hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

২৯
শ্রম ও উপার্জনের অধিকার
মানুসের জীবন-যাত্রা নির্বাহ এবং উন্নত, সমৃদ্ধ ও সুসভ্য জীবন-যাপনের জন্য আল্লাত তা’আলা যেসব দ্রব্যসামগ্রী ও উপাদান-উপকরণ বিশ্বপ্রকৃতির বুকে সৃষ্টি করিয়াছেন, তাহা সব মূলতই মুবাহ- তাহা ভোগ ও ব্যবহার করার অধিকার সাধারণভাবে সকল মানুষেরই সমানভাবে বর্তমান। প্রত্যেক মানুষই তাহা হইতে নিজের প্রয়োজন পরিমাণ দ্রব্য গ্রহণ করিতে পারে, তাহা প্রয়োগ ও বিক্রয় করিয়া অর্থোপার্জও করিতে পারে। ইহা প্রত্যেক মানুষেরই জন্মগত বা স্বাভাবিক অধিকার। এইসব স্বভাবজাত দ্রব্য-সামগ্রী সৃষ্টি করার ব্যাপারে কোন মানুষেরই কিছুমাত্র শ্রম-মেহনত ব্যয়িত হয় নাই। কাজেই নৈসর্গিক উপাদানের উপর একচেটিয়া কর্তৃত্ব বা নিরংকুশ ভোগাধিকার স্থাপিত হইতে পারে না। ‘শ্রমেরও ব্যবহারিক বা বিনিময় মূল্য রহিয়াছে এবং তাহাও এক প্রকার সম্পদ বা উৎপাদন উপায়, ইসলামী অর্থনীতি এ কথা স্পষ্ট ভাষায় স্বীকার করিয়াছে। মানুষের মধ্যে শ্রমশক্তি জন্মগতভাবেই নিহিত ও সুপ্ত রহিয়াছে। আল্লাহর বাণী এই শক্তিকে পূর্ণমাত্রায় উদ্বোধিত করিয়াছে। কুরআন মজীদে নানাভাবে মানুষকেকর্মশক্তি প্রয়োগ করার ও এই ব্যাপারে কোনরূপ অবজ্ঞা, উপেক্ষা ও গাফিলতি প্রদর্শন না করার জন্য আকুল আহবান জানানো হইয়াছে।

একটি আয়াতে বলা হইয়াছে:

(আরবী)

তাহারা যেন উহার ফসল ভোগ করে, যেন ভোগ করে তাহাদের হাত যেসব কাজ করিয়াছে তাহার ফলও। এইরূপ অবস্থায় তাহারা কি শোকর করিবে না?

ইহা হইতে স্পষ্ট বুঝা যায়, মানুষের খাদ্য দুইটি উপায়ে পাওয়া যাইতে পারে। একটি জমিতে গাছ-গাছড়া জন্মাইয়া উহার ফল ও ফসল খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করা। আর দ্বিতীয়টি- হাত দ্বারা কোন পণ্যদ্রব্য তৈয়ার করা এবং উহার সরাসরি বিনিময়ে অথবা উহার দরুন লব্ধ মজুরীর বিনিময়ে খাদ্য-দ্রব্য খরিদ করা। আর এই দুইটি উপায়ের মূলে মানুষের শ্রমই অপরিহার্য উৎস। শ্রম না হইলে এই দুইটি পথের কোন পথেই মানুষের খাদ্যদ্রব্য সংগৃহীত হওয়া সম্ভব হইতে পারে না।

নবী করীম (ﷺ) শ্রমকরিয়া জীবিকার্জনে অভ্যস্ত ছিলেন এবং শ্রম করার কারণে তাঁহার হাতে ফোসকা পড়িয়া গিয়াছিল। এই ফোসকা পড়া হাত দেখাইয়া তিনি বলিয়াছেন:

(আরবী)

আল্লাহ তা’আলা এবং তাহাররাসুল এইরুপই শ্রমাহত হাত খুবই পছন্দ করন ও ভালবাসেন।

শ্রমিকের কোন কাজই নিষ্ফল যাইতে পারে না। শ্রমিক যে শ্রমই করিবে উহার মজুরী সে অবশ্যই পাইবে। শ্রমেরমূল্য ও মজুরী হইতে তাহাকে বঞ্চিত করা মানবতা বিরোধী কাজ।

আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করিয়াছেন:

(আরবী)

যে লোক দুনিয়ার জীবন ও ইহার সৌন্দর্য লাভের উদ্দেশ্যে কাজকরিবে আমরা তাহাদিগকে তাহাদের কাজের ফল পূর্ণমাত্রায় দান করিব এবং এই ব্যাপারে তাহারা কিছুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত হইবে না।

আয়াতটি যদিও পরকালে অবিশ্বাসী লোকদের সম্পর্কে উদ্ধৃত হইয়াছে, কিন্তু তাহা সত্ত্বেও আয়াতটির বৈষয়িক তাৎপর্য অনস্বীকার্য। ইহার বাহ্যিক অর্থ এই কথাই প্রমাণ করে যে, যে-লোক যে-কাজই করিবে, সে-ই উহার প্রতিফল লাভের অধিকারী হইবে এবং এই শ্রমের প্রতিফলতথা মজুরী হইতে কাহাকেও বঞ্চিত করা আল্লাহর নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তাই ইসলাম পরিশ্রম করিয়া সম্পদ আহরণ ও অর্থোপার্জন করার নির্দেশ দিয়াছে।

কুরআন মজীদে বলা হইয়াছে:

(আরবী)

আল্লাহ ছাড়া তোমরা আর যাহার যাহার উপাসনা ও দাসত্ব কর,তাহারা কেহই তোমাদের রিযিক-এর মালিক নয়- তাহারা কেহই তোমাদিগকে রিযিক দিতে পারে না। অতএব তোমরা আল্লাহর নিকটই রিযিক-এর সন্ধান কর।

এই আয়াত হইতে দুইটি কথা স্পস্ট ভাষায় জানা যায়। প্রথমত, মানুষের রিযিকের মালিক- রিয্‌কদাতা- আল্লাহ ছাড়া আর কেহ নয় এবং দ্বিতীযত, আল্লাহ মানুষকে রিযিক দানের যে নিয়ম করিয়া দিয়াছেন তাহা এই যে, মানুষের নিজেকেই তাহা সন্ধান করিতে হইবে- তাহা উপার্জনের জন্য মানুষকে রীতিমত পরিশ্রম করিতে হইবে। ইসলামী অর্থনীতি অর্থোপার্জনের জন্য পরিশ্রম করা মানুষের পক্ষে অপরিহার্য বলিয়া ঘোষণা করিয়াছে।

কুরআন মজীদে ইরশাদ হইয়াছে:

(আরবী)

সেইমহান আল্লাহই জমিকে তোমাদের জন্য নরম মসৃণ বানাইয়া দিয়াছেন। অতএব, তোমরা ইহা পরতে পরতে সন্ধানকার্য চালাও এবং এই সবের মাধ্যমে আল্লাহ দেওয়া রিযিক তোমরা আহার কর এবং শেষ পর্যন্ত তাঁহার নিকটই ফিরিয়া যাইতে হইবে (এই কথা অবশ্যই স্মরণে রাখিবে)।

এই আয়াতের ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞগণ বলিয়াছেন:

(আরবী)

যে লোক জমির উপর শ্রম করিবে সে-ই খাদ্য পাইবে। যে তাহার সাধ্য ও ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও শ্রম করবে না, সে খাদ্য না পাওয়ার যোগ্য।

অতএব, শ্রম খাদ্য উপার্জনে প্রধানপ্রথম উপায়। আল্লাহ তা’আলা মানুষের রিযিক লাভ করাকে তাহার নিজের শ্রম করার উপর নির্ভরশীল করিয়াছেন।

সূরা আল-জুম’আর আয়াতে বলা হইয়াছে:

(আরবী)

যখন নামায পড়া সমাপ্ত হইয়া যায়, তখন তোমরা জমির দিকে ছড়াইয়া পড় এবং আল্লাহর নিকট অনুগ্রহের সন্ধান কর।

এই আয়াত অনুযায়ী যে লোক আল্লাহর নিকট হইতে রিযিক লাভেরজন্য অনুসন্ধান চালাইবে ও শ্রম করিবে, সে অবশ্যই খাইতে পাইবে।

নবী করীম (ﷺ) বলিয়াছেন : (আরবী)

হালালরুজী উপার্জন করাসর্বপেক্ষা প্রধান কর্তব্য।

অন্যত্র বলিয়াছেন: (আরবী)

শ্রমজীবী ও উপার্জনকারী আল্লাহর বন্ধু।

অপর হাদীসে ইরশাদ হইয়াছে (আরবী)

নিজ হস্তে উপার্জিত খাদ্য অপেক্ষা অধিক উত্তম খাদ্য আর কিছু নাই।

সাহাবাগণ নবী করীম (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করিলেন: (আরবী)

কোন্‌ প্রকারের উপার্জন উত্তম?

জওয়াবে নবী করী (ﷺ) বলিলেন:” (আরবী)

ব্যক্তির নিজ হাতের কাজের বিনিময় কিম্বা সুষ্ঠু ব্যবসায় লব্ধ মুনাফা।

রাসূলে করীম (ﷺ) তাকীক করিয়া বলিয়াছেন:

(আরবী)

তোমাদের কেহ রশি লইয়া গিয়া জঙ্গল হইতে কাঠ কাটিয়া স্বীয় পিঠের উপর বহন করিয়া লইয়া আসিলে আল্লাহ তাহাকে সেই ভিক্ষাবৃত্তিহইতে রক্ষা করিবেন, যাহাতে কিছু পাওয়ার কোন নিশ্চয়তা নাই।

(আরবী)

ফজরের নামায পড়ার পর জীবিকা উপার্জনে লিপ্ত না হইয়া ঘুমাইয়া থাকিও না।

কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে আল্লাত তা’আলা ‘দি ‘-কে মানুষের জীবিকার্জনের উপযুক্ত সময় করিয়া সৃষ্টি করিয়াছেন বলিয়া উল্লেখ করা হইয়াছে। যথা:

(আরবী)

আমি দিনের নিদর্শনকে উজ্জ্বল করিয়া দিয়াছি, যেন এই সময় তোমরা তোমাদের আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করিতে পার।

শ্রেষ্ঠ মানব হযরত নবী করীম (ﷺ) এবং তাঁহার সাহাবীগণ অর্থোপার্জনের জন্য পরিশ্রম করিতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করিতেন না। তাঁহারা সকলেই শ্রম করিয়া ধন উপার্জনে বা পণ্যোৎপাদনের এক উজ্জ্বলতম আদর্শ মানব সমাজের সম্মুখে স্থাপন করিয়াছেন। কুরআন মজীদে এই কাজের জন্য আল্লাহর প্রশংসা করিয়া বলা হইয়াছে:

(আরবী)

আর অন্যান্য বহুলোক (সাহাবী) এমন রহিয়াছে যাহারা জমিনের দিকে দিকে ভ্রমণ করে ও আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করিয়া বেড়ায়।

তাই ইসলামে প্রত্যেকটি মানুষের জীবিকা উপার্জনের পূর্ণ আযাদী থাকা আবশ্যক। সেইজন্য সকল প্রকার উপায় ও পন্থা ব্যক্তির অর্থনৈতিক চেষ্টা সাধনার পথে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতাই থাকিতে পারে না। সামাজিক বা আইনগত কোন বাধাও থাকিতে পারে না। পক্ষান্তরে যেসব পন্থা ও ব্যবস্থা সমাজে কোন একচেটিয়া কর্তৃত্ব কিংবা ভোগাধিকার স্থাপন করে ইসলামী অর্থনীতি তাহা কিছুতেই বরদাশ্‌ত করিতে পারে না। এক কথায়, ইসরামী আদর্শভিত্তিক সমাজে জীবিকার্জনেরপূর্ণ স্বাধীনতা এবং সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের ব্যাপারে নির্বিশেষে সকল মানুষের মধ্যে পূর্ণ সাম্য ও সমতা রক্ষিত হইতে হইবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন