hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

৬৫
নজীরবিহীন বীরত্ব ও জীবনের প্রতি নিস্পৃহ
পারলৌকিক জীবনের প্রতি বিশ্বাস মুসলমানদের হৃদয়ে এমন নির্ভীকতা সৃষ্টি করে দিয়েছিল, এক কথায় যা ছিল বিস্ময়কর! তা তাদেরকে জান্নাতের প্রতি আশ্চর্য রকমের আগ্রহশীল এবং জীবনের প্রতি বীতস্পৃহ করে দিয়েছিল। জান্নাতের ছবি তাদের চোখের সামনে এমনভাবে ভেসে উঠত যে, যেন বাস্তবে তাঁরা তা প্রত্যক্ষ করছে। তারা সেই জান্নাতের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়তেন যেমন পত্রবাহক কবুতর ওড়বার সময় কোন দিকে ভূক্ষেপ মাত্র না করে সোজা মনযিলে গিয়েই দম নেয়।

ওহুদ যুদ্ধে যখন বহু মুসলমানই যুদ্ধক্ষেত্র পরিত্যাগ করেছিল তখন আনাস ইবন নযর (রা) অগ্রসর হন। সামনেই তিনি হযরত সা'দ ইবন মুআয (রা)-কে দেখতে পান। তিনি হযরত সা'দ (রা)-কে লক্ষ্য করে বলে ওঠেন, ওহে সা'দ (রা)! আল্লাহর কসম করে বলছি, আমি ওহুদ পাহাড়ের অপর পাশ থেকে ভেসে আসা জান্নাতের খোশবু পাচ্ছি। আনাস ইবন মালিক (রা) বলেন, (শাহাদত লাভের পর) আমরা তাঁর শরীরে আশিটির বেশি জখম দেখতে পেয়েছি। এসব জখমের কোনটি ছিল তলোয়ারের, কোনটি বল্লমের, আবার কোনটি ছিল তীরের। আমরা তাকে এ অবস্থায় দেখি, তার দেহ কাফির মুশরিকদের আঘাতে আঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল। ফলে তাঁকে চেনার উপায় ছিল না। তার বোন তাঁর একটি অক্ষত আঙুল দেখে তাকে চিনতে সক্ষম হন।১

বদর যুদ্ধে যখন রসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবাদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা সেই জান্নাতের দিকে অগ্রসর হও যার প্রশস্ততা আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত। উমায়র ইবন হাম্মাম (রা) নামক জনৈক আনসারী সাহাবী বলে ওঠেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! জান্নাতের প্রশস্ততা যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত? তিনি বললেন, হ্যা, কেন? তোমার কি এতে সন্দেহ হচ্ছে? আনসারী বললেন, না, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার আশা, যদি তা আমি পেতাম! তিনি বললেন, হ্যা, তুমি তা পাবে। এরপর এই সাহাবী তার থলে থেকে খেজুর বের করে খেতে লাগলেন। এরপর তিনি বলে উঠলেন, আমি যদি এই খেজুরগুলো খাবার জন্য অপেক্ষা করি তাহলে অনেক সময় লেগে যাবে। এই বলে তিনি বাকি খেজুরগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এবং শাহাদত লাভ করলেন।২

[১. বুখারী ও মুসলিম। ]

[২. মুসলিম। ]

আবু বকর ইবন আবু মূসা আশআরী বর্ণনা করেন, আমার পিতা ছিলেন শত্রুর মুখোমুখি। তিনি বলছিলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, জান্নাতের দরজা তরবারির ছায়াতলে অবস্থিত। তা শুনে এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়াল। তার শরীরের কাপড়-চোপড় ছিল জীর্ণশীর্ণ। সে বলল, আবূ মূসা! তুমি কি নিজে আল্লাহর রসূল (ﷺ) -কে এই কথা বলতে শুনেছ? তিনি জানালেন, হ্যা, শুনেছি। তখন সেই লোকটি তার সাথীদের কাছে ফিরে গেল এবং তাদের বলল, তোমরা আমার সালাম গ্রহণ করো। এরপর তিনি তলোয়ারের খাপ ভেঙে ফেলে দিয়ে কোষমুক্ত তলোয়ার হাতে দুশমনের মুকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন এবং শহীদ হয়ে গেলেন।১

আমর ইবন জামূহর ছিল চার পুত্র। তিনি খোঁড়া ছিলেন বিধায় পা খুঁড়িয়ে চলতেন। রসূলুল্লাহ (ﷺ) যুদ্ধে গমন করলে তার চার পুত্রই এতে যোগদান করতেন এবং রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর সঙ্গী হতেন। তিনি ওহুদ যুদ্ধে রওয়ানা হবার কালে আমর ইবন জামূহ (রা) এতে যোগ দেবার জন্য বায়না ধরে বসেন। পুত্ররা তাদের পিতাকে এই বলে বোঝাতে চেষ্টা করেন, আল্লাহ তাআলা তো এ ব্যাপারে আপনাকে অব্যাহতি দিয়েছেন। আপনি না গেলেই ভাল হয়। আপনার। পক্ষ থেকে আমরাই তো যথেষ্ট। আল্লাহ পাক জিহাদে যোগদানের দায়িত্ব থেকে আপনাকে অব্যাহতি দিয়েছেন। আমর ইবন জামূহ (রা) আল্লাহর রসূলের খেদমতে গিয়ে হাজির হলেন এবং বলতে লাগলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার। এসব ছেলে আমাকে আপনার সঙ্গী হতে বাধা দিচ্ছে। আল্লাহর কসম! আমার দিলের বাসনা, আমি আমার এই খোড়া পা নিয়েই জান্নাতের বুকে চলাফেরা করি। আল্লাহর রসূল (ﷺ) তাঁকে বললেন, আল্লাহ তোমাকে জিহাদে যোগদানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এরপর ছেলেদের লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা তাকে যেতে দিচ্ছ না কেন? হয়তো আল্লাহ তা'আলা তাঁকে শাহাদত দান করবেন। এরপর আমর (রা) রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর সঙ্গে জিহাদে গমন করেন এবং শাহাদত লাভ করেন।২

[১. মুসলিম। ]

[২. যাদুল-মাআদ, ৩য় খণ্ড, ১৩৫ পৃ.। ]

শাদ্দাদ ইবন হাদ বলেন, একজন বেদুঈন নবী করীম (ﷺ) -এর খেদমতে এসে ঈমান আনল এবং তাঁর সাথী হলো। তারপর সে বলল, আমি আপনার সঙ্গে হিজরত করব। নবী করীম (ﷺ) একজন সাহাবীকে তার প্রতি খেয়াল রাখতে বললেন। খয়বরের যুদ্ধ এসে হাজির হলে যুদ্ধের পর যুদ্ধলব্ধ সম্পদ বণ্টন করেন। উল্লিখিত বেদুঈনকেও বণ্টিত একটি অংশ দেবার জন্য সাহাবাদের হাতে তুলে দেন। বেদুঈন সকলের পশুপাল চরাত। সন্ধ্যায় ফিরে আসার পর যখন তাকে তার অংশ প্রদান করা হলো তখন সে এটা কিসের কি জিজ্ঞেস করল। লোকে বলল, মালে গনীমত ভাগ করার সময় রসূলুল্লাহ (ﷺ) তোমাকেও একটি অংশ দিয়েছেন। সে এটা হাতে নিয়ে সোজা আল্লাহর রসূল (ﷺ) -এর খেদমতে গিয়ে হাজির হলো এবং জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এটা কি? তিনি বললেন, তোমার অংশ। সে বলল, আমি তো এর জন্য আপনার সাথী হই নি। আমি তো আপনার সাথী হয়েছিলাম যাতে করে আমার এখানে তীর লাগে, এই বলে সে কণ্ঠনালীর দিকে ইঙ্গিত করল, আর আমি জান্নাতে যেতে পারি। তিনি বললেন, যদি আল্লাহর সঙ্গে তোমার কারবার সত্য হয় তাহলে তিনিও তোমার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবেন। এরপর যুদ্ধ হলো। যুদ্ধ সমাপ্তির পর তিনি ঐ বেদুঈনের পাশ দিয়ে যাবার সময় দেখতে পেলেন সে শহীদ হয়ে পড়ে আছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন যে, একি সেই লোকঃসকলেই বলল, জী হ্যা, সেই বেদুঈনটিই। বললেন, আল্লাহর সঙ্গে তার কারবার সত্য ছিল, আল্লাহও তার আকাঙ্ক্ষাকে সত্য করে দেখিয়েছেন।১

[১. যাদুল-মাআদ, ২য় খণ্ড, ১৯ পৃ.। ]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন