hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুখতাসারুল ফিক্হিল ইসলামী

লেখকঃ মুহাম্মদ বিন ইবরাহীম বিন আব্দুল্লাহ আত্ তুয়াইজিরী

৫১
আল্লাহ তাআলার কুদরত ও ক্ষমতা :
আল্লাহ তাআলা নিরংকুশ ক্ষমতার অধিকারী। কখনো কখনো রিযিক প্রদান করেন আসবাব-উপকরনের মাধ্যমে, যেমন পানিকে ফসল-উদ্ভিদ উৎপন্নের কার্যকারণ বানিয়েছেন। স্ত্রী সঙ্গমকে বানিয়েছেন সন্তান জন্মদানের উপকরণ। আমরা বসবাস করছি দারুল আসবাবে তাই অনুমোদিত আসবাব গ্রহণ করব এবং আল্লাহ ভিন্ন অন্য কারো উপর ভরসা করব না।

আবার কখনো কখনো উপকরণ ছাড়াই রিযিক পৌঁছিয়ে থাকেন। কোন বস্ত্তকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হয়ে যাও, সে হয়ে যায়। যেমন মারইয়াম-কে বৃক্ষ বিহীন খাবার এবং পুরুষ (এর মিলন) বিহীন সন্তান দান করেছেন।

আবার অনেক সময় স্বীয় ক্ষমতাকে আসবাব-উপকরণের বিপরীতে ব্যবহার করেন। যেমন নবী ইবরাহীম আলাইহিস সালামের জন্যে আগুনকে শান্তি প্রদায়ক শীতল করে দিয়েছিলেন এবং নবী মূসা আলাইহিস সালামকে সমুদ্রে নিমজ্জিত হওয়া থেকে বাঁচিয়ে ফেরআউন ও তার সম্প্রদায়কে ডুবিয়ে দিয়েছেন এবং নবী ইউনুস আলাইহিস সালামকে মহা সমুদ্রের অভ্যন্তরে মাছের পেটের ভিতর বাঁচিয়ে রেখেছেন।

ইরশাদ হচ্ছে:

إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَنْ يَقُولَ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ . ( سورة يــس : 82)

তাঁর ব্যাপার শুধু এই যে, কোন কিছুকে তিনি যদি ‘হও’ বলতে চান, তখনই তা হয়ে যায়। [সূরা ইয়াসীন: ৮২।]

বর্ণিত অবস্থা সৃষ্টিকুলের দিক বিবেচনা করে আর অবস্থা ও পরিস্থিতির বিবেচনায় :



১। আমরা জানি ও বিশ্বাস করি যে, মানব জীবনের সকল অবস্থা যেমন ধনাঢ্যতা ও দারিদ্র, সুস্থতা ও রোগ, প্রফুল্লতা ও বিষাদ, হাসি ও কান্না, সম্মান ও অবমাননা, জীবন ও মৃত্যু, নিরাপত্তা ও ভয়, শীত ও গরম, হিদায়াত ও গোমরাহী, সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য বরং যাবতীয় অবস্থার স্রষ্টা একমাত্র আল্লাহ তাআলা তিনিই এসব সৃষ্টি করেছেন।

২। আমরা জানি ও বিশ্বাস করি যে, এ সকল অবস্থা ও যাবতীয় বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা যিনি করেন তিনি হচ্ছেন মহা ক্ষমতাধর আল্লাহ তাআলা। তিনি এসব অবস্থা ও পরিস্থিতি পরিবর্তন-পর্যবেক্ষন করেন। সুতরাং দারিদ্র, প্রাচুর্যে রূপান্তরিত হয় কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলার নির্দেশেই। তাঁর নির্দেশেই কেবল রোগ-ব্যাধি, সুস্থতায় পরিবর্তিত হয়। তাঁর হুকুমেই কেবল অসম্মান সম্মানে, অবমাননা ইজ্জতে পরিবর্তিত হয়। তাঁর নির্দেশ ছাড়া হাসি, কান্নায় রূপান্তরিত হয় না। কোন জীবিত মৃত্যু বরণ করে না তাঁর অনুমোদন ব্যতীত। তাঁর নির্দেশ ব্যতীত শীত, গরমে রূপান্তরিত হয় না । গোমরাহী হিদায়াতে রূপান্তরিত হয় কেবলমাত্র তাঁর নির্দেশই। এবং এভাবেই... সুতরাং বিভিন্ন অবস্থার আগমন ঘটে তাঁর নির্দেশে, হ্রাস-বৃদ্ধি পায় তাঁরই নির্দেশে। স্থায়ী হয় তাঁর নির্দেশে এবং নিঃশেষও হয় তাঁরই নির্দেশে। সুতরাং আমাদের উচিত অবস্থার পরিবর্তন ও রূপান্তর তাঁর নিকট প্রার্থনা করা যিনি এর ক্ষমতা রাখেন। তবে অবশ্যই অনুমোদিত পন্থায় তাঁর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যমে।

قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَنْ تَشَاءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَاءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَاءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَاءُ بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ . ( سورة آل عمران : 26)

বল, হে আল্লাহ, রাজত্বের মালিক, আপনি যাকে চান রাজত্ব দান করেন, আর যার থেকে চান রাজত্ব কেড়ে নেন এবং আপনি যাকে চান সম্মান দান করেন। আর যাকে চান অপমানিত করেন, আপনার হাতেই কল্যাণ। নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। [সূরা আলে ইমরান: ২৬।]

৩। আমরা জানি ও বিশ্বাস করি, ইত:পূর্বে আলোচিত সকল অবস্থা এবং এগুলো ছাড়াও যা আছে সব কিছুর ভান্ডার একমাত্র অদ্বিতীয় আল্লাহর কাছে, আল্লাহ তাআলা যদি সুস্থতা, প্রচুর্যসহ যাবতীয় নিয়ামত সকল মানুষকে তাদের চাহিদানুযায়ী সরবরাহ করেন তাহলে আল্লাহর ভান্ডার থেকে বিন্দু পরিমাণও কমবে না। মহাসমুদ্রে একটি সুঁই প্রবেশ করালে সুঁই যতটুকু পানি হ্রাস করে (আল্লাহর ভান্ডার থেকে সকল মানুষের চাহিদা পুরণ করলে) ঐ পরিমাণ কমতে পারে। তিনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, তিনি অমুখাপেক্ষী, সর্বাধিক প্রশংসিত।

عن أبي ذر رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم فيما روى عن الله تبارك وتعالى أنه قال :

সাহাবী আবু যর রা. নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ আল্লাহ তাআলা থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ বলেন :

يا عبادي ! إني حرمت الظلم على نفسي وجعلته بينكم محرما فلا تظالموا .

يا عبادي ! كلكم ضال إلا من هديته فاستهدوني أهدكم .

يا عبادي ! كلكم جائع إلا من أطعمته . فاستطعموني أطعمكم .

يا عبادي ! كلكم عار إلا من كسوته فاستكسوني أكسكم .

يا عبادي ! إنكم تخطئون بالليـل والنهار وأنا أغفر الذنوب جميعا، فاستغفروني أغفرلكم .

يا عبادي ! إنكم لن تبلغوا ضري فتضروني، ولن تبلغوا نفعي فتنفعوني .

يا عبادي ! لو ان أولكم وآخركم وإنسكم وجنكم كانوأ على أتقى قلب رجل واحد منكم . مازاد ذلك فى ملكي شيئا .

يا عبادي ! لو أن أولكم وآخركم وإنسكم وجنكم كانوأ على أفجر قلب رجل واحد . ما نقص ذلك من ملكي شيئا .

يا عبادي ! لو أن أولكم وآخركم وإنسكم وجنكم قاموا في صعيد واحد فسألوني، فأعطيت كل إنســان مسألته ما نقص ذالك مما عندي إلا كما ينقص المخيط إذا أدخل البحر .

يا عبادي ! إنما هي أعمالكم أحصيها لكم ثم أوفيكم إياها . فمن وجد خيرا فليحمد الله ومن وجد غير ذلك فلا يلومن إلا نفسه . أخرجه مسلم .

হে আমার বান্দাগণ, আমি আমার নিজের উপর অন্যায় ও যুলুমকে হারাম করেছি এবং তোমাদের মাঝেও তাকে হারাম বলে সাব্যস্ত করেছি। সুতরাং তোমরা পরস্পর যুলুম করোনা।

হে আমার বান্দা সকল, আমি যাকে হেদায়াত দিয়েছি সে ব্যতীত তোমরা সকলেই পথভ্রষ্ট। তাই আমার নিকট হেদায়াত প্রার্থনা করো আমি হেদায়াত দান করব।

হে বান্দা সকল, আমি যাকে খাবার দিয়েছি সে ব্যতীত তোমরা সকলেই অভুক্ত-ক্ষুধার্ত। সুতরাং আমার নিকট খাবার চাও আমি খাবার (খাওয়াবো) দান করব।

হে বান্দা সকল, আমি যাকে বস্ত্র দান করেছি (পরিধান করিয়েছি) সে ব্যতীত তোমরা সকলেই বিবস্ত্র-উলঙ্গ। আমার নিকট পরিধেয় প্রার্থনা কর আমি বস্ত্র প্রদান করব।

হে আমার বান্দা সকল, তোমরা দিবা-রাত্রি অপরাধ কর আর আমি সকল পাপ মার্জনা করি। আমার নিকট ক্ষমা চাও আমি ক্ষমা করে দেব।

হে আমার বান্দা সকল, তোমরা কস্মিন কালেও আমার ক্ষতি পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না যে আমার ক্ষতি করবে, অনুরূপভাবে কস্মিন কালেও আমার উপকার পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না যে আমার উপকার করবে।

হে আমার বান্দা সকল, যদি তোমাদের বিগত ও অনাগত, তোমাদের মানব ও জিন সকলেই তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক আল্লাহ ভীরু ব্যক্তির ন্যায় হয়ে যাও, (এটি) আমার রাজত্বে বিন্দু পরিমাণও বৃদ্ধি করবে না।

হে আমার বান্দা সকল, যদি তোমাদের বিগত ও অনাগত, তোমাদের মানব ও জিন সকলেই তোমাদের সর্বাধিক পাপী ব্যক্তির ন্যায় হয়ে যাও। এটি আমার রাজত্ব থেকে বিন্দু পরিমাণও কমাতে পারবে না।

হে আমার বান্দা সকল, যদি তোমাদের (পৃথিবীর শুরু থেকে অদ্যাবধি) আগত এবং (কিয়ামত পর্যন্ত যারা আসবে) অনাগত, তোমাদের মানব ও জিন সকলে এক ময়দানে মিলিত হয়ে প্রত্যেকেই (নিজ নিজ চাহিদা মত) আমার নিকট প্রার্থনা করে, আর আমি প্রত্যেকেরই প্রার্থিত বস্ত্ত প্রদান করি। তাহলে এটি আমার ভান্ডারে যা আছে তার থেকে একটুও কমাবে না। হ্যাঁ (যদি কমায় তাহলে) মহা সমুদ্রে সুঁই প্রবেশ করালে ঐ সুঁই যতটুকু পানি হ্রাস করে এতটুকু কমাতে পারে।

হে আমার বান্দা সকল, নিশ্চয়ই এটি তোমাদের আমল বৈ নয়, যা আমি তোমাদের উপকারার্থে সংরক্ষণ করে রেখেছি। অতঃপর এর বিনিময় আমি তোমাদের পরিপূর্ণরূপে প্রদান করব। সুতরাং যে কল্যাণ পেল সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে আর যে এর বিপরীত পেল সে যেন শুধুমাত্র নিজেকেই ধিককার দেয়- তিরস্কার করে। [বর্ণনায় : সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৭৭]

যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ঈমান আনবে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ অনুযায়ী আল্লাহ তাআলার নির্দেশাবলি বাস্তবায়ন করবে। সে ব্যক্তি ধনী হোক বা দরিদ্র আল্লাহ তাআলা তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন এবং নিজ ভান্ডার হতে দান করবেন। তার পৃষ্ঠপোষকতা ও সাহায্য করবেন। তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। হিফাযত করবেন এবং ঈমানের বদৌলতে তাকে সম্মানিত করবেন। চাই তার নিকট সম্মানের আসবাব-উপকরণ থাকুক যেমন আবু বকর, ওমর ও উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুম বা না থাকুক যেমন বেলাল, আম্মার ও সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহুম প্রমুখ।

আর যারা ঈমান আনবে না আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ইজ্জত-সম্মানের উপকরণ

-রাজত্ব, ক্ষমতা, প্রাচুর্য ইত্যাদি- থাকা সত্ত্বেও অপমান-অপদস্ত করবেন।

যেমন অপমানিত করেছেন, ফিরআউন, কারূন, হামান প্রমুখকে।

আর যদি তাদের নিকট অপমান-অপদস্থের উপকরণ থাকে তাহলে আল্লাহ তাআলা এর মাধ্যমে তাদের অপমানিত করবেন। যেমন দরিদ্র মুশরিকগণ-কে করে থাকেন।

আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে ঈমান, নেক আমাল এবং একমাত্র পালনকর্তা আল্লাহ তাআলার ইবাদত করার উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি করেছেন। অধিক সম্পদ উপার্জন, সমৃদ্ধি অর্জন এবং প্রবৃত্তির চাহিদা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেননি। মানুষ যদি নিজেকে রবের ইবাদত বাদ দিয়ে এসব কাজে ব্যস্ত রাখে তাহলে আল্লাহ তাআলা এসব তাদের উপর চাপিয়ে দেবেন (অর্থাৎ এসকল কাজ তার উপর এমনভাবে চেপে বসবে যে, অন্য কাজ করার আর ফুরসত পাবে না আর নানা পেরেশানীরও অন্ত থাকবে না। এক পর্যায়ে এগুলোকে আযাব মনে হবে) এবং দুনিয়া ও আখেরাতে তার দুঃখ-কষ্ট, ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ বানিয়ে দেবেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন :

فَلَا تُعْجِبْكَ أَمْوَالُهُمْ وَلَا أَوْلَادُهُمْ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ بِهَا فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَتَزْهَقَ أَنْفُسُهُمْ وَهُمْ كَافِرُونَ ﴿55﴾ ( سورة التوبة : 55)

সুতরাং তোমাকে যেন তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানাদি বিস্মিত না করে, আল্লাহ এর দ্বারা কেবল তাদের আযাব দিতে চান দুনিয়ার জীবনে এবং তাদের জান বের হবে কাফের অবস্থায়। [সূরা আত্-তাওবা: ৫৫।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন