hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুস্ সালাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৭৩
সালাতুল খাওফ
খাওফ শব্দের অর্থ হচ্ছে ভয়। মুসলিমগণ যখন যুদ্ধের ময়দানে অবস্থান করেন তখন সবাই সালাতে মশগুল হলে এ সুযোগে শত্রু পক্ষের আক্রমণের ভয় থাকে। এ জন্য আল্লাহ তা‘আলা যুদ্ধের ময়দানে সালাত আদায়ের বিশেষ নিয়ম বর্ণনা করেছেন। এ সালাতকে সালাতুল খাওফ বলে।

মূলত সালাত এমন একটি ইবাদাত, যা কোন অবস্থাতেই বান্দার উপর থেকে রহিত হয় না। ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ আমল জিহাদের ময়দানে যুদ্ধরত অবস্থায় থাকলেও সালাত ত্যাগ করা যাবে না। কিমত্মু যুদ্ধও চালিয়ে যেতে হবে। যেহেতু এর মধ্যেই রয়েছে ইসলামের বিজয়। আর সকল বাতিল দ্বীনের উপর ইসলামকে বিজয়ী করার জন্যই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁর রাসূলকে পাঠিয়েছেন। এজন্য মুসলিমদের দায়িত্ব হচ্ছে, তারা জিহাদও করবে এবং সালাতও আদায় করবে। কিমত্মু জিহাদরত অবস্থায় সালাতে মশগুল হওয়ার কারণে শত্রুপক্ষ যাতে সুযোগ নিতে না পারে সেজন্য আল্লাহ তা‘আলা সালাত আদায়ের বিশেষ পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَاِذَا كُنْتَ فِيْهِمْ فَاَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَآئِفَةٌ مِّنْهُمْ مَّعَكَ وَلْيَاْخُذُوْاۤ اَسْلِحَتَهُمْؕ فَاِذَا سَجَدُوْا فَلْيَكُوْنُوْا مِنْ وَّرَآئِكُمْ وَلْتَاْتِ طَآئِفَةٌ اُخْرٰى لَمْ يُصَلُّوْا فَلْيُصَلُّوْا مَعَكَ وَلْيَاْخُذُوْا حِذْرَهُمْ وَاَسْلِحَتَهُمْۚ وَدَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لَوْ تَغْفُلُوْنَ عَنْ اَسْلِحَتِكُمْ وَاَمْتِعَتِكُمْ فَيَمِيْلُوْنَ عَلَيْكُمْ مَّيْلَةً وَّاحِدَةًؕ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ اِنْ كَانَ بِكُمْ اَذًى مِّنْ مَّطَرٍ اَوْ كُنْتُمْ مَّرْضٰۤى اَنْ تَضَعُوْاۤ اَسْلِحَتَكُمْۚ وَخُذُوْا حِذْرَكُمْؕ اِنَّ اللهَ اَعَدَّ لِلْكَافِرِيْنَ عَذَابًا مُّهِيْنًا﴾

আর যখন তুমি তাদের মধ্যে অবস্থান করবে, তখন তাদের সাথে সালাত কায়েম করবে। অতঃপর তাদের একদল যেন তোমার সঙ্গে দাঁড়ায় এবং তারা যেন সশস্ত্র থাকে। তারা সিজদায় গেলে তারা যেন তোমাদের পেছনে অবস্থান করে; আর অপর একদল যারা সালাতে শরীক হয়নি তারা যেন তোমার সঙ্গে সালাতে শরীক হয় এবং তারা যেন সতর্ক ও সশস্ত্র থাকে। কাফিররা কামনা করে যেন তোমরা তোমাদের অস্ত্রশস্ত্র ও আসবাবপত্র সম্বন্ধে অসতর্ক হও, যাতে তারা তোমাদের ওপর একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। আর যদি তোমরা বৃষ্টির জন্য কষ্ট পাও অথবা পীড়িত থাক, তবে তোমরা অস্ত্র রেখে দিলে তোমাদের কোন দোষ নেই; কিন্তু তোমরা সতর্কতা অবলম্বন করবে। নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। (সূরা নিসা- ১০২)

সালাতুল খাওফের নিয়ম আদায় করার নিয়ম :

যুদ্ধের সময় কসর করার ব্যাপারে কোন সংখ্যা নির্দিষ্ট নেই। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যেভাবে সম্ভব সালাত আদায় করে নিতে হবে। জামা‘আতে আদায় করার সুযোগ থাকলে জামা‘আতের সাথে আদায় করে নিতে হবে। অন্যথায় একা একা আদায় করে নিতে হবে। কিবলার দিকে মুখ করে আদায় করা সম্ভব না হলে যে দিকে মুখ করে আদায় করা সম্ভব সেদিকে মুখ করে আদায় করতে হবে। সওয়ারীর পিঠে বসে চলন্ত অবস্থায়ও আদায় করা যেতে পারে। রুকূ ও সিজদা করা সম্ভব না হলে ইশারায় করতে হবে। প্রয়োজন হলে সালাত আদায় করা অবস্থায় হাঁটতেও পারে। কাপড়ে রক্ত লেগে থাকলেও কোন ক্ষতি নেই।

যুদ্ধের অবস্থার উপর ‘সালাতুল খাওফ’ আদায়ের পদ্ধতি নির্ভর করে। নবী ﷺ বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে এ সালাত আদায় করেছেন। কাজেই ঐ পদ্ধতিগুলোর মধ্য থেকে মুসলিম দলের প্রধান যেটির অনুমতি দেবেন সে পদ্ধতিতেই সালাত আদায় করে নেবে। নিম্নে একটি নিয়ম উল্লেখ করা হলো :

একটি নিয়ম হচ্ছে :

সেনাদলের এক অংশ ইমামের সাথে এক রাক‘আত আদায় করবে এবং ইমাম যখন দ্বিতীয় রাক‘আতের জন্য দাঁড়াবে তখন মুক্তাদীরা নিজেরাই একা একা দ্বিতীয় রাক‘আত তাশাহ্হুদসহ আদায় করে সালাম ফিরিয়ে চলে যাবে। তারপর দ্বিতীয় দল এসে এমন অবস্থায় ইমামের সাথে শামিল হবে যে ইমাম তখনো দ্বিতীয় রাক‘আতে থাকবেন। তারা বাকী সালাত ইমামের সাথে আদায় করার পর বাকী এক রাক‘আত নিজেরা ওঠে একা একা আদায় করে নেবে। এ অবস্থায় ইমামকে দ্বিতীয় রাক‘আতে দীর্ঘ কিয়াম করতে হবে। যেমন- হাদীসে এসেছে,

عَنْ شُعَيْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ سَأَلْتُه هَلْ صَلَّى النَّبِيُّ يَعْنِيْ صَلَاةَ الْخَوْفِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَالِمٌ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ قَالَ غَزَوْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ قِبَلَ نَجْدٍ، فَوَازَيْنَا الْعَدُوَّ فَصَافَفْنَا لَهُمْ فَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ يُصَلِّيْ لَنَا فَقَامَتْ طَائِفَةٌ مَعَه تُصَلِّيْ، وَأَقْبَلَتْ طَائِفَةٌ عَلَى الْعَدُوِّ وَرَكَعَ رَسُوْلُ اللهِ بِمَنْ مَعَه ، وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ، ثُمَّ انْصَرَفُوْا مَكَانَ الطَّائِفَةِ الَّتِيْ لَمْ تُصَلِّ، فَجَاءُوْا، فَرَكَعَ رَسُوْلُ اللهِ بِهِمْ رَكْعَةً، وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ، فَقَامَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ فَرَكَعَ لِنَفْسِه رَكْعَةً وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ‏

শু‘আইব (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যুহ্রী (রহ.) কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী ﷺ কি সালাতুল খাওফ আদায় করেছেন? তিনি বললেন, আমাকে সালিম (রহ.) জানিয়েছেন যে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আমরা একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে নাজ্দ এলাকায় যুদ্ধ করছিলাম। সেখানে আমরা শত্রু সৈন্যদের মুখোমুখি সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ালাম। এ সময় রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সৈন্যদের এক অংশ তাঁর সাথে সালাতের জন্য দাঁড়ান এবং অন্য অংশ শত্রুদের মুখোমুখি অবস্থান করেন। অতঃপর যারা রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সাথে ছিলেন তিনি তাদেরকে সাথে নিয়ে এক রুকূ ও দু’সিজদা করলেন। অতঃপর এ দলটি শত্রুদের মুখোমুখি অবস্থানরত দলের নিকট চলে গেলেন এবং শত্রুদের সম্মুখে দাঁড়ালেন। অতঃপর দ্বিতীয় দলটি এসে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সালাতে অংশগ্রহণ করলে রাসূলুল্লাহ ﷺ এদেরকে নিয়ে রুকূ এবং দুটি সিজদা করলেন, তারপর সালাম ফিরালেন। তারপর প্রত্যেক দলই নিজে নিজে রুকূ এবং দু’টি সিজদা করেন। [সহীহ বুখারী, হা/৯৪২; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৭৯৯; মিশকাত, হা/১৪২০।]

প্রয়োজনে আরোহী অবস্থায় ইশারাতেও সালাতুল খাওফ আদায় করা যাবে :

- وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ فَإِذَا كَانَ الْخَوْفُ أَكْثَرَ مِنْ ذٰلِكَ فَصَلِّ رَاكِبًا أَوْ قَائِمًا تُوْمِئُ إِيْمَاءً

ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, যদি ভয় এর চেয়ে বেশি হয়, তাহলে আরোহী অবস্থায় অথবা দাঁড়ানো অবস্থায় ইশারায় সালাত আদায় করবে। [সহীহ মুসলিম, হা/১৯৭১; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৬২৫৫; মুসত্মাখরাজে ইবনে আবু আওয়ানা, হা/১৯৪১।]

বাধ্য হলে সালাত পিছিয়ে দেয়া যাবে :

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ : جَاءَ عُمَرُ يَوْمَ الْخَنْدَقِ، فَجَعَلَ يَسُبُّ كُفَّارَ قُرَيْشٍ وَيَقُوْلُ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا صَلَّيْتُ الْعَصْرَ حَتّٰى كَادَتِ الشَّمْسُ أَنْ تَغِيْبَ . ‏ فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ : ‏وَأَنَا وَاللهِ مَا صَلَّيْتُهَا بَعْدُ‏ . ‏ قَالَ : فَنَزَلَ إِلٰى بُطْحَانَ فَتَوَضَّأَ، وَصَلَّى الْعَصْرَ بَعْدَ مَا غَابَتِ الشَّمْسُ، ثُمَّ صَلَّى الْمَغْرِبَ بَعْدَهَا

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) [রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট] আসেন এবং কুরাইশ কাফিরদেরকে তিরস্কার করতে লাগলেন। তারপর বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এখনো আসরের সালাত পড়িনি, অথচ সূর্য প্রায় ডুবে যাচ্ছে। তখন নবী ﷺ তাঁকে বললেন, আল্লাহর শপথ! আমিও তো এখনো সালাত পড়িনি।

বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি সাহাবীদেরকে নিয়ে বুত্হান এলাকায় অবতরণ করলেন এবং সেখানে অযু করেন। তারপর সূর্যাসেত্মর পর সাহাবীদেরকে নিয়ে প্রথমে আসর তারপর মাগরিবের সালাত আদায় করেন। [সহীহ বুখারী, হা/৫৯৬; সহীহ মুসলিম, হা/১৪৬২; তিরমিযী, হা/১৮০; নাসাঈ, হা/১৩৬৬; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/৯৯৫; বায়হাকী, হা/৩০০৩; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৯৬।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন