hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুস্ সালাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৪১
হায়েয ও নিফাস অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ
১. সালাত আদায় করা :

হায়েয ও নিফাস অবস্থায় ফরয, নফলসহ সকল ধরনের সালাত আদায় করা নিষিদ্ধ। অনুরূপভাবে পবিত্র হওয়ার পর ফরয সালাতসমূহের কাযা আদায় না করার ব্যাপারেও বিদ্বানগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِي سَعِيْدٍ ، قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ تُصَلِّ وَلَمْ تَصُمْ فَذٰلِكَ نُقْصَانُ دِينِهَا

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, হায়েয অবস্থায় তারা কি সালাত ও সিয়াম থেকে বিরত থাকে না? দ্বীনের ক্ষেত্রে এটা তাদের একটা ঘাটতি। [সহীহ বুখারী, হা/১৯৫১; সহীহ মুসলিম, হা/৮০।]

حَدَّثَتْنِيْ مُعَاذَةُ أَنَّ امْرَأَةً قَالَتْ لِعَائِشَةَ أَتَجْزِيْ إِحْدَانَا صَلَاتَهَا إِذَا طَهُرَتْ فَقَالَتْ أَحَرُوْرِيَّةٌ أَنْتِ كُنَّا نَحِيْضُ مَعَ النَّبِيِّ فَلَا يَأْمُرُنَا بِه ، أَوْ قَالَتْ فَلَا نَفْعَلُه

মুয়ায (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মহিলা আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের জন্য হায়েযকালীন কাযা সালাত পবিত্র হওয়ার পর আদায় করলে চলবে কি না? আয়েশা (রাঃ) বললেন, তুমি কি হারূরিয়্যা? [খারিজীদের একটি দল, যারা ঋতুবতীর জন্য সালাতের কাযা ওয়াজিব মনে করত।] আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সময় ঋতুবতী হতাম, কিমত্মু তিনি আমাদেরকে সালাত কাযা করার নির্দেশ দিতেন না। অথবা তিনি বললেন, আমরা কাযা আদায় করতাম না। [সহীহ বুখারী, হা/৩২১; সহীহ মুসলিম, হা/৭৮৭; আবু দাউদ, হা/২৬২; তিরমিযী, হা/১৩০; নাসাঈ, হা/৩৮২; ইবনে মাজাহ, হা/৬৩১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০৮২; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/১০০১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৩৪৯।]

২. সিয়াম রাখা :

নারীরা হায়েয ও নিফাসের সময় সিয়াম রাখা বন্ধ রাখবে। তবে রমাযানের সিয়াম পরবর্তীতে কাযা আদায় করে নিবে। আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হায়েয হলে সিয়াম কাযা করা ও সালাত কাযা না করার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হতো। [সহীহ মুসলিম, হা/৩৩৫; আবু দাউদ, হা/২৬৩; ইবনে মাজাহ, হা/৬৪৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৩৭৬।]

৩. তাওয়াফ করা :

হায়েয অবস্থায় তাওয়াফ করা বৈধ নয়। কেননা আয়েশা (রাঃ) হজ্জের সময় ঋতুবতী হলে রাসূলুল্লাহ ﷺ তাকে বলেছিলেন, হাজীদের মতো হজ্জের সকল কার্যাদি সম্পাদন করো। তবে পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করো না। [সহীহ বুখারী, হা/১৬৫০; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/৯২৫; সহীহ মুসলিম, হা/২৯৭৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩৮৩৫; দারেমী, হা/১৮৪৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৯১৪।]

৪. সহবাস করা :

হায়েয অবস্থায় সহবাস করা হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَيَسْاَلُوْنَكَ عَنِ الْمَحِيْضِؕ قُلْ هُوَ اَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَآءَ فِى الْمَحِيْضِ وَلَا تَقْرَبُوْهُنَّ حَتّٰى يَطْهُرْنَۚ فَاِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوْهُنَّ مِنْ حَيْثُ اَمَرَكُمُ اللهُؕ اِنَّ اللهَ يُحِبُّ التَّوَّابِيْنَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِيْنَ﴾

(হে নবী!) তারা তোমাকে হায়েয সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বলো, তা খুবই কষ্টদায়ক। সুতরাং হায়েযের সময় তোমরা সহবাস করা থেকে দূরে থাকো। তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তোমরা তাদের সাথে মেলামেশা করো না। আর যখন তারা (মাসিক থেকে) পবিত্র হয়ে যায়, তখন তোমরা আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় তাদের সাথে মেলামেশা করো। নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালোবাসেন এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকেও ভালোবাসেন। (সূরা বাক্বারা- ২২২)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

اِصْنَعُوْا كُلَّ شَىْءٍ إِلَّا النِّكَاحَ

অর্থাৎ এ অবস্থায় তোমরা সহবাস ব্যতীত তাদের সাথে সবকিছু করতে পার। [সহীহ মুসলিম, হা/৭২০; মুসনাদে আহমাদ, হা/ ১২৩৭৬]

যদি কোন মুসলিম ব্যক্তি হায়েয অবস্থায় সহবাস করা হালাল মনে করে, তাহলে সে কাফির ও মুরতাদ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে যদি কেউ ভুলবশত বা হায়েয হয়নি মনে করে সহবাস করে ফেলে, তাহলে গোনাহ হবে না।

কিন্তু যদি হায়েয হয়েছে জেনেও ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করে, তাহলে সে কবীরা গোনাহগার হবে এবং তার উপর তাওবা করা আবশ্যক হবে। কিমত্মু কাফফারা আবশ্যক হবে কিনা- এ ব্যাপারে অধিকাংশের অভিমত হলো, তার উপর কাফফারা আবশ্যক হবে না। কাফফারা আবশ্যক হওয়ার ব্যাপারে ইবনে আববাস (রাঃ) হতে যে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে তা দুর্বল হওয়ার কারণে গ্রহণযোগ্য নয়। [যঈফ আবু দাউদ, হা/২৬৪; ইবনে মাজাহ, হা/৬৪০।]

ঋতুবতী মহিলার সাথে সহবাস ব্যতীত সবকিছু বৈধ। মাসরুক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা তিনি আয়েশা (রাঃ) কে বলেছিলেন, আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে চাই। কিমত্মু আপনাকে তা বলতে লজ্জা করে। তখন আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি তোমার মায়ের মতো এবং তুমি আমার ছেলের মতো। অতঃপর মাসরুক (রাঃ) বললেন, হায়েয অবস্থায় পুরুষরা তাদের স্ত্রীদের সাথে কীরূপে মেলামেশা করবে? জবাবে তিনি বললেন, লজ্জাস্থান উপভোগ করা ব্যতীত তার সাথে সবকিছু করতে পারবে। [তাফসীরে তাবারানী, ৪/৩৭৮।]

কোন মহিলার হায়েয বন্ধ হওয়ার পর উত্তম হলো সে আগে গোসল করবে; তারপর স্বামী তার সাথে মিলিত হবে। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, فَاِذَا تَطَهَّرْنَ এর অর্থ হলো, যখন তারা পানি দ্বারা পবিত্র হবে তখন তোমরা স্ত্রীর সাথে মিলিত হও। [তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা বাকারার ২২২ নং আয়াতের তাফসীর প্রস&&ঙ্গ।]

তালাক :

হায়েয অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দেয়া স্বামীর জন্য হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿يَاۤ اَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَآءَ فَطَلِّقُوْهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَأَحْصُوا الْعِدَّةَ﴾

হে নবী! যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দেবে তখন তাদেরকে ইদ্দতের মধ্যে তালাক দাও এবং ইদ্দত গণনা করো। (সূরা ত্বালাক- ১)

অর্থাৎ এমন সময় তালাক দিতে হবে, যেন তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই মহিলা ইদ্দত পালন করতে পারে। আর এটা গর্ভাবস্থা অথবা যৌনসম্ভোগহীন পবিত্রাবস্থা ব্যতীত সম্ভব নয়। কেননা যদি হায়েয অবস্থায় তালাক দেয়া হয়, তাহলে মহিলা প্রাথমিক অবস্থায় ইদ্দত পালন করতে পারবে না। আর যদি যৌনসম্ভোগের পর ঐ তুহুরে (পবিত্রাবস্থায়) তালাক দেয়া হয়, তবে এই মিলনে গর্ভবতী হয়েছে কি না, তা জানা যায় না। ফলে তার ইদ্দত হায়েয ধরা হবে, নাকি সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত ধরা হবে- এ বিষয়টি অস্পষ্ট থেকে যায়। তাই বিষয়টি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তালাক দেয়া স্বামীর প্রতি হারাম। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّه طَلَّقَ اِمْرَأَتَه وَهِيَ حَائِضٌ عَلٰى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ فَسَأَلَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَسُوْلَ اللهِ عَنْ ذٰلِكَ ، فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ مُرْهُ فَلْيُرَاجِعْهَا ثُمَّ لِيُمْسِكْهَا حَتّٰى تَطْهُرَ ثُمَّ تَحِيْضَ ثُمَّ تَطْهُرَ ثُمَّ إِنْ شَاءَ أَمْسَكَ بَعْدُ وَإِنْ شَاءَ طَلَّقَ قَبْلَ أَنْ يَّمَسَّ فَتِلْكَ الْعِدَّةُ الَّتِيْ أَمَرَ اللهُ أَنْ تُطَلَّقَ لَهَا النِّسَاءُ

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যুগে একদা তিনি তাঁর স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিলেন। অতঃপর উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) উক্ত বিষয়টি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে জানালেন। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তাকে আদেশ করো যেন সে তাকে ফিরিয়ে নেয় এবং পবিত্র হওয়া পর্যন্ত স্বীয় স্ত্রীত্বে রাখে। তারপর হায়েয শেষে পুনরায় পবিত্র হওয়ার পর ইচ্ছে করলে রেখে দেবে। অন্যথায় যৌনসম্ভোগের পূর্বে তালাক দেবে। এটাই সেই ইদ্দত, যার মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা মহিলাদেরকে তালাক দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। [সহীহ বুখারী, হা/৫২৫১; আবু দাউদ, হা/২১৮১; নাসাঈ, হা/৩৩৮৯।]

অতএব কোন ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দেয় তবে সে গোনাহগার হবে। এমতাবস্থায় তাকে অবশ্যই আল্লাহর নিকট তাওবা করতে হবে এবং স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে হবে। অতঃপর তাকে যে হায়েযের মধ্যে তালাক দিয়েছিল তা থেকে পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অবকাশ দিবে। তারপর ইচ্ছা হলে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ অনুযায়ী তালাক প্রদান করবে। এরপর যখন পুনরায় হায়েয হতে পবিত্র হবে তখন ইচ্ছা করলে বহাল রাখবে নতুবা যৌনসম্ভোগের পূর্বেই তালাক দিয়ে দিবে।

তবে নিম্নের বর্ণিত অবস্থায় হায়েয চলাকালীন সময়ও তালাক দেয়া যাবে :

১. যদি বিবাহের পর মিলনের পূর্বে স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দেয় তবে কোন দোষ নেই। কেননা এমতাবস্থায় তাকে ইদ্দত পালন করতে হবে না।

২. যদি গর্ভাবস্থায় হায়েয হয় তাহলে এমতাবস্থায় তালাক দেয়াতে দোষ নেই। কেননা গর্ভবতী মহিলার ইদ্দতের সময় নির্ধারিত। আর তা হলো সমত্মান প্রসব হওয়া।

হায়েয অবস্থায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াতে কোন দোষ নেই। এটা নিষেধ হওয়ার পক্ষে কোন দলীল নেই। কিমত্মু পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত হায়েয অবস্থায় স্বামী তার সাথে মিলিত হতে পারবে না।

হায়েয থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য গোসল করা ওয়াজিব :

হায়েয থেকে পবিত্র হওয়ার পর গোসল করা ওয়াজিব। কেননা হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ أَبِي حُبَيْشٍ كَانَتْ تُسْتَحَاضُ فَسَأَلَتِ النَّبِيَّ فَقَالَ ذٰلِكِ عِرْقٌ وَلَيْسَتْ بِالْحَيْضَةِ فَإِذَا أَقْبَلَتِ الْحَيْضَةُ فَدَعِي الصَّلَاةَ ، وَإِذَا أَدْبَرَتْ فَاغْتَسِلِيْ وَصَلِّيْ

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমা বিনতে আবী হুবাইশ (রাঃ) এর ইসিত্মহাযা হতো। ফলে তিনি একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে উপস্থিত হয়ে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। তখন তিনি বললেন, এটা (রগ থেকে আসা) রক্ত; হায়েযের রক্ত নয়। সুতরাং যখন তোমার হায়েয দেখা দিবে তখন সালাত ছেড়ে দিবে। আর যখন হায়েযের দিনগুলো শেষ হয়ে যাবে তখন সালাত আদায় করবে। [সহীহ বুখারী, হা/৩২০; সহীহ মুসলিম, হা/৭৮২; আবু দাউদ, হা/২৮৮।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন