hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুস্ সালাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২২
গোসলের প্রাসংঙ্গিক মাসআলা
১. গোসলের জন্য নিয়ত করা :

গোসল হলো একটি ইবাদাত। এটা শরীয়াতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সুতরাং গোসলের মধ্যে নিয়ত শর্ত। আর এ ব্যাপারে নিয়ত হলো, আল্লাহ ও তার রাসূলের নির্দেশ বাস্তবায়ন ও পবিত্রতা অর্জনের লক্ষ্যে গোসল করার জন্য সংকল্প করা। আর ইখলাছ হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্য লাভের সংকল্প করা এবং মুমিন বান্দার উপর যা ফরয হয়েছে তা আদায়ের জন্য ইচ্ছা পোষণ করা। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, প্রত্যেকটি আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। আর গোসলও এই আমলের অন্তর্ভুক্ত।

২. পাত্রে হাত প্রবেশের পূর্বেই দু’হাত ধৌত করা :

عَنْ مَيْمُونَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ قَالَتْ وَضَعْتُ لِرَسُوْلِ اللهِ غُسْلًا وَسَتَرْتُه فَصَبَّ عَلٰى يَدِه فَغَسَلَهَا مَرَّةً ، أَوْ مَرَّتَيْنِ

মাইমূনা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম এবং তাকে আড়াল করলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ দু’হাতের কব্জি দু’বার অথবা তিন বার ধৌত করলেন। এরপর পাত্রে হাত প্রবেশ করালেন। [সহীহ বুখারী, হা/২৬৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৮৯৯।]

৩. গুপ্তাঙ্গ ধৌত করার পর মাটি বা সাবান জাতীয় কিছু দ্বারা হাত ধৌত করা :

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর গোসলের পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,

ثُمَّ أَفْرَغَ بِه عَلٰى فَرْجِه وَغَسَلَه بِشِمَالِه ثُمَّ ضَرَبَ بِشِمَالِهِ الْأَرْضَ فَدَلَكَهَا دَلْكًا شَدِيْدًا

অতঃপর লজ্জাস্থানের উপর পানি ঢাললেন এবং বাম হাত দ্বারা তা ধৌত করলেন। তারপর বাম হাত মাটিতে ভালো করে ঘষলেন। [সহীহ মুসলিম, হা/৭৪৮; নাসাঈ, হা/২৫৩; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/২৪১।]

৪. গোসলের সময় কুলি করা ও নাকে পানি দেয়ার হুকুম :

প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী গোসলের মধ্যে কুলি করা ও নাকে পানি দেয়া ওয়াজিব। কেননা গোসলে সর্বাঙ্গ ধৌত করা ওয়াজিব। আর মুখমন্ডল শরীরেরই অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং কুলি করা ও নাকে পানি দেয়াও জরুরি।

৫. দুই পা কখন ধৌত করবে?

গোসল করার স্থানটি যদি পরিষ্কার না হয় তাহলে পরে পা ধৌত করবে। আর যদি স্থান পরিষ্কার হয় তাহলে অযুর সাথে পা ধৌত করলেও চলবে। হাদীসে বলা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ দু’পা গোসল সম্পন্ন করার পর ধৌত করেছেন। [সহীহ মুসলিম, হা/৭৪৮; নাসাঈ, হা/২৫৩; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/২৪১।]

৬. গোসলের সময় দাড়ি খিলাল করা প্রসঙ্গে :

যদি চামড়া বা ত্বকে পানি পৌঁছে তাহলে দাড়ি খিলাল করা মুস্তাহাব। নতুবা দাড়ির গোড়ায় বা ত্বকে পানি পৌঁছানোর জন্য দাড়ি খিলাল করা ওয়াজিব হবে। কেননা আয়েশা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে আমভাবে বলা হয়েছে যে, নবী ﷺ চুলের গোঁড়া খিলাল করতেন। [সহীহ বুখারী, হা/২৭২; নাসাঈ, হা/৪২০।]

৭. কতবার পানি ঢালবে?

গোসলের সময় কতবার শরীরে পানি ঢালতে হবে- এ ব্যাপারে কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা বর্ণনা করা হয়নি। সুতরাং ধরে নেয়া যায় যে, এর সর্বনিম্ন সংখ্যা হলো একবার। সর্বাঙ্গ ধৌত করার ব্যাপারে আয়েশা (রাঃ) বলেন,

ثُمَّ يُفِيْضُ الْمَاءَ عَلٰى جِلْدِه كُلِّه

অর্থাৎ তারপর তার সারা দেহের উপর পানি পৌঁছিয়ে দিতেন। [সহীহ বুখারী, হা/২৪৮; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/৯৮; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১১৯৬।]

তবে শাইখুল ইসলাম ও অধিকাংশ আলেমদের মত অনুযায়ী তিনবার পানি ঢালা মুস্তাহাব। [ফাতহুল বারী, ১/৪৩৯।]

৮. গোসলের অঙ্গগুলো কচলানো :

অঙ্গ কচলানো মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়। ইমরান ইবনে হুসাইন (রাঃ) এর হাদীসে বলা হয়েছে,

وَكَانَ اٰخِرَ ذٰلكَ أَنْ أَعْطَى الَّذِي أَصَابَتْهُ الْجَنَابَةُ إِنَاءً مِنْ مَاءٍ، قَالَ : ‏ اذْهَبْ، فَأَفْرِغْهُ عَلَيْكَ

অপর এক ব্যক্তি যিনি জুনুবী হয়েছিলেন, তাকেও এক পাত্র পানি দিয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, এ পানি নিয়ে যাও এবং শরীরে ঢেলে দাও। [সহীহ বুখারী, হা/৩৪৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৯৯১২; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/২৭১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৩০১।]

উপরোক্ত হাদীসে গোসলের নিয়ম সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, শরীরের উপর পানি ঢেলে দিতে হবে। কিমত্মু এখানে কচলানোর কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি। এ থেকে বুঝা যায় যে, কচলানো উত্তম কিমত্মু জরুরি নয়। তবে লক্ষ্য করতে হবে যে, শরীরের সব জায়গায় পানি পৌঁছানোর জন্য ভিজা হাত বুলিয়ে নেয়া জরুরি।

৯. জনসমক্ষে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা বৈধ নয় :

জনসমক্ষে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা বৈধ নয়, কিমত্মু বাথরুমের ভেতরে যেখানে কেউ দেখতে পাবে না সেখানে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা প্রয়োজনে জায়েয আছে। তবে নির্জন স্থানে হলেও উলঙ্গ হয়ে গোসল না করা উচিত।

অপর হাদীসে এসেছে, জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন লুঙ্গি ছাড়া গোসলখানায় প্রবেশ না করে। [নাসাঈ, হা/৪০১; তিরমিযী, হা/২৮০১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮২৫৮; মুসত্মাদরাকে হাকে, হা/৭৭৭৯।]

১০. পর্দা করে গোসল করা উত্তম :

পোশাক পরিহিত অবস্থায় জনসমক্ষে গোসল করা জায়েয আছে। তবে সম্ভব হলে পর্দার আড়ালে গোসল করা উত্তম। যেমন- হাদীসে এসেছে,

عَنْ مَيْمُوْنَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ قَالَتْ وَضَعْتُ لِرَسُوْلِ اللهِ غُسْلًا وَسَتَرْتُه

মাইমূনা বিনতে হারেস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর গোসলের পানি রেখে তাকে পর্দা করে দিলাম। [সহীহ বুখারী, হা/২৬৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৮৯৯।]

উল্লেখ্য যে, অনেক জায়গায় বিশেষ করে পল্লী অঞ্চলে দেখা যায় যে, অনেক নারী-পুরুষ একসাথে মিলে পুকুরে অথবা নদীর ঘাটে গোসল করে। এটা কোনভাবেই জায়েয নয়। কেননা গোসলের সময় কাপড় ভিজার পর তার শরীরে একেবারে লেগে যাওয়ার ফলে শরীরের অনেক অঙ্গই প্রকাশ পেয়ে যায়। এজন্য বেগানা নারী-পুরুষদের আলাদাভাবে গোসল করা একামত্ম জরুরি।

১১. জানাবাতের গোসল দ্রুত করা উত্তম :

জুনুবী ব্যক্তির জন্য দেরীতে গোসল করা বৈধ তবে দ্রুত গোসল করা উত্তম ও অত্যাধিক পবিত্রতার পরিচায়ক।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ لَقِيَه فِي بَعْضِ طَرِيْقِ الْمَدِينَةِ وَهُوَ جُنُبٌ، فَانْخَنَسْتُ مِنْهُ، فَذَهَبَ فَاغْتَسَلَ، ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ : ‏ أَيْنَ كُنْتَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ ؟ ‏‏ قَالَ : كُنْتُ جُنُبًا، فَكَرِهْتُ أَنْ أُجَالِسَكَ وَأَنَا عَلَى غَيْرِ طَهَارَةٍ ‏ . ‏ فَقَالَ : ‏ سُبْحَانَ اللهِ، إِنَّ الْمُؤْمِنَ لَا يَنْجُسُ

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা মদিনার রাস্তায় নবী ﷺ এর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হলো, তখন তিনি জুনুবী অবস্থায় ছিলেন। (আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন), তখন আমি নিজেকে অপবিত্র মনে করে কেটে পড়লাম। এরপর তিনি বাড়ীতে চলে গেলেন এবং গোসল সেরে নবী ﷺ-এর কাছে আসলেন। (আসা মাত্রই) তিনি বললেন, হে আবু হুরায়রা! এতক্ষণ তুমি কোথায় ছিলে? আমি বললাম, আমি অপবিত্র ছিলাম। তাই অপবিত্র অবস্থায় আপনার সাথে বসা অসমীচীন মনে করেছি। এ কথা শুনে তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ! মুসলিম কখনো অপবিত্র হয় না। [সহীহ বুখারী, হা/২৮৩; সহীহ মুসলিম, হা/৮৫০; নাসাঈ, হা/২৬৯; ইবনে মাজাহ, হা/৫৩৪।]

১২. জুনুবী ব্যক্তি গোসলের পূর্বে অযু করে ঘুমাতে পারে :

عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ الله عَنْهَا قَالَتْ : كَانَ النَّبِيُّ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَنَامَ وَهُوَ جُنُبٌ، غَسَلَ فَرْجَه ، وَتَوَضَّأَ لِلصَّلَاةِ

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ এর অভ্যাস ছিল, তিনি রাতে জুনুবী অবস্থায় নিদ্রা যাওয়ার ইচ্ছা করলে প্রথমে লজ্জাস্থান ধুয়ে তারপর সালাতের অযুর মতো অযু করে নিতেন (তারপর ঘুমাতেন)। [সহীহ বুখারী, হা/২৮৮; সহীহ মুসলিম, হা/৭২৫; আবু দাউদ, হা/২২২।]

আবদুল্লাহ ইবনে আবু কায়স (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর বিতর সম্বন্ধে আয়েশা (রাঃ) কে প্রশ্ন করলাম। তখন তিনি (তৎবিষয়ে) একটি হাদীস বর্ণনা করলেন। তারপর আমি জিজ্ঞেস করলাম, তিনি নাপাকির সময় কি ঘুমানোর আগে গোসল করতেন, না গোসল করার আগে ঘুমাতেন? তিনি বললেন, সবই করতেন। কখনো গোসল করে ঘুমাতেন আবার কখনো অযু করে ঘুমিয়ে পড়তেন। আমি বললাম, সমস্ত প্রশংসা সে আল্লাহর যিনি সব কাজেই অবকাশ রেখেছেন। [সহীহ মুসলিম, হা/৭৩১; তিরমিযী, হা/২৯২৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৪৯৭; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/৫৪৩।]

১৩. গোসলের পর পুনরায় অযু আবশ্যক নয় :

যে ব্যক্তি শরয়ী পন্থায় গোসল করবে এবং সালাত আদায়ের নিয়ত করবে তার জন্য পরে পুনরায় অযু করা আবশ্যক নয়। এমনকি যদি সে গোসল করার সময় অযু নাও করে। কেননা জানাবাত থেকে পবিত্রতা অর্জন করলে ক্ষুদ্রতর নাপাকী থেকেও পবিত্রতা অর্জন হয়ে যায়।

عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : كَانَ رَسُوْلُ اللهِ لَا يَتَوَضَّأُ بَعْدَ الْغُسْلِ مِنَ الْجَنَابَةِ

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ জানাবাতের গোসলের পর আর অযু করতেন না। [ইবনে মাজাহ, হা/৫৭৯; বায়হাকী, হা/৮১৮; শারহুস সুন্নাহ, হা/৬৪৯।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন