hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৯৩
সাধারণ দান
‘যাকাত’ বাধ্যতা মূলকভাবে প্রত্যেক ধনশালী ব্যক্তির নিকট হইতে আদায় করা হয়। কিন্তু এই যাকাত প্রদান করিয়াই কোন ব্যক্তি জাতীয় ও সামাজি দায়িত্ব হইতে সম্পূর্ণরূপে রেহাই পাইতে পারে না। সমাজ ও জাতির জন্য আরো অর্থের প্রয়োজন হইতে পারে এবং সে প্রয়োজন পূর্ণ করার জন্য যাকাত আদায় করার পর আরো অর্থ ব্যয় করার দায়িত্ব রহিয়াছে। কুরআন মজীদে বলা হইয়াছে:

(আরবী)

তাহাদের (ধনীদের) ধনসম্পদে প্রয়োজনশীল প্রার্থী ও বঞ্চিতদের অধিকার রহিয়াছে। [আলামা বদরুদ্দীন আইনী এই আয়াতাংশের ব্যাখ্যায় লিখিয়াছেন: (আরবী)

মুসলমান মুক্তাকীদের ধনমাল, যাহাদের পরিচয় ইহার পূর্বে দেওয়া হইয়াছে।

(আরবী)

যে লোকদের নিকট চায় ও দান পাইবার জন্য প্রার্থনা জানায়।

(আরবী)

অর্থ: যে লোক বাহ্যত ধনী বলিয়া মনে হয় এবং কাহারো নিকট কিছু চায় না বিধায় দান পাওয়া হইবে বঞ্চিত থাকিয়া যায়। অথবা কিছু না কিছু উপার্জন করে বটে, কিন্তু তাহাও যথেষ্ট হয় না, তাই অসুবিধা ভোগ করে।]

যাকাত আদায় করিলেই এই অধিকার পূর্ণ হইয়া যায় না। ইহা যাকাত আদায় করার পরই বর্তিবে। তাই কুরআন মজীদে বলা হইয়াছে: (আরবী)

তাহারা জিজ্ঞাসা কর যে, তাহারা কি খরচ করিবে। বলিয়া দিন যে, তোমরা তোমাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ধন-সম্পদ সমাজ ও জাতির জন্য আল্লাহর পথে ব্যয় কর।

এই জন্যই নবী করীম (ﷺ) বলিয়াছেন:

(আরবী)

যাকাত ছাড়াও (তাহাদের ধনসম্পদে জাতির অধিকার রহিয়াছে। অতঃপর তিনি সূরা বাকারার আয়াত পড়িলেন: ‘কেবল পূর্ব-পশ্চিম দিকে মুখ করাই কোন সত্যিকার নেকা কাজ নয়। বরং আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতা, কিতাব ও নবীগণের প্রতি ঈমান আনা ও আল্লাহর ভালোবাসার বশবর্তী হইয়া নিকটাত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন, নিঃসম্বল পথিক, অভাবগ্রস্থ ও দাস লোকদের জন্য অর্থ ব্যয় করা এবং নামায পড়া ও যাকাত দেওয়াই হইল যথার্থ নেক আমল।

এই আয়াতে ঈমানের পরে পরে নিকটাত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন, নিঃসম্বল পথিক সওয়ালকারী ও দাস বা ঋণগ্রস্থের মুক্তির জন্য আল্লাহর মুহাব্বতের কারণে অর্থদান করর কথা প্রথেমে বলা হইয়অছে এবং নামায কায়েম করা ও যাকাত দেওয়ার কথা বলা হইয়াছে তাহার পর। ইহা হইতে স্পষ্ট প্রমাণিত হইতেছে যে, সম্পদশালী ব্যক্তির উপর ঈমানের পরে পরেই সাধারণ অভাবগ্রস্থদের জন্য অর্থদান করা কর্তব্য হইয়া পড়ে এবং এই অর্থ দানের দরুন যাকাত দেওয়ার কর্তব্য হইতে মুক্তি পাওয়া যাইবে না। বরং তাহার পরও যাকাত দিতে হইবে। অথবা বলা যায়, যাকাত দেওয়ার পরও লোকদের অধিকার আদায় করিতে প্রস্তুত থাকিতে হইবে।

ইহা ছাড়া সমাজের লোকদের আকষ্মিক প্রয়োজন পূর্ণ করার জন্য ‘করজে হাসানা’ দেওয়াও ইসলামেরদৃষ্টিতে মুসলমানদের একটি কর্তব্য।

এই ‘করজে হাসানা’ ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত দুই পর্যায়ের প্রয়োজনেই দিতে প্রস্তুত থাকা আবশ্যক। কেননা উভয় ক্ষেত্রেই আকস্মিক প্রয়োজন দেখা দেওয়া খুবই স্বাভাবিক। কুরআন মজীদে এই উভয় পর্যায়ে ‘করজে হাসানা’ দেওয়ার জন্য বিশেষ উৎসাহ দান করা হইয়াছে। ইরশাদ করা হইয়াছে:

(আরবী)

কোন্‌ লোক আল্লাহ তা’আলাকে ‘করজে হাসানা’ দিতে প্রস্তুত আছে? যদি কেহ তাহা দেয়, তবে আল্লাহ উহার বদলে উহার কয়েকগুণ বেশী তাহাকে দান করিবেন। বস্তুত আল্লাহ রুজী ও রোজগারের পরিমাণ কমও করেন, প্রশস্তও করিয়া দেন আর শেষ পর্যন্ত তাঁহার দিকেই তোমাদিগকে ফিরিয়া যাইতে হইবে।

হাদীসের ঘোষণানুযায়ী সাধারণ দানের তুলনায় করজে হাসানা দেওয়া অধিক সওয়াবের কাজ। ইহার কারণস্বরূপ বলা হইয়াছে:

(আরবী)

কেননা সওয়ালকারী সব সময় কিছু-না-কিছু চাহিতেই থাকে; কিন্তু যে করজ চায়, সে প্রয়োজন ছাড়া কখনো চায় না।

এই ‘করজে হাসানা’রই আর একটি দিক হইল সাধারণ দান। সমাজের সচ্ছল লোকরেদ জন্য ইহাও এক অবশ্য কর্তব্য। এইরূপ দান করিতে সমাজের অবস্থাপন্ন লোকদিগকে অবশ্য প্রস্তুত করিতে এবং থাকিতে হইবে। এ দানকে কুরআনে ‘আল্লাহর পথে দান বা ব্যয়’ বলা হইয়াছে এবং কেহ তাহা করিলে তাহা কিছু মাত্র ব্যর্থ যাইবে না বলিয়া ঘোষণা করা হইয়াছে।

কুরআন মজীদে বলা হইয়াছে:

(আরবী)

তোমরা আল্লাহর পথে দান রূপে যাহা কিছুই ব্যয় করিবে আল্লাহ তাহা তোমাদিগকেই পূর্ণ মাত্রায় ফিরাইয়অ দিবেন। এই ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কোনরূপ জুলুম করা হইবে না।

বস্তুত এই ধরনের দান বা ব্যয়ে কেবল অন্য লোকদের কল্যাণ সাধিত হয় না, কেবল সমাজেরই উপকার হয় না, নিজেদেরও পরম কল্যাণ ইহাতে নিহিত রহিয়াছে। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করিয়াছেন:

(আরবী)

তোমরা যে ধন-সম্পদই ব্যয় কর না কেন তাহা তোমাদের নিজেদেরই কল্যাণে নিয়োজিত হয়।

নবী করীম (ﷺ) এই পর্যায়ে বলিয়াছেন:

(আরবী)

হে আদম সন্তান! তুমি যদি তোমার উদ্ধৃত সম্পদ আল্লাহর ওয়াস্তে ব্যয় কর, তবে তাহা তোমার জন্য ভাল। আর যদি তাহা হইতে বিরত থাক, তবে তাহা তোমার জন্য অকল্যাণ। তোমার প্রয়োজন পূরণের জন্য কমসেকম পরিমাণ যদি রাখ, তবে সে জন্য তোমাকে তিরষ্কৃত করা হইবে না। তোমার দায়িত্বাধীন পরিবারবর্গের জন্য প্রথমেই ব্যয় করিবে। আর জানিয়া রাখ, দাতার হস্ত গ্রহীতার হস্ত হইতে উত্তম।

এ পর্যায়ে অপেক্ষাকৃত সচ্ছল লোকদের জন্য হযরত আলীর (রা) নিম্নোক্ত কথাটি বিশেষভাবে স্মরণীয়। তিনি বলিয়াছেন:

(আরবী)

নিশ্চয়ই আল্লাত তা’আলা সচ্ছল লোকদের জন্য ইহা ফরয করিয়া দিয়াছেন যে, তাহারা গরীবদের জন্য এমন পরিমাণ অর্থ ব্যয় করিবে যাহা তাহাদের ভরণ পোষণ ও জীবন ধারণের জন্য যথেষ্ট হইবে। ইহার পরও যদি তাহারা অভুক্ত থাকে, নগ্ন পায়ে চলিতে বাধ্য হয় এবং কষ্টে পড়ে, তাহা হইলে বুঝিতে হইবে যে, ধনীরা তাহাদের (গরীবদের) হক আদায় করিতেছে না বলিয়াই এইরূপ অবস্থার সৃষ্টি হইয়াছে। এইরূপ অবস্থায় কিয়ামতের দিন ধনীদের নিকট হিসাব লওয়া ও সেই অনুপাতে তাহাদিগকে শাস্তি দেওয়া আল্লাহর এক দায়িত্ব হইয়া পড়ে।

এতদ্ব্যতীত রাষ্ট্রীয় কাজ-কর্ম সুসম্পনট্ন করার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে কর, খাজনা ইত্যাদি বাবদ অনেক অর্থই ব্যয় করিতে হয়। এইভাবে এক ব্যক্তির আয় হইতে তাহার জীবদ্দশায়ই ধন-সম্পদ বিক্ষিপ্ত ও বিস্তারিত হইয়া চতুর্দিকে ছড়াইয়া পড়ে। এক স্থানে পুঞ্জিকৃত হইয়া পুঁজিবাদের সৃস্টি হওয়ার বিন্দুমাত্র অবকাশ থাকিতে পারে না। কিন্তু এতদসত্ত্বেও যাহার নিকটই যে পরিমাণ ধন-সম্পদ একত্রিত হয়, তাহার মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই তাহা নানাভাবে খন্ড-বিখন্ড ও বিভক্ত হইয়া অসংখ্য হস্তে বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়ে। ইসলামী অর্থনীতিতে ধন-সম্পত্তির এইরূপ বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়ার বিধানকে বলা হয় ‘মীরাসী আইন’।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন