hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১০৩
অর্থনৈতিক অসাম্য কেন?
মানব সমাজে অতি স্বাভাবিকভাবে যে অর্থনৈতিক অসাম্য বিরাজিত থাকে উহার যৌক্তিকতা স্বীকার করিতে অনেকেই কুণ্ঠিত ও দ্বিধাগ্রস্ত হইয়া থাকে। আল্লাহর বিশ্ব-পরিকল্পনা ও ইসলামের পূর্ণাঙ্গ সম্যকরূপে বুঝিতে অক্ষম হওয়াই ইহার মুলীভূত কারণ। ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা সম্যকরূপে বুঝিতে অক্ষম হওয়াই ইহা মূলীভূত কারণ। ইসরামের জীবন-ব্যবস্থা বিশ্ব-ব্যবস্থারই প্রতিচ্ছবি। বিশ্ব-প্রকৃতিতে সৃষ্টি-কূলের মাঝে যোগ্যতা ক্ষমতা আকার-আকৃতি ও শক্তি ক্ষমতার দিক দিযা যেমন পার্থক্য রহিয়াছে, তেমনি রহিয়াছে পারস্পরিক নিবিড় ও গভীর সহযোগিতা। এই পার্থক্য অসাম্য ও পারস্পরিক সহযোগিতাই ইসলামী জীবন-ব্যবস্থা তথা ইসলামী অর্থনীতির মৌল ভাবধারা।

বস্তুত জীবন সম্পর্কে ইসলমের দৃষ্টিকোণ বুঝিতে পারিলেই মানবসাধারণের অর্থনৈতিক অসাম্যের তাৎপর্য অনুধাবন করা সম্ভব। এই নীতিতে চিন্তা করা হইলে অর্থনৈতিক দিক দিয়া পারস্পরিক পার্থক্য ও অসাম্যের স্বাভাবিকতা ও অনিবার্যতা অনস্বীকার্য হইবে। বাহ্যত এই পার্থক্য যতই অমানবিক ও অবাঞ্জনীয় মনে করা হউক না কেন, ইহাই বিবেকসম্মত বলিয়া বিবেচিত হইবে।

জীবন সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিকোণ হইল: মহান স্রষ্টা এই ভূবনে মানুষকে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিয়াছেন। তিনিই মানুষকে জীবন দান করিয়াছেন। সর্বোত্তম সক্ষম সুঠাম দৈহিক সংগঠন দিয়াছেন। উচ্চমানের বিবেক-বুদ্ধি ও প্রতিবা-মনীষা দানে তিনি মানুষকে ভূষিত করিয়াছেন, ভাল ও মন্দ গুণের অধিকারী করিয়াছেন তাহাকে। বেশুমার উপাদান উপকরণ ও উপায় পন্থা মানুষের আয়ত্তাধীন করিয়া দিয়াছেন। তাই যথেচ্ছা ব্যবহার ভোগ ও প্রয়োগের ক্ষমতা দান করিয়াছেন। এই সবকিছু দান করার পর আল্লাহ তাঁহার নবী-পয়গম্বর ও কিতাবের মাধ্যমে জানাইয়া দিয়াছেন যে, পরীক্ষাই হইল মানব-সৃষ্টির মৌল উদ্দেশ্য; মানুষ জীবনে বিভিন্ন পর্যায়ে নানাবিধ অবস্থা ও পরিস্থিতির সম্মুখীন হইয়া কি ধরনের আচরণ করে, আল্লাহ তা’আলা তাহাই দেখিতে চাহেন।

ধৈর্য, কৃতজ্ঞতা, বাদান্যতা, সহানুভূতি, দয়াশীলতা, ত্যাগ-তীতিক্ষা, উদারতা, কল্যাণ কামনা এবং অন্যা যাবতীয় মঙ্গলকর কাজে-কর্মে পারস্পরিক সাহায্য ও সহযোগিতা চিরকালই মানুষের উত্তম গুণ-বৈশিষ্ট্য রূপে স্বীকৃত। আল্লাহ এই গুণাবলীকে পছন্দ করেন এবং উহাতে ভূষিত হইবার জন্য তিনি মানুষকে নির্দেশও দিয়াছেন। পক্ষান্তরে ধৈর্যহীনতা, না-শুকরি, কার্পণ্য, নির্দয়তা, স্বার্থপরতা, অনুদারতা, লোব ও প্রতিহিংসা এবং জনকল্যাণমূরক কাজে অনিচ্ছা ও অসহযোগিতা চিরকালই মানবতা বিরোধী ও নিকৃষ্ট চরিত্র বলিয়া বিবেচিত। আল্লাহ তা’আলা উহাকে অপছন্দ করিয়াছেন এবং মানুষকে ইহা পরিহার করিয়া চলিতে উপদেশ দিয়াছেন।

অতএব প্রথমোক্ত গুণাবলীতে মানব সমাজকে গড়িয়া তোলাই মানুষের কর্তব্য। আর অর্থনৈতিক অসমতাপূর্ণ সমাজেই এইসব মহত গুণের পূর্ণ ও স্বাভাবিক প্রকাশ সম্ভব।

একটু গভীর দৃষ্টিতে চিন্তা করিলেই লক্ষ্য করা যাইবে, এই দুনিয়ায় মানুষকে যাহা কিছু দেওয়া হইয়াছে তাহা মূলত বড় দুইটি ভাগে বিভক্ত। একটি হইল জীবন ও প্রাণ এবং দ্বিতীয়টি ধন-মাল ও অর্থসম্পদ। মানবতার উত্তম ও উন্নত এবং হীন নিকৃষ্ট গুণাবলীর দিক দিয়া মানুষের পরীক্ষা করার জন্য অর্থনৈতিক উপায়-উপকরণে অসাম্য জরুরী না সাম্য, তাহা এই প্রেক্ষিতে চিন্তা করিলেই স্পষ্ট হইয়া উঠে। জৈবিক উপায়-উপকরণও ধন-সম্পদের দিক দিয়া জীবনের অবস্থা বিভিন্ন রকম হওয়াই সমীচীন, না পার্থক্য ও অসমতাপূর্ণ, তাহাও অনুধাবনীয়।

মানব জীবনের উদ্দেশ্য নানা প্রকারের গুণাবলীর পরীক্ষা। এই দৃষ্টিতে যাহারাই বিচার-বিবেচা করিবেন, তাহারাই অর্থনৈতিক অসমতাকে মানবতার জন্য সমীচীন অবস্থা মনে করিতে বাধ্য হইবেন। আর সমতা ও পার্থক্যহীনতাকে মনে করিবেন অসমীচীন। কেননা তাহাই যদি হয়, তাহা হইলে মানুষের মানবীয় গুণাবলীর পরীক্ষা হওয়া আদৌ সম্ভব নয়। সমাজের সব মানুষই যদি সমানভাবে দরিদ্র হয় কিংবা হয় সমানভাবে সচ্ছল ও ধনশালী, তাহা হইলে যেমন মানুষের ধৈর্য সহ্যগুণের পরীক্ষা হইতে পারে না, তেমনি পাওয়া যাইতে পারে না মানুষের শোক্‌র ও নিষ্ঠার একবিন্দু পরিচয়। কৃত্রিম উপায়ে কোন সমাজের সব মানুষের আর্থিক অবস্থা সর্বোতভাবে সমান ও পার্থক্যহীন করিয়া দেওয়া হইলে মানুষের জীবন-উদ্দেশ্যই সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হইতে বাধ্য। ইহা শুধু ধরিয়া লওয়া কথা নয়। কেননা কার্যতঃ এইরূপ হওয়া মূলতই অসম্ভব। প্রথম সমাজতান্ত্রিক দেশ রাশিয়া মজুরী নির্ধারণের একটি সামান্য ক্ষেত্রেও এই সমতা বিধান সম্ভপর হয় নাই- যদিও বিপ্লবের পূর্বে ইহারই শ্লোগানে আকাশ-বাতাস মথিত করিয়া তোলা হইয়াছিল। [এখানে একটিমাত্র দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা যাইতেছে: এম. যাই. ইডন নাক জনৈক সমাজতন্ত্রিবাদী সমাজতান্ত্রিক দেশে-বিশেষ করিয়া রাশিয়া ১৯৭৩ সনে সর্বশ্রেণীর কর্মচারীর মাঝে বেতন হারে যে পার্থক্য ছিল তাহার চিত্র এইভঅবে আঁকিয়াছেন:

সাধারণ শ্রমকের মাসিক মজুরী ১১০-৩০০রুবল

মধ্যম শ্রেণীর অফিসারের মাসিক বেতন ৩০৩-১০০০ রুবল

উচ্চ শ্রেণীর অফিসারের মাসিক বেতন ১৫০০-১০,০০০ রুবল

সর্বোচ্চ পর্যায়ের মাসিক বেতন ২০,০০০-৩০,০০০ রুবল

রাশিয়ার অন্যতম নেতা মকওয়ান অকপটে স্বীকার করিয়াছেন যে, ২য় মহাযুদ্ধের পর এই পার্থক্য আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাইয়াছে।]

তাই কোন সমাজের পক্ষে সমস্ত মানুষের মধ্যে পূর্ণ অর্থনৈতিক সাম্য সংস্থাপন করিয়া মানুষের এই সার্বিক পরীক্ষা গ্রহণকে অচল করিয়া দেওয়ার সাধ্য কোন মানুষের নাই। এ পর্যায়ে ইহাই চূড়ান্ত কথা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন