hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

২০৪
জনসংখ্যা সমস্যা ও ইসলাম
এই আলোচনার শেষ ভাগে বিষয়টি সম্পর্কে ইসলামী নীতি পেশ করা একান্ত আবশ্যক। পৃথিবীতে শান্তি শৃংখলা স্থাপন এবং মানব সমাজের সুস্ঠু পরিচালনার জন্য আল্লাহ তা’আলা স্বাভাবিকভাবে দুইটি প্রধান জিনিসের ব্যবস্থা এইজন্য করিয়াছেন যে, জীবিত লোকদিগকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাঁচইয়া রাখা এবং তাহাদের মধ্যে কর্মক্ষমতা সঞ্চার করা ইহা ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে সম্ভব নয়। এইজন্য বিশ্বস্রষ্টা মানুষকে কেবল খাদ্য দান করিয়া ক্ষান্ত হন নাই, খাদ্য গ্রহণ করার স্বাভাবিক আগ্রহ ও প্রয়োজনবোধও তাহাদের মধ্যে সঞ্চারিত করিয়াছেন। অন্যথায় কোন সৃষ্টজীবের পক্ষেই জীবন রক্ষা করা সম্ভব হইত না। কিন্তু বিশ্বস্রষ্টার নিকট ‘ব্যক্তি’র জীবন অপেক্ষা ‘জাতি’র জীবন (জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিতে) অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ‘ব্যক্তি’র জন্য জীবনে আয়া খুবই সীমাবদ্ধ, আর ‘জাতি’র জীবন অনন্ত। কাজেই এই সমাজ পরিচালনার জন্য ব্যক্তির মৃত্যুর পূর্বেই তাহার স্থলাভিষক্ত অন্য ব্যক্তির প্রস্তুত হওয়া একান্ত অপরিহার্য। এই উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য বিশ্বপ্রকৃতিতে ‘বংশ’ বৃদ্ধির স্বাভাবিত ব্যবস্থা করা হইয়াছে এবং প্রাণীর মধ্যে প্রজনন ক্ষমতা দান করা হইয়াছে। বস্তুত বিশ্বস্রষ্টান এই মহান উদ্দেশ্য যাহাতে সঠিকরূপে কার্যকর হইতে পারে, ইসলম তাহারই অনুকূল নীতি পেশ করিয়াছে।

প্রথম ব্যবস্থা সম্পর্কে ইসলামের ঘোষণা এই :

(আরবী)

‘পৃথিবীর প্রত্যেকটি প্রাণীর খাদ্য প্রয়োজন পূর্ণ করার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব আলআহর’[আল্লাহ যে অনেক অনেক বেশী মানুষকে জীবকে খাদ্য দিয়া বাঁচাইতে পারেন এবং তাহা আল্লাহর পক্ষে কিছুমাত্র কঠিন নয়- তাহাতে যে আল্লাহর খাদ্য ভান্ডারে কোন অভাব পড়িবে না, তাহাতে এক বিন্দু সন্দেহ থাকিতে পরে না নবী করীম (ﷺ) আল্লাহর কথা বর্ণনা করিয়াছেন এই ভাষায়:

(আারবী)

হে আমার বান্দাগণ, তোমাদের প্রথমকার ও পরবর্তীকালের লোকেরা তোমাদের সমস্ত মানুষ ও জ্বীন যদি একটি কাষ্ঠের উপা দাঁড়াইয়া আমার নিকট প্রার্থনা করে এবং আমি প্রত্যেকের প্রার্থনানুযায়ী দান করি, তাহা হইলেও আমার নিকট রক্ষিত সম্পদ হ্রাসপ্রাপ্ত হইবে না- হইবে শুধু এতটুকু পরিমাণ, যতটুকু পরিমাণ সমুদ্রে সূঁচ ডুবাইয়া উঠাইলে হয়।’]।

এবং এইরূপ ব্যবস্থা বর্তমান থাকায় মানব বংশ ধ্বংস করার নীতি ও মনোবৃত্তির তীব্র প্রতিবাদ করিয়া কুরআন মজীদে বলা হইয়াছে:

(আারবী)

‘তোমরা তোমাদের সন্তানদিগকে দারিদ্র ও অন্নভাবের ভয়ে হত্যা বা ধ্বংস করিও না। কারণ তাহাদের-এবং তোমাদের- প্রয়োজনীয় ‘রিযিক’ আমিই দান করিয়া থাকি। কাজেই মানব বংশ ধ্বংস করার নীতি মারাত্মক ভুল ও মহা অপরাধ, সন্দেহ নাই।

বস্তুত যাহারাই বংশ বৃদ্ধির পথ বন্ধ করিতে চেষ্টা করয়াছে, তাহারা বিভিন্ন দিক দিয়া মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়া পড়িয়াছে। তাহরা একদিকে খাদ্যোৎপাদনকারী যুবশক্তি নির্মল করিয়াছে, অন্যদিকে খাদ্যোৎপাদনে অক্ষম লোকদের সংখ্যা বৃদ্ধি করিয়া সমাজকে একেবারে অচল করিয়া দিয়াছে। বৃদ্ধ, পংগু,অক্ষম ও অকর্মণ্য লোকদের সংখ্যা বৃদ্ধি করিয়া সমাজকে এক কঠিন সমস্যার সম্মুখীন করিয়া দিয়াছে। অর্থনীতির দৃষ্টিতে ইহা এক ভয়াবহ পরিস্থিতি, সন্দেহ নাই।

কুরআন মজীদের নিম্নলিখিত আয়াতে ঠিক এই কথাই বলা হইয়াছে:

(আারবী)

যাহারা নিজেদের সন্তান-সন্ততিকে অজ্ঞতা ও নির্বুদ্ধিতার কারণে হত্যা করিবে এবং আল্লাহ-প্রদত্ত অবদানকে আল্লাহ-সম্পর্কে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করিয়া নিজেদের উপর হারাম করিয়া লইবে, তাহারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইবে। তাহারা পথভ্রষ্ট হইয়াছে এবং তাহারা হেদায়েত প্রাপ্ত হইবে না।

বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমেও বিশ্বমানবের সম্মুখে আজ এই সত্য তত্ত্ব উৎঘাটিত হইয়াছে যে, জন্মনিয়ন্ত্রণ- জনসংখ্যাবৃদ্ধির পথ রুদ্ধ করা- অর্থনীতির দৃষ্টিতে মারাত্মক ভুল।আর জনসংখ্যা হ্রাস করা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের (Economical Depression) মূল কারণ সমূহের মধ্যে অন্যতম। যেহেতু মানুষের জন্মহার হ্রাস পাইলে উৎপাদন ও উপার্জনক্ষম লোকদের (Producing population) সংখ্যা ব্যয়কারী লোকদের (Consuming population) অপেক্ষা অনেক কম হইয়া পড়িবে। ইহার অনিবার্য পরিণতিতে জনসমাজে বেকার সমস্যা দেখা দিবে। ফলে সমষ্টিগতভাবে ব্যয়কারী লোকদের সংখ্যাও অত্যধিক কম হইয়া পড়িবে, উৎপন্ন পণ্যক্রয়কারী লোকদের সংখ্যাও হ্রাস পাইবে; মজুর-শ্রমিকগণ কাজ কাম পাইবে। ইহার অনিবার্য পরিণামে মানব জাতির অগ্রগতি মারাত্মকরূপে ব্যহত হইবে। জার্মানী ও ইটালীর অর্থনীতিবিদগণ এই জন্যই জনসংখ্যা বৃদ্ধির উপর খুব বেশী গুরুত্ব আরোপ করিয়াছেন।

ইসলামী অর্থনীতি প্রথমত একদিকে পুঁজিবাদের মূলোৎপাটন করিয়াছে, সুদকে চিরতরে হারাম করিয়াছে, সাধাণভাবে একচেটিয়া ব্যবসায় ও নিরংকুশ ইজারাদারী নিষিদ্ধ করিয়াছে, জুয়া, প্রতারণামূলক ব্যবসায় ও ধন সম্পদ বিনা কাজে আটক করিয়া রাখাকে কঠিন পাপ বলিয়া ঘোষণা করিয়াছে। অন্যদিকে যাকাত ও মীরাসী আইন জারী করিয়া অর্থনৈতিক অসাম্য ও সম্পদ সম্পত্তির একস্থানে পুঞ্জীভূত হইয়া যাওয়ার সকল পথ স্থায়ীভাবে বন্ধ করিয়া দিয়াছে। কাজেই জনসংখ্যাবৃদ্ধির ধুয়া তুলিয়া ইসলামী সমাজে জন্মনিয়নস্ত্রণ বা ভ্রুণ হত্যার প্রচলন করা কিছুতেই সম্ভব নয়। বরং সত্য কথা এই যে, ইসলামী সমাজে যাহারাই এই কাজ করিতে উদ্যত হইবে, তাহারা ফৌজদারী আইনে অভিযুক্ত হইবে। ইসলমী সমাজে জনসংখ্যা বৃদ্ধি কোন দিনই কোন সমস্যা হইয়া দাঁড়াইবে না, ইসলামী রাষ্ট্র এই বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যাকে উৎপাদনকারী শক্তি হিসাবে প্রয়োগ করিয়া বিশ্বস্রষ্টার অফূরন্ত ধনভান্ডার-এই বিশ্বপ্রকৃতিকে ‘জয়’ করিবে। বস্তুত ধনসম্প ও খাদ্য-পণ্য উৎপাদনের যত উপায় ও উপকরণই দুনিয়ায় রহিয়াছে, তাহার সবগুলিকেই মানুষের বুনিয়াদী প্রয়োজন পূর্ণ করার কাজে ব্যবহার করা ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম কর্তব্য। ইহার ফলে ধন ও খাদ্যোৎপাদনের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাইবে, উৎপন্ন খাদ্যপণ্য কোনক্রমেই অপচয় বা নষ্ট করা হইবে না বলিয়া জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রকৃত হার কোনদিনই খাদ্যাভাব ঘটাইবার কারণ হইবে না। দ্বিতীয়ত ধনসম্পত্তি ও খাদ্যপণ্যের সুবিচারপূর্ণ বন্টন করা হইবে বলিয়া তথায় কেহ কাহারো উপর জুলুম বা শোষণ করিবে না বরং বিশ্বস্রষ্টার বিধান-অনুযায়ী তাঁহার প্রকৃত উদ্দেশ্য পূর্ণ করাই হইবে ইসলামী অর্থনীতির মুল লক্ষ্য।

সবচেয়ে বড় কথা এই যে, ইসলামী অর্থনীতি কার্যকর ও বাস্তব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হইবে যে, রাষ্ট্রব্যবস্তার মারফতে, সেই রাষ্ট্রব্যবস্থা দেশ ও রাজ্যের প্রত্যেকটি মানুষ- তথা প্রত্যেকটি প্রাণীর অপরিহার্য জৈবিক প্রয়োজন পূর্ণ করার দায়িত্ব গ্রহণ করিবে। এই জন্য ইসলামী রাষ্ট্র জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনুসারে প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য উৎপাদনের পরিমাণও বৃদ্ধি করিতে থাকিবে। খাদ্যপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি না করিয়া মানুষের বংশ ধ্বংস করিবার ব্যবস্থা গ্রহণ করা দিকে উহার কোন প্রবণতাই থাকিবে না।

বস্তুত যে রাষ্ট্র-ব্যবস্থা মানুষের বংশ ধ্বংস করিবার জন্য উদ্যোগী হয়, ক্রমবর্ধিষ্ণু মানুষের জন্য খাদ্যোৎপাদনর ব্যবস্থা করে না, সে রাষ্ট্রব্যবস্থা মানবতার দুশমন, বিশ্বস্রষ্টার মূল উদ্দেশ্যের পরিপন্থী এবং অস্বাভাবিক। এইরূপ রাষ্ট্রব্যবস্থাও অস্বাভাবিক অর্থনীতিকে নির্মূল করার জন্যই ইসলামের চিরন্তন লড়াই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন