hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

৭৮
সাহাবায়ে কিরাম (রা)-এর বৈশিষ্ট্য
সাহাবায়ে কিরাম (রা)-এর এই বৈশিষ্ট্য ছিল যে, তারা ধর্ম ও নৈতিকতা এবং শক্তি ও রাষ্ট্রনীতির পরিপূর্ণ প্রতিচ্ছবি ছিলেন। এসবের বিক্ষিপ্ত গুণাবলী তাঁদের মধ্যে একই সঙ্গে সমাবেশ ঘটেছিল। তাদের মধ্যে মানবতা সকল শাখা-প্রশাখা ও সৌন্দর্যসহ দৃশ্যমান ছিল। এই নৈতিক, চারিত্রিক ও উন্নততর আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ এইরূপ বিস্ময়কর ও অনন্যভারসাম্য (যা মানুষের মধ্যে কুত্রাপি দৃষ্টিগোচর হয়), এরকম অস্বাভাবিক ব্যাপকতা যার উদাহরণ ইতিহাসে খুব কমই মেলে এবং এরপর পরিপূর্ণ বস্তুগত প্রস্তুতি ও বিস্তৃত জ্ঞান-বুদ্ধির ভিত্তিতে এটা সম্ভব ছিল যে, তাঁরা মানব সম্প্রদায়গুলোকে তাদের উন্নততর আধ্যাত্মিক, নৈতিক ও বস্তুগত লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও পরিপূর্ণতা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে। অনন্তর আমরা ইতিহাসে খেলাফতে রাশেদার যুগ থেকে বেশি সর্বদিক দিয়ে পরিপূর্ণ ও সফল কোন যুগের সন্ধান পাইনা এই যুগে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক, ধর্মীয় ও জ্ঞানগত এবং রূহানী উপায়-উপকরণাদি ইনসানে কামিল ও সুস্থ সভ্যতা-সংস্কৃতি সৃষ্টির ক্ষেত্রে একে অন্যের সহযোগী ছিল, ছিল সাহায্যকারী। এই হুকুমত যা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম হুকুমতগুলোর অন্তর্গত ছিল এবং এরকম রাজনৈতিক বস্তুগত শক্তি সহকারে যা সমকালীন সমস্ত শক্তির মুকাবিলায় শ্রেষ্ঠ ও অগ্রগামী ছিল, উন্নততর নৈতিকতার মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হতো, বিবেচিত হতো নৈতিক শিক্ষামালা, জীবন-যিন্দেগী ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার তুলাদণ্ড হিসেবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের সাথে নৈতিক চরিত্র ও শ্রেষ্ঠত্বও তার শীর্ষ বিন্দুতে উপনীত হয়েছিল। বিজয়ের ব্যাপ্তি ও সভ্যতা-সংস্কৃতির উন্নতির সাথে সাথে নীতি-নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতার উন্নতিও অব্যাহত ছিল। অনন্তর ইসলামী হুকুমতের অস্বাভাবিক বিস্তৃতি, জনসংখ্যার চরম বৃদ্ধি, আরাম-আয়েশ ও বিলাসী দ্রব্যসামগ্রী ও উপায়-উপকরণের প্রাচুর্য ও আকষর্ণ সত্ত্বেও অপরাধমূলক ও অনৈতিক কার্যকলাপের ঘটনা খুব কমই ঘটত। ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির এবং ব্যক্তির সঙ্গে সমাজের পারস্পরিক সম্পর্ক বিস্ময়কর রকম উত্তম ছিল। এটি ছিল এক আদর্শ যুগ যার চাইতে উন্নততর যুগের কথা মানুষ স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি এবং এর চাইতে অধিকতর মুবারক ও প্রাচুর্যপূর্ণ যমানার কথা কল্পনায়ও আসেনি।

এ ছিল কেবল সেসব লোকের জীবন-চরিত্রের অমীয় ফসল যারা হুকুমত পরিচালনা করতেন এবং যারা ছিলেন সভ্যতা-সংস্কৃতিক নিয়ন্ত্রক ও তত্ত্বাবধায়ক। ফসল ছিল তাঁদের আকীদা-বিশ্বাস, প্রশিক্ষণ, সরকার পদ্ধতি ও রাষ্ট্রনীতির মৌলনীতিমালার এজন্য যে, তারা যেখানেই থাকতেন এবং যে অবস্থায় থাকতেন, ধর্ম ও নীতি-নৈতিকতার সর্বোত্তম নমুনা হতেন। তাঁরা শাসক হিসেবেই থাকুন অথবা সাধারণ একজন কর্মচারী হিসেবে, পুলিশই হোন অথবা সৈনিক, তাঁদের সর্বদাই সংযত, শুচি-শুভ্র, চরিত্রবান, আমানতদার, সততা ও বিশ্বস্ততার প্রতিমূর্তি, আল্লাহভীরু ও বিনয়ী হিসেবেই পাওয়া যেত।

জনৈক রোমক সর্দার নিম্নোক্ত ভাষায় মুসলিম সৈনিকদের প্রশংসা করেছেনঃ

রাত্রিবেলা তুমি তাদেরকে ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল দেখবে আর দিনের বেলা দেখবে রোযাদার হিসেবে, প্রতিজ্ঞা পালনকারী হিসেবে। তারা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দেয় আর মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে। নিজেদের মধ্যে ন্যায় ও সুবিচার করে আর সাম্যের পরিচয় দেয়।১

অন্যজন নিম্নোক্ত ভাষায় সাক্ষ্য দিচ্ছেনঃ

“দিনের বেলা তাঁরা ঘোড়সওয়ার মর্দে মুজাহিদ আর রাতের বেলা ইবাদতগুযার। নিজেদের বিজিত এলাকায়ও তারা মূল্য দিয়ে আহার্য দ্রব্য ক্রয়। করে খায়। কোথাও প্রবেশ করতে হলে সর্বাগ্রে সালাম প্রদান করে এবং যুদ্ধের ময়দানে এমন দৃঢ় ও সংঘবদ্ধভাবে লড়াই করে যে, শত্রু নিপাত করেই ছাড়ে।”২

তৃতীয় আরেকজন নিম্নোক্ত ভাষায় সাহাবায়ে কিরাম (রা)-এর প্রশংসা করেছেন,

রাত্রিকালে দেখলে দেখতে পাবে যেন দুনিয়ার সাথে তাদের কোন সম্পর্কই নেই এবং ইবাদত-বন্দেগী ছাড়া তাদের আর কোন কাজই নেই। আর দিনের বেলা তাদের দেখতে পাবে তারা অশ্বপৃষ্ঠে আসীন, মনে হবে যেন এটাই তাদের একমাত্র কাজ। শ্রেষ্ঠতম ও নিপুণ তীরন্দায, বল্লম নিক্ষেপকারী হিসেবে তাদের কোন জুড়ি নেই। আল্লাহর স্মরণে তারা এমন মগ্ন ও সরব যে, তাঁদের মজলিসে কারুর কথা শোনাও দুষ্কর।৩

এই নৈতিক প্রশিক্ষণের ফল হয়েছিল এই যে, মাদায়েন বিজয়ের পর পারস্য সম্রাট কিসরার মণি-মুক্তা ও হীরকখচিত রাজমুকুট এবং বসন্তকালের দৃশ্য-শোভিত গালিচা যার মূল্য ছিল লক্ষ আশরাফী যা একজন সাধারণ সৈনিকের হস্তগত হয়। কিন্তু কি সাধ্য যে সে আত্মসাৎ করবে। সৈনিক এগুলো তার কমান্ডারের কাছে সোপর্দ করে এবং কমান্ডার সেটা খলীফা ওমর (রা)-এর কাছে পৌঁছে দেন। খলীফা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান এবং বলেন, যে সমস্ত লোক এগুলো কমান্ডারের হাতে তুলে দিয়েছে তাদের আমানতদারী প্রশংসনীয় বটে।৪

[১. আহমদ ইবন মারওয়ান মালেকী বর্ণিত; ]

[২. আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া, ৭ম খণ্ড, ৫৩ পৃ. ]

[৩. প্রাগুক্ত ১৬ পৃ.। ]

[৪. সীরাত-ই ওমর ইবনুল খাত্তাব, ইবনে জওযী কৃত। ]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন