hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১০৪
অর্থনৈতিক অসাম্য যুক্তি ও কল্যাণ দৃষ্টির উপর ভিত্তিশীল
মানুষের পরীক্ষার দৃষ্টিতে সমাজে অর্থনৈতিক অসাম্যই যে সমীচীন, পূর্ববর্তী আলোচনায় আমরা তাহা দেখিয়াছি। এখানে এই বিষয়টি অন্য এক দৃষ্টিতে বিবেচ্য। রিযকি বা জীবন-জীবিকা ও রুজি-রোজগার মানুষের মৌলিক প্রয়োজন। তাহার জীবন ইহার উপর নির্ভরশী। এই কারণে কুরআন মজীদে এ সম্পর্কে নানা দিক দিয়া কথা বলা হইয়াছে। কুরআন বলে: রুজি-রোজগারে দৈন্য, অভাব প্রাচুর্য এবং অর্থনৈতিক অসমতা মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ ও অকাট্য যুক্তির উপর ভিত্তিশীল। কয়েকটি আয়াতেই এই কথাটি ব্যক্ত করা হইয়াছে। এখানে এই পর্যায়ের কয়েকটি আয়াত উদ্ধৃত করা যাইতেছে। সূরা বনী ইসরাইলে বলা হইয়া:

(আরবী)

নিশ্চয়ই তোমার আল্লাহ যাহার জন্য ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করিয়া দেন, আর যাহার জন্য চাহেন পরিমিত ও সংকুচিত করিয়া দেন, তিনি তাঁহার বান্দাহদের অবস্থা সম্পর্কে খুববেশী অবহিত ও দৃষ্টিবান।

আয়াতের শেষ অংশ ‘তিনি তাঁহার বান্দাহদের অবস্তা সম্পর্কে খুব বেশী অবহিত ও দৃষ্টিবান’ সামগ্রিক কল্যাণের দিকে ইংগিত করিতেছে। কল্যাণের এই ভিত্তিতেই তিনি লোকদের মাঝে রিযিক বন্টনে পরিমাণের কম বেশী করিয়া থাকেন। তিনি সৃষ্টিকর্তা, সৃস্টি-লোক সম্পর্কে নির্ভুল জ্ঞান তিনি ছাড়া আর কাহারো থাকতে পারে না। কাহার জন্য রুজি-রোজগার প্রশস্ত হওয়া উচিত এবং কাহার পক্ষে অভাব ও দৈন্যই সমীচীণ তাহা তিনি ভালো করিয়াই জানেন।

সূরা আল-শুরা’য় ও এ কথাই বলা হইয়াছে:

(আরবী)

আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর কুঞ্চিকা তাঁহারই হস্তে নিবদ্ধ, তিনি যাহাকে ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করিয়া দেন এবং যাহাকে ইচ্ছা পরিমাপ করিয়া দেন। তিনি সর্ব বিষয়ে জ্ঞানবান।

ইহাতে প্রথম বলা হইয়াছে যে, রিযিক বন্টরে পূর্ণ কর্তৃত্বের অধিকারী একমাত্র আল্লাহই। এই ব্যাপারে তাঁহার শরীক কেহই নাই। দ্বিতীয়তঃ বলা হইয়াছে যে, তিনি সর্ব বিষয়ে নির্ভুল জ্ঞান রাখেন। অর্থাৎ তিনি নির্বিচারে ও যথেষ্টভাবে রিযিক বন্টন করেন নাই, ব্যাপক, নির্ভুল ও প্রত্যক্ষ জ্ঞানের ভিত্তিতেই তাহা করিয়াছেন। যে লোক এই কথায় বিশ্বাসী হয় সে যতই দরিদ্র হউক না কেন সে কখনই আল্লাহর প্রতি এই করণে অসন্তুষ্ট হইতে পারে না। সূরা আজ্‌-জুমার-এ বলা হইয়াছে:

(আরবী)

তাহারা কি জানেনা, আল্লাহ যাহাকে চাহেন রিযিক প্রশস্ত করিয়া দেন, আর যাহার জন্য চাহেন সংকীর্ণ করিয়া দেন। আল্লাহর প্রতি ঈমানদার লোকদের জন্য ইহাতে সুস্পষ্ট অকাট্য নিদর্শন রহিয়াছে।

এ আয়াতের শেষাংশে বলা হইয়াছে, রিযিকের কম-বেশী হওয়ার ব্যাপারে কতগুলি নিদর্শন রহিয়াছে। ইহাতে অপরিমেয় কল্যাণ নিহিত। কিন্তু তাহা অনুধাবন করিতে পারে কেবল ঈমানদার লোকেরাই। অন্যদের পক্ষে ইহার অন্তর্নিহিত সার্বিক কল্যাণ বুঝিতে পারা সম্ভব নয় বলিয়াই এ বিষয়ে তাহারা আপত্তি তোলে ও সন্দেহে নিমজ্জিত হয়।

এই কারণেই দেখা যায়, এক শ্রেণীর অন্ধ সমাতন্ত্রবাদী অর্থনৈতিক অসাম্যের কথা শুনিলেই নাক ছিটকাইতে ও উহাকে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা বলিয়া প্রত্যাখ্যান ও বিদ্রুপ উপহার করিতে শুরু করে। মনে হয় তাহারা যেন সব পর্যায়ে পূর্ণ সমতা বিধানেই বদ্ধপরিকর এবং তাহাদের মনিবরা যেন তাহাদের নিজেদের সমাজতান্ত্রিক দেশ ও সমাজে তাহা কার্যত করিয়াও ফেলিয়াছে। কিন্তু কোন সমাজেই তাহা সম্ভব হয় নাই তাহা কাহারো অজানা নয়।

কিন্তু তাই বলিয়া ইসলাম পুঁজিবাদের কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট মারাত্মক ধরনের অসাম্য কোনক্রমেই সমর্থন করে না। কেননা পুঁজিবাদী সমাজের অর্থনৈতিক অসাম্য শুধু অসাম্যই নয়, তাহাতে একদিকে যদি থাকে সীমাহীন প্রাচুর্য, তাহা হইলে অনিবার্যভাবে অপরাদিকে দেখা দেয় নির্মম শোষণ ও বঞ্চনা। ইসলাম যেমন স্বাভাবিক অসাম্যকে জোরপূর্বক দূর করিয়া কৃত্রিম উপায়ে সাম্য সৃষ্টি করিতে চায় না, তেমনি বরদাশত করে না কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট অসাম্য। পরন্তু ইসলাম সমর্থিত অর্থনৈতিক অসাম্যের পশ্চাতে অনস্বীকার্য ভিত্তি হিসাবে বর্তমান রহিয়াছে সব মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকারের সাম্য ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা। অথচ পুঁজিকবাদী সমাজে এই ব্যবস্থার বর্তমানতা তো দূরের কথা, ইহার দারণার অস্তিত্বও খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। ফলে পুঁজিবাদী সমাজের অসাম্য যেখানে এক শ্রেণীর- বরং সংখ্যাধিক বিপুল মানুষের-জীবনকে দারিদ্র জর্জরিত বঞ্চনা নিপীড়িত ও দুর্দশায় পর্যত করিয়া তোলে সেখানে ইসলামী সমাজে মানুষ অর্থনৈতিক নিরাপত্তা লাভে ধন্য ও নিশ্চিত হইয়া পরম উৎসাহ উদ্দীপনায় নিজের অন্তর্নিহিত কর্মক্ষমতা, প্রতিভা ও বৃদ্ধিমত্তার সাহায্য উত্তর উত্তর উন্নতির দিকে অগ্রসর হইতে সক্ষম হয়। এই দুই সমাজের অসাম্যের মাঝে আকাশ-পাতাল পার্থক্র সুষ্পষ্ট। বস্তুত ইসলাম ‘সাম্যবাদ’ সাম্যবাদ বলিয়া চীৎকার করিয়া, বঞ্চিত মানুষকে প্রলূব্ধ করিয়া প্রোলেতরী বিপ্লব ঘটাতে প্রস্তুত নয়, প্রস্তুত নয় সমাজের একজন মানুষকে তাহার মৌল প্রয়োজন হইতে বঞ্চিত থাকিার অনুমতি দিতে। পুঁজিবাদী সমাজের ন্যায় ইসলাম মানব সমাজকে ‘আছে’ (Have) ও ‘নাই’(Have Not)-এর দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করিয়া দেয় না। সেখানে প্রত্রেকটি মানুষই ‘আছে’(Hanes) শ্রেণীভুক্ত; নাই’ শ্রেণীর কোন অস্তিত্বই ইসলামী সমাজে সম্ভব নয়। সেখানে সবই কিছু না কিছুর মালিক- উহার পরিমাণে যতই পার্থক্র হউক না কেন। বস্তুত বিশ্ব-প্রকৃতিতে অবস্থিত সৃষ্টিকুলেও যে এইরূপ অবস্থাই বিরাজিত এবং ইসলামী অর্থনীতি সমর্থিত অসাম্য যে অত্যন্ত স্বাভাবিক তাহা চিন্তাশীল মাত্রই স্বীকার করিবেন।

এই অসাম্যই ইসলামী অর্থ ব্যবস্থার অন্যতম মৌলিক ভাবধারা এবং ইসলামী অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য। ইসলাম অর্থ সম্পদের পরিমাণে সমতা বিধানের পক্ষপাতি নয়, ইসলাম সকল মানুষের মৌলিক অদিকার ও মানবিক মর্যাদায় পূর্ণ সমতা বিধানে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। কেননা প্রথমটা প্রকৃত-পক্ষেই সম্পূর্ণ অসম্ভব; বাস্তবতার দৃষ্টিতে কেবল দ্বিতীয়টাই সম্ভব। তাই ইসলাম অসম্ভবের পিছনে না ছুটিয়া কিংবা অসম্ভবের শ্লোগান দিয়া জনগণকে প্রতারিত না করিয়া ‘সম্ভব’কে বাস্তবায়িত করিতে সচেষ্ট। আর ইহাতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিৎ সব সুস্থ বিবেকবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষেরও।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন