hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১৩৩
সরকারী কর্মচারীদের বেতন
ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্র-প্রধানের ন্যায় অন্যান্য সরকারী কর্মচারীর বেতনও বায়তুলমাল হইতে আদায় করা হইবে। কারণ ইহারা সকলেই মুসলমান জনগণের সামগ্রিক ও সামাজিক রাষ্ট্রীয় কাজকর্ম আঞ্জাম দেওয়ার ব্যাপারে নিরন্তর আত্মনিয়োগ করিয়া থাকে; অতএব জনগণের সামষ্কি ধন-ভান্ডার- বায়তুলমাল হইতে- তাহাদের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করিয়া দিতে হইবে, ইহাই স্বাভাবিক। নবীকরীম (ﷺ) নিজে সরকারী কর্মচারীদের বেতন দিয়াছেন এবং খুলাফায়ে রাশেদুনের যুগেও অনুরূপ কাজ হইয়াছে।

বস্তুত রাষ্ট্র-সরকারই হইতেছে মানবীয় শক্তি(Man Power) ও শ্রম শক্তির (Labour) সর্বশ্রেষ্ট খরিদ্দার। কাজেই সাধারণভাবে দেশের শ্রম ও চাকুরীর বেতন নির্ধারণের উপর সরকার নির্ধারিত বেতনের হার ও বেতন নির্ধারণের মূলনীতি প্রত্যক্ষ প্রভাব তীব্রভাবে প্রতিফলিত হইয়া থাকে। রাষ্ট্র-সরকার যদি বেতনের সুবিচারপূর্ণ হার নির্ধারণ করে, তবে সমগ্র দেশেই সেই মান অনুযায়ী মজুর-শ্রমিক ও চাকরিবীবিদের বেতননির্ধারিত হইতে থাকিবে। এই জন্য ইসলামী অর্থনীতি সাধারণভঅবে সকল প্রকার মজুর-শ্রমিকদের-বিশেষ করিয়া সরকারী কর্মচারীদের- বেতনের হার নির্ধারণের মূলনীতি উপস্থিাপিত করিয়াছে।

দুনিয়ার পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে চাকরিজীবিদের বেতন নির্ধারণের ব্যাপারে তিনটি মৌলিক ত্রুটি বিদ্যমান।

প্রথম,বিভিন্ন পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের সরকারী কর্মচারীদের কমপক্ষে যে বেতন দেওয়া হয়, তাহা দ্বারা একটি পরিবারের ভরণ-পোষণ সম্পন্ন হওয়া তো দূরের কথা, এক ব্যক্তি স্বাধীনভাবে জীবন-যাপনর পক্ষেও তাহা যথেষ্ট হয় না।

দ্বিতীয়ত, বেতনের হার নির্ধারণের ব্যাপারে একজন চাকরিজীবির অর্থনৈতিক দায়িত্ব ও পোষ্যদের সম্পর্কে বিন্দুমাত্র চিন্তা করা হয় না- সেদিকে লক্ষই দেওয়া হয় না। ফলে দেখা যাইতেছে য, কোন কোন কর্মচারী একাকী ও পারিবারিক দায়িত্বমুক্ত হইয়াও তিন-চারশ’ টাকা বেতন পাইতেছে, আর অন্য দিকে এক ব্যক্তির উপর ৮/১০ জন লোকের ভরণ পোষণের দায়িত্ব অর্পিত হওয়া সত্ত্বেও সে মাত্র চার-পাঁচশ’ টাকা বেতন পাইতেছে।

আর তৃতীয়ত, বেতন নির্ধারণের ব্যাপারে অবিচারমূলক আকাশছোঁয়া পার্থক্য সৃষ্টি করা হইয়াছে। সাধারণভাবে সকল দেশেই কমসে কম ও সর্বাপেক্ষা অধিক তেনের মধ্যে পার্থক্য ১-৩০ এর সমান। অন্য কথায় একতলা বাড়ি ও তিরিশ’ তলা বাড়ির পাশাপাশি দাঁড় করিলে যে পার্থক্য চোখের সম্মুখে উজ্জ্বল ও স্পষ্ট হইয়া ধরাপড়ে, বর্তমানকালের বিভিন্ন সরকারী কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত বেতনের হারেও অনুরূপ পার্থক্যই রক্ষিত হইয়াছে। একই সমাজের কর্মচারীদের বেতনের এই পার্থক্য সমাজ ক্ষেত্রে ঠিক তদ্রু এক মহাবিপর্যয় সৃষ্টি করিয়াছে, যেমন বিপর্যয় হইতে পারে ঘন্টায় এক মাইল গতির একটি গাড়িকে ঘন্টায় ত্রিশ মাইল দ্রুতগামী একটি গাড়ির সহিত জড়িয়া দিলে।

এইরূপ অবিচারমূলক বেতন নির্ধারণের পরিমাণ অনিবার্যরূপে অত্যন্ত মারাত্মক হইয়া দেখা দেয়। একদিকে নিম্ন শ্রেণীর কর্মচারীদের মনে- যাহারা মূলতই এক একটি দেশ ও রাষ্ট্রের মেরুদন্ড- রাষ্ট্রের প্রতি ভয়ানক বীতশ্রদ্ধা ও অনাসক্তির ভাব জাগিয়া উঠে। তাহারা নিজেদের অপরিহার্য প্রয়োজন পূর্ণ করিবার জন্য দুর্নীতি করিতে ও ঘুষ লইতে বাধ্য হয়। কম বেতন প্রাপকদের মনে স্বভাবতঃ অধিক প্রাপকদের মনে অহংকার, প্রলয়ংকর মানসিক ভাব জাগিয়া উঠে। ইহার পরিণামে কোন রাষ্ট্রই যে শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাইতে পারে না, তাহা নিঃসন্দেহ।

কিন্তু ইসলামের রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি এই অত্যাচরমূলক পদ্ধতির তীব্র প্রতিবাদ করিয়াছে, মানুষের পরস্পরের মধ্যে এইরপ বৈষম্য ও পার্থক্য সৃষ্টি ইসলামী অর্থনীতি মাত্রই বরদাশত করিতে পারে না।

ইসলামী অর্থনীতি অনুযায়ী সরকারী কর্মচারীদে বেতন নির্ধারণের ব্যাপারে কর্মচারীর যোগ্যতা ও কাজের স্বরূপ প্রয়োজন ও ভরণ-পোষণের দায়িত্ব সম্পর্কে বিশেষ বিবেচনা করা হইবে। নবী করীম (ﷺ) এ সম্পর্কে নিম্নলিখিতরূপ একটি নীতি ঘোষণা করিয়াছেন:

(আরবী)

যে লোক আমাদের সরকারী কর্মচারী হইবে, [সে যদি বিবাহন না করিয়া থাকে, তবে] সে বিবাহ করিয়া লইবে। তাহার কোন গৃহ চাকর না থাকিলে সে তাহা লইবে। তাহার ঘর না থাকিলে সে একখানা ঘর প্রস্তুত করিবে। ইহার অধিক যে গ্রহণ করিবে সেহ য় বিশ্বাস-ঘাতস, না হয় চোর।

এই হাদীস ছোট-বড় সকল প্রকার সরকারী কর্মচারীদের বেতন সম্পর্কে একটি স্থায়ী মান নির্ধারণ করে। ইসলামী রাষ্ট্রের কর্মচারী হওয়ার দিক দিয়া উচ্চপদস্থ নিম্নপদস্থের মধ্যে কোনরূপ তারতম্য নাই। সকল কর্মচারীই সমান দায়িত্বশীল। অতএব রাষ্ট্র সরকার সকলেই বুনিয়াদী প্রয়োজন পূর্ণ করার দায়িত্ব গ্রহণ করিবে। ইসলামের রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি একজন গভর্ণর ও একজন পিয়ন চাপরাশর বুনিয়াদী প্রয়োজনের মান সম্পর্কেক কোনই পার্থক্য করে নাই। খুলাফায়ে রাশেদুরে যুগেও বেতনের হার উক্ত হাদীস অনুসারেই নির্ধারিত হইয়াছিল।

এ সম্পর্কেক হযরত উমর ফারূক(রা)-এর নিম্নলিখিতত বক্তৃতাংশ হইতে চূড়ান্ত মূলনীতি লাভ করা যায়।

(আরবী)

এক ব্যক্তি ইসলামের জন্য কি পরিমাণ দুঃখ ভোগ করিয়াছে,

এক ব্যক্তি ইসলাম প্রচারের ব্যাপারে কতখানি অগ্রসর হইয়াছে,

এক ব্যক্তির ইসলাম প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কতখানি কষ্ট স্বীকার করিয়াছে,

এক ব্যক্তির ইসলামী জীবন-যাপনের দিক দিয়া প্রকৃত প্রয়োজন কতখানি।

এবং এক ব্যক্তির উপর তাহার পরিবারের কতজন লোকের ভরণ পোষণের দায়িত্ব রহিয়াছে।

একটু চিন্তা করিলেই বুঝিতে পারা যায় যে, বেতন নির্ধারণের জন্য ইহা অপেক্ষা সুবিচারপূর্ণ ন্যায়-নীতি আর কিছুই হইতে পারে না। ইসলামী অর্থনীতিতে বেতন নির্ধারণ সম্পর্কে গৃহীত এই নীতিকে বলা হয়- “ভরণ-পোষণেল দায়িত্ব পালনউপযোগী বেতন দেওয়ার নীতি”। খুলাফায়ে রাশেদুনের যুগে এই নীতিই কার্যকর ছিল। ফল একটি পরিবারে যখনি একটি সন্তানের জন্ম হইত, তখনি বায়তুলমাল হইতে তাহার জন্য বৃত্তিদান শুরু করা হইত।

দ্বিতীয়তঃ ইসলামী অর্থনীতি বেতন দেওয়ার ব্যাপারে সংখ্য-সাম্য বা পরিমাণ-সাম্যকে কখনো ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করে নাই। কারণ বস্তুতই তাহা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক। কিন্তু তাহাতে আকাশ পাতা অবিচারমুলক বৈষম্যকেও বরদাশত করা হয় নাই। বরং তাহা চিরতরে নির্মুল করিয়াছে। কর্মচারীদের অন্তর্নিহিত স্বাভাবিক যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা, কাজের দায়িত্বের স্বরূপ এবং পদমর্যাদার স্বাভাবিক পার্থক্যকে ইসলামী অর্থনীতি স্বীকৃতি দিয়াছে। বেতনের হার নির্ধারণের ব্যাপারে এই পার্থক্য অবশ্যই বর্তমান থাকিবে। ইসলামী অর্থনীতি নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের অধিকার হরণ করিয়া, তাহাদের অনিবার্য প্রয়োজন অপূর্ণ রাখিয়া বড় বড় অফিসারদরে বিলাস বাসনের ব্যবস্থা করার অনুমতি কখনই দিতে পারে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন