hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুখতাসারুল ফিক্হিল ইসলামী

লেখকঃ মুহাম্মদ বিন ইবরাহীম বিন আব্দুল্লাহ আত্ তুয়াইজিরী

১৩৪
বিচার কার্য পরিচালনা
কেয়ামত দিবসে লোকেরা স্বীয় পালনকর্তার নিকট জড় হবে এবং তীব্র ভয় ও অবস্থানগত কষ্টের কারণে ক্লান্তি ও পেরেশানী যখন সহ্যসীমার শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছবে, আপন প্রতিপালকের নিকট হিসাব ও বিচার কার্য শুরু করার প্রত্যাশা করবে । এক পর্যায়ে অপেক্ষা ও অবস্থান যখন অতিদীর্ঘ হবে আর পেরেশানী সহ্যসীমা অতিক্রম করবে তখন তারা আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের নিকট আল্লাহ তাআলার কাছে হিসাব ও বিচারকার্য শুরু করার সুপারিশ করার নিমিত্তে একত্রিত হবে।

১- মহান আল্লাহ তাআলা বলেন:

هَذَا يَوْمُ لَا يَنْطِقُونَ ﴿35﴾ وَلَا يُؤْذَنُ لَهُمْ فَيَعْتَذِرُونَ ﴿36﴾ وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ ﴿37﴾ هَذَا يَوْمُ الْفَصْلِ جَمَعْنَاكُمْ وَالْأَوَّلِينَ ﴿38﴾ فَإِنْ كَانَ لَكُمْ كَيْدٌ فَكِيدُونِ ﴿39﴾ { المرسلات : ৩৫-৩৯}

এটা এমন দিন যেদিন কেউ কথা বলবে না। এবং কাউকে ওজর পেশ (তাওবা) করার অনুমতি দেয়া হবে না। সেদিন মিথ্যা আরোপকারীদের দুর্ভোগ হবে। এটা চুড়ান্ত বিচারের দিন, আমি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে একত্রিত করেছি। অতএব. তোমাদের কোন অপকৌশল থাকলে প্রয়োগ কর আমার বিরুদ্ধে। {সূরা আল-মুরসালাত: ৩৫-৩৯}

২- হাদীসে এসেছে

وعن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : (( أنا سيّد الناس يوم القيامة و هل تدرون بم ذاك؟ يجمع الله يوم القيامة الأولين و الآخرين في صعيد واحد , فيسمعهم الداعي , وينفذهم البصر , وتدنو الشمس , فيبلغ الناس من الغم و الكرب ما لا يطيقون , وما لا يحتملون , فيقول بعض الناس لبعض : ألا ترون ما أنتم فيه؟ ألا ترون ما قد بلغكم ؟ ألا تنظرون من يشفع لكم إلى ربكم ؟

فيقول بعض الناس لبعض : ائتوا آدم , فيأتون آدم , فيقولون : يا آدم أنت أبو البشر , خلقك الله بيده , ونفخ فيك من روحه , وأمر الملائكة فسجدوا لك , اشفع لنا إلى ربك , ألا ترى إلى ما نحن فيه , ألا ترى إلى ما قد بلغنا ؟

فيقول آدم : إن ربي غضب اليوم غضبا لم يغضب قبله مثله , ولن يغضب بعده مثله , وإنه نهاني عن الشجرة فعصيته , نفسي نفسي , اذهبوا إلى غيري , فيأتون نوحا , فإبراهيم , فموسى , فعيسى , فيعتذر كل واتحد , وكلهم يقولون : إن ربي قد غضب اليوم غضبا لم يغضب قبله مثله , ولن يغضب بعده مثله ... نفسي نفسي .

ثم يقول عيسى : اذهبوا إلى غيري , إدهبوا إلى محمد صلى الله عليه وسلم فيأتوني فيقولون : يا محمد أنت رسول الله , وخاتم الأنبياء , وغفر الله لك ما تقدم من ذنبك و ما تأخر , اشفع لنا إلى ربك , ألا ترى ما نحن فيه ؟ ألا تري ما قد بلغنا ؟

فأنطلق فآتي تحت العرش , فأقع ساجدا لربي , ثم يفتح الله عليّ ويلهمني من محامده , وحسن الثناء عليه شيئا لم يفتحه لأحد قبلي , ثم يقال : يا محمد ارفع رأسك , سل تعطه , اشفع تشفّع , فأرفع رأسي , فأقول : يا ربّ أمتي أمتي .

فيقال : يا محمد أدخل الجنة من أمتك من لا حساب عليه من الباب الأيمن من أبواب الجنة , وهم شركاء الناس فيما سوى ذلك من الأبواب , والذي نفس محمد بيده إن ما بين المصراعين من مصاريع الجنة لكما بين مكة و هجر , أو كما بين مكة وبصرى . متفق عليه

সাহাবী আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: কেয়ামতের দিন আমি সকল মানুষের নেতা। তোমরা কি জান সেটি কিভাবে হবে? আল্লাহ তাআলা সেদিন পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সকলকে এক ময়দানে সমবেত করবেন। এমন ভাবে যে তাদেরকে একজন আহবানকারীই শুনাতে পারবে এবং একটি চক্ষুই পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। আকাশের সূর্য খুব নিকটবর্তী হবে। মানুষের চিন্তা ও পেরেশানী সহ্যেরসীমা ছাড়িয়ে যাবে। তখন একজন অপরজনকে বলবে। তোমরা কি দেখছনা তোমরা কি অবস্থায় আছ? তোমরা কি অনুধাবন করতে পারছনা কি কঠিন পরিসিহতি তোমাদের উপর এসে পড়েছে? তোমরা কেন খুজে বের করছ না, যে তোমাদের জন্য তোমাদের পালনকর্তার নিকট সুপারিশ করবে?

তখন একে অপরকে বলবে: তোমরা আদমের নিকট যাও। অত:পর সকলে আদম আলাইহিসসালামের নিকট যাবে এবং বলবে : হে আদম আপনি মানবজাতির পিতা, মহান আল্লাহ তাআলা নিজ হাতে আপনাকে বানিয়েছেন। তারঁ রূহ থেকে আপনার মধ্যে ফুঁকে দিয়েছেন, এবং ফেরেশতাদের নির্দেশ দিয়েছেন তারা সকলে আপনার তরে সেজদায় লুটিয়ে পড়েছিল। আপনি আমাদের জন্য স্বীয় পালনকর্তার নিকট সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না কি কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়েছি আমরা। আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না কি বিপদ এসে পড়েছে আমাদের উপর?

আদম আলাইহিস সালাম বলবেন: আমার প্রতিপালক আজ ক্রোধান্বিত হয়েছেন, এমন রাগান্বিত ইতিপূর্বে আর কখনো হননি, ভবিষ্যতে আর কখনো হবেনও না । তিনি আমাকে একটি গাছের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন, আমি সে নিষেধাজ্ঞা রক্ষা করতে পারিনি। নফসী নফসী; হায় আমার কি হবে, হায় আমার কি হবে। তোমরা অন্য কারো কাছে যাও। এরপর লোকেরা নবী নূহ আত:পর ইবরাহীম তারপর মূসা এরপর ঈসা আলাইহিমুস সালামের নিকট আসবে, তাঁরা প্রত্যেকেই অপারগতা প্রকাশ করবেন। প্রত্যেকেই বলবেন: আমার প্রতিপালক আজ খুবই ক্রুদ্ধ হয়েছেন, এমন রাগান্বিত অতীতে তিনি আর কখনো হননি এবং ভবিষ্যতেও হবেন না... নফসী নফসী ; হায় আমার কি হবে, হায় আমার কি হবে।

অত:পর ঈসা আলাইহিস সালাম বলবেন: তোমরা আমি ভিন্ন অন্য কারো কাছে যাও, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যাও। তারা তাই করবে, সকলে আমার নিকট আসবে এবং বলবে: হে মুহাম্মাদ ! আপনি আল্লাহর রাসূল, নবীদের পরম্পরা সমাপ্তকারী-সর্বশেন নবী। আল্লাহ তাআলা আপনার পূর্বাপর সকল অপরাধ ক্ষমা করে দিয়েছেন। আপনি আমাদের তরে স্বীয় প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না কি পরিস্থিতির মধ্যে আছি আমরা? কি কঠিন বিপদ আমাদের স্পর্শ করেছে তা আপনি দেখতে পাচ্ছেন না?

এরপর আমি আরশের নিচে এসে পৌঁছব এবং আমার রব সমীপে সেজদায় লুটিয়ে পড়ব। অত:পর আল্লাহ তাআলা তাঁর এমন কিছু সুন্দর ও প্রশংসা যোগ্য গুণ আমার কাছে এলহামের মাধ্যমে উন্মোক্ত করবেন যা ইতোপূর্বে আর কারো কাছে করেননি। অত:পর বলা হবে: হে মুহাম্মাদ ! মাথা উত্তলন করুন, প্রার্থনা করুন আপনাকে প্রার্থিত বস্ত্ত দেয়া হবে, সুপারিশ করুন আপনার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। আমি মাথা উঠিয়ে বলব: উম্মাতী উম্মাতী ! হায় আমার উম্মতের কি হবে ! আমার উম্মতের কি হবে।

বলা হবে: হে মুহাম্মাদ! আপনার উম্মতের যাদের কোন হিসাব নেই তাদেরকে আপনি জান্নাতের দারসমূহের ডান পার্শ্বস্থ দরজা দিয়ে প্রবেশ করান। অবশ্য তারা অন্যান্য মানুষের সঙ্গে জান্নাতের অপরাপর দরজা দিয়ে প্রবেশ করার অধিকারও রাখে। মুহাম্মাদের জীবন যার হাতে সে সত্ত্বার শপথ করে বলছি: জান্নাতের দরজার দুই কপাটের মাঝের দূরত্ব মক্কা ও হাজার অথবা মক্কা ও বুসরার মধ্যবর্তী স্থানের দূরত্বের সমান। [বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম । হাদীস নং যথাক্রমে (৪৭১২) ও (১৯৪)।]

অত:পর আল্লাহ তাআলা মানুষের মাঝে হিসাব কার্য শুরু করবেন। কিতাব তথা আমল নামা প্রদান করা হবে, মীযান তথা দাড়িপাল্লা রাখা হবে এবং লোকদের হিসাব নেয়া হবে। স্বীয় কিতাব ডান হাতে গ্রহণকারী জান্নাতে যাবে আর বাম হাতে গ্রহণকারী যাবে জাহান্নামে।

১- আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:

وترى الملائكة حافين من حول العرش يسبحون بحمد ربهم وقضي بينهم بالحق وقيل الحمد لله رب العالمين { الزمر :৭৫}

এবং আপনি ফেরেশতাদের দেখতে পাবেন যে তারা আরশের চার পাশ ঘিরে তাদের প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছে। তাদের সবার মাঝে ন্যায় বিচার করা হবে। বলা হবে, সমস্ত প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার।{সূরা যুমার: ৭৫}

২-হাদীসে এসেছে

وعن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال : قلنا : يا رسول الله ,, هل نرى ربنا يوم القيامة؟ قال : (( هل تضارون في رؤية الشمس و القمر إذا كانت صحوا )). قلنا : لا . قال : (( فإنكم لا تضارون في رؤية ربكم يومئذ إلا كما تضارون في رؤيتهما )). ثم قال : (( ينادي مناد : ليذهب كل قوم إلى ما كانوا يعبدون , فيذهب أصحاب الصليب مع صليبهم , وأصحاب الأوثان مع أوثانهم , وأصحاب كل آلهة مع آلهتهم , حتى يبقى من كان يعبد الله , من برّ أو فاجر , وغبرات من أهل الكتاب ,

ثم يؤتى بجهنم تعرض كأنها سراب , فيقال لليهود : ما كنتم تعبدون ؟ قالوا : كنا نعبد عزير بن الله ,, فيقال : كذبتم , لم يكن صاحبة و لا ولد , فما تريدون؟ قالوا : نريد أن تسقينا , فيقال : اشربوا , فيتساقطون في جهنم . ثم يقال للنصارى : ما كنتم تعبدون ؟ فيقولون : كنا نعبد المسيح بن الله ,, فيقال : كذبتم , لم يكن , صاحبة و لا ولد , فما تريدون؟ فيقولون : نريد أن تسقينا , فيقال : اشربوا , فيتساقطون .

حتى يبقى من كان يعبد الله , من بر أو فاجر , فيقال لهم : ما يحبسكم وقد ذهب الناس؟ فيقولون : فارقناهم ونحن أحوج منا إليه اليوم , وإنا سمعنا مناديا ينادي : ليلحق كل قوم بما كانوا يعبدون , و إنا ننتظر ربنا . قال : فيأتيهم الجبار في صورة غير صورته التي رأوه فيها أول مرة . فيقول : أنا ربكم , فيقولون : أنت ربنا , فلا يكلمه إلا الأنبياء .

فيقول : هل بينكم و بينه آية تعرفونه , فيقولون : الساق , فيكشف عن ساقه , فيسجد كل مؤمن , ويبقى من كان يسجد رياء و سمعة , فيذهب كيما يسجد فيعود ظهره طبقا واحدا . ثم يؤتى بالجسر فيجعل بين ظهري جهنم )) . قلنا : يا رسول الله ,, وما الجسر؟

قال : (( مدحضة مزلة , عليه خطاطيف و كلاليب , وحسكة مفلطحة لها شوكة عقيفة , تكون بنجد , يقال لها : السعدان , المؤمن عليها كالطرف و كالبرق وكالريح , وكأجاويد الخيل و الركاب , فناج مسلم و ناج مخدوش , ومكدوس في نار جهنم , حتى يمر آخرهم يسحب سحبا , فما أنتم بأشدّ لي مناشدة في الحق , قد تبين لكم من المؤمن يومئذ للجبار .

وإذا رأوا أنهم قد نجوا في إخوانهم , يقولون : ربنا إخواننا , كانوا يصلون معنا , ويصومون معنا , ويعملون معنا , فيقول الله تعالى : اذهبوا فمن وجدتم في قلبه مثقال دينار من إيمان فأخرجوه , ويحرم الله صورهم على النار .

فياتونهم وبعضهم قد غاب في النار إلى قدمه , وإلى أنصاف ساقيه , فيخرجون من عرفوا .

ثم يعودون , فيقول : اذهبوا فمن وجدتم في قلبه مثقال نصف دينار فأخرجوه , فيخرجون من عرفوا .

ثم يعودون , فيقول : اذهبوا فمن وجدتم في قلبه مثقال ذرة من إيمان فأخرجوه , فيخرجون من عرفوا )).

قال أبو سعيد : فإن لم تصدقوني فاقرؤوا : {{ إن الله لا يظلم مثقال ذرة وإن تك حسنة يضاعفها }}

(( فيشفع النبيون و الملائكة و المؤمنون , فيقول الجبار : بقيت شفاعتي , فيقبض قبضة من النار , فيخرج أقواما قد امتحشوا , فيلقون في نهر بأفواه الجنة يقال له : ماء الحياة , فينبتون في حافتيه كما تنبت الحبة في حميل السيل , قد رأيتموها إلى جانب الصخرة , وإلى جانب الشجرة , فما كان إلى الشمس منها كان أخضر , و ما كان منها إلى الظل كان أبيض . فيخرجون كأنهم اللؤلؤ , فيجعل في رقابهم الخواتيم , فيدخلون الجنة , فيقول أهل الجنة : هؤلاء عتقاء الرحمن , أدخلهم الجنة بغير عمل عملوه , ولا خير قدموه , فيقال لهم : لكم ما رأيتم و مثله معه )). متفق عليه .

সাহাবী আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করছেন: আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট জানতে চেয়ে বললাম: ইয়া রাসূলাল্লাহ : কেয়ামত দিবসে আমরা কি আমাদের প্রভূ আল্লাহ তাআলাকে দেখতে পাব? নবীজী বললেন: মেঘশূন্য আকাশে সূর্য ও চন্দ্রকে দেখতে তোমাদের কি কোন অসুবিধা হয়? আমরা বললাম : না । রাসূলুল্লাহ বললেন: সে দিন তোমাদেরও স্বীয় পালনকর্তাকে দেখতে কোন অসুবিধা হবে না তবে চন্দ্র - সূর্য দেখতে যতটুকু হয় হলে ততটুকু হবে। অত:পর বললেন: একজন ঘোষক ঘোষণা দেবে: প্রত্যেক জাতিকে নিজ নিজ উপাস্যদের নিকট যেতে বলা হচ্ছে। ঘোষণার পর সলীব তথা ক্রুশপন্থীরা ক্রুশের সাথে যেয়ে একত্রিত হবে। আর মূর্তি পূজাকরা মূর্তির সাথে গিয়ে মিশবে। এবং ভিন্ন ভিন্ন উপাস্যের উপাসকরা নিজ নিজ উপাস্যের সাথে গিয়ে জড় হবে। শেষ পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকবে আল্লাহর ইবাদতকারী পুন্যবান ও পাপী বান্দারা। এবং আহলে কিতাব (ইহুদী ও খৃষ্ট ধর্মানুসারী) দের অবশিষ্টাংশ।

অত:পর জাহান্নামকে প্রদর্শনের জন্য নিয়ে আসা হবে সেটি যেন মরিচিকা। অত:পর ইহুদীদের জিজ্ঞেস করা হবে যে তোমরা কার ইবাদত করতে? তারা উত্তরে বলবে: আল্লাহর পুত্র উযায়েরের। বলা হবে তোমরা মিথ্যা বলছ। আল্লাহ তাআলার কোন সন্তান ও সঙ্গিনী নেই। এখন তোমরা কি চাও? বলবে: আমাদের আশা আপনি আমাদের পান করিয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করাবেন। বলা হবে : পান কর। এবং তারা জাহান্নামে ঝরে পড়বে। অত:পর খৃষ্টানদের জিজ্ঞেস করা হবে: তোমরা কার ইবাদত করতে? তারা বলবে: আল্লাহর পুত্র ঈসার। বলা হবে: তোমরা মিথ্যা বলছ, আল্লাহ তাআলার কোন সন্তান ও সঙ্গিনী নেই। এখন তোমরা কি চাও? বলবে: আমাদের কামনা যে আপনি আমাদের পানি পান করিয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করাবেন। বলা হবে: পান কর। এবং তারা জাহান্নামে পড়ে যাবে।

এক পর্যায়ে এসে শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার ইবাদতকারী পুন্যবান ও পাপীবান্দারা অবশিষ্ট থাকবে। তখন তাদের বলা হবে: সকল মানুষ চলে গেল তোমাদের কিসে আটকে রেখেছে? তারা বলবে : আমরা তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছি এমতাবস্থায় যে আজ আমরা তার নিকট অতি মুখাপেক্ষী। আর আমরা একজন ঘোষকের ঘোষণা শুনতে পেয়েছি যে, প্রত্যেক ইবাদতকারী যেন নিজ নিজ মা’বুদের নিকট গিয়ে মিলিত হয়। তাই আমরা আমাদের পালনকর্তার অপেক্ষা করছি। রাসূলুল্লাহ বলেন: অত:পর মহান প্রতাপশালী তাদের ইতোপূর্বে দেখা আকৃতি ভিন্ন এক পরিবর্তিত আকৃতিতে আভির্ভূত হবেন। বলবেন: আমি তোমাদের প্রতিপালক। তারা বলবে: আপনি আমাদের পালনকর্তা। এরপর শুধুমাত্র নবীরাই তাঁর সাথে কথা বলতে পারবেন।

বলবেন: তোমাদের ও তার মাঝে কোন বিশেষ নিদর্শন আছে কি যার মাধ্যমে তোমরা তাঁকে চিনতে পারবে? তারা বলবে: হ্যাঁ আর তা হচ্ছে পায়ের গোছা। অত:পর তিনি স্বীয় গোছা উন্মোক্ত করবেন। প্রত্যেক মুমিন সেজদায় লুটিয়ে পড়বে। আর যারা (পৃথিবীতে) সুনাম কুড়ানোর উদ্দেশ্যে ও লোক দেখানো সেজদা করত তারা বাকী থাকবে। সেজদা করার চেষ্টা করবে কিন্তু যখনই সেজদায় যাবে পিঠ সাথে সাথে সস্থানে ফিরে আসবে।

অত:পর পুলসিরাত উপস্থিত করা হবে এবং জাহান্নামের উপর স্থাপন করা হবে। আমরা জানতে চাইলাম: ইয়া রাসূলাল্লাহ পুলসিরাত কি?

নবীজী বললেন: একটি অতি পিচ্ছিল জায়গা যার উপর রয়েছে বক্র হুক ও বড়শী এবং নজদে উৎপন্ন সা’দান নামক বাঁকা কাঁটার মত চওড়া চেপটা কাঁটা। মুমিন বান্দা তার উপর দিয়ে চোখের পলক, বিজলী, বাতাস এবং দ্রুতগামী উন্নত জাতের অশ্ব ও অন্যান্য দ্রুতগামী জন্তুর ন্যায় পার হয়ে যাবে। কেউ সহীহ সালামতে মুক্তি পাবে কেউ কাটার আঘাত খেয়ে আবার কেউ জাহান্নামের আগুনের ছোঁয়া পেয়ে। এক পর্যায়ে তাদের সর্বশেষজন অতিক্রম করবে তাকে টেনে নেয়া হবে। হক প্রার্থনা করার ব্যাপারে তোমরা আমার চেয়ে বেশি মিনতিকারী নও। অবশ্য তোমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে, সেদিন মহা প্রতাপশালী আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী মুমিন কারা।

যখন তারা লক্ষ্য করবে যে, তারা তাদের অন্যান্য ভাইদের মাঝে মুক্তি পেয়েছে, তখন বলবে : হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের ভাইদের কি সমাচার, তারা আমাদের সাথে সালাত আদায় করত, আমাদের সাথে সিয়াম পালন করত এবং আমাদের সাথে অন্যান্য আমল করত। আল্লাহ তাআলা বলবেন: তোমরা যাও, যার অন্তরে এক দিনার পরিমাণ ঈমানও বিদ্যমান পাবে তাকে বের করে নিয়ে আসবে। আল্লাহ তাআলা তাদের আকৃতি-প্রতিকৃতি কে জাহান্নামের উপর হারাম করেছেন।

তারা তাদের নিকট আসবে। এসে দেখতে পাবে কারো কারো পায়ের পাতা পর্যন্ত জাহান্নামে দেবে গেছে, কারো কারো অর্ধ গোছা পর্যন্ত। তারা যাদের চিনতে পাবে তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে।

অত:পর তারা ফিরে আসবে, আল্লাহ তাআলা বলবেন: যাও, যার অন্তরে অর্ধ দিনার পরিমাণ ঈমান বিদ্যমান পাবে তাকে বের করে নিয়ে আসবে। তখন তারা যাদের চিনতে পারবে তাদের বের করে নিয়ে আসবে।

এরপর তারা আবারো ফিরে আসবে। আল্লাহ তাআলা বলবেন: যাও, যার অন্তরে অনু পরিমাণ ঈমানও বিদ্যমান পাবে তাকে বের করে নিয়ে আসবে। তখন তারা যাদের চিনতে পাবে তাদের বের করে নিয়ে আসবে।

হাদীসের বর্ণনাকারী আবু সাঈদ বলেন: তোমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হলে আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী পড়:

(( إن الله لا يظلم مثقال ذرة وإن تك حسنة يضاعفها ))

নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা বিন্দুমাত্র অন্যায় করেন না আর যদি কোন সৎকর্ম থাকে তাহলে তা দ্বিগুন করে দেন।

এভাবে নবীগন সুপারিশ করবেন, সুপারিশ করবেন ফেরেশতাবৃন্দ ও মুমিনগন। এরপর মহামহিম প্রতাপশালী আল্লাহ তাআলা বলবেন : বাকি রইল আমার সুপারিশ, অত:পর আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে ঝলসে যাওয়া এক সম্প্রদায়কে মুষ্ঠিবদ্ধ করে একমুষ্ঠি বের করে আনবেন। অত:পর জান্নাতের মুখে অবস্থিত এক নহরে যাকে আবে হায়াত বলা হয়, সেখানে তাদেরকে নিক্ষেপ করা হবে। তারা ঐ নহরের দুই তীরে উৎপন্ন হবে যেমনি করে স্রোতের সাথে ভেসে আসা খড়কুটুর উপর তৃণবীজ উৎপন্ন হয়। তোমরা সেগুলো প্রকান্ড পাথরের কিনারে অনুরূপ ভাবে বড় বড় গাছের পাশ্বে দেখেছ। এরমধ্যে যেগুলো সূর্যের দিকে থাকে সেগুলো হয় সবুজ আর যেগুলো ছায়ার দিকে থাকে সেগুলো হয় সাদা।

তারা ঐ নহর থেকে ঝকঝকে তকতকে হয়ে বের হবে যেমন মুক্তোদানা। তাদের গ্রীবাদেশে সীলমোহর এঁটে দেয়া হবে। অত:পর তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। জান্নাতবাসীরা বলবে: তারা হচ্ছে মহা দয়ালু আল্লাহ তাআলার মুক্তকৃত। আল্লাহ তাদেরকে কোন আমল ও নেক কাজ করা ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করিয়েছেন। তখন তাদের বলা হবে: তোমাদের জন্য যা দেখছ এবং তার সাথে এর সমপরিমাণ বরাদ্দ রয়েছে। [বর্ণনায় বুখারী ও মুষলিম। হাদীস নং বুখারী (৭৪৩৯) এবং মুসলিম (১৮৩)]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন