hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৩৪
প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার-নীতি
উল্লিখিত দুই প্রকার উপাদানের ভোগ ও ব্যবহারিকাধিকার সম্পর্কেও ইসলামে দুইটি নীতি রহিয়াছে। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রথম প্রকার উপাদানে ভোগ-ব্যবহার করার ব্যাপারে একটি দেশের বা অঞ্চলের সকল মানুষেরই সমান অধিকার রহিয়াছে, উহার উপর বিশেষ কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির একচেটিয়া মালিকান-কর্তৃত্ব স্থাপিত হইতে পারে না। সকল নাগরিকই নিজ নিজ প্রয়োজন পূর্ণ করার জন্য মূল্য আায় করিতে কাহাকেও বাধ্য করা যাইতে পারে না।

নদী-পুকুরের পানি, বন-জংগলের কাষ্ঠ, স্বভাবজাত বৃক্ষ-গুল্মোর ফলমূল, ঘাস-তৃণলতা, আলেঅ-বাতাস, অরণ্য ও মরুভূমির উন্মুক্ত জন্তু, পাখী, জমির উপরিবাগস্থ খনিজ সম্পদ- সূর্মা-লবন, ডানবির (Napther) প্রভৃতির উপর কাহারো ব্যক্তিগত মালিকানা স্বত্ব স্বীকৃত হইতে পারে না।

এই ধরনের যাবতীয জিনিসই সকল নাগরিকের সম্মিলিত ও সর্বাধিকার সম্পন্ন সম্পদ। ইহা সকল মানুষের মিলিত ব্যাবস্থাধীন থাকিবে এবং সকলের জন্য ব্যবহৃত হইবে। সকলেই তাহা হইতে উপকৃত হইবার সমান অধিকার লাভ করিবে। হযরত নবী করীম (ﷺ) এই শ্রেণীর কয়েকটি প্রধান সামগ্রীর ভোগাধিকার সম্পর্কে ইরশাদ করিয়াছেন:

(আরবী)

সকল মানুষই পানি, ঘাস এবং আগুন-উত্তাপের ব্যবহারিধারে সমানভাবে অংশীদার।[এখানে আবিষ্কৃত গ্যাত ও তেল এই পর্যায়ে গণ্য]

রসূলে করীম (ﷺ) বলিয়াছেন: (আরবী)

প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি অপরের জমিতে যাইতে বাধা দেওয়া চলিবে না। কেননা ইহার ফলে পানিহীন জমির মালিককে তাহার জমির ঘাস ও ফসল হইতে বঞ্চিত করা হইবে।

আল্লামা খাত্তাবী একটি হাদীসের ব্যাখ্যা লিখিয়াছেন:

(আরবী)

পশুগুলি সাধারণ খাদ্য গ্রহণ হইতে উহাদের কোন মালিককে নিষেধ করা যাইবে না। কেহ মানুষের পশুগুলি বঞ্চিত করিয়া নিজেই একক মালিক হইয়া বসিবে, তাহা জায়েয নয়। এই হাদীস তাহাই প্রমাণ করে।

এতদ্ব্যতীত যেসব জিনিস নির্বিশেষে সকলের পক্ষেই প্রয়োজনীয় এবং যাহা কাহারও ব্যক্তিগত ভোগাধিকার বা ব্যক্তিগত ব্যবস্থাদীনে ছাড়িয়া দিলে সর্ব সাধারণের সমূহ অসুবিধা, কষ্ট বা অনিষ্ট হওয়অর আশংকা রহিয়াছে, অর্থাৎ তাহা সবই সার্বজনীন মালিকানা সামগ্রী হিাবে গণ্য হইবে। ইসলামী অর্থনীতিবিদগণ এ সম্পর্কে বলিয়াছেন:

(আরবী)

সীমানা নির্দিষ্ট করার পর কেহ এই সব জিনিসসের মালিক হইয়া বসিলে সে উহার ভোগাধিকার হইতে অন্য লোকদিগকে বিরত ও বঞ্চিত করিবে এবং জনগণ ভয়ানক অসুবিধা ও কষ্টের সম্মুখীন হইবে। ইহার ফলে আল্লাহ তা’আলা যে জিনিসকে যে কাজের জন্য যে মর্যাদা দিয়া সৃষ্টি করিয়াছেন, তাহা সেই মর্যাদায় বর্তমান থাকিয়া নির্দিষ্ট কাজে ব্যবহৃত হইতে পারিবে না এবং তাহাতে সাধারণ মানুষের প্রয়োজন পূর্ণ করিতে বিশেষ অসুবিধার সৃষ্টি হইবে।

খনিজ-সম্পদ, ভূপৃষ্ঠের উপরস্থ অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ-যে জন্য বিশেষ কোন পরিশ্রমের আবশ্যক হয় না, তাহাও ব্যক্তিগত মালিকানাভুক্ত হইতে পারে না।

শাহ ওয়ালীউল্লাহ দিহলভী (র) লিখিয়াছেন:

(আরবী)

যেসব জমির উপরিভাগস্থ খনিজ-সম্পদ আহরণ করায় বিশেষ কোন শ্রম বা প্রচুর পরিমাণে পুঁজি বিনিয়োগের আবশ্যক হয় না, তাহা কাহারো ব্যক্তিগত মালিকানায় ছাড়িয়া দিরে সর্ব সাধারণ মুসলমানের কষ্ট ও অসুবিধা হইবে।

অতএব, বর্তমান সময়ে সকল প্রকার খনিজ-সম্পদই এই নীতির অন্তর্ভূক্ত্ অন্যথায় জাতীয় বিপর্যস্ত হওয়া অনিবার্য হইয়া পড়িবে।

যে চারণভূমি কোন এলাকারসমস্ত পশুর জন্য নির্দিষ্ট হইবে, ধনী-গরীব, মুসলিম-অমুসলিম সকলেই পশু তাহাতে বিচরণ করিতে পারবে, উহার উপর কাহারো ব্যক্তিগত মালিকানা স্থাপিত হইতে পারে না। নবী করীম (ﷺ) বলিয়াছেন:

(আরবী)

চারণভূমি আল্লাহ্‌ এবং তাঁহার রাসূলের জন্য নির্দিষ্ট (তাহতে অপর কাহারো মালিকানার একচেটিয়া অধিকারস্বীকৃত নয়)।

আর আল্লাহ এবং তাঁহার রাসূলের প্রদত্ত ব্যবহারাধিকার সর্বসাধারণের জন্য।

মোটকথা, ইসলামী অর্থনীতি সর্বসাধারণের স্বাভাবিক প্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য দ্রব্য-সামগ্রীর উপর ব্যক্তি, শ্রেণী বা গোষ্ঠী বিশেষের ব্যক্তিগত ও একচেটিয়া মালিকানা স্থাপনের অধিকার দেয় না। অনুরূপভাবে আধুনিককালের যেসব ভারী শিল্প ও সার্বজনীন কার্য কোন ব্যক্তি বা কোম্পানীর অধিকারে ন্যস্ত করা হইলে জনসাধাণের অসুবিধার আশংকা রহিয়াছে, তাহার উপরও সার্বজনীন মালিকানা স্থাপিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। তাহা কাহারো ব্যক্তিগত বা দলগত কর্তৃত্বে ছাড়িয়ে দেওয়া অধিকার স্বয়ং রাষ্ট্রপ্রধানের নাই। নবী করীম (ﷺ) ইবরাজ ইবনে হাম্বল নামক একজন সাহাবীকে ইয়েমেনে মায়ারিক নামক শহরে একটি নির্দিষ্ট স্থান জায়গীর হিসাবে দান করিয়াছিলেন; কিন্তু পরে তিনি যখন জানিতে পারিলেন যে, এই স্থানটিতে লবণের খনি রহিয়াছে, যাহা সকল মানুষের জন্য অপরিহার্য, তখন তিনি উহা তাঁহার নিকট হইতে ফিরাইয়া লইলেন।[(আরবী)] ইহার কারণ প্রসঙ্গে বলা হইয়াছে:

(আরবী)

কেননা ঘাস, আগুন, উত্তাপ ও পানি ইত্যাদির ব্যাপারে রাসূলে করীমের নীতি হইল, উহাতে নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ সমান অধিকার সম্পন্ন। এই জন্য তিনি এই সব জিনিস সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করিয়া বিশেষ কাহাকেও নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়াকে পছন্দ করিতে পারেন নাই।[ইহা হইতে সহজেই বুঝা যায় যে, জমি বন্টনের ব্যাপারে সরকারের ভুল হইতে পারে, অনপযুক্ত বা অনধিকারী ব্যক্তি উহা পাইয়া পারে কিম্বা যাহা সাধারণ্যে বন্টনীয় নয়, তাহা বন্টন হইয়া যাইতে পারে। এইরূপ অবস্থায় ভুল ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই বন্টন প্রত্যাহার করা কর্তব্য।]

এই জন্যই ইসলামী অর্থনীতিবিদগণ সিদ্ধান্ত করিয়াছেন:

(আরবী)

যেসব জিনিস সাধারণভাবে সকল মুসলমানের (নাগরিকদের) অত্যাবশ্যকীয়- যেমন খাল, নদী বা সমুদ্র যাহা হইতে সকলেই পানিপান কর কিম্বা লবণের আকর, যাহা সমস্ত এলাকাবাসীর জন্য জরুরী, তাহা কাহারো ব্যক্তিগত মালিকানায় দান করার অধিকার রাষ্ট্রপ্রধানের নাই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন