hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৬২
কমিউনিস্ট চীন
কমিউনিস্ট চীনে মজুর-শ্রমিকদের অবস্থা আরো মর্মান্তিক। ভারতীয় শ্রমিক নেতা ব্রজকিশোর শাস্ত্রী সরকারী আমন্ত্রণে চীন সফল করিয়া তথাকার শ্রমিকদের চরম দুর্দশা সম্পর্কে প্রত্যক্ষভাবে অর্জিত অভিজ্ঞতা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলিয়াছেন:

এখানে আমরা হাল চাষে গুরু মহিষের পরিবর্তে মেয়েলোকদিগকে লাঙ্গল টানিয়া দেকিয়াছে।….. সে দৃশ্য কতই না মর্মন্তুদ, কতই না শিক্ষাপ্রদ….. গরু-মহিষের স্তান গ্রহণ করিয়াছে নারী!

নির্মীয়মাণ একটি প্রোজেক্ট নিয়োজিত শ্রমিকদের দুর্দশা বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন:

এই প্রজেক্টের নিয়োজিত শ্রমিকদের দুর্দশা বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন:

এই প্রেজেক্টের নিকটেই অফিসারদের বসবাসের জন্য বাংলো নির্মিত হইয়াছে। এখানে প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক কাজ করে। সব রকমের কাজ পাথর ভাঙ্গা হইতে শুরু করিয়া সুরঙ্গ খোদাই কিংবা বড় বড় পাথর স্থানান্তর পর্যন্ত সব কাজই শ্রমিকদিগকে খোলা হাতে সম্পন্ন করিতে হয়। শ্রমিকরা এখানে যে সব হাতিয়অর ব্যবহার করে তাহা অতি মাত্রায় দুর্বল ও নিম্নমানের। মনে হয়, যাদুঘর হইতে এইগুলি তুলিয়অ আনা হইয়াছে।

অতঃপর তিনি বলেন, চীনের এই নিরীহ শ্রমিকদের দুর্দশা দেখিয়া আমার মনে বড়ই দুঃখ জাগিল। মানুষ যাহাই হউক মানুষ, জন্তু বা জানোয়অর নয়। কিন্তু এখানে তাহাদিগকে ঠিক জন্তুর মতই কাজ করিতে হয়। একটি দেশের উন্নরয়ের মানুষকে জন্তু-জানোয়ারের মত শ্রম করিতে বাধ্য করা শুধু জুলুমই নয়, মনুষত্যের চরম অপমানও বটে।

তিনি আরো বলেন, অধিকাংশ শ্রমিকদিগকে বহু দূরবর্তী স্থান হইতে আমদানী করা হইয়াছে এবং তাহারা ইচ্ছামত এক জায়গার কাজ ত্যাগ করিয়া অপর স্থানে শ্রমের সুযোগ গ্রহণ করিতে পারে না। তাহার অধিকারও তাহাদের নাই।

তিনি বলেন চীনা-কমিউনিস্ট পার্টি ও চেয়ারম্যান মাওসেতুং রাশিয়ার বাধ্যতামূলক শ্রমের ন্যায় পরীক্ষিত মানব-ধ্বংসকারী পন্থাকে ব্যবহার করিতেছেন।

চীনা শ্রমিকরা এইরূপ অমানুষিক শ্রম করিয়া কি পরিমাণ মজুরী লাভ করে? ইহা একটি প্রশ্ন বটে। কিন্তু জওয়াব খুবই নৈরাশ্যজনক। চীনের এইরূপ পশুবৎ খাটুনীদাতা শ্রমিকরা যে পরিমাণ মজুরী পায় তাহা বাংলাদেশ পাকিস্তান ও ভারতীয় শ্রমিকদের মজুরীর তুলনায় অনেক নিম্নমানের। একজন শ্রমিক সেখানে একহাজার হইতে পনর শত ‘ইয়ান’(Yuan) কিংবা পঞ্চাশ ইউনিট মজুরী পাইয়অ থাকে। মনে রাখা আবশ্যক, এক ‘ইয়ান’ বাংলাদেশের আধপয়সারও সমান নয়। এক ইউনিট বলিতে আট নানা কিংবা তাহার কিছু বেশী বুঝায়। আর ‘পঞ্চাশ ইউনিট’ বলিতে বাংলাদেমের ২৫-২৬ টাকার সমান হইয়া থাকে।[বাংলাদেশের শ্রমিকদের কথা না বলাই ভালো।]

‘কিন্তু এই সামান্য পরিমাণ অর্থ লইয়া যখন তাহারা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী ক্রয় করার উদ্দেশ্যে বাজারে গমন করে, তখন তাহারা আকাশ ছোঁয়া দ্রব্যমূল্যের সম্মুখীন হইতে বাধ্য হয়। এ সম্পর্কে ব্রজকিশোর শাস্ত্রী বলিয়াছেন:

‘চীনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম ভারতের তুলনায় অনেক গুণ বেশী। চাউল, কাপড়, তৈল ও লবণের মূল্য ভারতের তুলনায় শতকরা পঞ্চাশ ভাগ বেশী। অন্যান্য জিনিসের উচ্চমূল্য তো ধারণাতীত। (দিল্লী হইতে প্রকাশিত দৈনিক ‘দাওয়াত’ পত্রিকা, ৯ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৫৫ সন)। চীনে ‘সরকারী শিল্প ও কারখানায় শ্রমিকদের কর্ম বিধান’ পর্যায়ে শ্রমিকদের অধিকার ও দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে যেসব আইন প্রণয়ন করা হইয়অছে, তাহার মূল দৃষ্টিকোণ হইল:

শ্রমিকদিগদের সামষ্টির দর-কষাকষি কিংবা সংগঠন করার আজাদী ভোগের কোন অধিকার নাই। নিয়ম ও শৃংখলা মানিয়া শ্রম করিয়া যাওয়াই তাহাদের একমাত্র কর্তব্য।

বস্তুত এইরূপ দৃষ্টিকোণের ভিত্তিতে শ্রমিকদের জন্য যে বিধান রহিত হইবে ও তাহাদিগকে যেসব অধিকার দেওয়া হইবে, তাহা যে শ্রমিকদের প্রকৃতই কোন কল্যাণ সাধন করিতে পারে না, তাহা সহজেই বুঝিয়ে পারা যায়। উক্ত বিধানে মোট চব্বিশটি ধারা সংযোজিত হইয়াছে। উহার প্রথম অধ্যায়ে বলা হইয়াছে:

যেসব শ্রমিকের নিকট সরকারী রিপোর্ট নাই, তাহাদিগকে কাজে নিয়োগ করা বে-আইনী।

আর সরকারী রিপোর্টে সে কোথায় কাজ করিয়াছে, তাহার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং তাহার সম্পর্কে পুলিশের রিপোর্ট কি ইত্যাদি লিখিত থাকে।

এই বিধানের তৃতীয় ধারায় বলা হইয়াছে:

মজুরীর জন্য দর-কষাকষি করা চলিবে না। বরং প্রত্যেকটি কাজেরই মজুরী নির্ধারিত মান অনুযায়ী নির্দিষ্ট করা হইয়া থাকে।

চতুর্থ ধারায় লিখিত হইয়াছে:

কোন শ্রমিক বা আমলার কর্মচারী ম্যানেজার অথবা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তার মঞ্জুরী ব্যতীত কাজ ত্যাগ করিতে পারে না। তাহাকে স্থানান্তরে বদলীও করা যাইতে পারে না ইহা মানিয়া কাজ করা না হইলে সংগঠন ও বিধান-রীতির বিরুদ্ধতা করা হইবে।

ইহার ৫ম ধারায় বর্ণিত বাধ্যতামূলক আইনটি হইল:

কোন শ্রমিকে তাহার মর্জী না লইলে স্থানান্তরে পঠান যাইতে পারে না। কিন্তু এই বিধানের বিরুদ্ধতা করা হইলে শ্রমিক শুধু ট্রেড ইউনিয়অনের নিকট অভিযোগ করিতে পারিবে, তাহার অধিক কিছু করার তাহার অধিকার নাই।

আর ৮ম ধারায় শ্রমিকদের কর্তব্য সম্পর্কে লিখিত হইয়াছে:

শ্রমিকরা কারখানার বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সব গোপন তথ্য সংরক্ষিত করিবে। সরকারী মালের হিফাযত করিবে ও প্রত্যেক দিন নির্দিষ্ট সময় নিজ নিজ কাজ সম্পূর্ণ করিয়া লইবে।

কাজের সময় সম্পর্কে কয়েকটি ধারা সংযোজিত হইয়াছে। যেমন: কাজের সময় নির্ধারণের পূর্ণ ইখতিয়ার কেবল কারখানার ব্যবস্থাপকদেরই থাকিবে। কারখানায় প্রবেশকালে ও নির্গমনের সময় প্রত্যেক শ্রমিকের তল্লাসী লওয়া হইবে।

‘শ্রমিক রাজত্বের’ এই সব আইন ও বিধান সম্পর্কে একটু চিন্তা করিলেই বুঝিতে পারা যায়, যে সমাজে শ্রমকেই আসল কার্যকরণ (Factor) মনে করা হয়, সেখানে স্বয়ং শ্রমিকদের মানবিক অধিকার বলিতে কিছুতেই নাই। তাহারা কাজ করিবার সময় কোন কথা বলিতে পারে না। কোন সামাজিক কাজের জন্য শ্রম বন্ধ করিতে পারে না। সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য কোন সভাও করিতে পারে না। ইহার বিরুদ্থতা করা হইল অপরাধী হইবে ও বিশেষ আদালতে অভিযুক্ত হইবে। এক কথায় তাহারা সেখানে সকল প্রকার স্বাধীনতা হইতে বঞ্চিত, নিছক কয়েদী জীবন-যাপন একান্তভাবে বাধ্য।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন