hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

২৫
শ্ৰেণীভেদ প্রথা
পৃথিবীর কোন জাতির ইতিহাসে এত সুস্পষ্ট শ্রেণী বৈষম্য, পেশা ও জীবনের কর্মের এমনতরো অনড় ও অটল বিভক্তি কমই দেখা গেছে, যেমনটা ভারতবর্ষের প্রাচীন ধর্মীয় ও সামাজিক বিধি-বিধানের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। জাতপাতের ভেদ বৈষম্য এবং একই পেশার যাতাকলে বন্দী হবার সূচনা বৈদিক যুগের শেষ দিকে শুরু হয়। আর্যরা তাদের বংশ ও বংশীয় বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রাখতে, এদেশে বিজেতা হিসেবে তাদের অবস্থানগত মর্যাদা কায়েম রাখতে এবং নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ও আধিপত্য অব্যাহত রাখার স্বার্থে শ্রেণীভেদ প্রথা ও জাতিগত বৈশিষ্ট্য অপরিহার্য জ্ঞান করে। ড. Gustave le Bon -এর ভাষায়ঃ

We have seen that, towards the close of the Vedic Age, occupation had started become more or less hereditary, and the germ of the caste system had been sown. The Vedic Aryans were alive to the need of maintaining the purity of their race by not mixing with the conquered peoples and when they advanced towards the east and subjugated vast populations, this need became still more manifest and the law-givers had to pay due regard to it. The Aryans understood the problems of race well; they had come to realize that if a ruling minority did not take proper care of itself, it was rapidly assimilated with the servile population and deprived of its identity.

“বৈদিক যুগের শেষ দিকে আমরা দেখেছি যে, বিভিন্ন পেশা কমবেশি পৈতৃক রূপ পরিগ্রহ করতে যাচ্ছিল এবং বর্ণভিত্তিক বিভাজন শুরু হয়ে গিয়েছিল যদিও তা পরিপূর্ণ রূপ পরিগ্রহ করে নি। বৈদিক আর্যদের এই ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল যে, তারা তাদের প্রাচীন বংশধারাকে বিজিত জাতি-গোষ্ঠীর সঙ্গে মিশ্রিত হবার হাত থেকে রক্ষা করবে এবং যেই মুহূর্তে এই স্বল্প সংখ্যক বিজেতা পূর্ব দিকে অগ্রসর হলো এবং তারা এদেশীয় জাতিগোষ্ঠীর এক বিরাট দলকে পরাভূত করল তখন এর প্রয়োজনীয়তা আরও বৃদ্ধি পেল এবং বিধায়কদের এর প্রতি লক্ষ্য রাখা

অপরিহার্য হয়ে দেখা দিল। বংশধারার সমস্যা আর্যরা বেশ ভাল বুঝেছিল। তারা আগেভাগেই জেনেছিল যে, যদি স্বল্প সংখ্যক বিজেতা কোন জাতিগোষ্ঠী নিজেদের স্বাতন্ত্র রক্ষা না করে তবে তারা যথাসত্বর বিজিত জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে হারিয়ে যায় এবং তাদের নাম-নিশানাও আর অবশিষ্ট থাকে না।”১

কিন্তু একে একটি সুবিন্যস্ত ও বিস্তৃত শাস্ত্রীয় বিধানের রূপ দানের কৃতিত্ব অবশ্যই মনুর। মনুজী যীশু খ্রিস্টের জন্মের তিন শ' বছর আগে ভারতবর্ষে ব্রাহ্মণ্য সভ্যতার উন্নতির চরম উৎকর্ষের যুগে ভারতীয় সমাজের জন্য এই বিধান প্রণয়ন করেন এবং দেশের তাবৎ জনগণ একে একবাক্যে গ্রহণ করে। সত্বরই এই বিধান দেশীয় আইন ও ধর্মীয় সংবিধানের মর্যাদা লাভ করে। এটাই সেই বিধান যাকে আমরা আজ ‘’মনুসংহিতা” নামে জানি।

মনু সংহিতায় চারটি শ্রেণীর কথা বলা হয়েছেঃ (১) ব্রাহ্মণ অর্থাৎ ধর্মীয় পুরোহিত শ্ৰেণী; (২) ক্ষত্রিয় অর্থাৎ লড়াকু বা যোদ্ধা শ্ৰেণী; (৩) বৈশ্য অর্থাৎ ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষিকর্মে নিয়োজিত শ্রেণী এবং (৪) শূছু যাদের নির্দিষ্ট কোন পেশা ছিল না, অপর তিন শ্রেণীর সেবা করাই ছিল তাদের কাজ। মনু সংহিতায় বলা হয়েছেঃ

“পরম স্রষ্টা পৃথিবীটাকে মঙ্গলার্থে আপন মুখ, বাহু, উরু ও পদযুগল থেকে যথাক্রমে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্রকে সৃষ্টি করেছেন।”২

“এই পৃথিবীর হেফাজতের জন্য তিনি এদের মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্য পৃথক পৃথক দায়িত্ব নির্ধারণ করেছেন।”৩

“ব্রাহ্মণের জন্য বেদের শিক্ষাদান এবং স্বয়ং নিজেদের ও অন্যের জন্য দেবতাদের উদ্দেশে নৈবেদ্য দেওয়া এবং অর্ঘ্য দেওয়া-নেওয়ার কর্তব্য নিরূপণ করেন।”৪

ক্ষত্রিয়দেরকে তিনি বিধান দেন, “তারা সৃষ্টিকুলকে রক্ষা করবে, অর্থ প্রদান করবে, বেদ পড়বে, কামনা-বাসনার শিকার হবে না।”৫

বৈশ্যদের ক্ষেত্রে তিনি এই বিধান দেন, “তারা গবাদি পশুর সেবা করবে, অর্ঘ্য দেবে, ভেট প্রদান করবে, বেদ পাঠ করবে, ব্যবসায়িক লেনদেন ও কৃষিকাজ করবে।”৬

“শূদ্রদের জন্য পরম স্রষ্টা কেবল একটাই দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ করেছেন আর তা হলো তারা উপরোল্লিখিত তিন শ্রেণীর সেবা করবে।”৭

[১. তমদ্দুনে হিন্দ পৃ. ৩১১; ]

[২-৫, মনু সংহিতা, ১ম অধ্যায়, পৃ. যথাক্রমে ৩১, ৮৭, ৮৮, ৮৯; ]

[৬-৭, মনু সংহিতা, ১ম অধ্যায়, পৃ, যথাক্রমে ৯০, ৯১। ]

এই সংহিতা তথা শাস্ত্রীয় বিধান ব্রাহ্মণদেরকে অপরাপর শ্রেণী সম্প্রদায়ের মুকাবিলায় এতটা শ্রেষ্ঠত্ব ও পবিত্রতা দান করেছিল যে, তারা দেবতাদের সমপর্যায়ে উপনীত হয়। মনু সংহিতায় বলা হয়েছেঃ

“যখন কোন ব্রাহ্মণ সন্তান জন্মগ্রহণ করে তখন সে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত সৃষ্টি। তারা সমগ্র সৃষ্টিজগতের সম্রাট। আর তাদের কাজ হলো শাস্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ।”১

“এই পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা ব্রাহ্মণদের সম্পদ। যেহেতু সৃষ্টি জগতের মধ্যে তারাই বড় তাই সব কিছুই তাদের।”২

“ব্রাহ্মণ প্রয়োজনবোধে তার শূদ্র দাসদের সহায়-সম্পদ যবর দখল করতে পারবে। এরূপ ছিনিয়ে নেবার জন্য তার ওপর কোন অপরাধ বর্তাবে। কেননা দাস সহায়-সম্পদের মালিক হতে পারে না। তার সকল সহায়-সম্পদ তার মালিকের সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হবে।”৩

“ঋগ্বেদ যে ব্রাহ্মণের মুখস্থ সে সকল পাপ থেকে মুক্ত চাই সে ত্রিভুবনের সর্বনাশ সাধন করুক, চাই সে কারোর খাবারই কেড়ে খাক।”৪

“রাজার যতই প্রয়োজন দেখা দিক, এমন কি তিনি যদি মরণদশায়ও পতিত হন তবুও কোন ব্রাহ্মণ থেকে তার রাজস্ব গ্রহণ সমীচীন নয়। তেমনি রাষ্ট্রের কোন ব্রাহ্মণকে তিনি ক্ষুৎ পিপাসায় মরতে দেবেন না।”৫

“মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে একজন ব্রাহ্মণের শাস্তি হবে কেবল মস্তক মুণ্ডন। একই অপরাধ অন্য কেউ করলে তার শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড।”৬

উক্ত বিধানে ক্ষত্রিয় যদিও বৈশ্য ও শূদ্রের তুলনায় উন্নততর শ্রেণী হিসেবে স্বীকৃত, কিন্তু ব্রাহ্মণের মুকাবিলায় তার অবস্থান নীচে।”

মনু বলেনঃ

“দশ বছর বয়স্ক একজন ব্রাহ্মণ বালকের সঙ্গে শত বছরের ক্ষত্রিয়ের সম্পর্ক পিতা-পুত্রের ন্যায়। এক্ষেত্রে ব্রাহ্মণ বালকের অবস্থান হবে পিতার।৭

[১-৭. মনুসংহিতা, যথাক্রমে ৯৯,১০০, সপ্তম অধ্যায় ৪১৭, ৯ম অধ্যায় ২৬২, ৮ম অধ্যায় ১৩৩, ৭ম অধ্যায় ৩৭৯; ২য় অধ্যায়, ১৩৫ পৃ.। ]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন