hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

৯২
সালাহুদ্দীনের নেতৃত্ব
নূরুদ্দীনের পর তাঁরই হাতে গড়া ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সুলতান সালাহুদ্দীন খ্রিস্টান জগতের মুকাবিলায় মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। অবশেষে বিভিন্ন যুদ্ধের পর তিনি হিত্তীন (ফিলিস্তীন) প্রান্তরে ১৪ই রবিউল আউয়াল, ৫৮৩ হি./৪ঠা জুলাই ১১৮৭ খ্রি. ক্রুসেডারদের এমন শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন যে, তাদের কোমর ভেঙে যায় এবং তাদের ভাগ্যের চূড়ান্ত ফয়সালা শুনিয়ে দেয়। লেনপুল নিম্নোক্ত ভাষায় এর ছবি এঁকেছেনঃ

"A Single saracen was seen dragging some thirty Christians he had taken prisoners and tied together with ropes. The dead lay in heaps, like stones upon stones, whilst mutilated heads strewed the ground like a plentiful crop of melons,"

“এক একজন মুসলিম সৈনিক তিরিশ জনের মত খ্রিস্টান সৈনন্যর প্লাটুন, যাদেরকে সে স্বহস্তে বন্দী করেছিল, তাবুর দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছিল। নিহত ক্রুসেডারদের লাশ ও তাদের কর্তিত হাত-পা এমনভাবে স্তুপাকারে পড়েছিল যেমনভাবে পাথরের পর পাথর স্তুপাকারে পড়ে থাকে। কর্তিত ও খণ্ড-বিখণ্ড লাশ এরূপ বিক্ষিপ্তভাবে মাটিতে পড়ে ছিল যেরূপ তরমুজের ক্ষেতে তরমুজ বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকে।”১

যুদ্ধের এই রক্তাক্ত ময়দানে তিরিশ হাজার লোক মারা গিয়েছিল বলে দীর্ঘদিন যাবত প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল।

হিত্তীন যুদ্ধে বিজয় লাভের পর সুলতান সালাহুদ্দীন ২৭শে রজব তারিখে হি. ৫৮৩/১১৮৭ খ্রি. বায়তুল মুকাদ্দাস পুনরুদ্ধার করেন এবং সেই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করেন যা সুদীর্ঘ ৯০ বছর যাবত মুসলমানদের হৃদয়-মনকে অস্থির করে রেখেছিল। সুলতানের বিশ্বস্ত বন্ধু ও সাথী কাযী বাহাউদ্দীন ইবন শাদ্দাদ বলেনঃ

“এ ছিল এক বিরাট বিজয়। এই পবিত্র মুহূর্তে বায়তুল মুকাদ্দাসে আলিম-উলামা, কামিল-ফাযিল ও মুসাফির-পর্যটকদের এক বিরাট সমাবেশ ঘটে। লোকেরা যখন জানতে পারল যে, সমুদ্রোপকূলবর্তী এলাকাসমূহ মুসলমানরা জয় করে ফেলেছে, তখন মিসর ও সিরিয়া থেকে উলামায়ে কিরাম দলে দলে বায়তুল মুকাদ্দাস অভিমুখে রওয়ানা হন। চতুর্দিকে দো'আ ও তকবীর-তাহলীল ধ্বনিত হচ্ছিল। ৯০ বছর পর বায়তুল মুকাদ্দাসে জুমুআর সালাত অনুষ্ঠিত হয় এবং কুব্বাতুস-সাখরার ওপর যেই ক্রস-কাষ্ঠ স্থাপন করা হয়েছিল তা নামিয়ে ফেলা হয়। সে এক আশ্চর্য দৃশ্য! ইসলামের বিজয় ও আল্লাহর সাহায্য খোলা চোখে দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল।”২

[১. সুলতান সালাহুদ্দীন, ২১৪ পৃ.; উর্দু সংস্করণ ১৮৯ পৃ.। ]

[২. আবুল ফিদা হামাৰীর ইতিহাস। ]

সুলতান সালাহুদ্দীন প্রদর্শিত এ সময়কার সদাশয়তা, উদারতা, মহত্ত্ব ও ইসলামী আখলাক-চরিত্রের কথা উল্লেখ করে ঐতিহাসিক লেনপুল বলেনঃ

"If the taking of Jerusalem were the only fact known about Saladin, it were enough to prove him the most chivalrous and great-hearted conqueror of his own and perhaps of any age."

“সুলতান সালাহুদ্দীনের সমস্ত গুণের ভেতর কেবল এই একটি গুণের কথা যদি দুনিয়া জানত, যদি জানতে পারত তিনি কীভাবে জেরুসালেমকে অনুগৃহীত করেছিলেন তাহলে তারা এক বাক্যে স্বীকার করত যে, সুলতান সালাহুদ্দীন কেবল তার যুগের নন, বরং সর্বযুগের সর্বাপেক্ষা উন্নত মনোবলসম্পন্ন হৃদয়বান মানুষ এবং বীরত্ব ও ঔদার্যের জীবন প্রতীক ছিলেন।”১

[১. সুলতান সালাহুদ্দীন, ২৩৪ পৃ.। ]

মুসলমানদের হাতে বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয় এবং হিত্তীন রণক্ষেত্রে খ্রিস্টানদের অবমাননাকর পরাজয়ে গোটা য়ুরোপে পুনরায় ক্রোধ ও জিঘাংসার আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। সমগ্র য়ুরোপ সিরিয়া (শাম)-এর মত ছোট্ট দেশটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এদের সকলের মুকাবিলায় ছিলেন একাকী সুলতান সালাহুদ্দীন, তাঁর আত্মীয়-বান্ধব ও কতিপয় মিত্র যারা গোটা মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকে খ্রিস্টান শক্তিকে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করে যাচ্ছিলেন।

অবশেষে পাঁচ বছরের অব্যাহত রক্তাক্ত যুদ্ধের পর ১১৯২ খ্রিস্টাব্দে রমলা নামক স্থানে ক্লান্ত ও অবসন্ন উভয় পক্ষের মধ্যে সন্ধি স্থাপিত হয়। বায়তুল মুকাদ্দাসসহ মুসলমানদের বিজিত শহর ও দুর্গগুলো আগের মতই মুসলমানদের হাতে থাকে।

সমুদ্রোপকূলবর্তী ক্ষুদ্র রাজ্য একরের নিয়ন্ত্রণ খ্রিস্টানদের হাতে ছিল। বাদ বাকি গোটা দেশই ছিল সুলতান সালাহুদ্দীনের অধিকারে। সুলতান সালাহুদ্দীন যে দায়িত্ব ও খেদমত নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন এবং সত্যি বলতে কি, আল্লাহ তা'আলা যে কর্মভার তার কাঁধে ন্যস্ত করেছিলেন তাঁর হাতে তা পূর্ণতা লাভ করে। লেনপুল বলেনঃ

The Holy War was over; the five years' contest ended. Before the great victory at Hittin in July, 1187. not an inch of Palestine west of the Jordan was in the Muslim's hands. After the peace of Ramla in September, 1192, the whole land was theirs except an arrow strip of coast from Tyre to Jaffa. Saladin had no cause to be ashamed of the treaty.

“পাঁচ বছরের অব্যাহত রক্তারক্তির পর অবশেষে পবিত্র যুদ্ধ (?) শেষ হলো। ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে হিত্তীনে মুসলমানদের বিজয়ের আগে জর্দান নদীর পশ্চিমে তাদের অধিকারে এক ইঞ্চি জায়গাও ছিল না। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে যখন রমলার সন্ধি স্থাপিত হয় তখন সূর থেকে শুরু করে য়াফা পর্যন্ত সমুদ্রোপকূল এলাকায় এক চিলতে ভূখণ্ড ছাড়া গোটা দেশটাই মুসলমানদের অধিকারে চলে গেল। এই সন্ধি স্থাপনের দরুন সালাহুদ্দীনের এতটুকু লজ্জিত হবার প্রয়োজন ছিল না।”১

সুলতান সালাহুদ্দীন সর্বোত্তম সাংগঠনিক যোগ্যতা ও নেতৃত্বসুলভ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন। তিনি কেবল সিপাহসালার ও বিজেতাই ছিলেন না, বরং জনপ্রিয় নেতা ও সকলের কাছেই গ্রহণযোগ্য সিপাহীও ছিলেন। কয়েক শতাব্দী পর বিক্ষিপ্ত ও বিস্রস্ত ইসলামী রাজ্য ও শক্তি এবং নানাভাবে বিভক্ত ও পরস্পর বিরোধী মুসলিম জাতিগোষ্ঠী ও গোত্রগুলোকে তিনি জিহাদের পতাকাতলে সমবেত করেন। সুদীর্ঘকাল পর তার নেতৃত্বে মুসলিম বিশ্ব একটি সুসংগঠিত ও সুশৃংখল আন্তরিকতাপূর্ণ যুদ্ধ করে যার লক্ষ্য ইসলামের হেফাজত ও জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ ছাড়া আর কিছু ছিল না। লেনপুল যথাযথ লিখেছেনঃ

"All the strength of Christendom concentrated in the third Crusade had not shaken Saladin's power. His soldiers may have murmured at their long months of hard and perilous service year after year, but they never refused to come to his summons and lay down their lives in his cause............."

“তৃতীয় ক্রুসেড যুদ্ধে সমগ্র খ্রিস্টান জগতের মিলিত শক্তি মুসলমানদের মুকাবিলায় অবতীর্ণ হয়। কিন্তু সালাহুদ্দীনের শক্তিতে তারা এতটুকু চিড় ধরাতে পারেনি। সালাহুদ্দীনের সৈন্যরা মাসের পর মাস কঠিন পরিশ্রম এবং বছরের পর বছর বিপদসঙ্কুল খেদমতে নিয়োজিত থাকার কারণে ক্লান্তি ও অবসাদে ভেঙে পড়েছিল বটে, কিন্তু তাদের মুখে অভিযোগের লেশমাত্র ছিল না। তুলব মাত্রই হাজির হতে এবং একটি নেক কাজে নিজেদের জীবন কুরবানী দিতে তাদের কেউ পিছপা হয়নি।”২

[১. সুলতান সালাহুদ্দীন, ৩৫৮, পৃ.। ]

[২. সুলতান সালাহুদ্দীন, ৩৫৮, পৃ.। ]

সম্মুখে অগ্রসর হয়ে তিনি বলেনঃ

Kurds, Turkmans, Arabs and Egyptians, they were all Moslem's and his servants when he called. In spite of their differences of race, their national jealousies and tribal pride, he had kept them together as one host-not without difficulty and, twice or thrice, a critical waver.

“কুর্দ, তুর্কমেন, আরব, মিসরীয় সমস্ত মুসলমানই ছিল সুলতানের খাদেম। তলব মাত্রই তারা খাদেমের মতই সুলতানের খেদমতে এসে হাজির হতো। কে কোন্ বংশের কিংবা কে কোন্ জাতিগোষ্ঠীর সেদিকে তাদের লক্ষ্য ছিল না। বর্ণ, বংশ, গোত্রগত বৈপরীত্য সত্ত্বেও সুলতান তাদেরকে এমন একটি অখণ্ড ও ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে পরিণত করেছিলেন যে, গোটা বাহিনী যেন এক আত্মায় লীন হয়ে গিয়েছিল। মনে হতো সবাই যেন একই জাতিগোষ্ঠীর সদস্য!”১

[১. সুলতান সালাহুদ্দীন, ৩১০-১১, পৃ.। ]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন