hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুস্ সালাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৬২
বিতরের সালাত
বিতর শব্দের অর্থ হচ্ছে, বেজোড়। এশার সালাতের পর ফজর উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যমত্ম বেজোড় সংখ্যায় যে সালাত আদায় করা হয় তাকে বিতরের সালাত বলে।

বিতরের সালাত আদায় করার জন্য অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ ، عَنِ النَّبِيِّ قَالَ : إِنَّ اللهَ وِتْرٌ يُحِبُّ الْوِتْرَ , فَأَوْتِرُوْا يَا أَهْلَ الْقُرْاٰنِ

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ বেজোড়, তিনি বেজোড়কে পছন্দ করেন; সুতরাং হে আহলে কুরআন! তোমরা বিতরের সালাত আদায় করো। [ইবনে মাজাহ, হা/১১৭০; আবু দাউদ, হা/১৪১৮; তিরমিযী, হা/৪৫৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২২৪, ১২২৭; মিশকাত, হা/১২৬৬।]

বিতর সালাতের সময় :

বিতর সালাতের সময় এশার পর থেকে ফজরের পূর্ব পর্যন্ত। অনেকেই বিতর সালাতকে এশার সালাতের সাথে মিলিয়ে ফেলে। আসলে বিতর সম্পূর্ণ ভিন্ন সালাত। এই সালাত এশার পর থেকে ফজরের পূর্ব পর্যন্ত আদায় করা যায়।

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে ঘুমানোর আগে বিতর আদায় করার আদেশ করেছিলেন। [সহীহ বুখারী, বিতরের সময় অনুচ্ছেদ; নাসাঈ, হা/২৪০৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭১৩৮।]

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা রাতের শেষ সালাতকে বিতর করবে। [সহীহ বুখারী, হা/৯৯৮; সহীহ মুসলিম, হা/১৭৯১; আবু দাউদ, হা/১৪৪০; মুসনাদে আহমাদ, হা/৪৭১০; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/১০৮২।]

আবদুল্লাহ ইবনে আবু কায়েস (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি আয়েশা (রাঃ) কে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বিতরের সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, কখনো প্রথম রাত্রিতে এবং কখনো শেষ রাত্রিতে। আমি বললাম, আল্লা-হু আকবার! সমসত্ম প্রশংসা সেই আল্লাহর, যিনি দ্বীনের ব্যাপারে প্রশস্ততা রেখেছেন। [আবু দাউদ, হা/১৪৩৯; তিরমিযী, হা/৪৫৬; ইবনে মাজাহ, হা/১১৮৫।]

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ রাতের সকল অংশে অর্থাৎ বিভিন্ন রাতে বিভিন্ন সময়ে বিতর আদায় করতেন। আর তাঁর বিতর শেষ হতো রাতের শেষ অংশে। [সহীহ বুখারী, হা/৯৯৬; সহীহ মুসলিম, হা/১৭৭০; ইবনে মাজাহ, হা/১১৮৬।]

যাদের তাহাজ্জুদ পড়ার অভ্যাস আছে তাদের জন্য তাহাজ্জুদের পরে বিতরের সালাত আদায় করা উত্তম।

বিতরের সালাতের রাক‘আত সংখ্যা :

বিতরের সালাত ১, ৩, ৫, ৭ ও ৯ রাক‘আত পর্যন্ত পড়া যায়।

১ রাক‘আত বিতর :

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, রাতের সালাত দু’রাক‘আত করে। অতঃপর কেউ যখন সালাত শেষ করতে চাইবে তখন সে উক্ত সালাতের সাথে বিতর হিসেবে এক রাক‘আত পড়ে নেবে। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/২৬৭; সহীহ বুখারী, হা/৪৭৩; সহীহ মুসলিম, হা/১৭৮২।]

এক রাক‘আত বিতর সাধারণ সালাতের মতোই। নিয়ত করে সানা এবং সূরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সূরা পড়তে হবে। রুকূর আগে বা পরে দু‘আ কুনূত পড়তে হবে। এরপর সিজদা করতে হবে, এরপর তাশাহহুদ, দরূদ ও দু‘আ মাসূরা পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।

৩ রাক‘আত বিতর :

তিন রাক‘আত বিতর দু’ভাবে আদায় করা যায়।

(এক) সাধারণ সালাতের মতো ২ রাক‘আত আদায় করে, ডানে-বামে সালাম ফিরাতে হবে। অতঃপর উঠে নতুন করে আরো এক রাক‘আত আদায় করে, আবার সালাম ফিরাতে হবে। [ফায়যুল বারী শরহুল বুখারী, ৩/১৮৮।]

(দুই) তিন রাক‘আত সালাত একটানা আদায় করে শেষ রাক‘আতে রুকূর আগে বা পরে দু‘আ কুনূত পড়তে হবে। এরপর তাশাহহুদ, দরূদ ও দু‘আ মাসূরা পড়ে সালাম ফিরাতে হবে। [নাসাঈ, হা/১৭০১; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৪৪৬।]

৫ রাক‘আত বিতর :

একটানা ৫ রাক‘আত পড়ে শেষ রাক‘আতে সালাম ফিরাবে। [সহীহ মুসলিম, হা/৭৩৭; আবু দাউদ, হা/১৩২৪; তিরমিযী, হা/৪৫৭।]

৭ ও ৯ রাক‘আত বিতর :

একটানা ৬ বা ৮ রাক‘আত আদায় করে বসে তাশাহহুদ ও দরূদ পড়ে সালাম না ফিরিয়ে উঠে আরো ১ রাক‘আত আদায় করে সালাম ফিরাতে হবে। [সহীহ মুসলিম, হা/১৭৭৩; আবু দাউদ, হা/১৩৪৪; মিশকাত, হা/১৫২৭।]

বিতর আদায় করতে ভুলে গেলে :

কেউ যদি বিতর পড়তে ভুলে যায় অথবা বিতর না পড়ে ঘুমিয়ে যায়, তবে স্মরণ হলে কিংবা রাতে বা সকালে ঘুম হতে জেগে ওঠার পরে সুযোগ মতো তা আদায় করে নেবে।

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যদি কেউ বিতর আদায় না করে ঘুমিয়ে যায় বা আদায় করতে ভুলে যায়, তাহলে সে যেন তা স্মরণ হওয়া মাত্র বা ফজরের সময় আদায় করে নেয়। [তিরমিযী, হা/৪৬৫; ইবনে মাজাহ, হা/১১৮৮; মিশকাত, হা/১২৭৯।]

সফরে বিতর আদায় :

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ ফরয সালাত ছাড়া রাতের সালাত বাহনের উপরই আদায় করতেন, তা যে দিকেই ফিরুক না কেন। আর তিনি বাহনের উপরই বিতর আদায় করতেন। [সহীহ বুখারী, হা/১০০০; তিরমিযী হা/৪৭২; নাসাঈ হা/ ১৬৮৯]

দু‘আ কুনূত কখন কীভাবে পড়বে :

কুনূত অর্থ বিনীত হওয়া। সাধারণত বিতর সালাতের শেষ রাক‘আতে দু‘আ কুনূত পড়া হয়। তাছাড়া মুসলমানদের উপর যখন কোন বিপদাপদ আসে তখন ইসলামের দুশমনদের বিরুদ্ধে আল্লাহর নিকট দু‘আ করা হয়। নবী ﷺ ফজরের সালাতের শেষ রাক‘আতে রুকূর পর এ ধরনের কুনূত পাঠ করতেন। [সহীহ বুখারী, হা/৪০৯০; সহীহ মুসলিম, হা/১৫৭৮।] এ কুনূতকে কুনূতে নাযেলা বলা হয়।

কুনূত রুকূর আগে না পরে :

দু‘আ কুনূত রুকূর আগে ও পরে দু’ভাবেই পড়া জায়েয আছে। [সহীহ মুসলিম, হা/১৭৭১; তিরমিযী, হা/৪৫৬; ইবনে মাজাহ হা/১১৮৩-৮৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৮০৩।] আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ কারো বিরুদ্ধে বা কারো পক্ষে দু‘আ করতেন, তখন রুকূর পরে কুনূত পড়তেন। [সহীহ বুখারী, হা/৪৫৬০; সহীহ মুসলিম, হা/১৫৮১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১২৭২৮; মিশকাত হা/১২৮৮।] কুনূতে নাযেলা রুকূর পরে পাঠ করা উত্তম।

কুনূতে হাত উঠিয়ে দু‘আ করা :

বিতরের কুনূতে হাত উঠিয়ে দু‘আ করার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে কোন সহীহ বর্ণনা পাওয়া যায়নি। তবে প্রসিদ্ধ সাহাবী ওমর, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আনাস, আবু হুরায়রা (রাঃ) প্রমুখ থেকে বিতরের কুনূতে বুক বরাবর হাত উঠিয়ে দু‘আ করার কথা প্রমাণিত আছে। [বায়হাকী, হা/৪৬৪৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/৬৩৯; মুসনাদে ইবনে জা‘দ, হা/২২৭৭।] ইমাম আহমদ (রহ.) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, বিতরের কুনূত রুকূর পরে হবে নাকি পূর্বে হবে এবং এ সময় দু‘আ করার জন্য হাত উঠানো যাবে কিনা? তিনি বললেন, বিতরের কুনূত হবে রুকূর পরে এবং এ সময় হাত উঠিয়ে দু‘আ করবে। [মাসায়েলে ইমাম আহমদ, মাসআলা নং ৪১৭-২১।]

অতএব, কেউ যদি বিতরের কুনূতে হাত তুলে দু‘আ করতে চায় তবে এতে কোন আপত্তি নেই।

কুনূত পাঠের পর মুখে হাত বুলানো :

কুনূত পাঠের পর মুখে হাত বুলানোর ব্যাপারে কোন দলীল নেই। ইমাম বায়হাকী বলেন, কুনূতের পর চেহারায় হাত মুছার ব্যাপারে আমি সালফে সালেহীন থেকে কোন প্রমাণ পাইনি। [সুনানুল বায়হাকী, ২/২১২; সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ, দারুত তাওফীক কাহেরা প্রকাশিত, ১/৩৪৭।] তাই দু‘আ করার পর হাত ছেড়ে দিতে হবে।

বিতরের সালাতের পর নীচের তাসবীহটি তিনবার পড়া মুস্তাহাব :

سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْقُدُّوْسِ

উচ্চারণ : সুবহানাল মালিকিল কুদ্দূস।

শাব্দিক অর্থ : سُبْحَانَ আমি পবিত্রতা ঘোষণা করছি الْمَلِكِ মহান বাদশার الْقُدُّوْسِ যিনি পবিত্র।

অর্থ : আমি মহান পবিত্র বাদশার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। [আবু দাউদ, হা/১৪৩২; নাসাঈ, হা/১৬৯৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৩৯০; মুসনাদুল বাযযার, হা/৩৩৭৩; দার কুতনী, হা/১৬৫৯; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/১০০৯; মিশকাত, হা/১২৭৫।]

বিতরের সালাতের পর নফল প্রসঙ্গে :

রাসূলুল্লাহ ﷺ বিতরের সালাতকে শেষ সালাত বানাতে বলেছেন। তবে একটি বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বিতরের পর দু’রাক‘আত নফল সালাত বসে আদায় করতেন। [মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৩০০; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৫০১৮; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৭৯৯০; মিশকাত, হা/১২৮৭।]

মুহাদ্দিসগণের কেউ কেউ বলেছেন, এ সালাত রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জন্য খাস ছিল। তবে অনেকের মতে, কেউ যদি উক্ত দু’রাক‘আত সালাত নফল হিসেবে পড়তে চায় তবে পড়তে পারে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন