hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১২০
জিজিয়া অর্থনৈতিক মূল্য
‘জিজিয়া’ সম্পর্কে যত প্রশ্নই উত্থাপিত হউক না কেন উহার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক যৌক্তিকতা এবং মূল্য অনস্বীকার্য। প্রথমতঃ রাষ্ট্র-সরকার দেশের সর্বাপেক্ষা সুসংগঠিত ও বৃহত্তর প্রতিষ্ঠান। সমগ্র দেশের রক্ষণাবেক্ষণের, জীবিকা পরিবেশন ও নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব একমাত্র এই প্রতিষ্ঠানরই উপরই অর্পিত হইয়া থাকে। অতএব ইহার আর্থিক প্রয়োজন সর্বাধিক, তীব্রতর ও অপরিহার্য।

দ্বিতীয়তঃ ইসলামী রাষ্ট্র একটি আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র হওয়ার কারণে দেশরক্ষা ও যুদ্ধসংক্রান্ত কাজের নীতিগত ও মূলগত দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় আদর্শে বিশ্বাসী (মুসলিম) নাগরিকদের উপর ন্যস্ত হয়, -তাহাতে অবিশ্বাসী লোকদের (অমুসলিমদের) উপর নহে। রাষ্ট্রের উপর কোন বহিরাক্রমণ হইলে দেশরক্ষা কাজের জন্য সর্বতোভাবে ঝাঁপাইয়া পড়া দেশের সমগ্র মুসলিমদের ধর্মীয় ফরয বিশেষ, কিন্তু অমুসলিমদের অবস্থা অনুরূপ নহে।

এই জন্য ইসলামী রাষ্ট্র তাহাদের নিকট হইতে দেশরক্ষা খাতে একটি বিশেষ কর আদায় করার নীতি অবলম্বন করিয়াছেন। এই হিসাবে এই ব্যবস্থাকে ‘সুবিচারপূর্ণ কর্মবন্টন’ বলা যাইতে পারে। কারণ, ইহার ফলে দেশরক্ষায় ব্যাপকহারে মুসলীমগণ জনশক্তি (Man Power) সরবরাহ করিবে, আর দেশের অমুসলিমগণ করিবে আর্থিক প্রয়োজন পূরণ। ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তিগত আদর্শের পরিপ্রেক্ষিতে উহার রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে এইরূপ নীতি অবলম্বন- আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্রের রক্ষণাবেক্ষণের প্রধান দায়িত্ব উক্ত আদর্শের বিশ্বাসীদের উপর ন্যস্তকরণ- এক বিজ্ঞানসম্মত ও সুবিচারমূলক ব্যবস্থা তাহা কেহই অস্বীকার করিতে পারে না। যেহেতু আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্রের রক্ষণাবেক্ষণ ও আক্রমণ-প্রতিরোধের ব্যাপারেও উক্ত আদর্শের পূল্ণ অনুসরণে অপরিহার্য এবং এই কাজ রাষ্ট্রীয় আদর্শে বিশ্বাসী লোকদের দ্বারাই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হইতে পারে। বস্তত ইসলামী রাষ্ট্রের দেশরক্ষা সংক্রান্ত কাজে ঝাঁপাইয়অ পরার মৌলিক দায়িত্ব আদর্শে বিশ্বাসীদের উপর ন্যস্ত করা এবং সে জন্য আর্থিক প্রয়োজন পূরণের প্রধান দায়িত্ব আদর্শে অবিশ্বাসীদের উপর অর্পণ করার মূলে কোন পক্ষপাতমূলক বা বৈষম্যমূলক ভূমিকা বর্তামন নাই।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য যে, এইরূপ করার নাম ‘জিজিয়া’ই রাখিতে হইবে, ইসলামী অর্থনীতিতে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নাই। অমুসলিমগণ ইচ্ছা করিলে ইহার পরিবর্তে মুসলিমদের ন্যায় যাকাত দেওয়ার প্রথাও চালু করিতে পারে। ‘জিজিয়া’ কিংবা অনুরূপ অর্থ কেবল সেসব লোকের নিকট হইতে আদায় করা হইবে, সাধারণতঃ যাহাদের যুদ্ধ করার ক্ষমতা আছে এবং সেই সঙ্গে এইরূপ অর্থদানের সামর্থ্যও রহিয়াছে। পক্ষান্তরে যাহাদের অনরূপ ক্ষমতা নাই- যেমন স্ত্রীলোক, শিশু, অক্ষম বৃদ্ধ, পাগল, অন্ধ ও পংগু লোক কিংবা যাহারা নীতিগতভাবে যুদ্ধ বিমুখ বা যুদ্ধবিরোধী যথা পাদ্রী, পুজারী, ঠাকুর, গৃহত্যাগী বৈষ্ণব, বৈরাগী প্রভৃতি- তাহাদের উপর এই ধরনের কোন কর-ই ধার্য হইবে না।

বস্তুত সকল প্রকার ধনী মুসলমানের উপরই যাকাত আদায় করা যখন ফরয তখন অমুসলিমদের উপর একমাত্র ‘জিজিয়া’ কর আদায়ের নীতি প্রয়োগে তাহাদের প্রতি কোনরূপ অবিচার করা হয় নাই, তাহা অতি সহজেই বোধগম্য হইতে পারে।

জিজিয়া যে অমুসলিমরে সর্ববিধ রক্ষণাবেক্ষণের বিনিময়ে গ্রহণ করা হয়, তাহার একটি প্রকাশ্য প্রমাণ এই যে, ইসলামী রাষ্ট্র যদি কখনো এই দায়িত্ব পালন করিতে অক্ষম হয় তবে ইহা তাহাদের নিকট হইতে মোটেই গ্রহণ করা হয় না, আর একবার গ্রহণ করা হইয়া থাকিলেও তাহা প্রত্যার্পণ করা হয়। [তারীখ-ই-তাবারী ১২ হিজরী সনের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা স্মরণীয়।]

জিজিয়ার পরিমাণ নর্ধারণের কাজ রাষ্ট্র-সরকার ও অমুসলিম সংখ্যালঘুদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন করাই সঠিক ইসলামী পন্থা। প্রত্যেক ধনশালী উপার্জনশীল ব্যক্তির আর্ধিক সামর্থ্য ও রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন- এই উভয় দিকে লক্ষ্য রাখিয়াই তাহা করিতে হইবে এবং এই ব্যাপারে দাতা ও গৃহীতা- কাহারো প্রতি বিন্দুমাত্র অবিার না হয সেদিকে উভয়কেই তীক্ষ্ণ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখিতে হইবে।

জিজিয়া সাধারণতঃ টাকায় আদায় করা হইবে। কিন্তু পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে বিশেষ কোন শিল্পপণ্যের আকারেও তাহা আদায় করা অসংগত হইবে না। নবী করীম (ﷺ) ও খুলাফায়ে রাশেদুন বিভিন্ন শিল্পোৎপাদনকারীদের নিকট হইতে জিজিয়া বাবদ শিল্পপণ্যও গ্রহণ করিয়অছেন। [আল-আহকামুস-সুলতানিয়অ, কিতাবুল আমওয়াল ও কিতাবুল খারাজ দ্রষ্টব্য। (আরবী)] ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম লিখিয়াছেন:

(আরবী)

জিজিয়ার পরিমাণ কি হইবে এবং কিসের মাধ্যমে তাহা আদায় করা হইবে, শরীয়তে তাহা পূর্ব নির্ধারিত নহে।

ইমাম আবু ইউসুফ লিখিয়াছেন: (আরবী)

জিজিয়া কেবলমাত্র সক্ষম পুরুষদের উপরই উহা ধার্য হইবে, স্ত্রী ও শিশু বালক ইত্যাদি অক্ষম ও সামর্থহীনদের উপর তাহা ধার্য হইবে না। (কিাতাবুল খারাজ , ১১২পৃঃ)

তিনি আরো লিখিয়াছেন: ‘দান গ্রহণযোগ্র গরীব-মিসকীন, আয়-উপার্জনহীন অন্ধ ও ভিক্ষাবৃত্তি-নির্ভর অমুসলিমের উপরও জিজিয়া ধার্য হইবে না। (ঐ) বলা বাহুল্য, জিজিয়া বৎসরে মাত্র একবারই আদায করা হইবে, তাহার অধিক নহে। এই ব্যাপারে নবী করীম (ﷺ)-এর নিম্নলিখিত বাণীটি চূড়ান্ত ঘোষণা হিসাবে মানিয়া লইতে হইবে:

(আরবী)

যে ব্যক্তি কোন ‘চুক্তিবদ্ধ জাকিত’ (অমুসলিম সংখ্যালঘুর ) প্রতি জুলুম করিবে কিংবা তাহাদের সামর্থ্যের অধিক কোন কাজের বোঝা তাহাদের উপর চাপাইয়া দিবে, (কিয়ামতের দিন) আমিই তাহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করিব এবং প্রতিবাদী হইব।[কিতাবুল খারাজ- আবু ইউসুফ: ৩২৫ পৃঃ) 

হযরত উমর ফারূক (রা)ইন্তিকালের পূর্ব মুহূর্তে ইহারই ভিত্তিতে বলিয়াছেন:

(আরবী)

আমার পর যিনি খলীফা পদে বরিত হইবেন তাঁহাকে আমি অসিয়ত করিতেছি, তিনি যেন রাসূলের গৃহীত দায়িত্ব পূর্ণমাত্রায় পালন-করেন, যিম্মীদের সহিত করা সব ওয়াদা যথাযথভাবে পূরণ করেন। তাহাদের পক্ষ হইতে প্রয়োজন হইলে যেন যুদ্ধ করেন এবং তাহাদের শক্তি ও সামর্থের অধিক কোন কাজের দায়িত্বযেন তাহাদের উপর চাপাইয়া না দেন। (কিতাবুল খারাজ-আবূ ইউসুফ, ১২৫ পৃঃ)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন