hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১১১
খারাজ
উপরে বলা হইয়াছে, ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের মালিকানা ও ভোগাধিকৃত জমি হইতে যে রাজস্ব আদায় করিতে হয়,তাহাকেই ‘খারাজ’ বলা হয়।[‘খারাজ’ ফার্সী শব্দ, আরবী ভাষায় বলা হয়, ()- কিতাবুল আমওয়াল গ্রন্থ বলা হইয়াছে (আরবী)-“তাদের (অমুসলিমদের) ভূমির উপর ট্যাক্স ধার্য হইবে।” এই আরবী () কেহ ইংরেজীতে Task কিংবা Tax বলা হয়। কিন্তু ইসলামী বিশ্বকোষে বলা হইয়াছে- ‘এই শব্দটি মূল আরবী ভাষায় Choregia শব্দ হইতে গৃহীত। ইহার অর্থ রাজস্ব।]

‘খারাজের’ পরিমাণ নির্ধারণ করা ইসলামী রাষ্ট্রের কর্তব্য। ইসলামী রাষ্ট্রকে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা বিশেষ সতর্কতার সহিত জরিপ ও গুণাগুণ নির্ণয় করাইয়অ-ই এই কাজ সম্পন্ন করিতে হইবে। হযরত উমর ফারূক (রা) ইরাক, সিরিয়া ও মিসরের বিশাল বিস্তৃত উর্বর ও শস্য-শ্যামল ভূমি বিজয়ী মুজাহিদদের মধ্যে বন্টন না করিয়া উহার উপর মুসলমানদরে রাষ্ট্রীয় ও সামষ্টিক মালিকানা স্থাপিত করিয়াছিলেন। উহার চাষাবাদ করা সম্পর্কে তথাকার প্রাচীন কৃষকদের সহিত বন্দোবস্ত করিয়াছিলেন এবং উহার ‘খারাজ’ নির্দিষ্ট করিয়াছিলেন। কিন্তু খারাজ নির্দারণের পূর্বেই তিনি উসমান বিন হানীফ (রা)-কে এই সকল জমির জরিপ সংক্রান্ত যাবতীয জরুরী কার্য সম্পন্ন করার জন্য প্রেরণ করিয়াছিলেন। কেননা উসমান ভূমি রাজস্ব- বিশেষতঃ খারাজ ধার্য করণ সম্পর্কে- বিশেষ পারদর্শী ছিলেন।

ফলে তিনি দীবাজ কাপড় পরিমাপ করার ন্যায় এই সকল জমির জরিপ করিয়াছিলেন।

অমুসলিমদের জমি হইতে খারাজ হিসাবে যে রাজস্ব আদায় হইবে, তাহা রাষ্ট্রের সামগ্রিক অর্থ-ভাণ্ডপারে-বায়তুলমালে- জমা হইবে এবং দেশের সার্বিক প্রয়োজন পূরণ ও সার্বজনীন কল্যাণ ও উৎকর্ষ সাধনের কাজে ব্যয় করা হইবে। প্রসিদ্ধ ইসলামী অর্থনৈতিক গ্রন্থ ‘কিতাবুল খারাজে’ বলা হইয়াছে:

‘খারাজ’ সমগ্র মুসলমানের- ইসলামী রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সম্মিলিত সম্পদ।’

প্রথমতঃ খারাজ নির্ধারণের ব্যাপারে জমির গুণাগুণ, উর্বতরতার পার্থক্য, প্রয়োজনীয় চাষের পরিমাণ পার্থক্য, পানি সেচের আবশ্রকতা ও অনাবশ্যকতার পার্থক্যের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখিতে হইবে, যেন জমির প্রকৃত গুণ অনুপাতেই রাজস্ব ধার্য হইতে পারে। অন্যথায় ভূমি মালিকের উপর অবিচার হওয়ার সম্ভাবনা রহিয়াছে। আবার প্রকৃত পরিমাণ অপেক্ষা রাজস্ব কম ধার্য হইলে তাহাতে সমষ্টির অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়া নিশ্চিত।

খারাজ এবং ওশরের মধ্যে যে পার্থক্য রহিয়াছে, সে সম্পর্কে সংক্ষেপে ইহাই বলা হয় যে, খারাজ জমি হইতে আদায় করা এবং ওশর আদায় করা হয় জমির উৎপন্ন ফসল হইতে। একাধিক সহোদর ভাইয়ের কোন ‘এজমালি’ জমি থাকিলে এবং তাহাতে সকলে নয়- কেহ কেহ ইসলামে দীক্ষিত হইলে- তখন ভূমি-রাজস্বও অনুরূপভাবে আদায় করিতে হইবে। অর্থাৎ মুসলমানের অংশ হইতে ওশর এবং অমুসলিমের অংশ হইতে খারাজ আদায় করিতে হইবে।

মুসলমানদের জমি হইতে ‘ওশর’ এবং অমুসলিমদের জমি হইতে ‘খারাজ’ আদায় করার ব্যাপারে কোনরূপ জোর-জুলুম, অবিচার কিংবা হিংসা-বিদ্বেষের প্রশ্রয় দেওয়া যাইতে পারে না। ইসলামী রাষ্ট্রে মুসলিম নাগরিকগণই প্রকৃতপক্ষে সকল প্রকার সার্বজনীন দায়িত্বের ভারপ্রাপ্ত হইয়া থাকে এবং সে জন্য তাহাদিগকে অন্যান্য দায়িত্ব ছাড়া রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন পরিপূরণের উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমাণে- অমুসলিমদের অপেক্ষাও অনেক বেশী- অর্থ দানের দায়িত্ব পালন করিতে হয়। কাজেই জমির রাজস্বের দিক দিয়া সামান্য পার্থক্র হইলেও মোটামুটি মুসলমানকেই অধিক পরিমাণে অর্থ দান করিতে হয়।

দ্বিতীয়তঃ ‘ওশর’ কখনই এবং কোন অবস্থায়ই রহিত হইতে পারে না। উহার পরিমাণ চির-নির্দিষ্ট-হ্রাস-বৃদ্ধির বিন্দুমাত্র অবকাশও তাহাতে নাই। এমনকি স্বয়ং রাষ্ট্রপ্রধান তাহা হইতে কাহাকেও নিষ্কৃতি দিতে পারেন না। কিন্তু প্রয়োজন হইলে উপযুক্ত কারণ থাকিলে- খারাজের পরিমাণ হ্রাস-বৃদ্ধি করা, এমনকি অবস্থা বিশেষে সম্পূর্ণরূপে ক্ষমা করিয়া দেওয়ারও রাষ্ট্রপ্রধানর পূর্ণ অধিকার রহিয়াছে।

তৃতীয়তঃ খারাজ বৎসরে একবার আদায় করা হয়, কিন্তু ওশর আদায় করা হয় প্রত্যেকটি ফসল হইতেই। বৎসরের মধ্যে যত প্রকারের ফসল যতবার ফলিবে, তত প্রকার ফসলের উপর ততবার ‘ওশর’ ফরয হইবে।

মুসলমানদের জমি হইতে যে ‘ওশর’ গ্রহণ করা হইবে; তাহা নিশ্চিতরূপে ফসল হইতে গ্রহণ করা হইবে। কিন্তু অমুসলিমদের নিকট হইতে রাজস্ব বাবদ যে খারাজ আদায় করা হইবে, তাহা ফসল কিংবা নগদ টাকা উভয়রূপেই আদায় করা হইদে পারে। খারাজ কিসে আদায় করা হইবে, তাহা নির্ধারণ করা ইসলমী রাষ্ট্রের কর্তব্র; যেমন কর্তব্য উহার পরিমাণ করা।

কিন্তু এ সম্পর্কে একটি সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করা এখানে বিশেষ প্রয়োজন রহিয়াছে। খারাজ বা ভূমিরাজস্ব ফসলে আদায় করিলে কৃষক বা ভূমি মালিকের পক্ষে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা লাভ করা সম্ভব। কারণ তাহাতে ফসলের নির্দিষ্ট অংশ। কাজেই ফসল কম হউক বেশী হউক উহা হইতে ফসলের নির্দিষ্ট পরিমাণ আদায় করায় কৃষক বা ভূমি-মালিক বিশেষ কোন অসুবিধার সম্মুখীন হইতে হইবে না। কিন্তু খাজনা নগদ টাকায দিতে হয় বলিয়া তাহাতে কৃষক ও ভূমি-মালিকের বিশেষ অসুবিধা হওয়ার আশংকা রহিয়াছে। এই জন্য যে, কৃষক ও ভূমি-মালিককে রাজস্ব বাবদ দেয় টাকা জমির উৎপন্ন ফসল বিক্রয় করিয়াই সংগ্রহ করিতে হইবে। এমতাবস্থায় ফসল কম হইলে কিংবা শস্যের মূল্য হ্রাস পাইলে খাজনা বাবদ দেয় টাকা সংগ্রহ করা কঠিন ব্যাপর হইয়া দাঁড়াইবে। অতএব খারাজ আদায় কিসে করা হইবে, তাহা নির্মাণ করার পূর্বে এই দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখা একান্ত আবশ্যক।

খারাজ আদায় করার ব্যাপারে খারাজ-দাতার প্রতি সহৃদয়তা প্রদর্শনের জন্য ইসলামের স্পষ্ট নির্দেশ রহিয়াছে। হযরত উমর ফারূক (রা) এক ঘোষণায় বলিয়াছিলেন, ‘সরকারী কর্মচারীদিগকে জনগণের উপর জোর-জুলুম, অত্যাচার-নিষ্পেষণ চালাইবার জন্য কিংবা খাজনা ও বিবিধ প্রকার কর বাবদ তাহাদের যাবতীয় ধন-সম্পদ লুটিয়া লইবার জন্য কখনই প্রেরণ করা হয় না, তাহাদের প্রেরণ করা হয় দ্বীন-ইসলামের শিক্ষা প্রচারের জন্য- জনগণের জীবনকে সকল দিক দিয়া সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ করিয়া তুলিবার জন্য। ইসলামের পতনযুগেও যে এই দিকে যথেষ্ট লক্ষ্য আরোপ করা হইত, ইতিহাস হইতে তাহার সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলে। হাজ্জাজ বিন্‌ ইউসুফ তাঁহার শাসন-এলাকায় রাজস্বের পরিমাণ বৃদ্ধি করিবার জন্য তদানীন্তন বাদশাহ আবদুল মালিক বিন মারওয়ানের নিকট অনুমতি চাহিয়াছিলেন। উত্তরে বাদশাহ বলিয়াছিলেন: “সাধারণভাবে যাহা পাওয়া যায়, তাহাকেই যথেষ্ট মনে কর, যাহা সহজলভ্য নয়- যাহা লইতে জোর-জবরদস্তি করিতে হয়- তাহার লালসা করিও না। চাষী ও ভূমি মালিকদের জন্যও এমন পরিমাণ সম্পদ থাকিতে দাও যাহা দ্বারা তাহারা স্বচ্ছন্দে জীবন-যাপন করিতে সমর্থ হইবে।”

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্র যে, বাসগৃহ যে জমির উপর থাকিবে, উহার মালিক গরীব হইলে উহার খাজনা আদায় করা যাইবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন