hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুস্ সালাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৪৮
যেসব ইমামের পেছনে সালাত হয় না
শিরকে আকবার তথা বড় শিরকে লিপ্ত ব্যক্তির পেছনে সালাত হবে না :

যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন অন্য কাউকে শরীক করে তার পেছনে সালাত শুদ্ধ হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَقَدْ أُوْحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ﴾

তোমার নিকট এবং তোমার পূর্ববর্তীদের নিকট ওহী করা হয়েছে যে, যদি তুমি শিরক কর তবে তোমার আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সূরা যুমার- ৬৫)

শিরক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন আমাদের বই ‘‘যে কারণে ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়’’।

বিদআতীর পেছনে সালাত আদায় করা :

যদি কোন ইমাম এমন বিদআতী কাজে লিপ্ত হন যা তাকে ইসলাম থেকে বের করে দেয় না তবে ঐ ইমামের পেছনে সালাত আদায় করা জায়েয হবে। তবে এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব হলো ঐ ইমামকে উপদেশ দেয়া এবং বিদআতী কর্ম পরিত্যাগ করার জন্য দাওয়াত দেয়া। যতদিন ফায়দা না হবে ততদিন পর্যন্ত দাওয়াতী কাজ চালিয়ে যেতে থাকবে।

একদা হাসান বসরী (রহ.) কে বিদআতীর পেছনে সালাত আদায় করার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

صَلِّ وَعَلَيْهِ بِدْعَتُهٗ

অর্থাৎ তুমি তার পেছনে সালাত আদায় করো। কেননা বিদআতের গোনাহ তার উপরই বর্তাবে। [সহীহ বুখারী, ফিতনা ও বিদআতীর ইমামতি অধ্যায়; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৪০২; ইরওয়ালুল গালীল, হা/৫২৮।]

আর যদি কোন ইমাম এমন কোন বিদআতে লিপ্ত হন যা কুফরী পর্যায়ের, তাহলে ঐ ইমামের পেছনে সালাত আদায় করা জায়েয নয় । যেমন- আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছে দু‘আ করা, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উদ্দেশ্যে মান্নত করা, জবেহ করা ইত্যাদি। এগুলো কুফর ও শিরকী কাজ।

তাছাড়া কোন ইমাম যদি কুফরী আকীদায় বিশ্বাসী হন তাহলে তার পেছনেও সালাত আদায় করা জায়েয নয়। যেমন আউলিয়াদের ব্যাপারে অনেকে ধারণা করে থাকে যে, তারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ান, তারা মানুষের প্রয়োজন পূরণ করতে পারেন ইত্যাদি।

সারকথা হলো, যখন কোন ইমামের মধ্যে কুফরের নিদর্শন পাওয়া যাবে তখন তার পেছনে সালাত আদায় করা যাবে না।

আর ইমাম যদি এমন বিদআতী কর্মে লিপ্ত থাকেন যা কুফরের পর্যায় নয়, তাহলে তার পেছনে সালাত আদায় করা জায়েয হলেও যদি সহীহ আকীদা সম্পন্ন ইমামের পেছনে সালাত আদায় করার সুযোগ অন্য মসজিদে পাওয়া যায় তাহলে সেখানে সালাত আদায় করা উত্তম।

উল্লেখ্য যে, সহীহ আকীদা সম্পন্ন লোকদের উচিত হলো, তারা মাঝে মধ্যে বিদআতীদের সাথে সালাত আদায় করবে যাতে করে তাদেরকে উপদেশ দেয়া যায় এবং তাকওয়া ও কল্যাণের প্রতি সহযোগিতা করা যায়। কেননা কিছু বিদআতী রয়েছে যাদের বিদআত সম্পর্কে ধারণা নেই। যদি তাদেরকে সঠিক জ্ঞান দেওয়া যায় তাহলে তারা তা গ্রহণ করবে এবং বিদআত বর্জন করবে। এটা ঈমানদারদের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

ফাসিকের পেছনে সালাত আদায় করা :

ফাসিকের পেছনে সালাত আদায় করা মাকরূহ। তবে বাধ্যগত কারণে জায়েয আছে। কেননা রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : يُصَلُّوْنَ لَكُمْ فَإِنْ أَصَابُوْا فَلَكُمْ وَإِنْ أَخْطَؤُوْا فَلَكُمْ وَعَلَيْهِمْ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ইমামগণ তোমাদের সালাতে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। তারা সঠিকভাবে সালাত আদায় করালে তোমাদের জন্য নেকী রয়েছে। আর তারা ভুল করলে কেবল তোমাদের জন্য নেকী রয়েছে, কিমত্মু তাদের জন্য রয়েছে গোনাহ। [সহীহ বুখারী, হা/৬৯৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৬৪৮; মুসনাদুল বাযযার, হা/৮৭১৪; বায়হাকী, হা/৩৮৬৮; শারহুস সুন্নাহ, হা/৮৩৯; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৪৮৩; মিশকাত, হা/১১৩৩।]

এ বিষয়ে খলীফা উসমান (রাঃ) কে বিদ্রোহীদের দ্বারা গৃহে অবরুদ্ধ অবস্থায় জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

اَلصَّلَاةُ أَحْسَنُ مَا يَعْمَلُ النَّاسُ فَإِذَا أَحْسَنَ النَّاسُ فَأَحْسِنْ مَعَهُمْ ، وَإِذَا أَسَاؤُوْا فَاجْتَنِبْ إِسَاءَتَهُمْ

অর্থাৎ মানুষের শ্রেষ্ঠ আমল হলো সালাত। অতএব যখন তারা ভালো কাজ করে তখন তুমি তাদের সাথী হও। আর যখন তারা মন্দ কাজ করে তখন তুমি তাদের মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকো। [সহীহ বুখারী, হা/৬৯৫; বায়হাকী, হা/৫০৯৪; মুসান্নাফে আবদুর রযযাক, হা/১৯৯১; জমেউস সগীর, হা/৩৩২১; মিশকাত, হা/৬২৩।]

ফাসিক হলো সেই ব্যক্তি যে হারাম বা নিষিদ্ধ কাজ করে থাকে এবং ফরয বা ওয়াজিব কাজ ত্যাগ করে; অর্থাৎ কবীরা গোনাহ করে। ফাসিক ইমাম ব্যতীত অন্য ইমামের পেছনে সালাত আদায় করার জন্য চেষ্টা করা উচিত। কিমত্মু যদি কোন কারণে বাধ্য হয়ে তার পেছনে সালাত পড়তেই হয়, তাহলে সালাত হয়ে যাবে।

সাহাবীগণ ফাসিকের পেছনে সালাত আদায় করেছিলেন। যেমন- আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফের পেছনে সালাত আদায় করেছেন। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) মারওয়ানের পেছনে সালাত আদায় করেছেন। অথচ হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ও মারওয়ান উভয়েই সকল সাহাবার কাছে ফাসিক হিসেবে চিহ্নিত ছিল।

অশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াতকারীর পেছনে সালাত :

যে ব্যক্তি কুরআন পড়তে এমন ভুল করে, যার কারণে আয়াতের অর্থ পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তার পেছনে যে ভালো কুরআন পড়তে পারে তার সালাত আদায় করা উচিত নয়। অবশ্য যদি কোন ক্বারী ভুল কিরাআতকারীর পেছনে অজান্তে দাঁড়িয়ে সালাত পড়ে নেয়, তাহলে তার সালাত হয়ে যাবে।

যারা অল্প বেতনে এমন ইমাম নিয়োগ দেন, যাদের কুরআন সহীহ নয় তাদেরকে এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত।

মুক্তাদীদের অপছন্দনীয় ব্যক্তির ইমামতি :

চরিত্রগত বা শিক্ষাগত কোন কারণে মুক্তাদীরা কোন ইমামকে অপছন্দ করলে ঐ ইমামের সালাত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। সুতরাং জেনে শুনে তার ইমামতি করা বৈধ নয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, তিন ব্যক্তির সালাত তাদের কান অতিক্রম করে না :

(১) পলাতক ক্রীতদাস, যতক্ষণ না সে ফিরে আসে।

(২) এমন স্ত্রী, যার স্বামী তার উপর রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রিযাপন করে (যতক্ষণ না সে রাজি হয়েছে অথবা যে স্ত্রী তার স্বামীর অবাধ্যাচারণ করেছে, সে তার বাধ্য হওয়া পর্যন্ত) এবং

(৩) সেই সম্প্রদায়ের ইমাম, যাকে লোকেরা অপছন্দ করে। [তিরমিযী, হা/৩৬০; শারহুস সুন্নাহ, হা/৮৩৮; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৮৮৯; মিশকাত, হা/১১২২।]

অবশ্য ব্যক্তিগত কোন কারণে কেউ কেউ ইমামকে অপছন্দ করলে দোষের কিছু নেই। অযথা কেউ তাকে অপছন্দ করলে অথবা বেশি সংখ্যক লোক পছন্দ এবং অল্প সংখ্যক লোক অপছন্দ করলে সালাতের কোন ক্ষতি হয় না। ক্ষতি তার হয়, যে একজন নির্দোষ মানুষকে অকারণে অপছন্দ করে।

জ্ঞানী ইমামের উচিত, যে সমাজের অধিকাংশ লোক তাকে অপছন্দ করে, সে সমাজের ইমামতি ত্যাগ করা এবং তার ইমামতিকে কেন্দ্র করে সমাজের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা ও ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি হতে না দেয়া।

অতি তাড়াহুড়া প্রবণ ইমামের পেছনে সালাত :

যে ব্যক্তি এত দ্রুত সালাত পড়ে যে, মুক্তাদীরা তার অনুসরণ করতে সক্ষম না হয়, রুকূ ও সিজদা থেকে উঠে পিঠ সোজা করতে না পারে, তার সালাত এবং তার পেছনে মুক্তাদীদেরও সালাত হয় না।

মহিলার পেছনে পুরুষের সালাত হবে না :

পুরুষের জন্য মহিলার ইমামতি বৈধ নয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, সে জাতি কোন দিন সফল হবে না, যে জাতি তাদের কর্মভার একজন মহিলাকে সমর্পণ করবে। [সহীহ বুখারী, হা/৪৪২৫; তিরমিযী, হা/২২৬২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২০৪১৮; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪৫১৬; নাসাঈ, হা/৫৩৮৮; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৪৬০৮; মিশকাত, হা/৩৬৯৩।] আল্লাহ তা‘আলা বলেন, পুরুষরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল। (সূরা নিসা- ৩৪)

ইমাম সহীহ হাদীস অনুযায়ী আমল না করলে যা করতে হবে :

ইমামের অনুসরণ হতে হবে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় যাওয়ার জন্য। যেমন তাকবীর, রুকূ, ক্বিয়াম, সিজদা, সালাম ইত্যাদির ক্ষেত্রে। এর অর্থ এটা নয় যে, ইমাম সুন্নাত ছেড়ে দিলে মুক্তাদীকেও সুন্নাত ছেড়ে দিতে হবে। তাই ইমাম বুকে হাত না বাঁধলে বা উচ্চৈঃস্বরে আমীন না বললে বা রাফউল ইয়াদাইন না করলেও মুক্তাদী সহীহ হাদীস অনুযায়ী সেগুলো আমল করবে। এর ফলে তিনি সুন্নাত অনুসরণের নেকী পাবেন।

ইমাম খুব দেরীতে সালাত আদায় করলে যা করতে হবে :

আওয়াল ওয়াক্তে একাকী সালাত আদায়ের চাইতে একটু দেরীতে জামাআতসহ সালাত আদায় করা উত্তম। অবশ্য ইমাম যদি খুব দেরী করে সালাত আদায় করেন, তাহলে তার বিষয় ভিন্ন। রাসূলুল্লাহ ﷺ একদা আবু যর (রাঃ) কে বললেন, যখন তুমি এমন কিছু আমীর পাবে যারা যথাসময় থেকে দেরী করে সালাত পড়বে তখন তুমি কী করবে? আবু যর (রাঃ) বললেন, আমাকে আপনি কী আদেশ করেন? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তুমি তোমার সালাত যথাসময়ে আদায় করে নাও। অতঃপর যদি সেই সালাত তাদের সাথে পাও, তাহলে পুনরায় তাদের সাথে জামাআতে পড়ে নাও। এটা তোমার জন্য নফল হয়ে যাবে। [সহীহ মুসলিম, হা/১৪৯৭-৯৯; আবু দাউদ, হা/৪৩১; তিরমিযী, হা/১৭৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৩৬২; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৭১৯; জামেউস সগীর, হা/৮৭১৭; মিশকাত, হা/৬০০।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন