hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১২৮
ইসলামী রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্য
ইসলামী রাষ্ট্রকে নিম্নলিখিত কর্তব্য ও দায়িত্বসমূহ যথাযথরূপে পালন করিতে হয়:

(১) দ্বীন ইসলামের পূর্ণ প্রতিষ্ঠা করা, উহাকে সুদৃঢ় ভিত্তিতে স্থাপিত করা সেই অনুযায়ী জাতীয় পুনর্গঠন ব্যবস্থা করা।

(২) দেশ রক্ষার জন্য সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন করা, সেই জন্য শক্তিশারী সশস্ত্র বাহিনী এবং নৌ, স্থল ও বিমান বাহিনীকে ইসলামী আদর্শের সুসংগঠিত ও সুসংবদ্ধ করিয়া তোলা। আল্লাহ তাআলা বলিয়াছেন:

(আরবী)

তোমরা তোমাদের সাধ্যানুযায়ী শক্তি সামর্থ্য অর্জন কর ও প্রস্তুত রাখ, প্রস্তুত রাখ প্রয়োজনীয় যানবাহন, যেন তোমরা উহার সাহায্যে আল্লাহর দুশমন ও তোমাদের দুশমনকে ভীত ও বিতাড়িত করিতে সক্ষম হও।

(৩) অভ্যন্তরীণ শান্তি, শৃংখলা, শাসন ও বিচার-ইনসাফ সুপ্রতিষ্ঠিত করা, সেজন্য পুলিশ ও দেশরক্ষা বাহিনী এবং আদার ও সকল প্রকর বিচারালয় স্থান ও ইসলামের নীতি অনুযায়ী উহার পরিচালনা করা।

(৪) দেশবাসীর নাগরিক অধিকার রক্ষা করা, অভার-অভিযোগ ও পারস্পরিক ঝগড়া বিবাদের মীমাংসা করা। দুর্ভিক্ষ, বন্য, অজম্মা প্রভৃতি জরুরী পরিস্থিতিতে এককালীন সাহায্যও বিনা সুদে ঋণ বিতরণ করা।

(৫) নির্বিশেষে সকল নাগরিকের মৌলিক প্রয়োজন পূরণ করার স্থায়ী ও নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা করা। অর্থনৈতিক পুনর্গঠন, মীরাসী আইন কার্যকর করণ, সামাজিক জটিলতার মীমাংসা করণ। সকল প্রকার প্রয়োজনীয় শিক্ষা দানের জন্য প্রাথমিক স্তর হইতে বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চস্তরে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও ট্রেনিং কেন্দ্র স্থাপন, বিনামূল্যে শিক্ষাদান ও জনস্বাস্থ্যের জন্য সকল প্রকার আয়োজন ও বিধিব্যবস্থা করা।

(৬) রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ যোগাগো-রাস্তা, পুল-রেললানি, বিমান পথ, টেলিগ্রাম, টেলিফোন লাইন ও বেতারকেন্দ্র স্থাপন ইত্যাদি।

(৭) বৈদেশিক বাণিজ্য ও আমদানী-রফতানীর জন্য সামুদ্রিক যান বাহন ও বন্দর স্থাপন, আলোক-স্তম্ভ ও বিমানঘাটি প্রস্তুত করণ।

(৮) কৃষিকার্যের উন্নতি বিধানের জন্য পানি সেচের বিভিন্ন উপায় অবলম্বন, বড় বড় পুষ্করিনী, খাল ও কূপ খনন, বাঁধ বাধার আধুনিক যন্ত্রপাতির আমদানী ও সার প্রয়োগে উৎপাদন হার বৃদ্ধি।

(৯) প্রয়োজনীয় শিল্পের উন্নয়ন, জনগণের প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য উৎপাদন ও সুষ্ঠু এবং জনগণও উন্নত জীবনমান উপযোগী দরকারী দ্রব্যাদি সহজেই লাভ করিতে পারে।

(১০) দুনিয়অর বিভিন্ন রাষ্ট্রের সহিত বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য সকল মিত্র দেমে রাষ্ট্রদূত ও হাই কমিশনার স্থায়ীভাবে নিয়োগ এবং তৎসংশ্লিষ্ট যাবতীয খরচ বহন; দেশ-বিদেশে রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে যাতায়াত, নিজ দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় শহরে মুসাফিরখানা স্থাপন করা, যেন দেশী বা বিদেশী কোন ব্যক্তিই ফুটপাত বা গাছ তলায় অরক্ষিত অবস্থায় পড়িয়া থাকিতে বাধ্য না হয়।

(১১) ভূমি, বন-জঙ্গল ইত্যাদি জাতীয় সম্পদ সংরক্ষণ ও উহার উন্নতি বিধান; কৃষক, মজুর ও শ্রমিকের অধিকার রক্ষার নিখুঁত ব্যবস্থা করা।

ইসলামী রাষ্ট্রের অর্থব্যয়ের এই মোট এগারোটি খাতের উল্লেখ করিয়াই ক্ষান্ত হইতেছি। ইহা হইতে ইসলামী রাষ্ট্রের বিরাট ব্যয়-ভার সম্পর্কে প্রত্যেক চিন্তাশীল ব্যক্তিই অনুমান করিতে পারেন। ইহা সুস্পষ্ট কথা যে, এই বিরাট দায়িত্ব পালনের জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন; কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্র এই অর্থ অন্ধ শোষক ও লুন্ঠনকারীর ন্যায় নির্বিচারে দুই হাতে লুটিয়া সংগ্রহ করিতে পারে না। বরং নিরপেক্ষ ন্যায়নীতি, সহৃদয়তা ও সহানুভূতি এবং বৃহত্তর কল্যাণ কামনাই হইবে উহার জন্য কর ধারায করণ ও আদায় করার মুল ভিত্তি।

কারণ, প্রথম সরকারী ব্যয়-নীতির সহিত সমগ্র দেশ ও জাতির স্বার্থ নিবিড়ভাবে জড়িত। সরকারী ব্যয়-নীতি যত সুষ্ঠু, সংযত ও সুবিচার পূর্ণ হইবে, দেশ ও দেশবাসীর ততই কল্যাণ সাধিত হইতে পারে। দ্বিতীয়ত, দেশের রাজকোষে জনগণের হার ভাঙ্গা খাটুনী খাটিয়া মাথার ঘাম পায়ে ফেলিয়া, বুকের রক্ত পানি করিয়া উপার্জন করা” অর্থসম্পদই সঞ্চিত হইয়া থাকে, এই জন্র রাষ্ট্রীয় অর্থব্যয়ের ব্যাপারে পরিপূর্ণ সতর্কতা, বিচক্ষণতা, সামগ্রিক সামঞ্জস্য ও মিতব্যয়িতা রক্ষা করা একান্ত বাঞ্ছনীয়।

শুধু নৈতিকতার কথাই নয়, ইসলামী শরীয়তে এ সম্পর্কে রীতিমত আইন ও বিধান রহিয়াছে। কারণ রাষ্ট্রীয় অর্থ তাহাদের পৈতৃক সম্পত্তি বা [নিজেদের পরিশ্রম-লব্ধ নয়, তাহা দেশের আপামর জনগণেরই শ্রমার্জিত ধন। কাজেই ইসলামের রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় করার ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদিকের এই ব্যাপারে কিছুতেই অবাধ স্বাধীনতা দেওয়া যাইতে পারে না- নিজেদের ইচ্ছামত ব্যয় করার অধিকার ও সযোগ দেওয়া যাইতে পারে না। অন্যথায়, রাষ্ট্রীয় অর্থব্যয়ে মারাত্মক অপচয় দেখা দেওয়ার পূর্ণ সম্ভাবনা রহিয়াছে। ঠিক এই জন্যই ইসলামী অর্থনীতির মূলনীতিদাতা আল্লাহ তা’আলা এ সম্পর্কে সর্বাত্মক নিয়ন্ত্রণও বিধিনিষেধ আরোপ করিয়াছেন। তাহাতে একদিকে যেমন আয়কে নিয়ন্ত্রণ করা হইয়াছে, অপরদিকে ব্যয়কেও সুষ্ঠু ও সুসংযত করা হইয়াছে।

ইসলামের রাষ্ট্রীয় অর্থনীীততে মেযন আয়ের কতকগুলি খাত সুনির্দিষ্ট তদনুরূপ ব্যয়েরও কতকগুলি ক্ষেত্র নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া হইয়াছে। অবশ্য আয় ব্যয়ের কতকগুলি খাত এমনও আছে যাহা মজলিসে শু’রা- তথা গণ-প্রতিনিধিত্বমূলক পার্লামেন্টের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করার অধিকার রাষ্ট্রনেতাক দেওয়া হইয়াছে।

এই জন্য ইসলামী রাষ্ট্রের বায়তুলমালের আয়-ব্যয়কে দুইভাগে ভাগ করা যাইতে পারে:

(১) কুরআন মজীদ যেসব ব্যয়ের খাত নির্দিষ্ট করিয়া দিয়াছে: গণীমতের মাল, যাকাত বাবদ আদায়কৃত অর্থ এবং বিনা যুদ্ধে সাধারণ নিয়মে প্রাপ্ত ধন-সম্পদ ‘ফাই’ এই ভাগে গণ্য হইতে পারে।

এই সব খাত লব্ধ অর্থ ব্যয় করার ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় বায়তুলমাল এবং রাষ্ট্র-সরকা শুধু আমানতদার ও মাধ্যম মাত্র; ইহাতে কোন ব্যক্তি বা শক্তিকেই নিজস্ব বিচার-বিবেচনা ও রুচি অনুযায়ী হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকারই দান করা হয় নাই। তবে এ নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করার পন্থা ও পদ্ধতি সম্পর্কে অবশ্যই বিচার-বিবেচনা করার অধিকার থাকিবে, তাহাতে সন্দেহ নাই।

(২) যে আমদানীর ব্যয়ের খাত নির্ধারণ করা রাষ্ট্র সরকাররের বিচার বিবেচনার উপর ন্যস্ত করা হইয়াছে: খারাজ, জিজিয়া, শুল্কের তিন-চতুর্থাংশ এবং অন্যান্য আমাদনী। এইসব আমাদানী ব্যয় করার ব্যাপারে মজলিশে শু’রা (পার্লামেন্টের) পরামর্শ ও মঞ্জুরী গ্রহণ একান্ত আবশ্য।

বায়তুলমালের আমদানীকে ব্যয়ের খাতের দৃষ্টিতে পাঁচটি বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করা হইয়াছে:

(১) গণীমতের মাল, খনজ সম্পদ ও তৎলব্ধ অর্থ এবং ভূ-গর্ভ হইতে প্রাপ্ত প্রাচীন সম্পদের এক পঞ্চমাংশ।

(২) যাকাত, জমির ওশর ও মুসলিম ব্যবসায়ীদের নিকট হইতে প্রাপ্ত শুল্ক।

(৩) ‘ফাই ও বিনা যুদ্ধে লব্ধ সম্পদ’।

(৪) খারাজ, জিজিয়া, অমুসলিম সংখ্যালঘু ও বৈদেশিক আশ্রয়প্রার্থী ব্যবসায়ীদের নিকট হইতে প্রাপ্ত অর্থ।

(৫) লা-ওয়ারিশ মাল।

ইসলামী রাষ্ট্রের বায়তুলমালের উল্লিখিত প্রত্যেক প্রকার আমদানীর জন্য আলাদা আলাদা খাত ঠিক করা আবশ্যক। যেন এক খাতে আয় অপেক্ষা ব্যয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে গেলে অন্য খাতে উদ্বৃত্ত অর্থ হইতে ঋণ বাবদ অর্থ গ্রহণ করা যায় এবং ইহা ইসলামী অর্থনীতিতে সম্পূর্ণরূপে জায়েয।[দুররে মুখতার-২য় খণ্ড]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন