hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

১৭
ইরান ও সেখানকার ধ্বংসাত্মক আন্দোলনসমূহ
সভ্য দুনিয়ার কতত্ত্ব ও নেতৃত্বের ব্যাপারে ইরান ছিল রোম সাম্রাজ্যের অংশীদার। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সে ছিল মানবতার শত্রুগোষ্ঠীর তৎপরতার পুরনো লীলাভূমি। সেখানে নৈতিক চরিত্রের ভিত্তি বহুকাল থেকেই নড়বড়ে অবস্থায় চলে। আসছিল। যে সব আত্মীয়ের সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপনকে পৃথিবীর সভ্য ও ভারসাম্যপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাগণ সর্বদাই অননুমোদিত ও বেআইনী মনে করে এসেছে এবং প্রকৃতিগতভাবে ঘৃণা করে থাকে- ইরানীরা সেসব সম্পর্ককে ঘৃণ্য ও অবৈধ বলে স্বীকার করত না। সম্রাট ২য় ইয়াযদাগির্দ, যিনি ৫ম শতাব্দীর মাঝামাঝি রাজত্ব করেছিলেন, আপন কন্যাকে বিবাহ করেন, অতঃপর তাকে হত্যা করেন।২ খ্রি. ষষ্ঠ শতাব্দীর শাসক বাহরাম চূবীন আপন বোনের সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।৩ অধ্যাপক আর্থার ক্রিস্টিনসেন-এর বর্ণনা মুতাবিক ইরানে এ জাতীয় সম্পর্ককে কোন রকম অবৈধ কাজ বলে মনে করা হতো না, বরং একে ইবাদত ও পুণ্য কর্ম মনে করা হতো। বিখ্যাত চীনা পর্যটক হিউয়েন সাঙ বর্ণনা করেন যে, ইরানী আইনে ও সমাজে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপনের জন্য কোন প্রকার সম্পর্কের বাছ-বিচার ছিল না।৪

খ্রি. ৩য় শতাব্দীতে দুনিয়ার বুকে মানীর আবির্ভাব ঘটে। তার আন্দোলন ছিল বস্তুতপক্ষে দেশের ক্রমবর্ধমান তীব্র যৌনপ্রবণতার বিরুদ্ধে এক অস্বাভাবিক ও প্রচণ্ড প্রতিক্রিয়া এবং আলো ও আঁধারের মনগড়া দ্বন্দ্বের (যা ছিল ইরানের প্রাচীন দর্শন) ফলশ্রুতিস্বরূপ। অনন্তর মানী চিরকুমার জীবন অবলম্বনের আহ্বান জানান যাতে দুনিয়া থেকে যাবতীয় মন্দ ও অন্যায়-অনাচারের জীবাণু নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। তিনি এই দার্শনিক ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, আলো ও আঁধারের। মিশ্রণই যাবতীয় অনাসৃষ্টির কারণ। এর হাত থেকে মুক্তি পাওয়া দরকার। এরই ভিত্তিতে তিনি বিয়েকে হারাম ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন যাতে করে মানুষ যথাসত্বর নিঃশেষ হয়ে যায় এবং এভাবে মানব জাতির অবলুপ্তির মাধ্যমে আলো অন্ধকারের ওপর চিরস্থায়ী বিজয় লাভ করে। বাহরাম ২৭৬ খ্রিস্টাব্দে মানীকে এই বলে হত্যা করেন যে, এই লোকটি বিশ্বের ধ্বংসের আহ্বান জানাচ্ছে। এজন্য দুনিয়া খতম হবার আগে এবং তার উদ্দেশ্য পূর্ণ হবার পূর্বে তার নিজেরই ধ্বংস হয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু মানী ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা নিহত হওয়া সত্ত্বেও তার প্রচারিত শিক্ষা বহু দিন যাবত বেঁচে ছিল এবং মুসলিম বিজয়ের পরেও এর প্রভাব অবশিষ্ট ছিল।

[২. Historion's History of the World, vol. viii-p.84. ]

[৩. তাবারী, ৩ খণ্ড, ১৩৮; ৪. সাসানী আমলে ইরান, ৪৩০ পৃ. ]

ইরানের পতিত ও অনাবাদী প্রকৃতি আরেকবার মানীর প্রকৃতি বিরোধী শিক্ষামালার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এই বিদ্রোহ মাদাক (জন্ম ৪৮৭ খ্রি.) -এর দাওয়াতরূপে আবির্ভূত হয়। মাযদাক ঘোষণা করলেন যে, তামাম মানবগোষ্ঠী অভিন্নভাবে জন্মগ্রহণ করেছে। তাদের ভেতর কোন পার্থক্য নেই। অতএব প্রত্যেকেরই অপরের মালিকানায় সমঅধিকার রয়েছে। আর যেহেতু সম্পদ ও নারীই এমন দুটো উপাদান যার নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণ মানুষ যত্নের সাথে করে থাকে তাই এই দুটো ক্ষেত্রে সাম্য ও সমশরীকানা সর্বাধিক প্রয়োজন। শাহরাস্তানীর ভাষায় ও মাদক মহিলাদেরকে সকলের জন্য বৈধ সাব্যস্ত করেন এবং বিত্ত-সম্পদ ও নারী আগুন, পানি ও ঘাসের মত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ও ব্যবহারযোগ্য ঘোষণা দেন।১

[১. আল-মিলাল ওয়ান-নিহাল, শাহবাস্তানীকৃত;২য় খণ্ড, ৮৬।]

যুবক ও ভোগলি বিলাসপ্রিয় লোকেরা এই ঘোষণায় যেন হাতে স্বর্গ পেল। ফলে এই ঘোষণা সত্বরই আন্দোলনে পরিণত হলো। তারা এই আন্দোলনকে সোৎসাহে অভিনন্দন জানাল। মজার ব্যাপার এই যে, ইরান সম্রাট কুবায স্বয়ং এর নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং এর প্রচার ও প্রসারে বিরাট তৎপরতার পরিচয় দেন। ফল দাঁড়াল এই যে, এই আন্দোলন সর্বত্র দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ল। সমগ্র ইরান এই যৌন অনাচার ও অরাজকতার প্লাবনে নিমজ্জিত হলো। ঐতিহাসিক তাবারানীর ভাষায়ঃ

‘ভবঘুরে, মস্তান ও বখাটে প্রকৃতির লোকেরা একে দুর্লভ সুযোগ মনে করল এবং মাযদাক ও মাযদাকীদের উৎসাহী সাথী ও সমর্থকে পরিণত হলো। সাধারণ নাগরিকগণ এই আকস্মিক দুর্যোগের শিকার ছিল। এই আন্দোলন এতটা শক্তি সঞ্চয় করে যে, যে চাইত, যার ঘরে চাইত ঘরের মাল-মাত্তা ও মহিলাদেরকে ভোগ-দখল করত। বাড়ির মালিক কিছুই করতে পারত না। মাযদাকীরা সম্রাট কুবাযকে প্ররোচিত করে এবং তাকে প্রয়োজনে পদচ্যুত করার হুমকি প্রদর্শন করে যাতে করে সম্রাট এই আহবানে নিজেও সাড়া দেন। ফল দাঁড়াল এই যে, দেখতে দেখতেই এমন অবস্থা হলো যে, বাপ তার সন্তানকে যেমন চিনতে পারত না, তেমনি সন্তান চিনতে পারত না তার বাপকে। কারোরই কারোর মালিকানাধীন জিনিসের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছিল না, দখল ছিল না।১

ঐতিহাসিক তাবারীর বর্ণনা, “এই আন্দোলনের পূর্বে সম্রাট কুবায় ইরানের সর্বোত্তম শাসকদের অন্যতম ছিলেন। কিন্তু মাযদাকের আনুগত্যের দরুন রাষ্ট্রীয় সীমায় ও সীমান্তে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে।”২

[১. তারীখে তাবারী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৮৮। ]

[২. প্রাগুক্ত।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন