hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৭৪
নবী করীম (ﷺ) ও খুলাফায়ে রাশেদুনের আমলে জমি বন্টন নীতি
আরবদেশে যখন ইসলাম প্রতিষ্টিত হয়, তখন সেখানকার জমি জায়গার তিনটি অবস্থা ছিল। অবস্থা তিনটি নিম্নরূপ:

(১) বহু পরিমাণ জমি ছিল ব্যক্তিদের মালিকানাভুক্ত,.

(২) এমন অনেক জমিই ছিল, যাহার কেহ মালিক ছিলনা এবং

(৩) গৃহপালিত পশুর সাধারণ চারণভূমিরূপে নির্দিষ্ট ছিল অনেক জমি।

নবী করীম (ﷺ) মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর সর্ব প্রথম মৃত, পড়ো ও মালকবিহীন অনাবাদী জমি আবাদ করার উদ্দেশ্যে ঘোষণা করিলেন: ‘এই মৃত জমি যে আবাদ করিবে সে উহার মালিক হইবে।’ লোকেরা তখন সাধ্যানুসারে জমি আবাদ করিবার ও উহার মালিক হইবার জন্য চেষ্টা করিতে লাগিয়া গেল। এইভঅবে বহু লোকের মধ্যে মালিকবিহীন জমি বন্টন করা হইল। (আবূ দায়ূদ)

নবী করীম (ﷺ)-এর অন্তর্ধানের পর প্রথম পর্যায়ে পারস্য ও রোমান সাম্রাজ্যের সহিত ইসলামী রাষ্ট্রের সংঘর্ষ এবং যুদ্ধ হয়। ইহার ফলেমুসলমানরা বিজয়ী হইয়া এই দুই রাষ্ট্রের বিশাল অঞ্চল দখল করিয়া লয়। ইসলামী রাষ্ট্রের দখলকৃত এই বিশাল জমি-জায়গার কেহই মালিক ছিল না। হয় উহার মালিক যুদ্ধে নিহত হইয়াছে, না হয় উহা আসলেই কাহারও মালিকানা ভুক্ত ছিল না বরং পারস্য ও রোমান সাম্রাজ্যের সরকারায়ত্ব জমি-জায়গা ছিল এবং তাহাই ইসলামী রাষ্ট্রের হাতে আসিয়াছিল।

এই সময়ই ইসলামী রাষ্ট্রের খলীফাগণ এই সব জমি-জায়গা আবাদ ও ভোগদখল করার জন্য এমন লোকদের মধ্যে বন্টন করিলেন যাহারা উহা আবাদ করিতে ও উহাতে ফসল ফলাইতে সক্ষম বলিয়া বিবেচিত হইয়াছিল।

ইসরামী রাষ্ট্র কর্তৃক ভূমি বন্টনের ইহাই হইল মূল সূত্র। ইহা রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক সুফল দান করিয়াছিল।

এই সকল ভূমিবন্টন শরীয়াতি বিধান পুরাপুরি অনুসৃত হইয়াছে। ইসলামের ফিকাহবিদগণ পূর্বোল্লিখিত শর্তের ভিত্তিতে ভূমিবন্টনকে পুরাপুরি সমর্থন করিয়াছেন ও জায়েয বলিয়া ঘোষণা করিয়াছেন।

হযরত উমহর ফারূক (রা) গভর্ণর হযরত আবূ মুসা আশয়ারীকে লিখিয়া পাঠাইয়াছিলেন:

(আরবী)

যদি উহা জিজিয়ার জমি না হয় এবং এমন জমিও না হয় যেখানে জিজিয়ার জমির জন্য পানি প্রবাহিত হয়, তবে কেবল সেই জমিই সরকারী পর্যায়ে জনগণের মধ্যে বন্‌টন করিতে পার।

ইহা হইতেও প্রমাণিত হয় যে, কেবলমাত্র ব্যক্তি-মালিক বিহীন জমিই সরকারী পর্যায়ে বন্টন করা যাইতে পারে। আর এইরূপ জমি পূর্ণবন্টন সরকারী পর্যায়েই হইতে পারিবে। (আরবী)

কাজী আবুল হাসকান আল-মাঅদী লিখিয়াছেন:

(আরবী)

সরকারী পর্যায়ে জমি বন্টনকার্য কেবলমাত্র সেই সব জমির মধ্যেই সীমাবদ্ধ যাহা সরকারের দখলীভুক্ত রহিয়াছে এবং যাহাতে সরকারী নির্দেশ কার্যকর হইতে পারে। কিন্তু যে সব জমির নির্দিষ্ট মালিক রহিয়াছে এবং যে সব জমির দকলকার অন্যদের হইতে পৃথকহ অধিকার পাইয়াছে সে সব জমি সম্পর্কে সরকার বিনা কারণে কোন নূতন নীতি গ্রহণ করিতে পাড়ে না।

সরকারী পর্যায়ে জমি বন্টনের ইহাই মৌলিক বিধান। অতএব সাধারণভাবেও কোন সামষ্টিক কল্যাণের উদ্দেশ্য ব্যতীতই খামকেয়ালীর বশবর্তী হইয়া ভূম্যাধিকারীদের উৎখাত করিয়া দিয়া উহাকে নিজস্ব লোকগের মধ্যে অথবা অস্বাভাবিক উচ্চ মূল্যের বিনিময়ে পুনর্বন্টন করা ইসলামী অর্থনীতির দৃষ্টিতে সুস্পষ্ট জুলুম।

এই পর্য়ায়ে এ কথাও বিশেষভাবে মনে রাখিতে হইবে যে, সরকারীভাবে যে জমি জনগণের মধ্যে বন্টন করা হইবে, উহার দ্বারা কোনরূপ সামন্তবাদী বা জায়গীরদারী প্রথা রচনা করা চলিবে না, যাহার পক্ষে যত পরিমাণ জমি ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনার মধ্যে সামলানো, চাষাবাদ ও ফসল ফলানো সম্ভব হইবে বলিয়া বিবেচিত হইবে, তাহাকে ততখানি জমিই দেওয়া যাইবে। উহার অধিক পরিমাণ কাহাকেও দেওয়া যাইবে না। কাহাকেও যদি আবাদ অসাধ্য পরিমাণ জমি দেওয়া হয় যাহার ফলে বহু চাষেচ্ছু বা ভূমি-শ্রমিক বঞ্চিত থাকিয়া যাইতে পারে; কিংবা জমি-মালিক যদি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চাষাবাদ করিতে অসমর্থ হয়, তাহা হইলে সে জমি সরকারী তহবিলে ফেরত লইতে ও এই কাজে সক্ষত। উপযোগী লোকদের মধ্যে বন্টন করিতে হইবে।হযরত বিলাল ইবনুল হারেস (রা)-কে নবী করীম (ﷺ) প্রচুর জমি নিজে আবাদ করার উদ্দেশ্যে দিয়াছিলেন। হযরত উমর ফারূক (রা) খলীফা নিযুক্ত হওয়ার পর তাঁহাকে ডাকিয়া বলিলেন: রাসূলে করীম (ﷺ) আপনাকে অনেক জমি দিয়াছিলেন। তাহার পরিমাণ এত বেশী যে, আপনি নিজে তাহা চাষাবাদ করিয়া পুরামাত্রায় ব্যবস্থা করিতে পারিতেছেন না। অতঃপর বলিলেন:

(আরবী)

আপনি বিবেচনা করিয়া দেখুন। যে পরিমাণ জমি আপনি নিজে চাষাবাদ করিতে সক্ষম হইবেন, সেই পমিাণই আপনি নিজের নিকট রাখুন। আর যাহা সামলাইতে পারিবেন না কিংবা যে পরিমাণ জমির ব্যবস্থাপনা কর আপনার সাধ্যাতীতত, তাহা আমাদের (রাষ্ট্রের) নিকট ফেরত দিন, আমরা উহা অন্যান্য মুসলমানদের মধ্যে বন্টন করিয়া দিব।

হযরত বিলাল জমি ফেরত দিতে রাযী হওয়া সত্ত্বেও তাঁহার সাধ্যাতীত পরিমাণে হযরত উমর (রা) ফেরত লইলেন এবং মুসলমানদের মধ্যে পুনর্বন্টন করিলেন। [(আরবী)]

এইরূপ ভুমি বন্টনের কাজ স্বয়ং নবী করী (ﷺ) ও খুলাফায়ে রাশেদুনের আমলদারীতেও সুসম্পন্ন হইয়াছে। এইরূপ ভূমি বন্টনের পশ্চাতে দুইটি উদ্দেশ্যই নিহিত ছিল। একটি হইল ভূমিহীন লোকদিগকে চাষাবাদের মাধ্যমে জীবিকা উপার্জনের সুযোগ দিন ও তাহাদের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার প্রতিবিধান এবং দ্বিতীয় হইল সেনাবাহিনীর মধ্যে যাহারা প্রশংসামূলক কার্যক্রম সম্পাদন করিয়াছে, তাহাদের এই বিরাট কাজের পুরষ্কার দান। আর এই উভয়বিধ উদ্দেশ্যের পশ্চাতেও অনাবাদি ও অনুন্নত জমিকে আবাদ ও চাষোপযোগী বানানো ও তাহাতে ফসল ফলাইয়া জাতির সার্বিক কল্যাণ সাধন ছিল আসল লক্ষ্য।

তখন নিম্নোক্ত তিন প্রকারের জমিই বন্টন করা হইয়াছে:

(ক) যে সব জমির কেহ মালিক নাই, যদিও তাহা অনাবাদি ও পড়ো জমি।

(খ) যাহা শহর, নগর ও গ্রামবাসীর সাধারণ ও সামষ্টিক প্রয়োজনে আসে না।

(গ) যাহাতে সাধারণ মানুসের জন্য অপরিহার্য কোন ধাতু বা খনিজ পদার্থ অবস্থিত নহে।

এইরূপ জমি রাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ যাহাকে ইচ্ছা দান করিতে পারে। অবশ্য সে দানের পশ্চাতে দেশ ও দেশবাসীর সাধারণ কল্যাণিই লক্ষ্যরূপে নিহিত থাকিতে হইবে, নির্বিচারে বা অবিবেচনা সহকারে তাহা বলা চলিবে না।

ইমাম আবূ ইউসুফ লিখিয়াছেন: এই পর্যায়ে জমি- যাহা আবাদ নয়, যাহার কেহ মালিক নাই, তাহা – বন্টন না করয়া অকেজো ফেলিয়া রাখা রাষ্ট্রের পক্ষে কিছুতেই উচিত হইতে পারে না। কেননা, আবাদ করার ফলে যেমন প্রয়োজনীয় বিপুল খাদ্য ফসল লাভ করা যাইতে পারে, তেমনি সরকারের আয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাইতে পারে। এই পর্যায়ে হযরত উমর ইবনে আবদুল আজীজের একটি ফরমান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি তাঁহার গভর্ণরদের প্রতি নির্দেশ দিয়াছিলেন:

তোমাদের হাতে যেসব সরকারী জমি জায়গা রহিয়াছে তাহা অর্ধেক ফসলের বিনিময়ে পারস্পরিক চাষের নিয়ম অনুযায়ী জনগণকে চাষ করিতে দাও। ইহাতে যদি উহার চাষাবাদ না হয়, তাহা হইলে এক-তৃতীয়াংশের বিনিময়ে (তিন ভাগের এক ভাগ সরকার পাইবে এবং দুই ভঅগ পাইবে চাষী) তাহা চাষ করিতে তাও। আর এ শর্তে যদি কেহ জমি চাষ করিতে প্রস্তুত না হয়, তাহা হইলে দশ ভাগের এক ভাগ ফসল পাওয়ার বিনিময়ে চাষ করিতে দিতে পার। ইহাতেও যদি জমি চাষ না হয় তাহা হইলে কোনরূপ বিনিময় না লইয়া এমনিই চাষ করিতে দাও। এই ভাবেই কেহ চাষ করিতে না চাহিলে উহার চাষাবাদ করার জন্য বায়তুলমার হইতে অর্থ ব্যয় কর এবং কোন জমিই তোমরা বেকার থাকিতে দিবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন