hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১৬২
অর্থনৈতিক দৃষ্টিতে যাকাত
যাকাত ইসলামের বুনিয়াদী ইবাদাতসমূহের অন্যতম। ইসলামী রাষ্ট্রের প্রত্যেক মুসলিম নাগরিককে ইহার অপরিহার্যতা সম্পর্কে যেমন বিশ্বাস স্থাপন করিতে হইবে, অনুরূপভাবে ইহা সুনিয়মিতরূপে আদায় করা ও প্রত্যেক ধনশালী ব্যক্তির উপর আইনত একান্তই কর্তব্য।

এতদ্ব্যাতীত প্রথমত যাকাত ইসলামী রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মেরুদন্ড। পুঁজিবাদী সমাজের অর্থব্যবস্থায় যেমন ভিত্তি হইতেছে সুদ, এবং কমিউনিস্ট সমাজের বুনিয়াদী অর্থনীতি হইতেছে সম্পত্তির জাতীয়করণ, ইসলামী সমাজের তদনরূপ গুরুত্ব রহিয়াছে যাকাতের। কিন্তু ধর্মব্যবস্থা ও অর্থনীতি এই উভয় দিকদিয়া যাকাতের গুরুত্ব এবং উহার সর্বব্যাপকতা অনুধাবন করিতে না পারিয়া, বর্তমান সমাজের লোক ইহার প্রতি উপেক্ষা প্রদর্শন করিতেছে। এক শ্রেণীর লোক ইহাকে মধ্যযুগীয় ‘খয়রাতি ব্যবস্থা’ মনে করিয়া ইহার প্রতি ঘৃণা পোষণ করে। আর আধুনিক কালের বস্তুবাদী অর্থশাস্ত্রবিদগণ যাকাতের কল্যাণকারিতা- অন্য কথায় ইহার অর্থনৈতিক মূল্য- স্বীকার করিতে আদৌ প্রস্তুত নহেন। তাহারা মনে করেন, শতকরা আড়াই টাকা হিসাবে যাকাত আদায় করিলে শতকরা নব্বেই জন অভাবগ্রস্ত ও দারিদ্রপিষ্ট সমাজের কি-ই বা কল্যাণ যাইতে পারে এবং যুগ যুগ সঞ্চিত এই অর্থনৈতিক অসাম্য ইহা দ্বারা দূর করাই বা কিরূপে সম্ভব হইবে? যাকাত সম্পর্কে তাহাদের এইরূপ ধারণার কারণসুস্পষ্ট। ইহারা আজ পর্যন্ত যাকাত ভিত্তিক অর্থনীতি পৃথিবীর কোন অংশেই প্রত্যক্ষ করিতে পারেন নাই বলিয়া উহার বাস্তব ও ব্যবহারিক মূল্য সম্পর্কে কোনরূপ ধারণা করা তাহাদের পক্ষে সম্ভব হয় নাই। দ্বিতীয়ত, একটি নীতি হিসাবেও (Theoretically) তাহারা ইহার পর্যালোচনা, গবেষণা এবং ইহার অর্থনৈতিক মুল্য যাচাই করিয়া কখনই দেখেন নাই, বরং তাহারা ধনী লোকদের দেখিয়াছেন গরীব ভিখারীদের মধ্যে যাকাত দানের বিলাসিতা করিতে; দানের দোহাই দিয়া সম্মান, প্রতিপত্তি সুখ্যাতি লাভ করিতে। এইরূপ অবাঞ্চিত দৃশ্য কোন চিন্তাশীল ও আত্ম-মর্যাদা-বোধ-সম্পন্ন মানুষকেই যে আকৃষ্ট করিতে পারে না তাহা বলাই বাহুল্য। বস্তুত যাকাত আদায়ের এহেন অবাঞ্ছিত ও অপমানকর পদ্ধতি ইহার কল্যাণকারিতা ও অর্থনৈতিক মূল্য সম্পর্কে অন্তত বিদগ্ধ সমাজকে নিরাশ করিয়াছে। যাকাত যে একটি ‘দান’ নয়, ইহা আদায় করার বর্তমান পদ্ধতি যে ভুল ও ইসলাম বিরোধী এবং এক উন্নত নির্ভুল ও সুষ্ঠু পন্থায় যাকাত আদায় করাই যে ইসলামের নির্দেশ- এইসব কথা জানিতে পারিলে যাকাত সম্পর্কে লোকদের বর্তমান ধারা পরিবর্তিত হইবে, তাহা নিঃসন্দেহে বলা চলে।

যাকাত একদিকে ধন-সম্পদকে পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র করে। ইহা ধন-সম্পদের উপর প্রথম আল্লাহর হক এবং দ্বিতীয়ত সমাজের জনগণের হক। এক দিকে ব্যক্তির কল্যাণে ইহা ব্যয়িত হইবে। অপরদিকে জনগণের সাধারণ কল্যাণেও ইহা নিয়োজিত হইবে। ব্যক্তি সমষ্টি-প্রাসাদেরই অংশ ইট। এক ব্যক্তির কল্যাণেও সমষ্টিরই কল্যাণ সাধিত হয় এবং সামগ্রিক কল্যাণের প্রকাশ হয় স্বতন্ত্রভাবে প্রত্যেক ব্যক্তির দিকে।

মূলত যাকাত ধনীদের প্রতি আল্লাহ নির্দেশিত একটি অবশ্য পালনীয় কর্তব্য বিশেষ। ইসলামী রাষ্ট্রই তাহা অর্থশালী লোকদের নিকট হইতে সংগ্রহ করিবে (কেহ তাহা দিতে অস্বীকার করিলে রাষ্ট্র তাহার বিরুদ্ধে পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করিবে) এবং রাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনায়-ই তাহা সমাজের গরীবদের মধ্যে এক উন্নত ও বৈজ্ঞানিক পন্থায় বন্টন করা যাইবে।

যাকাত ব্যবস্থার প্রকৃত লক্ষ্য হইতেছে ইসলামী রাষ্ট্রে নাগরিকদের মৌলেক ও অপরিহার্য প্রয়োজন পূরণ করার নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা করা। অভাবব গ্রস্ত ব্যক্তি, পরিবার বা এলাকায়ই ইহা বিতরণ করা হইবে। বস্ততু জনগণের মৌলিক প্রয়োজন পূর্ণ করার স্থায়ী নিরাপত্তা দানের জন্য ইহা এক ‘বীমা’ বিশেষ এবং ইসলামী রাষ্ট্র যে উহার প্রত্যেকটি নাগরিকেরই খাওয়া, পরা, থাকা, শিক্ষা ও চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করে, তাহাও এই যাকাত-ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল।

অর্থনীতিবিদগণ অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান দৃষ্টিতে যাকাত-ব্যবস্থার যাচাই করিলে ইহার বিপুল সম্ভাবনা দেখিয়া বিস্ময়াভিভূত না হইয়া পারিবেন না। বস্তুত যাকাত ইসলামী রাষ্ট্রের সর্বাঙ্গীন ক্রম-উৎকর্ষ সাধনের ব্যাপারে কি বিরাট কার্য সম্পাদন করিতে পারে এবং কোন প্রকার ধ্বংসাত্মক বৈপ্লবিক কার্যক্রম ব্যতিরেকেই সমাজের অস্বাভাবিক অর্থনৈতিক অসাম্য দূরীভূত করিয়া এক সুষ্টু ও স্বভাবসম্মত সামঞ্জস্য বিধান করিতে সক্ষম, তাহা যাকাতের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের সাহায্যেই স্পষ্টরূপে হৃদয়ংগম করা যায়। উপরন্তু, এই বিশ্লেষণ হইতে এ কথাও প্রমাণিত হইবে যে, হযরত নবী করীম (ﷺ) যাকাতের যে হার নির্দিষ্ট করিয়া দিয়াছেন, তাহার রদবদল করার প্রয়োজন নাই।

কিন্তু এই কাজ যে কত দূরূহ, কষ্টসাধ্য ও দায়িত্বপূর্ণ তাহা অর্থশাস্ত্রবিদগণই অনুভব করিতে পারেন। এই কাজে সর্ব প্রধান বাধা এই যে, এ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরিসংখ্যান Facts and Figure বর্তমান অবস্থায় সঠিকভাবে জানিবার কোনই উপায় নাই। কাজেই এই ব্যাপারে আমাদের মত সাধারণ লোকদের আন্দাজ ও অনুমানের উপর নির্ভর করিয়া কথা বলিতে হয়। কিন্তু তবুও এই আন্দাজ-অনুমান যে একেবারেই ভিত্তিহীন নয় তাহা নিঃসন্দেহে বলা যাইতে পারে। এই কারণে ইসলামী অর্থনীতি রূপায়ণে উৎসাহী ব্যক্তিদের এদিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করা একান্তই কর্তব্য।

দেশের অর্থোৎপাদনের বিভিন্ন সূত্র ও ক্ষেত্র সম্পর্কে সর্বশেষ ও সাম্প্রতিক তথ্য ও পরিসংখ্যান খোঁ করিয়া বাহির করা আমার পক্ষে সম্ভপর হয় নাই। আমার মনে হয়, তাহা না হইলে যে এ বিষয়ে কোন আলোচনাই করা যাইতে না এমন কথাও নয়। মূলত এ আলোচনার উদ্দেশ্য হইল যাকাতের কল্যাণকর ভূমিকা সম্পর্কে একটা সুস্পষ্ট দারণা দেওয়ার চেষ্টা করা। এজন্য যে কোন দেশের যে কোন সময়ের একটা পরিসংখ্যানকে ভিত্তি করিলেও চলিতে পারে। তাই বর্তমান আলোচনাকে আমরা এভাবেই পেশ করিতে চাহিতেছি।

সতর্কতার সহিত যে তথ্য ও পরিসংখ্যান ধরা হইয়াছে, তাহার উপর ভিত্তি করিয়া এখানেউহার যাকাতের পরিমাণ বাহিত করিতে প্রয়াস পাইব। আমাদের এই অনুমান, যাকাতযোগ্য জিনিসের সঠিক পরিমাণের অন্তত; অর্ধেক হইবে বলিয়া মনে করা যায়। কিন্তু ইহা হইতেও যে পরিমাণ যাকাত সংগ্রহ করা যাইতে পারে, তাহা বাস্তবিকই বিস্ময়কর।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন