hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুস্ সালাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১২৬
শেষ বৈঠকের দু‘আসমূহ
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, তাশাহ্হুদ শেষ হলে তোমরা তোমাদের পছন্দ অনুযায়ী দু‘আ করো। [সহীহ মুসলিম, হা/৯২৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৬২২; সুনানুস সগীর লিল বায়হাকী, হা/৩৩৯; শারহুল মা‘আনী, হা/১৪১৭।] নিম্নে রাসূলুল্লাহ ﷺ তাশাহ্হুদের পর যেসব দু‘আ পাঠ করতেন সেগুলো উল্লেখ করা হলো :

১. আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ (তাশাহ্হুদের পর) এ দু‘আ পাঠ করতেন।

اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন ‘আযা-বি জাহান্নাম, ওয়া আঊযুবিকা মিন ‘আযা-বিল ক্বব্র, ওয়া আঊযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ দাজ্জা-ল, ওয়া আঊযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়ালমামা-ত। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল মা’ছামি ওয়াল মাগরাম।

শাব্দিক অর্থ : اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি, اَعُوْذُ بِكَ আপনার কাছে আশ্রয় চাই, مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ জাহান্নামের শাস্তি হতে, وَاَعُوْذُ بِكَ আর আশ্রয় চাই مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ কবরের আযাব থেকে, وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ আশ্রয় চাই মাসীহে দাজ্জালের ফিতনা হতে, وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ আর আশ্রয় চাই জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা হতে, وَاَعُوْذُ بِكَ আর আশ্রয় চাই, مِنَ الْمَأْثَمِ পাপ থেকে, وَالْمَغْرَمِ এবং ঋণগ্রস্ত হওয়া থেকে।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি কবরের আযাব থেকে, মাসীহে দাজ্জালের ফিতনা হতে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি পাপ ও ঋণ হতে। [সহীহ বুখারী, হা/৮৩২; সহীহ মুসলিম, হা/১৩৫৩; আবু দাউদ, হা/৮৮০; নাসাঈ, হা/১৩০৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৬২২; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৮৫২; বায়হাকী, হা/২৭০১; মিশকাত, হা/৯৩৯।]

২. আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বললেন, আপনি আমাকে এমন একটি দু‘আ শিক্ষা দিন, যা আমি সালাতের মধ্যে পাঠ করতে পারব। তখন তিনি বললেন, তুমি এ দু‘আ পাঠ করবে-

اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمًا كَثِيْرًا وَّ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اَنْتَ فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِيْ اِنَّكَ اَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী যালামতু নাফসী যুলমান কাসীরাও ওয়ালা ইয়াগ্ফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা ফাগফিরলী মাগ্ফিরাতাম মিন ‘ইনদিকা ওয়ারহামনী ইন্নাকা আনতাল গাফূরুর রাহীম।

শাব্দিক অর্থ : اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ! اِنِّيْ নিশ্চয় আমি, ظَلَمْتُ অন্যায় করেছি, نَفْسِيْ আমার নিজের উপর, ظُلْمًا كَثِيْرًا অনেক অন্যায়, وَّ لَا يَغْفِرُ আর কেউ ক্ষমা করতে পারে না, اَلذُّنُوْبَ গোনাহসমূহ, اِلَّا اَنْتَ আপনি ছাড়া, فَاغْفِرْ لِيْ অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন, مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ নিজ ক্ষমা দ্বারা, وَارْحَمْنِيْ আর আমার উপর দয়া করুন, اِنَّكَ اَنْتَ নিশ্চয় আপনি, اَلْغَفُوْرُ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, اَلرَّحِيْمُ অত্যন্ত দয়ালু।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আমার নিজের উপর অনেক যুলুম করেছি, আর তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারে না। সুতরাং তুমি নিজ ক্ষমা দ্বারা আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার প্রতি রহম করো। নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল ও অতি দয়ালু। [সহীহ বুখারী, হা/৮৩৪; তিরমিযী, হা/৩৫৩১; নাসাঈ, হা/১৩০২; ইবনে মাজাহ, হা/৩৮৩৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৮; ইবনে খুযায়মা, হা/৮৪৬।]

৩. আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাশাহ্হুদ ও সালাম ফিরানোর মাঝখানে এ দু‘আ পাঠ করতেন।

اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِىْ مَا قَدَّمْتُ وَمَا اَخَّرْتُ وَمَا اَسْرَرْتُ وَمَا اَعْلَنْتُ وَمَا اَسْرَفْتُ وَمَا اَنْتَ اَعْلَمُ بِهٖ مِنِّىْ اَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَاَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لَا اِلٰهَ اِلَّا اَنْتَ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফিরলী মা-ক্বাদ্দামতু ওয়ামা-আখ্খারতু ওয়ামা-আস্সরারতু ওয়ামা-আ‘লানতু ওয়ামা- আস্রাফতু ওয়ামা-আনতা আ‘লামু বিহী মিন্নী আন্তাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আনতাল মুআখ্খিরু লা-ইলা-হা ইল্লা- আনতা।

শাব্দিক অর্থ : اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ! اِغْفِرْ لِىْ তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও مَا قَدَّمْتُ যা (যেসব গোনাহ) আমি পূর্বে প্রেরণ করেছি وَمَا اَخَّرْتُ এবং যা আমি পরে প্রেরণ করেছি। وَمَا اَسْرَرْتُ যা আমি গোপনে করেছি وَمَا اَعْلَنْتُ এবং যা আমি প্রকাশ্যে করেছি। وَمَا اَسْرَفْتُ আর যে সব ব্যাপারে আমি বাড়াবাড়ি করেছি (তাও ক্ষমা করে দাও)। وَمَا اَنْتَ اَعْلَمُ بِه مِنِّىْ আর যেসব পাপ সম্পর্কে তুমি আমার চেয়ে বেশি জান, যা আমার দ্বারা সংঘটিত হয়েছে (তাও ক্ষমা করে দাও)। اَنْتَ الْمُقَدِّمُ তুমিই প্রথম وَاَنْتَ الْمُؤَخِّرُ এবং তুমিই শেষ, لَا اِلٰهَ কোন ইলাহ নেই اِلَّا اَنْتَ তুমি ছাড়া।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমার পূর্বের ও পরের, গোপন এবং প্রকাশ্য সব গোনাহ ক্ষমা করে দাও। আর যে সব ব্যাপারে আমি বাড়াবাড়ি করেছি তাও ক্ষমা করে দাও। আমার কৃত যেসব পাপ সম্পর্কে তুমি আমার চেয়ে বেশি জান তাও ক্ষমা করে দাও। তুমিই প্রথম এবং তুমিই শেষ, তুমি ছাড়া আর কোন প্রকৃত ইলাহ নেই। [সহীহ মুসলিম, হা/১৮৪৮; আবু দাউদ, হা/১৫১১; তিরমিযী, হা/৩৫২১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭২৯।]

৪. মু‘আয ইবনে জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ তার হাত ধরলেন এবং বললেন, হে মু‘আয! আল্লাহর শপথ! আমি তোমাকে ভালোবাসি; আল্লাহর শপথ! আমি তোমাকে ভালোবাসি। অতঃপর তিনি বললেন, হে মু‘আয! আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, তুমি প্রত্যেক সালাতের শেষে এ দু‘আটি পাঠ করা ছেড়ে দিও না।

اَللّٰهُمَّ اَعِنِّىْ عَلٰى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আ‘ইন্নী ‘আলা যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ‘ইবাদাতিকা।

শাব্দিক অর্থ : اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ! اَعِنِّىْ আপনি আমাকে সাহায্য করুন عَلٰى ذِكْرِكَ আপনার স্মরণের ব্যাপারে, وَشُكْرِكَ আপনার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ এবং আপনার উত্তম ইবাদাত করতে।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আপনার স্মরণের ব্যাপারে, আপনার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে এবং আপনার উত্তম ইবাদাত করতে সাহায্য করুন। [আবু দাউদ, হা/১৫২৪; নাসাঈ, হা/১৩০৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/২২১৭২।]

৫. মুস‘আব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাদ (রাঃ) ৫টি বিষয়ের নির্দেশ দিতেন এবং তিনি তা স্মরণ রাখতেন। আর এ দু‘আগুলো তিনি নবী ﷺ থেকে শিখেছেন।

اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَاَعُوْذُ بِكَ اَنْ اُرَدَّ اِلٰى اَرْذَلِ الْعُمُرِ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল বুখলি ওয়া আঊযুবিকা মিনাল জুবনি ওয়া আঊযুবিকা আন উরাদ্দা ইলা-আরযালিল উমুরি ওয়া আঊযুবিকা মিন ফিতনাতিদ দুনইয়া ওয়া আঊযুবিকা মিন ‘আযাবিল ক্বাব্র।

শাব্দিক অর্থ : اَللّٰهُمَّ হে আললাহ! اِنِّيْ নিশ্চয় আমি اَعُوْذُ بِكَ আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি مِنَ الْبُخْلِ কৃপণতা হতে। وَاَعُوْذُ بِكَ আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি مِنَ الْجُبْنِ কাপুরুষতা থেকে। وَاَعُوْذُ بِكَ আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি اَنْ اُرَدَّ اِلٰى اَرْذَلِ الْعُمُرِ অধিক বার্ধক্য হতে। وَاَعُوْذُ بِكَ আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا দুনিয়ার ফিতনা হতে। وَاَعُوْذُ بِكَ আর আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ কবরের ফিতনা হতে।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হতে, কাপুরুষতা থেকে, অধিক বার্ধক্য হতে, দুনিয়ার ফিতনা হতে এবং কবরের ফিতনা হতে। [সহীহ বুখারী, হা/৬৩৬৫; নাসাঈ, হা/৫৪৪৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৮৫; ইবনে খুযায়মা, হা/৭৪৬।]

৬. আবু সালেহ (রহ.) কতক সাহাবী হতে বর্ণনা করেন, নবী ﷺ এক ব্যক্তিকে বললেন, তুমি সালাতে কী পাঠ কর? সে বলল, আমি তাশাহ্হুদের পর এ দু‘আ পাঠ করি-

اَللّٰهُمَّ اِنِّى اَسْاَلُكَ الْجَنَّةَ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنَ النَّارِ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া আঊযুবিকা মিনান্না-র।

শাব্দিক অর্থ : اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ! اِنِّى اَسْاَلُكَ আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি الْجَنَّةَ জান্নাত وَاَعُوْذُ بِكَ এবং আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি مِنَ النَّارِ আগুন তথা জাহান্নাম থেকে।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে জান্নাত প্রার্থনা করছি এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। [আবু দাউদ, হা/৭৯২; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৯৩৯; ইবনে খুযায়মা, হা/৭২৫।]

৭. আত্বা ইবনে সায়েব (রহ.) তার পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদা আম্মার ইবনে ইয়াসীর (রাঃ) আমাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন এবং খুব সংক্ষিপ্ত করলেন। তখন কেউ কেউ বলল, তুমি তো অনেক সংক্ষেপে সালাত আদায় করেছ। তখন তিনি বললেন, তবে শুনো! আমি এ সালাতে এমন দু‘আ পাঠ করেছি, যা আমি নবী ﷺ হতে শুনেছি। এরপর তারা সে দু‘আ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি এ দু‘আ পাঠ করে শুনালেন-

اَللّٰهُمَّ بِعِلْمِكَ الْغَيْبَ ، وَقُدْرَتِكَ عَلَى الْخَلْقِ ، اَحْيِنِيْ مَا عَلِمْتَ الْحَيَاةَ خَيْرًا لِّيْ ، وَتَوَفَّنِيْ اِذَا عَلِمْتَ الْوَفَاةَ خَيْرًا لِّيْ ، اَللّٰهُمَّ وَاَسْاَلُكَ خَشْيَتَكَ فِي الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ، وَاَسْاَلُكَ كَلِمَةَ الْحَقِّ فِي الرِّضَا وَالْغَضَبِ ، وَاَسْاَلُكَ الْقَصْدَ فِي الْفَقْرِ وَالْغِنٰى ، وَاَسْاَلُكَ نَعِيْمًا لَّا يَنْفَدُ ، وَاَسْاَلُكَ قُرَّةَ عَيْنٍ لَّا تَنْقَطِعُ ، وَاَسْاَلُكَ الرِّضَاءَ بَعْدَ الْقَضَاءِ ، وَاَسْاَلُكَ بَرْدَ الْعَيْشِ بَعْدَ الْمَوْتِ ، وَاَسْاَلُكَ لَذَّةَ النَّظَرِ اِلٰى وَجْهِكَ ، وَالشَّوْقَ اِلٰى لِقَائِكَ فِيْ غَيْرِ ضَرَّاءَ مُضِرَّةٍ ، وَلَا فِتْنَةٍ مُضِلَّةٍ ، اَللّٰهُمَّ زَيِّنَّا بِزِيْنَةِ الْاِيْمَانِ ، وَاجْعَلْنَا هُدَاةً مُّهْتَدِيْنَ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা বি‘ইলমিকাল গাইব, ওয়া কুদরাতিকা ‘আলাল খাল্ক, আহইনী মা-‘আলিমতাল হায়াতা খাইরাল্লী, ওয়াতাওয়াফফানী ইযা ‘আলিমতাল ওয়াফা-তা খাইরাল্লী। আল্লা-হুম্মা ওয়া আসআলুকা খাশইয়াতাকা ফীল গাইবি ওয়াশ শাহা-দাহ, ওয়া আসআলুকা কালিমাতাল হাক্কি ফীর রিযা ওয়াল গাযাব, ওয়া আসআলুকাল ক্বাসদা ফীল ফাক্বরি ওয়া গিনা, ওয়া আসআলুকা না‘ইমাল লা-ইয়ানফাদ, ওয়া আসআলুকা কুররাতা ‘আইনিল লা- তানক্বাত্বিউ, ওয়া আসআলুকার রিযা-আ বা‘দাল ক্বাযা-আ, ওয়া আসআলুকা বারদাল ‘আইশী বা‘আদাল মাওত, ওয়া আসআলুকা লাযযাতান নাযারি ইলা-ওয়াজহিকা ওয়াশ শাওক্বা ইলা লিক্বাইকা ফী গাইরি যাররা-আ মুযিররাতিন ওয়ালা- ফিতনাতিন মুযিল্লাহ। আল্লা-হুম্মা যাইয়িন্না- বিযীনাতিল ঈমা-নি ওয়াজ‘আলনা হুদাতাম মুহতাদীন।

শাব্দিক অর্থ : اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ! (আমি প্রার্থনা করছি) بِعِلْمِكَ الْغَيْبَ তোমার অদৃশ্য জ্ঞানের মাধ্যমে وَقُدْرَتِكَ এবং তোমার ক্ষমতার মাধ্যমে عَلَى الْخَلْقِ যা (তোমার) সৃষ্টির উপর (পরিব্যপ্ত) اَحْيِنِيْ তুমি আমাকে ততক্ষণ পর্যন্ত জীবিত রাখো مَا عَلِمْتَ যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি মনে কর الْحَيَاةَ خَيْرًا لِّيْ আমার জীবিত থাকা কল্যাণকর। وَتَوَفَّنِيْ আর তুমি আমাকে মৃত্যু দাও, اِذَا عَلِمْتَ যখন তুমি মনে কর যে, الْوَفَاةَ خَيْرًا لِّيْ মৃত্যুই আমার জন্য কল্যাণকর। اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ! وَاَسْاَلُكَ আমি প্রার্থনা করছি خَشْيَتَكَ ভয় করার فِي الْغَيْبِ অপ্রকাশ্যে وَالشَّهَادَةِ ও প্রকাশ্যে وَاَسْاَلُكَ এবং আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি كَلِمَةَ الْحَقِّ সঠিক কথা বলার فِي الرِّضَا সন্তুষ্টি অবস্থায় وَالْغَضَبِ এবং অসন্তুষ্টি অবস্থায়। وَاَسْاَلُكَ আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি الْقَصْدَ মধ্যমপন্থা অবলম্বন করার فِي الْفَقْرِ অসচ্ছল অবস্থায় وَالْغِنٰى ও সচ্ছল অবস্থায়। وَاَسْاَلُكَ আর আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি نَعِيْمًا এমন নিয়ামতের لَّا يَنْفَدُ যা কখনো শেষ হবে না। وَاَسْاَلُكَ আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি قُرَّةَ عَيْنٍ চোখের এমন শীতলতা لَّا تَنْقَطِعُ যা কখনো ফুরাবে না। وَاَسْاَلُكَ الرِّضَاءَ আমি তোমার কাছে সন্তুষ্ট থাকার প্রার্থনা করছি بَعْدَ الْقَضَاءِ কোন কিছু ঘটে যাওয়ার পর (অর্থাৎ তাকদীরের উপর)। وَاَسْاَلُكَ আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি بَرْدَ الْعَيْشِ শান্তিময় জীবন بَعْدَ الْمَوْتِ মৃত্যুর পর। وَاَسْاَلُكَ আমি প্রার্থনা করছি لَذَّةَ النَّظَرِ اِلٰى وَجْهِكَ তোমার সাক্ষাতের স্বাদ লাভ করার وَالشَّوْقَ এবং আগ্রহ প্রকাশ করছি اِلٰى لِقَائِكَ তোমার সাক্ষাতের فِيْ غَيْرِ ضَرَّاءَ مُضِرَّةٍ কোন ধরনের ক্ষতি ছাড়া وَلَا فِتْنَةٍ مُضِلَّةٍ এবং এমন ফিতনা ছাড়া, যা আমাকে পথভ্রষ্ট করে দেয়। اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ! زَيِّنَّا তুমি আমাকে সৌন্দর্যমন্ডিত করো بِزِيْنَةِ الْاِيْمَانِ ঈমানের সৌন্দর্য দ্বারা وَاجْعَلْنَا هُدَاةً مُّهْتَدِيْنَ এবং আমাদেরকে হোদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করো।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার অদৃশ্য জ্ঞানের মাধ্যমে এবং সৃষ্টির উপর তোমার ক্ষমতার মাধ্যমে প্রার্থনা করছি যে, তুমি আমাকে ততক্ষণ জীবিত রাখো, যতক্ষণ আমার জীবিত থাকাকে তুমি কল্যাণকর মনে কর। আর আমাকে মৃত্যু দাও, যখন আমার মৃত্যুকে তুমি কল্যাণকর মনে কর। হে আল্লাহ! আমি প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে তোমাকে ভয় করার প্রার্থনা করছি এবং আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি, সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি উভয় অবস্থায় সঠিক কথা বলতে। আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি সচ্ছল ও অসচ্ছল উভয় অবস্থায় মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে। আর আমি তোমার কাছে এমন নিয়ামত প্রার্থনা করছি, যা কখনো শেষ হবে না। আমি তোমার কাছে চোখের এমন শীতলতা প্রার্থনা করছি, যা কখনো ফুরাবে না। আমি তোমার কাছে তাকদীরের উপর সন্তুষ্ট থাকার প্রার্থনা করছি। মৃত্যুর পর শান্তিময় জীবন প্রার্থনা করছি। পরকালে তোমার সাক্ষাতের স্বাদ লাভ করার প্রার্থনা করছি এবং তোমার সাক্ষাৎ কামনা করছি। আমি প্রার্থনা করছি, যাতে আমার দ্বারা কারো ক্ষতি না হয় এবং আমি এমন ফিতনায় না পড়ি, যা আমাকে পথভ্রষ্ট করে দেয়। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ঈমান দ্বারা সৌন্দর্যমন্ডিত করো এবং হোদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করো। [নাসাঈ, হা/১৩০৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৩৫১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৯৭১; মুসনাদুল বাযযার, হা/১৩৯১; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/১৯২৩; জামেউস সগীর, হা/২১৮১; মিশকাত, হা/২৪৯৭।]

৮. মিহজান ইবনে আদরা‘আ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ মসজিদে প্রবেশ করলেন। তখন এক ব্যক্তি সালাত শেষ করছিল এবং তাশাহ্হুদ পাঠ করা অবস্থায় ছিল। আর তখন সে এ দু‘আ পাঠ করছিল। এটা দেখে রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তার সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। এটা তিনি তিনবার বললেন।

اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ اَسْاَلُكَ يَا اَللهُ بِاَنَّكَ الْوَاحِدُ الْاَحَدُ الصَّمَدُ ، اَ لَّذِيْ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا اَحَدٌ ، اَنْ تَغْفِرَ لِيْ ذُنُوبِيْ ، اِنَّكَ اَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা ইয়া আল্লা-হু বিআন্নাকাল ওয়া-হিদুল আহাদুস সামাদু। আল্লাযী লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইঊলাদ ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ। আন তাগফিরলী যুনূবী, ইন্নাকা আনতাল গাফূরুর রাহীম।

শাব্দিক অর্থ : اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ! اِنِّيْ اَسْاَلُكَ আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। يَا اَللهُ হে আল্লাহ! بِاَنَّكَ الْوَاحِدُ الْاَحَدُ নিশ্চয় তুমি এক الصَّمَدُ ও অমুখাপেক্ষী। اَ لَّذِيْ لَمْ يَلِدْ যিনি কারো থেকে জন্মগ্রহণ করেননি وَلَمْ يُوْلَدْ এবং তাঁর থেকে কেউ জন্ম নেয়নি। وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا اَحَدٌ আর তার সমতুল্য কেউ নেই। اَنْ تَغْفِرَ لِيْ ذُنُوبِيْ তুমি আমার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দাও। اِنَّكَ اَنْتَ নিশ্চয় তুমি الْغَفُوْرُ অতি ক্ষমাশীল الرَّحِيْمُ এবং দয়ালু।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি এক ও অমুখাপেক্ষী, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও কেউ জন্ম দেয়নি। আর তার সমতুল্য কেউ নেই। তুমি আমার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দাও। নিশ্চয় তুমি অতি ক্ষমাশীল এবং দয়ালু। [নাসাঈ, হা/১৩০১; আবু দাউদ, হা/৯৮৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৯৯৫; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৭২৪; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/৯৮৫।]

৯. আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে মসজিদে প্রবেশ করলেন, তখন দেখলেন যে এক লোক সালাত পড়ছে এবং এভাবে দু‘আ করছে- এ দু‘আ শুনে রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, আল্লাহর কসম! সে ইসমে আ‘জম নিয়ে দু‘আ করছে- যার মাধ্যমে চাইলে দান করা হয় এবং দু‘আ করলে কবুল করা হয়।

اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ اَسْاَلُكَ بِاَنِّيْ اُشْهِدُكَ اَنَّكَ لَا اِلٰهَ اِلَّا اَنْتَ الْاَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِيْ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا اَحَدٌ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিআন্নী উশহিদুকা আন্নাকা লা ইলা-হা ইল্লা আনতাল আহাদুস সামাদুল্লাযী লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।

শাব্দিক অর্থ : اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ! اِنِّيْ اَسْاَلُكَ আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি। بِاَنِّيْ اُشْهِدُكَ আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, اَنَّكَ لَا اِلٰهَ اِلَّا اَنْتَ আপনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। الْاَحَدُ الصَّمَدُ আপনি একক ও অমুখাপেক্ষী। الَّذِيْ لَمْ يَلِدْ যিনি কাউকে জন্ম দেননি وَلَمْ يُوْلَدْ এবং জন্মলাভ করেননি, وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا اَحَدٌ আর তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি এবং এ সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আপনি একক ও অমুখাপেক্ষী। যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং জন্মলাভ করেননি, আর তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। [আবু দাঊদ, হা/১৪৯৫; তিরমিযী, হা/৩৪৭৫; মিশকাত, হা/২২৮৩।]

১০. আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদেরকে যেভাবে কুরআন মাজীদের সূরা শিখাতেন ঠিক সেভাবে এ দু’আটিও শিখাতেন।

اَللّٰهُمَّ اِنَّا نَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্না- না‘ঊযুবিকা মিন ‘আযা-বি জাহান্নাম, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ‘আযা-বিল ক্বাবর, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিত্নাতিল মাসীহিদ্ দাজ্জা-ল, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিত্নাতিল মাহ্ইয়া- ওয়াল মামা-ত।

শাব্দিক অর্থ : اَللّٰهُمَّ হে আল্লাহ! اِنَّا نَعُوْذُ بِكَ আমরা তোমার কাছে আশ্রয় চাই مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ জাহান্নামের আযাব থেকে। وَاَعُوْذُ بِكَ আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ কবরের আযাব থেকে وَاَعُوْذُ بِكَ আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ মাসীহে দাজ্জালের ফিতনা থেকে। وَاَعُوْذُ بِكَ আর আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছে আশ্রয় চাই জাহান্নামের আযাব থেকে, কবরের আযাব থেকে, মাসহে দাজ্জালের ফিতনা থেকে এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে। [সহীহ মুসলিম, হা/১৩৬১; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/৫০১; আবু দাউদ, হা/৯৮৬; ইবনে মাজাহ, হা/৩৮৪০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৬৮।]

উল্লেখ্য যে, উক্ত দু‘আগুলো ছাড়াও কুরআন ও হাদীসের যে কোন দু‘আ পাঠ করা যাবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন