hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

১৪৫
আধুনিক ব্যাংক-ব্যবস্থার মারাত্মক দোষ
পূর্বেই বলিয়াছি, প্রথম বর্তমান যুগে সুসভ্য মানব-সমাজের জন্য ব্যাংক যেন একটি অত্যাবশ্যকীয় ব্যবস্থা তাহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। অনেক বড় বড় অর্থনৈতিক কাজই এমন রহিয়াছে, যাহা একমাত্র ব্যাংকের সাহায্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব। আর ব্যাংক না হইলে তাহা সম্পন্ন করা অত্যন্ত কঠিন হইয়া পড়ে। ব্যাংকের সাহায্যে অনেক ‘এজেন্সী সার্ভিস’ও সুসম্পন্ন হইয়া থাকে। সমাজের অসংখ্য লোকের হাতে কম ও বেশী পরিমাণের যে পুজি বিক্ষিপ্ত হইয়া রহিয়াছে, তাহা এই ব্যাংকের মারফতেই একটি স্থানে কেন্দ্রীভূত হইয়া সামষ্টিক কল্যাণমূলক কাজে বিনিয়োগ হইতে পারে। কিন্তু বলিয়াছি, এই সব অসংখ্য কল্যাণকর কাজ সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে ইহাই মানবতার মারাত্মক ক্ষতি করিতেছে শুধু সুদ প্রথার কারণে। [অর্থনীতিবিদ বিশারদ লর্ড কীনস এর মত প্রকাশ করিয়াছেন যে, অর্থ বন্টনের অসমতা এবং পরিপূর্ণ কর্ম বিনিয়োগ (Full employment) পথেরবাধার মূল কারণ হইতেছে এই সুদ প্রথা। কেননা ইহার দরুন মূলধন সংগ্রহ ও বিনিয়োগ সীমিত হইয়া পড়ে। এই কারণে সুদের হার কমসেকম করা অবশ্যক। বরং প্রয়োজন অনুযায়ী মূলধন সংগ্রহ ব্যবস্থা সুষ্ঠু হইলে সুদ সম্পূর্ণ রূপে খতম করা খুবই সম্ভব। (The general theory of employment, interest and money)]

দ্বিতীয়ত, ব্যাংকের মারফতে অসংখ্য হাতে বিক্ষিপ্ত পুঁজি এককেন্দ্রিক হইয়া তাহা মুষ্টিমেয় কয়েকজন পুঁজিপতির একচেটিয়া কর্তৃত্বাধীন হইয়া পড়ে। ফলে সৃষ্টি হয় একচেটিয়া পুঁজিবাদ। ব্যাংক পরিচালকরা এই পুঁজি জাতীয স্বার্থের বিপরীত কাজে- দেশবাসীর নিকট অবশিষ্ট ধন-সম্পদ নিঃশেষে লুটিয়া লইবার জন্য- ব্যবহার করে।সুদ-ভিত্তিক ব্যাংক ব্যাবস্থা যে সমাজে স্থাপিত হয়,তথায় মুষ্টিমেয় পুঁজিপতিদের সর্বগ্রাসী কর্তৃত্ব স্থাপিত না হইয়া পারে না। কারণ, পুঁজিবাদি সমাজে রাষ্ট্রীয় কর্তত্ব ও ক্ষমতা পুঁজির হাতেই কুক্ষিগত হয়। আর মুষ্টিমেয় ধনিকরাই হয় সেখানে সকল পুঁজির একচ্ছত্র মালিক।

এই ব্যাংক অসংখ্য লোক টাকা জমা দেয় এ কথা ঠিক; কিন্তু জমা দেওয়া পর এই টাকার সহিত প্রত্যক্ষভাবে তাহাদের কোন যোগাযোগ বা সম্পর্ক থাকিতে পারেনা। তাহাদের দেওয়া মূলধন কোন ধরনের কাজে বিনিয়োগকৃত হইতেছে বা হইয়াছে,তাহা দ্বারা সমষ্টিগতভাবে দেশের কল্যাণ করা হইতেছে, কি অকল্যাণ সে সম্পর্কে তাহাদের কিছুই বলিবার থাকে না। প্রতিশ্রুতি হারে প্রতি বৎসর সুদ আদায় করিয়া তাহারা সন্তুষ্ট। ফলে তাহাদের মূলধন প্রতিষ্ঠিত শিল্প-কারখানা কিংবা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাহাদের একবিন্দু কৌতুহল বা দরদ থাকিবার কথা নয়। উহার লাভ লোকসান, উন্নতি-অবনতি কিংবা ভাল-মন্দের সহিত তাহাদের কোন নিকট সম্পর্ক আছে বলিয়া তাহারা মনে করে না। কেননা তাহতে প্রচুর পরিমাণ লাভ হইলেও তাহাদের অধিক হারে সুদ লাভের সম্ভাবনা নাই। কারণ নির্দিষ্ট হারের সুদই তাহাদের চূড়ান্ত মুনাফা। পক্ষান্তরে তাহাদের বিরাট কোন ক্ষতি হইলেও তাহাদের কিছুই আসিয়া যায় না, যেহেতু তাহাদের নির্দিষ্ট সুদ সম্পর্কে পূর্বেই পূর্ণ নিরাপত্তা দান করা হইয়াছে। বস্তুত যে সমাজে ব্যষ্টির কল্যাণে সামগ্রিক কল্যাণ হয় বলিয়া মনে হয় না, কিংবা সমষ্টির বিপর্যয়ে ব্যষ্টিরও বিপর্যয় সংঘটিত হয় না, সে সমাজ কখনই মানুষের উপযোগী সমাজ হইতে পারে না। এহেন পরিস্থিতিতে জাতীয় অর্থনীতির উন্নতি ব্যাহত না হইয়া পারে না। এইরূপ মনোভাব জাতীয় শক্তি বিলুপ্ত হয় এবংয় সমাজের টাকা দ্বারাই সমাজের লোকদিগকে স্পর্ধার সহিত শোষণ করা হয়।

বর্তমান ব্যাংক-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আর একটি অভিযোগ এই যে, ইহারফলে পণ্যদ্রব্যের মূল্য অত্যধিক ঊর্ধ্বগতি ধারণ করে। পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ফলেমানুষ অনক অলাভজনক কাজে মূলধন বিনিয়োগের উৎসাহ পায়। শৈল্পিক কারবারে উন্নতি পরিলক্ষিত হইলে ব্যাংক দুই হাতে ঋণ দিতে শুরু করে, নানাবিধ শিল্পোৎপাদনের কাজে অধিক সাহায্য দান করে। ঋণের চাহিদা বৃদ্ধি পাইলে ব্যাংকও সুদের হার অত্যন্ত চড়া করিয়া দেয়। কারণ, পণ্য মূল্যবৃদ্ধির সময় অধিক পরিমাণ সুদ পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। ব্যবসায়িক উন্নতির আশায় শিল্পতি ও কারখানা মালিকগণ সুদের চড়া হারেও ঋণ লইতে প্রস্তুত হয়। ব্যাংক যখন অধিক ঋণ ইস্যু করিয়াছে বলিয়া মনে করে, তখন তাহা ফিরাইয়া লইতে চেষ্টা করে। ফলে বিলিকৃত ঋণ ফিরাইয়া লওয়া হয় এবং নূতন করিয়া আর ঋণ দেওয়া হয় না। শিল্পের আর্থিক বুনিয়াদ যতই দৃঢ় এবংউহার যতই সুনাম হউক না কন, সহসা ঋণ শোধ করা সকলের পক্ষে সহজ হয় না। তখন মূলধন স্বল্পায়তন ও হ্রাস করার একটা Depression ধারা চলিতে থাকে। ছাঁটাই ও উৎপাদন পরিমাণ হ্রাস করার ফলে বেকর সমস্যা মাতাচাড়া দিয়া উঠে এবং ব্যবসায়-বাণিজ্যে নিদারুণ মন্দ দেখা দেয়।

বস্তত ব্যাংকের নিকট শিল্পের স্বার্থ অপেক্ষা নিজের লাভ-লোকসানের স্বার্থটাই অধিক বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মুল শিল্পে ব্যাংকের কোনই অংশ নাই, ব্যাংক ঋণদাতা মাত্র। কাজেই শিল্পের উন্নতি-অবনতির ব্যাপারে উহার কিছুমাত্র আগ্রহ বা কৌতুহল থাকার কথা নয়। আধুনিক ব্যাংক ব্যবস্থার এই মূলীভূত দোষ বর্তমানে খুব তীব্রভাবে অনুভূত হইতেছে।

এইজন্য শিল্প-ব্যবসায়ে অগ্রসর ও উন্নত দেশসমূহ শিল্প ও ব্যবসায়ের পারস্পরিক নিবিড় যোগাযোগ ও নিকট সম্পর্কের উপর খুব বেশী গুরুত্ব আরোপ করা হইতেছে। কারণ, তাহা না হইলে শিল্পের উন্নতি সম্ভব নয়। অথচ বর্তমানকালে সুদভিত্তিক ঋণদান ব্যবস্থায় ব্যাংকের সহিত উক্তরূপ সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব হইতে পারে না। অবশ্য ব্যাংক যেখানে কেবল ঋণ দানেরই কাজ করিবে না; বরং উহার মূল ব্যাবসায়ের অংশীদারও হইবে, একমাত্রও সেখানেই এবং এইভাবেই ব্যবসায়ের সহিত ব্যাংকের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব হইতে পারে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন