hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুস্ সালাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৬৩
আযান শুরুর ইতিহাস
মুসলিমগণ যখন মক্কা ত্যাগ করে মদিনায় হিযরত করলেন তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ মদিনার মুসলিমগণকে নিয়ে একটা নির্দিষ্ট সময়ে জামাআতবদ্ধভাবে সালাত আদায় করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন। এজন্য একদিন তিনি সাহাবীদের সাথে বসে কীভাবে সবাইকে সঠিক সময়ে সালাতে আহবান করা যায় সেই পন্থা নির্ণয়ের জন্য পরামর্শ করেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ খৃষ্টানদের ঘণ্টা বাজিয়ে চার্চে যাওয়ার আহবানের মতো ঘণ্টা ব্যবহারের যুক্তি দেন; কেউবা বলেন, ইয়াহুদিদের মতো শিঙ্গা ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার কেউ কেউ ঝান্ডা উড়ানোর পরামর্শও দেন।

এ সময় উমর (রাঃ) বললেন, কিছু লোককে গলিতে গলিতে পাঠিয়ে সালাতের জন্য আহবান জানানো যেতে পারে। এই প্রেক্ষিতে নবী ﷺ বিলাল (রাঃ) কে এ পদ্ধতিতে সালাতের আহবান জানানোর জন্য নির্বাচিত করেন। বিভিন্ন হাদীস সূত্রে জানা যায় যে, এই পদ্ধতিটি সন্তোষজনক ছিল না। এরপর রাসূলুল্লাহ ﷺ ‘‘নাকূশ’’ (শিঙ্গা জাতীয় এক বস্তু), যা খৃষ্টানদের ঘণ্টা বাজিয়ে আহবানের পদ্ধতির কাছাকাছি তা ব্যবহারে রাজী হলেন, কিন্তু ব্যাপারটি তার কাছে একেবারেই পছন্দ হচ্ছিল না।

অতঃপর সে দিনই আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রাঃ) একটি স্বপ্ন দেখেন যে, এক ব্যক্তি একটি ‘‘নাকূশ’’ হাতে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর বান্দা! তুমি কি এটি আমার কাছে বিক্রি করবে? লোকটি প্রশ্ন করলেন, এটা নিয়ে তুমি কী করবে? জবাবে তিনি বললেন, ওটা দিয়ে আমরা লোকদেরকে সালাতের দিকে আহবান জানাব। তখন লোকটি বললো, আমি কি তোমাকে এর চেয়ে উত্তম পন্থা বলে দেব? আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, অবশ্যই। তখন ঐ ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রাঃ) কে আযানের বাক্যগুলো শিখিয়ে দিল এবং কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, যখন লোকজন জামাআতে সমবেত হয়ে যাবে তখন এই বাক্যগুলো ইকামত হিসেবে বলবে।

এভাবে ঐ ব্যক্তিটি আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রাঃ) কে আলাদা-আলাদাভাবে ‘‘আযান’’ এবং ‘‘ইকামত’’ এর বাক্যসমূহ শিখিয়ে দিয়েছিল।

অতঃপর সকাল হওয়া মাত্র, আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে উপস্থিত হয়ে স্বপ্নের কথা খুলে বললেন। সব শুনে নবী ﷺ বললেন, এটা সত্য স্বপ্ন; ইনশা-আল্লাহ্- এখন তুমি বিলাল (রাঃ) এর কাছে যাও এবং স্বপ্নে যেভাবে শুনেছ, ঠিক সেভাবে বিলাল (রাঃ) কে শিখিয়ে দাও। অতঃপর সে ঐ বাক্যগুলো ব্যবহার করে সবাইকে সালাতের জন্য একত্রিত করুক। কারণ বিলাল (রাঃ) এর কণ্ঠস্বর তোমার চেয়েও উচ্চ।

অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রাঃ) এর স্বপ্নেপ্রাপ্ত আযানের বাক্যগুলো বিলাল (রাঃ) কে শিখালেন এবং বিলাল (রাঃ) উচ্চৈঃস্বরে প্রথম আযান শুরু করলেন।

এদিকে উমর বিন খাত্তাব (রাঃ) নিজের বাড়িতে থাকা অবস্থায় আযানের ঐ বাক্যগুলো শুনতে পেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট পৌঁছে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সেই সত্তার কসম, যিনি আপনার মাধ্যমে সত্যকে পাঠিয়েছেন, আমিও ঐ বাক্যগুলো কিছুদিন আগে স্বপ্নে শুনেছি, যা এখন শুনতে পাচ্ছি। এ কথা শুনে নবী ﷺ বললেন, যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহরই। [ইবনে মাজাহ, হা/৭০৬; তিরমিযী, হা/১৮৯; আবু দাউদ, ৪৯৯; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৩৬৩।]

আর সেই দিন থেকে এখন পর্যন্ত আযানের মধ্য দিয়ে মুসলিমগণকে জামাআতে ফরয সালাত আদায়ের আহবান জানানো হচ্ছে।

আযান দেয়ার জন্য নবী ﷺ এর নির্দেশ :

মালিক ইবনে হুয়াইরিস (রাঃ) বর্ণিত। আমি এক সময় আমার সম্প্রদায়ের কিছু ব্যক্তির সাথে নবী ﷺ এর কাছে আসলাম। অতঃপর আমরা তাঁর নিকট বিশ রাত অবস্থান করলাম। তিনি ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু এবং নম্র। পরিবারস্থ লোকদের প্রতি আমাদের আগ্রহ দেখতে পেয়ে তিনি বললেন, তোমরা বাড়িতে ফিরে যাও এবং তাদের মাঝে বসবাস করতে থাকো। তাদেরকে শরীয়তের আহকাম শিক্ষা প্রদান করো এবং সালাত আদায় করো। যখন সালাতের সময় হবে তখন তোমাদের একজন আযান দেবে এবং তোমাদের মাঝে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি তোমাদের সালাতের ইমামতি করবে। [সহীহ বুখারী, হা/৬২৮; নাসাঈ, হা/৬৩৫।]

আযান দেয়ার ফযীলত ও মুয়াজ্জিনের মর্যাদা :

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي النِّدَاءِ وَالصَّفِّ الْاَوَّلِ ثُمَّ لَمْ يَجِدُوْا اِلَّا اَنْ يَّسْتَهِمُوْا عَلَيْهِ لَاسْتَهَمُوْا وَلَوْ يَعْلَمُوْنَ مَا فِي التَّهْجِيْرِ لَاسْتَبَقُوْا اِلَيْهِ وَلَوْ يَعْلَمُوْنَ مَا فِي الْعَتَمَةِ وَالصُّبْحِ لَاَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আযান দেয়া এবং প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর মধ্যে কী সওয়াব রয়েছে তা যদি মানুষ জানত, আর লটারী ছাড়া তা অর্জন করার জন্য অন্য কোন ব্যবস্থা না থাকত, তাহলে এজন্য তারা অবশ্যই লটারী করত। আর যোহরের সালাত প্রথম ওয়াক্তে আদায় করার মধ্যে কী (ফযীলত) রয়েছে, যদি তারা জানত তাহলে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করত। তদ্রূপ এশা ও ফজরের সালাতে কী (ফযীলত) নিহিত রয়েছে যদি মানুষ তা জানত, তাহলে তারা অবশ্যই উক্ত সালাতে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও উপস্থিত হতো। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৪৯; সহীহ বুখারী, হা/৬১৫; সহীহ মুসলিম, হা/১০০৯; নাসাঈ, হা/৫৪০; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭২২৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/২১৫৩; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৩১; মিশকাত, হা/৬২৮।]

কিয়ামতের দিন মুয়াজ্জিনরা লম্বা ঘাড় বিশিষ্ট হবেন :

عَنْ مُعَاوِيَةُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ -ﷺ - يَقُوْلُ : اَلْمُؤَذِّنُوْنَ اَطْوَلُ النَّاسِ اَعْنَاقًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ

মুয়াবিয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, কিয়ামতের দিন মুয়াজ্জিনরা লম্বা ঘাড় বিশিষ্ট হবেন। [সহীহ মুসলিম, হা/৮৭৮; ইবনে মাজাহ, হা/৭২৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬৯০৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৬৬৯; জামেউস সগীর, হা/১১৫৯১; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৪২; মিশকাত, হা/৬৫৪।]

সুতরাং কিয়ামতের দিন তাদেরকে দেখে সবাই চিনে নিবে যে, এরা দুনিয়াতে মুয়াজ্জিন ছিল। তারা আল্লাহর তাওহীদ ঘোষণা করত এবং মানুষকে সালাতের দিকে আহবান করত। ফলে সেখানে তারা আলাদা সম্মান লাভ করবে এবং আল্লাহও তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবেন।

যারা আযানের শব্দ শুনবে তারা প্রত্যেকেই মুয়াজ্জিনের জন্য সাক্ষ্য দেবে :

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ اَبِيْ صَعْصَعَةَ اَلْاَنْصَارِيِّ ، اَنَّهٗ اَخْبَرَهٗ اَنَّ اَبَا سَعِيْدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ لَهٗ اِنِّيْ اَرَاكَ تُحِبُّ الْغَنَمَ وَالْبَادِيَةَ فَاِذَا كُنْتَ فِي غَنَمِكَ ، اَوْ بَادِيَتِكَ فَاَذَّنْتَ بِالصَّلَاةِ فَارْفَعْ صَوْتَكَ بِالنِّدَاءِ ، فَاِنَّهٗ لَا يَسْمَعُ مَدٰى صَوْتِ الْمُؤَذِّنِ جِنٌّ ، وَلَا اِنْسٌ ، وَلَا شَيْءٌ اِلَّا شَهِدَ لَهٗ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ اَبُو سَعِيْدٍ سَمِعْتُهٗ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ

আবদুর রহমান ইবনে আবী সা‘সা‘ আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাকে তার পিতা সংবাদ দিয়েছেন যে, একদা আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) তাঁকে বলেন, আমি দেখতে পাচ্ছি, তুমি বকরী চরানোকে এবং মরুভূমিকে ভালোবাস। তাই তুমি যখন তোমার বকরীর পালের কাছে অথবা বন-জঙ্গলে থাক এবং সালাতের জন্য আযান দাও, তখন তোমার আযানের শব্দ উঁচু করো। কারণ আযানের শব্দ যতদূর যাবে এবং সে স্থানে জিন, ইনসান ও অন্যান্য যা কিছু থাকবে, প্রত্যেকেই কিয়ামতের দিন তার জন্য সাক্ষ্য দেবে। আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, আমি এ কথাগুলো রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট শুনেছি। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/১৫১; সহীহ বুখারী, হা/৬০৯; নাসাঈ, হা/৬৪৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৪১১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৬৬১; জামেউস সগীর, হা/৪২১৫; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২৩২; মিশকাত, হা/৬৫৬।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন