hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৫৯
মুনাফা ও শিল্পপণ্যে মজুরের অংশ
উল্লিখিত অধিকার ছাড়াও ইসলামী অর্থনীতি মজুর শ্রমিককে শিল্পোৎপাদনে, উৎপন্ন শিল্পপণ্যে এবং উহার মুনাফার অংশীদার হওয়ার সুযোগ করিয়া দিয়াছে। বস্তুত মালিক-মজুর সমস্যা সমাধানের ইহা একটি অন্যতম প্রধান উপায়। সম্ভবত মালিক-মজুর সমস্যা সমাধানের ইহা একটি অন্যতমম প্রধান উপায়। সম্ভবত মালিক-মজুরের দ্বন্দ্ব সমাধানে ইহাপেক্ষা অধিক সাফল্যপূর্ণ ও কার্যকর পন্থা আর কিছুই হইতে পারে না। শিল্পোৎপাদনে যে বাড়তি মূল্য লাভ হয়, পুঁজিবাদী-সমাজে একমাত্র মালিকই তাহা নিরংকুশভাবে করায়ত্ব ও ভোগ করিয়া থাকে। আর সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তাহা সম্পূর্ণ রাষ্ট্রই কাড়িয়া নেয় কিন্তু ইসলামী অর্থনীতির এই পন্থার উদ্দেশ্য হইতেছে, বাড়তি মূল্যকে মজুর ও মালিক উভয়ের মধ্যে ভাগ করিয়া দেওয়া উভয়কে শিল্পপণ্য হইতে ইনসাফের ভিত্তিতে লাভবান হওয়ার সুযোগ দেওয়া।

ইসলামী অর্থনীতিতে শ্রমিক মজুরকে মূল ব্যবসায়ের মুনাফা এবং শিল্পপণ্যে অংশীদাররূপে স্বীকার করিয়া লইবার অবকাশ রহিয়াছে তাহাই নয়, নবী করীম (ﷺ)-এর একটি হাদীস স্পষ্টভাবে ইহারই নির্দেশ পাওয়া যায়।

(আরবী)

তোমাদের কোন ভৃত্য যদি তোমাদের জন্য খাদ্য করিয়া লইয়া আসে তখন তাহাকে হাতে ধরিয়া নিজের সঙ্গে বসও, সে যদি বসিতে অস্বীকার করে তবু দুই-এক মুঠি খাদ্য অন্তত তাহাকে অবশ্যই খাইতে দিবে। কারণ সে আগুনের উত্তাপ ও ধুম্র এবং খাদ্র প্রস্তুত করার কষ্ট সহ্য করিয়াছে।

অন্য একটি হাদীসের শেষাংশে ইহার কারণ বলা হইয়াছে-ম ‘সে উৎকৃষ্ট খাদ্য প্রস্তুত করার জন্য আন্তরিক যত্ন গ্রহন করিয়াছে।’[এই পর্যায়ে হাদীসসমূহের প্রতিপাদ্য সম্পর্কে ইমাম নববী লিখিয়াছেন:

(আরবী)

এই হাদীসে শ্রমিকদের প্রতি উত্তম ও সহানুভূতিপূর্ণ ব্যবহারের- বিশেষ করিয়া তাহার ব্যাপারে, যে লোক উহা প্রস্তুত করয়াছে কিংবা উহা বহন করিয়া আনিয়াছে- তাহার প্রতি উৎসাহ দান করা হইয়াছে। কেননা সে এইজন্য আগুনের উত্তাপ ও ধুয়া-জ্বালা সহ্য করিয়াছে, উহার সহিত তাহার মন সম্পর্কিত এবং সে উহার গন্ধ লইয়াছে।]

একটি হাদীস খাদেমকে তাহার রান্না করা খাবার খাওয়ায় শরীক করিবার জন্য নবী করীম (ﷺ) নির্দেশ দিয়াচেন বলিয়া উল্লেখ করা হইয়াছে। [(আরবী)]

মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল গ্রন্থে একটি হাদীস উল্লিখিত হইয়াছে। নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করিয়াছেন:

(আরবী)

শ্রমিককে তাহার শ্রমোৎপন্ন জিনিস হইতে অংশ দান কর। কারণ আল্লাহর শ্রমিককে কিছুতেই বঞ্চিত করা যাইতে পার না।

এই হাদীসসমূহ হইতে নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয় যে, শ্রমিক-মজুরকে তাহার মজুরী ছাড়াও ব্যবসায়ের মুল মুনাফঅ এবং উৎপন্ন দ্রব্যেও অংশীদার করিতে হইবে।

বস্তুত শ্রমিক-মজুরদিগকে লভ্যাংশ দান এবং উৎপন্ন দ্রব্যের দেওয়ার নীতি যদি কার্যকর করা যায় তাহা হইলে বর্তমান কালের সর্ব প্রকারের জটিল শ্রমিক-সমস্যার অতি সহজেই সমাধান হইতে পার। ইহার ফলে মজুরদের ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও কর্মশীলতা এবং শ্রম ও পণ্যোৎপাদনের ব্যাপারে ঐকান্তিক নিষ্ঠা ও আগ্রহ উৎসাহ বৃদ্দি পাইবে। আর্থিক লাভ ছাড়াও জাতীয় সম্পদ-বৃদ্ধির দিক দিয়া ইহার মূল্য কোন অংশেই কম নয়। শ্রমিক ও মজুর যখন নিঃসন্দেহে জানিতে পারিবে যে, মূল ব্যবসায় ও শিল্পের মুনাফা হইতেও তাহাকে অংশ দেওয়া হইবে, তখন তাহার কর্মপ্রেরণা শ্রমে উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং কর্তব্য ও দায়িত্বজ্ঞান অত্যধিক বৃদ্ধি পাইবে। কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি বিশেষ সতর্কতার সহিত ব্যবহার করিবে। ফলে মূল লাভ হইতে মজুরকে যে পরিমাণ অংশ দেওয়া হইবে তাহার এই অভ্যন্তরীণ পরিবর্তিত ভাবধারার দরুণ মুল শিল্পের উৎপাদন-পরিমাণ ততোধিক বর্ধিত হইবে। পক্ষান্তরে শিল্প-মালিকও এই ব্যবস্থায় নিজের সমূহ ক্ষতি মনে করিবে না। শ্রমিকদের ঐকান্তিক নিষ্ঠাপূর্ণ কায়িক ও মানসিক সহযোগিতা লাভ করায় তাহারও মনোবল বৃদ্ধি পাইবে। পরিণামে শিল্প ও শ্রম-ব্যবসায় ক্ষেত্রে এক নির্মল পবিত্র ফল্গুধারার সৃষ্টি হইবে।

উক্ত আলোচনা হইতে নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করা যাইতে পারে।

১. মজুর-শ্রমিকদিগকে এমন পরিমাণ মজুরী দিতে হইবে, যাহা তাহাদের কেবল জীবন রক্ষা করার পক্ষেই যথেষ্ট হইবে না, তাহাদের স্বাস্থ্য ও দেহের শক্তি এবং সজীবতাও তাহা দ্বারা যথাযথরূপে রক্ষিত হইবে। এইজন্য তাহাদের নিম্নতম ব্যয়-হিসাবে বেতন নির্ধারণ করিতে হইবে।

২. বসবাসের জন্য তাহাদের ঘরবাড়ি স্বাস্থ্যকর ও প্রশস্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়, যেন একটি পরিবার সংশ্লিষ্ট সকল লোকজনসহ তাহাদের হাত-পা ছড়াইয়া তথায় বসবাস করিতে পারে।

৩. মজুরদের স্বাস্থ্য-ভংগকারী কোন কাজ তাহাদের দ্বারা করানো যাইতে পারে না। একাধারে এত দীর্ঘ সময় পর্যন্তও কাজ করানো যাইতে পারে না, যাহার ফলে তাহারা পরিশ্রান্ত হইয়া পড়িতে পারে, তাহাদের নির্দিষ্ট হওয়া আবশ্যক এবং তাহাতে বিশ্রামের যথেষ্ট অবকাশ থাকা বাঞ্ছনীয়।

৪. শ্রমিক-মজুরদের কাজে কোনরূপ ত্রুটি-বিচ্যুতি হইলে তাহাদের প্রতি অমানুষিক ব্যবহার ও পাশবিক নির্যাতন করার অনুমতি দেওয়া যাইতে পারে না। বরং যথাসম্ভব সহানুভূতিপূর্ণ ব্যবহার করাই কর্তব্য হইবে।

৫. কোন অবস্থাতেই তাহাদিগকে অসহায় করিয়া ছাড়িয়া দেওয়া যাইতে পারে না। তাহারা বৃদ্ধ ও অক্ষম হইয়া পড়িলে তাহাদের জন্য ‘পেনশন’-এর ব্যবস্থা করিতে হইবে। আর কর্মচ্যুত করিবার প্রয়োজন হইলেও এমনভাবে তাহাদিগকে বেকার করিয়া ছাড়িয়া দেওয়া যাইতে পারে না, যাহার ফলে তাহাদিগকে অনশনের সম্মুখীন হইতে হয় বা ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করিতে হয়। অতএব অকারণ ছাঁড়াই করাও চলিবে না।

৬. মজুর-শ্রমিকদিগকে বিশেষ কোন কাজে বা মজুরীর বিশেষ কোন পরিমাণের বিনিময়ে কাজ করিতে জবরদস্তিভাবে বাধ্য করা যাইতে পারে না। বরং তাহাদের কাজ বাছাই করার এবং মজুরীর পরিমাণ লইয়া দরকষাকষি (Bargainging) করার পূর্ণ স্বাধীনতা ও অধিকার থাকিতে হইবে। আর মজুরীরও পূর্বহ্নেই নির্দিষ্ট করিয়া লইতে হইবে।

৭. কাজ সম্পন্ন হইলেই কিংবা নির্দিষ্ট মাস-পক্ষ-সপ্তাহ অতীত হইলেই অনবিবিলম্বে মজুরী বা বেতন আদায় করিতে হইবে। এই ব্যাপারে কোন রূপ উপেক্ষা বা গাফিলতি; কিংবা টালবাহানা করা চলিবে না।

৮. মজুর-শ্রমিকদের এবং তাহাদের সন্তানাদির শিক্ষা-দীক্ষারও ব্যবস্থা করা কারখানা-মালিকের পক্ষে অবশ্যই কর্তব্য হইবে।

ইসলামী অর্থনীতিতে শ্রমিক-মজুরে যে মর্যাদা ও অধিকার নির্ধারিত হইয়াছে এবং মুল শিল্পে এই উভয পক্ষের স্বার্থ ও লক্ষ্যকে যেভাবে একীভূত করিয়া দেওয়া হইয়াছে তাহাতে এখানে শ্রমিক ও মালিকের মনে কোনরূপ দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষের অবকাশ থাকিতে পারে না। বরং উভয়ের সম্মিলিত লাভই স্বাভাবিক। এখানে শ্রমিকদের ধর্মঘট করার এবং মালিক পক্ষের লক-আউট ঘোষণা করার কোন প্রয়োজনই দেখা দিতে পারে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন