hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১৯৩
পুঁজি ও শ্রমের সংঘর্ষ প্রতিরোধ
বরং নিজের যাবতীয় অর্থ-সম্পদকে স মাজের বৃহত্তর কল্যাণে নিয়োগ করাকেই সে মূলধনের সার্থক প্রয়োগ বলিয়া মনে করে। দেশের শ্রমিক মজুরদের যাবতীয় সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করিবে। একক কারখানার প্রচুর উৎপাদন কত মানুষকে বেকার সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করিবে। একক কারখানার প্রচুর উৎপাদন কত মানুষকে বেকার সমস্যার সম্মুখীন করিতেছে, অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের দরুন দেশের রাষ্ট্র-সরকার কি কি জটিলতা বিব্রত হইয়া পড়িতেছে, এবং সমষ্টিগত শান্তি ও সমৃদ্ধি কতখানি ব্যহত হইতেছে- ইসলামী সমাজের প্রত্যেক ধনী ব্যক্তিই এই দিকে গভীর দৃষ্টি রাখিয়া এবং ইহার প্রতিবিধানমূলক পন্থা অবলম্বন করিয়াই তাহার পুঁজি বিনিয়োগ বা নিয়ন্ত্রণ করিবে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে সামগ্রিক ধৈর্য প্রতিষ্ঠার জন্য দেশে শ্রমিক-মজুর রাষ্ট্রসরকার ও দেশবাসীর সহিত পরিপূর্ণ সহযোগিতা করিতে প্রস্তুত থাকিবে।

বস্তুত এই পটভূমিকার ভিত্তিতে ইসলামী সমাজের প্রত্যেক শিল্প এলাকায় পারস্পরিক সাহায্যের এমন একটি সংস্থা গড়িয়া তুলিতে হইবে, যাহাতে কারখানা মালিক, শ্রমিক ও রাষ্ট্র সরকারের প্রতিনিধি সকলেই শরীক থাকিবে। অর্থনীতিতে পারদর্শী ও বিশেষজ্ঞ কয়েকজন লোককেও পরামর্শদাতা হিসাবে এই সংস্থায় নিযুক্ত করা হইবে। এই প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য:

(ক) শ্রমিক মজুরের যাবতীয অভাব-অনটন, সমস্যা ও জটিলতা দূর করা, তাহাদের প্রয়োজন ও দাবি দওয়া পূরণ করা।

(খ) দেশে বেকার-সমস্যা ও ব্যবসায়ের মন্দভাব সূচিত হওয়ার পথ রুদ্ধ করা।

(গ) ব্যবসায় সংক্রান্ত বিপর্যয় (Trade cycles) প্রতিরোধের জন্য জরুরী ব্যবস্থা অবলম্বন করা।

(ঘ) স্বয়ং কারখানা-মালিককে পণ্য রপ্তানী বা কাঁচামালের আমদানীর ব্যাপারে যেসব অসুবিধার সম্মুখীন হইতে হয়, তাহা দূরীভূত করিতে চেষ্টা করা।

(ঙ) সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য রাষ্ট্রসরকারের উপর যেসব দায়িত্ব চাপিয়া বসে, তাহা দূর করিবার ব্যবস্থা করা।

শিল্প প্রতিষ্ঠায় অংশ গ্রহণকারী কোন লোকের কোনরূপ অসুবিধার বা সমস্যার সৃষ্টি হইলে তাহা লইয়া হৈ চৈ করা ধর্মঘট করা বা অন্য কোনরূপ অশান্তিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ার পূর্বেই এই প্রতিষ্ঠান উহার অভিযোগ দূর করিবার জন্য অগ্রসর হইবে। মজুর-শ্রমিকদের বেতন ও কাজের সময় সংক্রান্ত অসুবিধা, কারখানা মালিকের কারবারি অসুবিধা ও ট্যাক্সের বোঝা, বৈদেশিক পণ্যের সহিত প্রতিযোগিতার সমস্যা, রাষ্ট্র-সরকার ও শিল্প-সংক্রান্ত কোন প্রতিকূলতা প্রভৃতি পারস্পরিক সাহায্যের উদ্দেশ্যে স্থাপিহ এই কল্যাণকর প্রতিষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে দূর করিবার চেষ্টা করিবে। এই প্রতিষ্ঠান শুধু অন্তঃস্বারশূন্য নিয়মতান্ত্রিক শক্তিরই ধারক হইবে না, নৈতিক আবেদনের শক্তিও উহার অর্জিত থাকিবে। এই প্রতিষ্ঠান পরিপূরণ সহানুভূতি ও সহৃদয়তার সহিত সমগ্র ব্যাপারের তদন্ত করিবে, অশান্তির মূল কারণ নির্ধারণ করিতে প্রাণপণে চেষ্টা করিবে। বিশ্বাসঘাতকতা, সকল প্রকার বিপর্যয় ও অর্থনৈতিক সমস্যার পথ রুদ্ধ করিয়া সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আইন প্রণয়ন ও পরিকল্পনা গ্রহণের ব্যাপারে সহযোগিতা ও পথ-নির্দেশ করিবে।

এই ধরনের প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মতৎপরতাকে স্থায়ী ও সার্বজনীন কল্যাণকর করিয়া গড়িয়া তুলিবার জন্য নিম্নলিখিতরূপ কার্যকর ব্যবস্থা অবলম্বন করা যাইতে পারে:

১. এই সংস্থা ব্যবসায়ের একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করিবে এবং যুক্ত অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কারবার করিবে। এই কারবারে শ্রমজীবীগণও যাহাতে অংশ গ্রহণ করিতে পারে, তাহার অবাধ সুযোগ করিয়া দিবে। মিলিত অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে চালু ব্যবসায়ে শ্রমিকদিগকে বাৎসরিক হিসাবে এক একটি শেয়ার অর্ধমুল্যে ক্রয় করিবার অনুমতি দেওয়া হইবে। আর বাকি অর্ধেক মূল্য কোম্পানী বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বোনাস হিসাবে শ্রমিকের নামে আদায় করিবে। অথবা প্রত্যেক শ্রমিকের মাসিক বেতন হইতে সামান্য পরিমাণ অর্থ জমা করা হইবে। এইভাবে বৎসরের শেষে যে পরিমাণ অর্থ সঞ্চিত হইবে, তত পরিমাণ টাকা স্বয়ং কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান নিজের তরফ হইতে দিয়া উহার সহিত যোগ করিবে। এবং এই মোট টাকা দ্বারা শ্রমিকের জন্য মূল্য ব্যবসায়ের একটি অংশ ক্রয় করা হইবে। এই পন্থানুসারে একজন শ্রমিক একাধারে দশ বৎসরকাল কাজ করিয়া ২৫টি স্থায়ী শেয়ার লাভ করিতে পারে। এই শেয়ারসমূহ তাহাকে এবং তাহার উত্তরাধিকারীদিগকে বহুদিন পর্যন্ত মুনাফার অংশ দিতে পারিবে। এই কাজে ইসলামী রাষ্ট্র ও উহার যাকাত ফান্ড হইতে প্রয়োজনীয় অর্থ দিয়া শ্রমিকদিগকে স্বাবলম্বী হওয়ার সথেষ্ট সুযোগ করিয়া দিতে পারে।

এই পন্থায় কাজ করিলে ধীরে ধীরে একটি প্রতিষ্ঠানে পুঁজিদার ও শ্রমিকের স্বার্থ সমান ও সংযুক্ত করিয়া তোলা খুবই সহজ হইয়া পড়িবে। ফলে অসহায় মজুরদের শোষণ-নিষ্পেষণ করার, ছাটাই করার কিংবা বেতন হ্রাস করার মত কোন বিপদে তাহাদিগকে নিক্ষেপ করার কোন সুযোগই কেহ পাইবে না।

২. এমন কারখানা ও সংস্থার পক্ষ হইতে স্থাপিহ করা যাইতে পারে, যাহার বিভিন্ন কর্মচারীই হইবে উহর আসল অংশীদার। ইসলামী রাষ্ট্র যাকাত হইতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ যদিও প্রত্যেক বৎসরই এই পারস্পরিক সাহায্য সংস্থার নিযুক্ত করার জন্য দান করে, তবে তাহাতে আরো অধিক কল্যাণ সাধিত হইতে পারে।

৩. দেশের সমগ্র শ্রমজীবী চাকুরীজীবিদিগকে সকল প্রকার আকস্মিক বিপদ হইতে রক্ষা করার জন্য সরকারী নিয়ন্ত্রণ ও পারস্পরিক সাহায্য সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যবস্থাধীন একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হইবে এবং তাহাতে নিম্নলিখিত উপায়ে মূলধন সংগ্রহ করা যাইতে পারিবে:

(ক) মজুর ও চাকুরীজীবীদের বেতন হইতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ মাসিক চাঁদা হিসাবে গ্রহণ করা হইবে।

(খ) কারখানা মালিক, ব্যবসায়ী কিংবা সরকার যে মজুরদিগকে খাটাইতেছে, সে-ই উল্লিখিত পরিমাণ বা তদপেক্ষা কম পরিমাণ কিছু অর্থ মজুরদের উক্ত ফান্ড প্রতি মাসে জমা করিয়া দিবে।

(গ) কারখানা মালিক, ব্যবসায়ী কি রাষ্ট্র-সরকার কোন কর্মচারীকে কর্মচ্যুত করিলে একমাসের বেতন পরিমাণ অর্থ তাহার নামে এই ফান্ডে জমা করিবার জন্য তাহাকে বাধ্য করা যাইতে পারে। ইহার ফলে মজুর ছাঁটাইর বর্তমান হার অনেকটা হ্রাস পাইবে।

(ঘ) যাকাত ফান্ডের বাৎসরিক বাজেট হইতে একটি বিরাট অংশ এই ফান্ডে জমা করিতে হইবে।

(ঙ) শিল্পোৎপাদনের জন্য যে কারখানাই স্থাপন করা হইবে, উহার উৎপাদন শক্তির হার অনুযায়ী মালিকের প্রতি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অরথ চাঁদা ধার্য করা যাইতে পারে। তাহা সরাসরি বেকার সসস্যা দূরীকরণ ফান্ডে জমা হইতে থাকিবে। অবশ্য এই চাঁদা ধার্যকরণ সরকারী বাধ্যবাধকতা ব্যতীত নিছক নৈতিক ও মানবিক আবেদনের মারফতেই করিতে হইবে।

এই ফান্ড হইতে বেকার শ্রমজীবীদিগকে দুরাবস্থা ও বিপদকালে কেবল বৃত্তিই দেওয়া যাইবে না, ইহা হইতে দেশে গার্হস্থ্য-শিল্পের একটি ব্যাপক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করিয়া বেকার লোকদিগকে উপার্জনশীল করিয়া তোলাও অনেক সহজ হইবে।

এই সংস্থার পক্ষ হইতে বিভিন্ন এলাকায় কর্মসংস্থান কেন্দ্র স্থাপন করা যাইতে পারিবে। সেখানে সমগ্র দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট ও সরকারী অফিসাদী সম্পর্কে পূর্ণ তথ্য সংগৃহতি থাকিবে।

৪. এই সংস্থার অধীন এমন একটা সাধারন ফান্ড সংগ্রহ করা যাইতে পারিবে, যাহাতে দেশের শিল্পপতিগণ নিজ নিজ শিল্পগত মনাফার একটা নির্দিষ্ট অংশ জমা করিবে এবং সরকার ও যাকাত ফান্ড হইতে তাহাতে সাহায্য দান করিবে। এই ফান্ড একান্তভাবে নিযুক্ত হইবে এবং দেশের শ্রমিক-মজর ও সাধারণ মেহনীত জনতার জীবন-মান (খাদ্য, বসবাস, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা) উন্নত করার জন্য। সকলের মৌলিক প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রাখিয়া বিশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ীই এই কাজ সম্পাদন করা হইবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন