hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুস্ সালাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৩৪
যেসব কাজে অযু করা মুস্তাহাব
১. ঘুমানোর সময় :

বারা ইবনে আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে বলেন, যখন তুমি বিছানায় যাবে, তার পূর্বে সালাতের অযুর ন্যায় অযু করে নিবে, তারপর ডান পাশে শুবে। এরপর বলবে-

اَللّٰهُمَّ أَسْلَمْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِيْ إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِيْ إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ، اَللّٰهُمَّ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِيْ أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِيْ أَرْسَلْتَ

হে আল্লাহ! আমি আমাকে আপনার হাতে সমর্পণ করলাম। যাবতীয় কার্যকলাপ আপনার কাছে সোপর্দ করলাম, সকল আশা-ভরসা এবং ভয়-ভীতি সহকারে আমি আপনার আশ্রয় গ্রহণ করলাম। আপনি ব্যতীত আমার কোন আশ্রয়স্থল এবং পরিত্রাণস্থল নেই। হে আল্লাহ! আপনি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং যে নবী প্রেরণ করেছেন, তাঁর উপর আমি ঈমান গ্রহণ করলাম।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, এ দু‘আ পাঠ করার পর যদি তুমি এ রাতেই মৃত্যুবরণ কর তাহলে তুমি ফিতরাত (দ্বীন) এর উপরই মৃত্যুবরণ করবে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ আরো বলেন, উপরোক্ত দু‘আর বাক্যগুলো তুমি তোমার সব কথাবার্তা শেষে বলবে। [সহীহ বুখারী, হা/২৪৭; আবু দাউদ, হা/৫০৪৮; ইবনে মাজাহ, হা/২১৬; শু‘আবুল ঈমান, হা/৪৩৮০।]

২. জুনুবী ব্যক্তি যখন খাওয়া, পান করা বা ঘুমানোর ইচ্ছা করে :

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ -ﷺ - إِذَا كَانَ جُنُبًا فَأَرَادَ أَنْ يَأْكُلَ أَوْ يَنَامَ تَوَضَّأَ وُضُوْءَه لِلصَّلَاةِ .

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন নাপাক থাকতেন তখন কিছু খেতে অথবা ঘুমানোর ইচ্ছা করলে সালাতের অযুর ন্যায় অযু করে নিতেন। [সহীহ মুসলিম, হা/৭২৬; আবু দাউদ, হা/২২৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/২১৫।]

৩. জুনুবী ব্যক্তি যদি পুনরায় সহবাস করতে চায় :

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ " ‏ إِذَا أَتَى أَحَدُكُمْ أَهْلَه ثُمَّ أَرَادَ أَنْ يَعُوْدَ فَلْيَتَوَضَّأْ ‏

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হবে তারপর আবার মিলিত হবার ইচ্ছা করবে সে যেন অযু করে নেয়। [সহীহ মুসলিম, হা/৭৩৩; তিরমিযী, হা/১৪১; ইবনে মাজাহ, হা/৫৮৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১২৪৩।]

৪. গোসল করার পূর্বে অযু করা :

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ -ﷺ - إِذَا اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ يَبْدَأُ فَيَغْسِلُ يَدَيْهِ ثُمَّ يُفْرِغُ بِيَمِيْنِه عَلٰى شِمَالِه فَيَغْسِلُ فَرْجَه ثُمَّ يَتَوَضَّأُ وُضُوْءَه لِلصَّلَاةِ

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন অপবিত্রতা থেকে গোসল করতেন তখন প্রথমে দু’হাত ধুতেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি ঢেলে লজ্জাস্থান ধুতেন। তারপর সালাতের অযুর ন্যায় অযু করতেন। [সহীহ মুসলিম, হা/৭৪৪; নাসাঈ, হা/৪১৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৮৪১।]

৫. প্রত্যেক সালাতের জন্য নতুনভাবে অযু করা :

عَنْ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ النَّبِىَّ -ﷺ - صَلَّى الصَّلَوَاتِ يَوْمَ الْفَتْحِ بِوُضُوْءٍ وَاحِدٍ

বুরাইদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ প্রত্যেক সালাতের জন্য অযু করতেন। তবে মক্কা বিজয়ের দিন তিনি একই অযু দ্বারা কয়েক ওয়াক্ত সালাত আদায় করেছেন। [মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩০৭৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১৬।]

৬. কাবাঘর তাওয়াফ করার সময় :

কাবাঘর তাওয়াফকারীর জন্য অযু করা মুসত্মাহাব। তবে অনেক আলেম তাওয়াফের জন্য অযু করাকে ওয়াজিব বলেছেন। এক্ষেত্রে তারা ইবনে আববাস (রাঃ) এর বর্ণিত হাদীসটি দলীল হিসেবে পেশ করে থাকেন। আর তা হলো-

اَلطَّوَافُ بِالْبَيْتِ صَلَاةٌ اِلَّا اِنَّ اللهَ اِبَاحَ فِيْهِ الْكَلَامَ

অর্থাৎ বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করা এক প্রকার সালাত। তবে তাতে আল্লাহ কথা বলা বৈধ করেছেন। [মুখতাসার ইরওয়ালুল গালীল, হা/১২১; নাসাঈ, হা/২৯২২; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/১৬৮৬; বায়হাকী, হা/৯০৮৬; দারেমী, হা/১৮৪৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩৮৩৬; জামেউস সগীর, হা/৭৩০১।]

মাসহাফ (কুরআন) স্পর্শ করার সময় :

মুখসত্ম কুরআন পাঠের সময় অযু আবশ্যক নয়। এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই। তবে কুরআন মাজীদ স্পর্শ করার সময় অযু করার ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে।

১. অনেক বিদ্বানের মতে অযুবিহীন অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা বৈধ নয়। আল্লাহ তা‘আলার বাণী :

﴿لَا يَمَسُّهٗۤ إِلَّا الْمُطَهَّرُوْنَ﴾

অর্থাৎ পবিত্রগণ ছাড়া কেউ তা স্পর্শ করবে না। (সূরা ওয়াকিয়া- ৭৯)

আমর বিন হাযম এর হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ ইয়ামানবাসীর নিকট একটি চিঠি লিখেছিলেন, সেখানে বলা হয়েছিল,

لَا يَمَسُّ الْقُرْاٰنَ اِلَّا طَاهِرٌ

অর্থাৎ পবিত্র ছাড়া কেউ কুরআন স্পর্শ করবে না। [মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হা/৪৬৯; দার কুতনী, হা/৪৩৭।]

২. কোন কোন আলেমের মতে কুরআন মাজীদ স্পর্শ করার সময় অযু করা জরুরি নয়; বরং মুসত্মাহাব বা উত্তম। তাদের মতে, বর্ণিত আয়াতে يَمَسُّه  এর সর্বনামটি ‘সুরক্ষিত কিতাব’ এর দিকে প্রত্যাবর্তন হয়েছে, যা লাওহে মাহফূজে রয়েছে। আর اَ لْمُطَهَّرُوْنَ (পবিত্রগণ) বলতে এখানে ফেরেশতাগণ উদ্দেশ্য।

উপরোক্ত আয়াতটি মুশরিকদের একটি প্রশ্নের উত্তরে নাযিল হয়েছে। মুশরিকরা অভিযোগ করে বলত যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে যে ওহী আসে তা শয়তান চুরি করে আকাশ থেকে এনে তার কাছে দিয়ে যায়। আর তিনি এটা মানুষের কাছে প্রচার করেন।

তাদের এই অভিযোগের উত্তরে আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদের ৩ জায়গায় আয়াত নাযিল করেছেন। যেমন-

﴿وَمَا تَنَزَّلَتْ بِهِ الشَّيَاطِيْنُ - وَمَا يَنْۢبَغِيْ لَهُمْ وَمَا يَسْتَطِيْعُوْنَ - اِنَّهُمْ عَنِ السَّمْعِ لَمَعْزُوْلُوْنَ﴾

শয়তানরা তা (কুরআন) সহ অবতীর্ণ হয়নি। তারা এ কাজের যোগ্য নয় এবং তারা এর সামর্থ্যও রাখে না। তাদেরকে তো শ্রবণের সুযোগ হতে দূরে রাখা হয়েছে। (সূরা শু‘আরা : ২১০-২১২)

উপরোক্ত আয়াতগুলোর মাধ্যমে বুঝানো হয়েছে যে, এ কুরআন শয়তান আনেনি। এমনকি যেখানে এ কুরআন সংরক্ষিত আছে সে স্থান তারা স্পর্শও করতে পারে না। সেখানে পৌঁছতে পারে কেবল পবিত্র ফেরেশতারা। যারা এর লেখালেখির দায়িত্ব পালন করে থাকে। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فِيْ صُحُفٍ مُّكَرَّمَةٍ مَرْفُوْعَةٍ مُّطَهَّرَةٍ بِأَيْدِيْ سَفَرَةٍ كِرَامٍ ۢبَرَرَةٍ﴾

এটা আছে সম্মানিত সহীফাসমূহে। যা সমুন্নত, পবিত্র লেখকদের হাতে, যারা মহা সম্মানিত ও অনুগত। (সূরা আবাসা : ১৩-১৬)

অনুরূপভাবে এ প্রসঙ্গেই সূরা ওয়াকিয়ার এ আয়াতসমূহও নাযিল হয়েছে-

﴿إِنَّه لَقُرْاٰنٌ كَرِيْمٌ فِيْ كِتَابٍ مَّكْنُوْنٍ لَا يَمَسُّهٗۤ إِلَّا الْمُطَهَّرُوْنَ﴾

নিশ্চয় এটি মহিমান্বিত কুরআন, যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে, কেউ তা স্পর্শ করে না পবিত্রগণ ছাড়া। (সূরা ওয়াকিয়া : ৭৭-৭৯)

তা ছাড়া কী কাজের জন্য অযু করতে হবে তা কুরআন মাজীদে আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। তিনি বলেন,

﴿يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِذَا قُمْتُمْ اِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوْا وُجُوْهَكُمْ وَاَيْدِيَكُمْ اِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوْا بِرُءُوْسِكُمْ وَاَرْجُلَكُمْ اِلَى الْكَعْبَيْنِ ﴾

হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও দু’হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে, তোমাদের মাথা মাসাহ করবে এবং দু’পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত করবে। (সূরা মায়েদা- ৬)

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ঈমানদারদেরকে সালাতে দাঁড়ানোর সময় অযু করার নির্দেশ দিয়েছেন। যদি কুরআন স্পর্শ করার জন্য অযু করা বাধ্যতামূলক হতো তাহলে আল্লাহ তা‘আলা এখানে সালাতের সাথে কুরআনের কথাও উল্লেখ করতেন। আবার কুরআন পাঠের সময় কী করতে হবে তাও আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্টভাবে কুরআন মাজীদে বলে দিয়েছেন। তিনি বলেন,

﴿فَاِذَا قَرَاْتَ الْقُرْاٰنَ فَاسْتَعِذْ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ﴾

যখন কুরআন পাঠ করবে তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে। (সূরা নাহল- ৯৮)

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা কুরআন পাঠের সময় শয়তান থেকে আশ্রয় চাইতে বলেছেন। অযু করতে বলেননি।

মুমিন ব্যক্তি যদিও বাহ্যিকভাবে অপবিত্র হয় তারপরও সে আভ্যমত্মরীণভাবে অপবিত্র হয় না। যেমন- রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

إِنَّ الْمُؤْمِنَ لَا يَنْجُسُ

অর্থাৎ মুমিন কখনো অপবিত্র হয় না। [সহীহ বুখারী, হা/২৮৩; সহীহ মুসলিম, হা/৮৫০; নাসাঈ, হা/২৬৯; ইবনে মাজাহ, হা/৫৩৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭২১০।]

অপরদিকে মুশরিকরা বাহ্যিকভাবে পবিত্রতা অর্জন করলেও তারা নাপাক থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِنَّمَا الْمُشْرِكُوْنَ نَجَسٌ فَلَا يَقْرَبُوا الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ بَعْدَ عَامِهِمْ هٰذَا﴾

হে মুমিনগণ! নিশ্চয় মুশরিকরা অপবিত্র, সুতরাং এ বৎসরের পর তারা যেন মাসজিদুল হারামের নিকটেও না আসে। (সূরা তাওবা- ২৮)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন