡـَٔاخِرَةِ حَسَنَة ࣰ )

[Surah Al-Baqarah 201]

“হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দাও এবং আখিরাতে কল্যাণ দাও।” (সুরা বাকারাঃ ২০১)

‘এই দুনিয়া ও এর যাবতীয় বস্তুসামগ্রীকে সম্মান প্রদান কোনভাবেই আমাদের আধ্যাত্মিক প্রয়াস ও আত্মিক চেষ্টা-সাধনার পথের প্রতিবন্ধক নয়। বস্তুগত উন্নতি- অগ্রগতি ও প্রাচুর্য পরম কাক্ষিত যেমন নয় তেমনি নয় অনাকাঙ্ক্ষিত। আমাদের সকল চেষ্টা-সাধনার একমাত্র লক্ষ্য এই হওয়া উচিত যেন এমন ব্যক্তিগত ও সামাজিক অবস্থা ও উপকরণ সৃষ্টি হয় এবং এমন পরিবেশ কায়েম হয়ে যায় আর তেমন অবস্থা ও পরিবেশ বিদ্যমান থাকলে আমরা তা কায়েম রাখব যা মানুষের নৈতিক শক্তির উন্নতি ও ক্রমবিকাশে সহায়ক হতে পারে। এই মূলনীতি অনুসারে ইসলাম মুসলমানদের মধ্যে ছোট বড় প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে নৈতিক দায়িত্ববোধ সৃষ্টি করতে চায়। ইসলামের ধর্মীয় বিধান বাইবেলের এই বিভাজনকে আদৌ সমর্থন করে না, “সীজারের প্রাপ্য সীজারকে দাও আর আল্লাহর প্রাপ্য আল্লাহকে দাও।” কেননা ইসলাম আমাদের জীবনের অনিবার্য প্রয়োজনগুলোকে নৈতিক ও কার্যকর প্রকরণসমূহের মধ্যে বিভক্ত করার পক্ষপাতী নয়। ইসলামের মতে যে কোন একটি বাছাইয়ের অধিকার রয়েছে আর তাহলো এই যে, সে হয় সত্যকে গ্রহণ করবে অথবা মিথ্যাকে, হয় সে হক বেছে নেবে নয়তো বাতিলকে। এর মাঝামাঝি বলে কিছু নেই। এজন্য সে আমল তথা কর্মের ওপর জোর দেয়। কেননা তা নৈতিকতারই অংশ বিশেষ। ইসলামী শিক্ষামালার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রত্যেক মুসলমানকে পরিবেশ ও চতুম্পার্শ্বের ঘটনাবলীর ব্যাপারে ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে দায়ী ও জওয়াবদিহি করার দায়িত্বশীল ও ধর্মীয় চেষ্টা-সাধনার নিমিত্ত আদিষ্ট এবং প্রতিটি মুহূর্তে ও প্রতিটি ক্ষেত্রে সত্যের প্রতিষ্ঠা ও মিথ্যার উৎসাদনের জন্য দায়িত্বশীল ভাবতে হবে। কুরআনুল করীমে ইরশাদ হচ্ছেঃ

( كُنتُمۡ خَیۡرَ أُمَّةٍ أُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَتَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِۗ وَلَوۡ ءَامَنَ أَهۡلُ ٱلۡكِتَـٰبِ لَكَانَ خَیۡر ا لَّهُمۚ مِّنۡهُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَأَكۡثَرُهُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ )

[Surah Aal-E-Imran 110]

“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানব জাতির জন্যই তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে; তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দান কর, অসৎ কাজে নিষেধ কর এবং আল্লাহয় বিশ্বাস কর।” (সূরা আলে-ইমরানঃ ১১০)

“এটা ইসলামের আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ডে ইসলামের প্রাথমিক বিজয় এবং ইসলামী রাজতন্ত্রকে নৈতিক যৌক্তিকতা প্রমাণ করে। অনন্তর ইসলাম সাম্রাজ্যবাদী একথাই যদি কেউ বলতে চায়, তাহলে ইসলাম সাম্রাজ্যবাদীই ছিল। কিন্তু এ সাম্রাজ্যবাদ আধিপত্যবাদের স্পৃহাতড়িত নয় কিংবা তা অর্থনৈতিক ও জাতীয় স্বার্থপরতাসঞ্জাতও নয়। ইসলামের প্রথম যুগের মুজাহিদবৃন্দকে যে জিনিস যুদ্ধের মাঠে টেনে নিয়ে যেত বড়ই উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে তা অপরের সম্পদ ও পরিশ্রমলব্ধ সামগ্রীর বিনিময়ে নিজেদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধির লেভি বা লালসায় নয়। তাদের লক্ষ্য এছাড়া আর কিছুই ছিল না যে, এমন এক পার্থিব কাঠামো নির্মাণ করতে হবে, যেখানে মানুষের জন্য সর্বোত্তম আধ্যাত্মিক উন্নতি ও বিকাশ লাভ সম্ভব হয়। ইসলামী শিক্ষামালার দৃষ্টিকোণ থেকে নৈতিকতা ও মর্যাদার জ্ঞান মানুষের কাছে নৈতিক দায়িত্ববোধের দাবি জানায়। এটা আত্মমর্যাদাহীনতার ব্যাপার যে, মানুষ ভাসাভাসাভাবে ন্যায় ও অন্যায় এবং হক বাতিলের মাঝে পার্থক্য করবে, এরপর সত্য ও ন্যায়ের উন্নতি এবং অন্যায় ও অসত্যের ধ্বংসের জন্য চেষ্টা করবে না। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষ যদি ন্যায় ও সত্যের বিজয় ও হুকুমত প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণান্তকর পরিশ্রম ও দৌড়-ঝাপ। করে তাহলে তা জীবন লাভ করে এবং ফলেফুলে শোভিত হয়। আর যদি এর সাহায্য করতে ও শক্তি যোগাতে কার্পণ্য করে এবং এর সাহায্য-সমর্থনে হাত গুটিয়ে নেয় তাহলে তার পতন ঘটবে এবং তা সম্পূর্ণরূপে পরাভূত ও পর্যদস্ত হয়ে যাবে।”১

[১. Islam At the Cross Roads, by Mohammad Asad, fomerly Leopold Weiss, p. 26-29.]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন