hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১০১
ইসলামী সাম্যের তাৎপর্য
বস্তুত ইসলাম মানুষকে কোন দিনই কোন দিক দিয়াই প্রতরিতি করে না, অসম্ভব ও অস্বাভাবিকের প্রতিশ্রুতি দিয়া মানুষকে প্রলোভিত করে না। ইসলাম প্রথম দিনই ঘোষণা করিয়াছে যে, দুনিয়ার সকল মানুষ সামাজিক ও মানবিক মর্যাদা ও অধিকারের দিক দিয়া সম্পূর্ণরূপে সমান হইতে পারে না। তাহার কারণ, সকল মানুষের বুদ্ধি-প্রতিভা, কার্যক্ষমতা ও যোগ্যতা এবং পরিবেশগত প্রয়োজন মোটেই সমান নয়। কাজেই এইসব গুণের দৌলতে যে অর্থ-সম্পদ উপার্জিত হইবে তাহার পরিমাণও সমাণ হইতে পারে না। মানুষের মধ্যে যে স্বাভাবিক বৈষম্য (Natural Defferentiation) রহিয়াছে, ইসলাম তাহা যথাযথারূপেই স্বীকার করিয়াছে। অন্য কথায় ইসলাম মানুষের স্বাভাবিক যোগ্যতা প্রতিবার পার্থক্রকে কোন কৃত্রিম উপায়ে নির্মূল করিয়া একাকার করিয়া দেওয়ার চেষ্টা করে না। বস্তুত আল্লাহ তা’আলা কোন ব্যাপারেই এবং কোন দিক দিয়াই মানুষের পরস্পরের মধ্যে নিরংকুশ সমতা স্থাপন করেন নাই। শুধু মানুষের কথাই নয়, গোটা প্রকৃতির কোথায়ও এইরূপ সমতা ও নিরংকুশ সাম্য পরিলক্ষিত হয় না। স্বভাব নিয়ম প্রত্রেকটি মানুষকে বিভিন্ন প্রকার যোগ্রতা, প্রতিভা ও ক্ষমতা দান করিয়াছে। কেহ অত্যন্ত বেশী সুন্দর ও সুশ্রী, কেহ ভয়ানক কুৎসিৎ। কাহারো মস্তিষ্ক শক্তি ও প্রতিভা-মণীষা অত্যধিক, কাহারো স্মরণশক্তি কিছুতেই নাই। কেহ পূর্ণ স্বাস্থ্যবান এবং মোটা-তাজা, কেহ দুর্বর, রুগ্ন ও কৃশ। কাহারো কণ্ঠস্বর সুমধুর, কাহারো গর্ধভের ন্যায় বিকট ও কর্কশ। এইসব বৈষম্য যেমন অতীব স্বাভাবিক ও জন্মগত, মানবসমষ্টির মধ্যে ধন-সম্পত্তির সমান সংগতি না থাকা- বরং আর্থিক সংগতির বৈষম্য থাকাও অনুরূপভাবে স্বাভাবিক। কাজেই এই স্বাভাবিক বৈষম্য যথাযথরূপে বজায় রাখা এবং কৃত্রিম উপায়ে সৃষ্ট সমগ্র বৈষম্য পার্থক্যকে নির্মুল না করা মানব সমাজের উন্নতি, প্রগতি, ক্রমবিকাশ ও উত্থান লাভের জন্য একান্ত অপরিহার্য।

আল্লাহ তা’আলা এই কথাই বলিয়াছেন কুরআন মজীদে নিম্নোদ্ধৃত আয়াতে:

(আরবী)

আমি দুনিয়ার জীবনে মানুষের মধ্যে তাহাদের অপরিহার্য় রুজী বন্টন করিয়া দিয়াছি এবং আমি এই ব্যাপারে কোন কোন লোককে অন্যান্যের উপর প্রাধান্য দিয়াছি- যেন তাহারা পরস্পরের দ্বারা কাজ করাইতে পারে।

বস্তুত ধন-সম্পত্তির পরিমাণের এই বৈষম্যেই মানব-সমাজে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সামাজিক আদান-প্রদানের মুল কারণ। ইহা না থাকিলে, কোন সমাজই গড়িয়া উঠিতে পারে না। মানুষের পক্ষে সামাজিক জীবন-যাপন করাও কখনো সম্ভব হয় না।

ইসলাম যেমন স্বাভাবিক সাম্যকে স্বীকার ও সমর্থন করে, তেমনি স্বীকার করে স্বাভাবিক অসাম্যকে। পক্ষান্তরে, স্বাভাবিক সাম্যকে কৃত্রিম উপায়ে চূর্ণ-করা ও স্বাভাবিক অসাম্যকেকৃত্রিম উপরয়ে সাম্যে পরিণত করা ইসলামের নীত বহির্ভূত। বরং ইসলামেরদৃষ্টিতে এই কৃত্রিমতা মানব সমাজের পক্ষে ভয়ানক ক্ষতিকর, সন্দেহ নাই। ইসলাম সমর্থিত স্বাভাবিক অসাম্যকে একটি উদাহর দিয়া বুঝান যাইতে পারে। একব্যক্তি জন্মগত পংগুও আতুর, দ্বিতীয় ব্যক্তি সুস্থ শরীর ও পূর্ণাঙ্গ বিশিষ্ট এবং তৃতীয় ব্যক্তি এমন এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করিয়াছে, যেখানে সে শিশুকাল হইতেই মোটর গাড়ীর অধিকারী হইয়াছে। এই তিন ব্যক্তিই স্বাভাবিক বৈষম্যের ভিতর দিয়া নিজ নিজ জীবনযাত্রা শুরু করিয়াছে। ইসলারেম বিধান অনুসারে অর্থ ব্যবস্থা এতখানি সুবিচারপূর্ণ ও স্বাধীন প্রচেষ্টার অবকাশময় হওয়া আবশ্যক, যেন পংগু ও আতুর ব্যক্তি নিজ নিজ অন্তর্নিহিত স্বাভাবিক যোগ্যতা, প্রতিভা ও স্বাধীন প্রচেষ্টার বদৌলতে মোটর-মালিক হইতে পারে এবং তাহার এই পথে যেন কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা না হয়।…….. আতুরকে যেন চির জীবন আতুর হইয়া থাকিতে বাধ্য করা না হয়। তেমনি মোটর-মালিক যদি নিরেজ নির্বুদ্ধিতা ও অযোগ্যতার দরুন মোটর চলার সামর্থ্য ও সংগতি হারাইয়া ফেলে-নিজের কৃতকর্মের অনিবার্য পরিণামে তাহাকে একেবারে আতুর শ্রেণীতে আসিয়া পড়িতে হয়, তবে তাহার এই আর্থিক পতনও যেন অবাধে ঘটিতে পারে, কোন প্রকার কৃত্রিম উপায়ে যেন তাহাকে স্থায়ীভাবে চির জীবনে তরে মোটর-মালিক করিয়া না রাখা হয়। কারণ, তাহাকে এইরূপ অধিকার দিলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাহার কোন লোকাতীত মর্যাদার স্বীকৃত দেওয়া হয়। কাজেই ইসলামী অর্থ ব্যবস্থায় স্বাভাবিক অর্থ বৈষম্যকে রক্ষা করত কৃত্রিম পার্থক্রেল মূলোৎপাটন করিতে হইবে এবং প্রত্যেকটি মানুষকে তাহার নিজ যোগ্যতা, প্রতিভা ও শ্রম-মেহনতের সাহায্যে সমাজ-স্বার্থের ক্ষতি না করিয়া উন্নতি সাধন করার সুযোগ করিয়া দিতে হইবে। বস্তুত ইহাই হইতেছে প্রকৃত ও স্বাভাবিক অর্থ ব্যবস্থা।

ইসলাম সমর্থিত স্বাভাবিক সাম্যের অর্থ-অর্থোপার্জনের জন্য চেষ্টা সাধনা করা ও ইহাতে সুযোগ গ্রহণের ব্যাপারে সকল মানুষের জন্য সমান অধিকার বর্তমান থাকা। মানুষকে পরস্পরের সহিত এমনভাবে বাধিয়া দেওয়া ইসলাম কিছুতেই সমর্থন করিতে পারে না,যাহার ফলে দ্রুত গতিশীলকেও দুর্বল ও অক্ষমের সহিত জড়িত হওয়ার কারণে মন্থর হইতে হয়, কিংবা দ্রুত চলিতে চাহিলেও অপরকে পদদলিত করিয়া চলিতে হয়। ইসলামের বিধান এই যে, যে ব্যক্তি মোটরে চড়িয়া বেড়াইতেছে, তাহাকে জোর করিয়া পদাতিক করিয়া দেওয়া যাইতে পারে না। পক্ষান্তরে মোটর মালিক হওয়ার যাহার আর্থিক সামর্থ্যনাই, কৃত্রিম উপায়ে তাহাকে মোটর মালিক করিয়া দেওয়াও সমীচীন হইতে পরে না। পরন্তু যে ব্যক্তি মোটরে চড়িয়া বেড়াইতেছে, শক্তি এবং সামর্থ্য অনুসারে দ্রুত গতিতে চলার তাহার অধিকার আছে বটে, কিন্তু তাহারই সঙ্গে সঙ্গে সাইকেল কিংবা পায়ে হাঁটিয়া যাহারা চলিতেছে,তাহাদের গতি ব্যাহত করা কিংবা তাহাদিগকে পদদলিত করিয়া সম্মুখে অগ্রসর হওয়ার কোনই অধিকার তাহাকে দেওয়া যাইতে পারে না। ইসলামী অর্থ-ব্যবস্থায় সমাজের বিকাশ ও প্রগতি লাভের জন্য ব্যক্তিগত যোগ্রতা ও প্রতিভাবে ক্ষুন্ন করাজুলুম ও শোষণের শামিল। মানুষকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চেষ্টা সাধনা করার অবাধ সুযোগ করিয়া দেওয়া ইসলারেম দৃষ্টিতে অতীব কল্যাণকর ও অপরিহার্য।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন