hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১৩৬
ক্ষতিপূরণ দান
ইসলামী রাষ্ট্রের কোন সামষ্টিক কাজের জন্য কিংবা যুদ্ধের ঘাঁটি নির্মাণ, সৈনিকদের চলাচল অথবা বৈদেশিক আক্রমণের ফলে নাগরিকদের বিশেষ কোন ক্ষতি সাধিত হইলে উহার ক্ষতিপূর দান করা ইসলামী রাষ্ট্রের কর্তব্য হইবে। হযরত উমর ফারূক (রা)-এর নিকট একজন কৃষক আসিয়া অভিযোগ করিল যে, সিরিয়ার একদল সৈন্যের পথ অতিক্রমকরার সময় তাহার শস্যক্ষেত নষ্ট হইয়া গিয়াছে। এই কথা শুনিয়া তিনি বায়তুলমাল হইতে তাহার ক্ষতিপূরণ বাবদ দশ হাজার দিরহাম দান করেন।

মোট কথা, ইসলামী রাষ্ট্রের বায়তুলমালের উপর এইরূপ বিভিন্ন প্রকার খরচের অসংখ্য ও বিরাট দায়িত্ব আসিয়া পড়ে, যাহা পূরণ করা উহাদের অবশ্য কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত। এই সব দায়িত্ব পালনের পরও বায়তুলমালের ধনসম্পদ উদ্বৃত্ত থাকিলে তাহাও জনগণেরই কল্যাণের জন্য ব্যয় করিতে হইবে। হযরত উমর ফারূক (রা) তাহাই করিয়াছেন। তিন উদ্বৃত্ত অর্থ-সম্পদ হইতে কেবল শহরবাসীদের জন্যই নয়, গ্রামবাসীদের জন্যও-কে কত পাইতে পারে, তাহা রীতিমত পরীক্ষা করিয়া সেই পরিমাণ খাদ্য বরাদ্দ করিয়া দিয়াছিলেন। উত্তরকালে সামষ্টিক অর্থ সম্পদ যখন আরো বৃদ্ধি পাইয়াছিল, তখন তিনি দেশবাসীর জন্য পোষাকেরও ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। তিনি তাহদের জন্য সুদৃঢ় ও উন্মুক্ত বায়ুময় ঘর-বাড়ি নির্মাণ করিয়াছিলেন। কুফা, বসরা ও ফুসতাত প্রভৃতি এলাকায় নূতন নূতন শহর স্থাপন করিয়াছিলেন। তাহাদের জন্য প্রশস্ত রাস্তাঘাট, দোকান ও চক ইত্যাদি নির্মাণ করিয়াছিলেন। এমনকি, প্রত্যেক মহল্লার লোকদের উট বাঁধিবার জন্য আলাদা স্থানও তৈয়ার করিয়া দিয়াছিলেন। [মাঅর্দী লিখিত “আল-আহকামুস-সুলতানীয়া” গ্রন্থে ইহার বিস্তার বিবরণ লিখিত আছে।] নূতন নূতন খাল কাটিয়া ও ঝর্ণাধারা বানাইয়া শহরে ও গ্রামে জল সেচের নিখুত ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। ফলে ইসলামী রাজ্যের প্রত্যেকটি বাসিন্দাই আহারের জন্য খাদ্য, পরিধানের জন্য পোশাক এবং থাকিবার জন্য বাড়িঘর করিয়াছিলেন। হযরত উমর ইবনে আবদুল আজজের সময় অন্ধ ও গরীব নাগরিকদের পথ চলার কাজে সাহায্য করার জন্য এবং পঙ্গু ও অক্ষম লোকদের সেবার জন্য সরকারী খরচায় লোক নিযুক্ত করা হইয়াছিল। বিবাহে সঙ্গতিহীন যুবক-যুবতীদের বিবাহের ব্যবস্থা ও তৎসংক্রান্ত খরচপত্রও সরকারের তরফ হইতে বহন করা হইয়াছিল। ফল কথা, ইসলামী অর্থনীতি প্রবর্তিত ন্যায়নিষ্ঠা ও সামাজিক নিরাপত্তার ফলে ইসলামী রাষ্ট্রের কোথাও দারিদ্র বা অনশন ইত্যাদির নাম-নিশানা ছিল না। বস্তুত ইসলামী অর্থনীতির ইহাই বৈশিষ্ট্য। আর এই বৈশিষ্ট্য দেশ কাল নির্বিশেষে সকল সময় ও সকর দেশেই লা.ভ করা যাইতে পারে।

অমুসলিমদের আর্থিক নিরাপত্তা এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, ইসলামী অর্থনীতির এই সামাজিক নিরাপত্তা কেবল মুসলিম নাগরিকদিগকেই দান করা হয় নাই, প্রকৃতপক্ষে ধর্মমত নির্বিশেষ সকল দেশবাসীই এই নিরাপত্তার লাভ করিতে পারিবে। ইসলামের রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিতে যেসব স্থানে ‘মিসকীন’ শব্দ ব্যবহৃত হইয়াছে এবং রাষ্ট্রীয় ধন-সম্পদে তাহাদের অধিকারের কথা ঘোষণা করা হইয়াছে, সকল ক্ষেত্রেই ধর্মমত নির্বিশেষে সকল নিঃস্ব-দরিদ্র নাগরিকদের বুঝানো হইয়াছে।

হযরত আবূ বকর (রা)-এর সময় ইসলামী রাষ্ট্রের পক্ষ হইতে হযরত খালিদ ইবনে অলীদ (রা) ‘হীরা’ বাসীদের সহিত যে সন্ধির চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করিয়াছিলেন, তাহাতে তিনি স্পষ্টভাবে লিখিয়াছিলেন:

(আরবী)

এবং আমি তাহাদিগকে এই অধিকার দান করিলামযে, তাহাদের কোন বৃদ্ধ যদি উপার্জন ক্ষমতা হারাইয়া ফেলে কিংবা কাহারো উপর কোন আকস্মিক বিপদ আসিয়া পড়ে, অথবা কোন ব্যক্তি যদি সহসা এতদূর দরিদ্র হইয়া পড়ে যে, তাহার সমাজের লোকেরা তাহাকে ভিক্ষা দিতে শুরু করে, তখন তাহার উপার ধার্য জিজিয়া কর প্রত্যাহার করা হইবে, সেই সঙ্গে তাহার ও তাহার সন্তানদের ভরণ-পোষণ ইসলামী রাষ্ট্রের বায়তুলমাল হইতেই করা হইবে যতদিন সে ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিক হইয়া থাকিবে।[কিতুবুল খারাজ, ১৪৪ পৃঃ]

হযরত উমর ফারূক (রা) দেমাশক যাত্রাকালে কুষ্ঠরোগগ্রস্ত এক খৃস্টান জনগোষ্ঠীর নিকট উপস্থিত হইয়াছিলেন। তাহাদের এই অবস্থা দেখিয়া তিনি তাহাদিগকে সাদকার ফান্ট হইতে অর্থদান করিবার নির্দেশ দিয়াছিলেন।[বালাজুরি লিখিত ‘ফতহুল বুলদান’।]

হযরত উমর (রা) এক বৃদ্ধ ইয়াহুদী ব্যক্তিকে ভিক্ষা করিতে দেখিয়া তাহাকে ভিক্ষা করার কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন। সে বলিল, আমাকে জিজিয়া আদায় করার নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে, কিন্তু তাহা আদায় আমার কোনই সামর্থ্য নাই। হযরত উমর (রা) ইহা শুনিয়া তাহাকে নিজের ঘরে লইয়া গেলেন, বায়তুলমাল খাজঞ্জীকে ডাকিয়া আদশে করিলেন: ‘ইহার অবস্থার প্রতি লক্ষ্য কর, ইহার জন্য বৃত্তি নির্দিষ্ট করিয়া দাও, এবং ইহার নিকট হইতে জিজিয়া লওয়া বন্ধ কর।’ অতঃপর বলিলেন: “আল্লাহর শপথ, ইহার যৌবন শক্তিকে আমরা কাজে ব্যবহার করিব, আর বার্ধক্যের অক্ষম অবস্থায় ইহাকে অসহায় করিয়া ছাড়িয়া দিব, ইহা কোনমতেই ইনসাফ হইতেপারে না”। [আবূ ইউসুফ লিখিত ‘কিতাবুল খারাজ-১৮৮ পৃঃ]

হযরত উমরের এই কথার শোষাংশ বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্র। রাষ্ট্র সরকার ধনশালীদের নিকট হইতে কর, রাজস্ব ও চাঁদা ইত্যাদি আদায় করবে, যুবশক্তিকে জাতীয় কাজে নিযুক্ত করিবে, ইহা দেশবাসীর উপর রাষ্ট্রে স্বাভাবিক অধিকার, তাহাতে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু একজন নাগরিক যখন দরিদ্র হইয়া পড়িয়া কিংবা বৃদ্ধ হইয়া উপার্জন ক্ষমতা হারাইবে, তখন তাহার যাবতীয় প্রয়োজন পূর্ণ করার দায়িত্ব রাষ্ট্র-সরকারকেই গ্রহণ করিতে হইবে- ইহা রাষ্ট্রের উপর নাগরিকদের স্বাভাবিক ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার, ইহাও যথাযথভাবে পূর্ণ করা অপরিহার্য। ইসলামী অর্থনীতির এই বৈশিষ্ট্য অতুলনীয়। দুনিয়ার পুঁজিবাদী ও অন্যান্য অর্থনীতির শুধু সরকারী কর্মচারীদের জন্য বেতনের একটা সামান্য অংশ পেনশন বাবদ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় বটে; কিন্তু তাহাতে তাহার মৌলিক প্রয়োজন পূরণ হয় কিনা, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ মাত্র করা হয় না, তাহাদের দায়িত্ব গ্রহণ করা হয় না। এই কথা বিশেষভাবে স্মরণীয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন