hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৩৮
রাষ্ট্রীয়করণ নীতির ব্যর্থতা
মূলত রাষ্ট্রীয়করণ নীতির পশ্চাতে কোন বাস্তব যুক্তির অস্তিত্ব বর্তমান নাই। ব্যক্তিকে ব্যবহারিকভাবে মালিকানা অধিকার দান করিলে সে সকল অবস্থায় কেবল শোষণ (Exploitation)-ই করিবে, কখনই উহার সুবিচারপূর্ণ ব্যয় ও বন্টন করিবে না বলিয়া পুঁজিবাদসৃষ্টির পথ উন্মুক্ত হইবে এবং ব্যক্তি-মালিকানা নির্মুল করিয়া রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করিলেই অসাম্য ও শোষণের সব পথ চিরতরে রুদ্ধ হইয়া যাইবে, -রাষ্ট্রীয়করণ নীতির যৌক্তিকতা দেখাইবার জন্য সাধারণত ইহাই বলা হয়। কিন্তু এই কথা যে কতখানি হাস্যকর ও ভিত্তিহীন, তাহা বলাই বাহুল্য। জিজ্ঞাস্য এই যে, ব্যক্তির হাত হইতে মালিকানা অধিকার কাড়িয়া লইয়া উহার কর্তৃত্ব কাহার হাতে সোপর্দ করা হইবে? কোনও মানুষের হাতে, না কোনও অলৌকিক শক্তির হাতে? মানুষের হাতেই উহা সোপর্দ করিতে হইবে, সন্দেহ নাই। জনগণের লক্ষ কোটি স্বতন্ত্র হাত হইতে উহা কাড়িয়া লইয়া মুষ্টিমেয় রাষ্ট্র পরিচালকদের হাতে ন্যস্ত করা হইবে। এই লোক ফেরেশতাজগত হইতে নামিয়া আসিবে না; এই জনগণের মধ্য হইতেই তাহারা নির্বাচিত হইয়া কিংবা বল প্রয়োগ অথবা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করিয়া ক্ষমতাসীন হইবে এবং সমগ্র দেশের সর্বাধিক সম্পদ-বৈভব, উপায়-উপাদান এবং শক্তি ও যন্ত্রপাতি প্রয়োগ ও ব্যবহার করার নিরংকুশ কর্তুত্ব কেবল ইহাদের করায়ত্ত থাকিবে। কিন্তু তখন এই লোকগণই যে শোষণ ও জুলুম পীড়ন করিবে না; বরং উহার সদ্ব্যবহার ও সুবিচারপূর্ণ বন্টন করিবে, তাহার নিশ্চয়তা কিছুই নাই। গতকল্য যে সব ব্যক্তির হাতে সুবিচারপূর্ণ বন্টন করিবে, তাহার নিশ্চয়তা পীড়ন করিবে না; বরং উহার সদ্ব্যবহার ও সুবিচারপূর্ণ বন্টন করিবে, তাহার নিশ্চয়তা কিছুই নাই। গতকল্য যে সব ব্যক্তির হাতে স্বল্প পরিমাণ অর্থ সম্পদ ও উপায়-উপাদান ছিল বলিয়া শোষণ করিত, সেই সব লোক আজ ব্যক্তিগত মালিকানা হইতে বঞ্চিত হইয়অও একদিকে রাষ্ট্র পরিচালনার সীমাহীন সুযোগ ও কর্তৃত্ব লাভ করিয়া এবং অন্যদিকেও সেই সাথে অর্থ সম্পদের উপর নিরংকুশ কর্তৃত্ব লাভ করিয়া শোষণ পরিহার ও জাতীয় সম্পদের সুবিচারপূর্ণ বন্টন করিতে শুরু করিবে- তাহার প্রমাণ কি আছে? ব্যক্তিমালিকানাই হউক, কি জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় মালিকানা, উভয ক্ষেত্রেই অবাধ শোষণের পথ উন্মুক্ত থাকে। অন্য কথায়, পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্র উভয়ই শোষণমূলক অর্থ ব্যবস্থা্ ইহার কোনটিই সাধারণ ও দুর্বল মানুষকে শোষণ হইতে মুক্ত করিতে পারে না। যদি বলা হয় যে, সমাজতন্ত্রে রাষ্ট্র পরিচালকগণ খুবই সৎ প্রকৃতির এবং ন্যায়পরায়ণ লোক হইবে বলিয়া তাহারা কোনরূপ শোষণ করিবে না, অতএব জাতীয বা রাষ্ট্রীয়করণে কোন আশংকারই কারণ নাই; তাহা হইল আমি বলিতে চাইঃ প্রথমত সৎ লোকদের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব ন্যস্ত হওয়া সমাজতান্ত্রিক নীতিতে জরুরী নয়; দ্বিতীয়, নৈতিকতার কোন বালাই থাকে না বলিয়া সেখানে সদস্যদের মধ্যে কোন তারতম্য বিচারও থাকিতে পারে না। আর তহাহা যদি হয়ও তবুও তখন কোনরূপ শোষণ হইবে না বলিয়া যাহা বিশ্বাস করে, তাহারা এই কথা কেন বিশ্বাস করিতে পারে না যে, ইসলামী রাষ্ট্র ও সমাজের জনগণকে অনিবার্যভাবে সৎ দায়িত্ব-জ্ঞানসম্পন্ন এবং আল্লাহভীরু ও আল্লাহ প্রদত্ত আইনের অনুসারীরূপে গড়িয়া তোলা হইবে, ফলে তাহাদের নিকট ব্যক্তিগত মালিকানা অধিকার ন্যাস্ত হইলে সেখানে কোনরূপ শোষণ ও জুলূমের আশংকা কিছুতেই থাকিতে পারিবে না। তাই সমাজতন্ত্র অপেক্ষা ইসলামী সমাজের সীমিত ব্যক্তিমালিকানা অধিক নির্ভরযোগ্য, ন্যয়পরায়ণ ও ইনসাফপূর্ণ বন্টন ব্যবস্থাপক বলিয়া মানিয়া লওয়াই কি অধিক যুক্তিসঙ্গত নয়?

এতদ্ব্যতীত রাষ্ট্রীয়করণ করার পূর্ব ও পরের অবস্থার মধ্যে বস্তুতই কোন মৌলিক পার্থক্য সুচিত হয় না; বরং উন্নতির পরিবর্তে তখন অবস্থার অবনতিই ঘটে বেশী। রাষ্ট্রীয়করণের পূর্বে একটি দেশে যদি দুই শত তিন শত পুঁজিদার থাকে এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার আশ্রয়ে থাকিয়া যাহারা নিরীহ জনগণকে অবাধে শোষণ-পীড়ন করিতে থাকে, তবে রাষ্ট্রীয়করণের পর স্বয়ং রাষ্ট্রই সমগ্র পুঁজিদারকে খতম করিয়া ‘অন্যান্য’ ও ‘সর্বপ্রধান পুঁজিদার হইয়া বসে। এই সর্বশ্রেষ্ঠ পুঁজিদারের নিকট পুলিশ, সি.আই.ডি. প্রভৃতির সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র দেশের সামরিক শক্তি ও জাতীয় উপায়-উৎপাদনও একমাত্র তাহাদেরই নিয়ন্ত্রণাধীন হয়। ফলে এই রাষ্ট্রের হাতে এত অসংখ্য পুঁজিবাদী শক্তি ও উপায়-উপাদানের সমাবেশ ঘটে, যাহার তুলনা ভূপৃষ্ঠের অপর কোন রাষ্ট্র ব্যবস্থায়ই দেখিতে পাওয়া যায় না। এই সময় এহেন ‘সর্বশক্তিমান রাষ্ট্র’ জনগণের উপর কোনরূপ অত্যাচার-নিষ্পেষণ ও শোষন-পীড়ন করিবে না- চূড়ান্ত রকমের নির্বুদ্ধিতা না থাকিলে তাহা বিশ্বাস করা কাহারো পক্ষে সম্ভব হইতে পারে না। বরং পৃথিবীর ইতিহাস অনুরূপ শক্তি সম্পন্ন রাষ্ট্র-সম্রাটদেরই সংঘটিত জুলুম-শোষণের নির্মম কাহিনীতে পরিপূল্ণ হইয়া রহিয়াছে। কোথাও এবং কোন কালেই এইরূপ শাসন বা শোষণক্ষমতা মানুষকে বিন্দুমাত্র শান্তি দিতে সমর্থ হয় নাই।

বস্তুত রাষ্ট্রশক্তি ও জাতয় ধন-সম্পদ- এই দুইটিই এক একটি জাতির শক্তি-উৎস। রাষ্ট্রীয় অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা লাভের জন্য এবং সরকার ও জনগণ উভয়ের স্বাতন্ত্র্য ও অধিকার রক্ষার জন্য রাষ্ট্রশক্তি ও ধন-সম্পদের বিকেন্দ্রীকরণ অপরিহার্য। কোন শে এই উভয় শক্তি সরকারের কুক্ষিগত হইলে সেখানকার জনগণ যে নিষ্পেষিত, নির্যাতিত ও বঞ্চিত হইবে, তাহাতে কোনই সন্দেহ নাই। বর্তমান পৃথিবীর কমিউনিস্ট দেশগুলিল জনগণের অবস্থাই ইহার জ্বলন্ত প্রমাণ।

সম্পদ-সম্পত্তির রাষ্ট্রীয়করণ নীতির ধ্বংসকারিতা কেবল রাজনৈতিক বিচার-বিশ্লেষণেই প্রকটিত হয় না, নিতান্ত অর্থনীতির দৃষ্টিতেও ইহা একান্তই অযৌক্তিক, গ্রহণ-অযোগ্য এবং সম্পদ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ-রূপে ব্যর্থ প্রমাণিত হইয়াছে। বৃটেনের শ্রমিক সরকারের জাতীয়করণ নীতিই এতদঞ্চলের একশ্রেণীর লোককে জাতীয়করণে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করিয়াছে। কিন্তু এই শ্রেণীর লোক ভুলিয়া যান যে, বহু বৎসরের বেরকারী শৈল্পিক প্রচেষ্টার পরই বৃটিশ পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্প-প্রধান ও পুঁজিবাদী জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছে। সেখানে জাতীয়করণ নীতির পরীক্ষা করা হইয়াছে বেরকারী শৈল্পিক প্রচেষ্টার দানে সমুন্নত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। কিন্তু যে দেশের অবস্থা অনুরূপ নহে, সেখানে এইরূপ প্রচেষ্টার সাফল্য একেবারেই অনিশ্চিত। বৃটেনের পূর্বতন শ্রমিক সরকার তাহাদের পাঁচ বৎসরের রাজত্বে যে সমগ্র অর্থনীতির ২০ ভাগ জাতীয়করণ করিতে সমর্থ হইয়াছিল তাহাও জনগণের বিন্দুমাত্র কল্যাণ সাধন করিতে সক্ষম হয় নাই; বরং তাহাদের দুঃখ-দুর্দশা বৃদ্ধি করিয়াছে মাত্র। তদুপরী শ্রমিক সরকার যে সমস্ত শিল্প রাষ্ট্রায়ত্ব করিয়াছিল তাহা পূর্বে বেসরকারী পরিচালনায় যথেষ্ট সাফল্যের পরিচয় দিয়াছিল। জাতীয়করণ নীতির ব্যর্থতা শ্রমিক সরকার স্বীকার না করিলেও প্রকৃতপক্ষে ইহা যে ব্যর্থ হইয়াছে, তাহাতে কাহারো সন্দেহ নাই। এক ঘোষণায় প্রকাশ, বৃটিশ সরকার আর জাতীয়করণের চেষ্টা করিবে না। ইহা প্রকারন্তরে জাতীয়করণের ব্যর্থতারই অকপট স্বীকৃতি মাত্র।[বাংলাদেশেও রাষ্ট্রায়ত্তকরণ নীতি যে চরমভাবে ব্যর্থ হইয়অছে এবং এখানকার জাতীয় অর্থনতিতে নৈতিক তথা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে সর্বাত্মক বিপর্যয় ও সংকট টানিয়া আনিয়াছ, তাহা উল্লেখ করার প্রয়োজন পড়ে না।]

বস্তুত, নীতি হিসাবে জাতীয়করণ যতই জনপ্রিয় হউক না কেন, বাস্তব ক্ষেত্রে উহার সার্থকতার সম্ভাবনা মোটেই নাই। বৃটেনের শ্রমিক সরকার এই নীতি অনুসারে কয়লার খনি জাতীয় সম্পত্তিতে পরিণত করিয়াছিল, কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল যে, বেসরকারী পরিচালনায় যখন উত্তেলিত কয়লার হিসাবে প্রতি টনে ২ শিলিং করিয়া মুনাফা হিইত, সরকারী আমলে তাহাতে হইতে লাগিল গড়ে ১ শিলিং করিয়া লোকসান। উপরন্তু সরকারী আমলে আগের তুলনায় গড়ে বৎসরে ২ কোটি টন কয়লা কম উত্তেলিত হিইতে লাগিল।

কানাডায় বেসরকারী পরিচালনাধীনে কানাডিয়ান প্যাসিফিক রেলওয়ে কোম্পানী এবং সরকারী পরিচালনাধীনে কানাডিয়ান ন্যাশনাল রেলওয়ে- এই দুইটি প্রতিষ্ঠান রহিয়াছে। কিন্তু দেখা গিয়াছে যে, ১৯৩৬ সনে যখন সরকারী প্রতিষ্ঠানটির ৯০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়, সেই বৎসরই বেরকারী প্রতিষ্ঠানটিতে মুনাফা হয় ২ কোটি ৩০ লক্ষ ডলার।

জাতীয়করণ নীতির সর্বশ্রেষ্ঠ হোতা হইতেছে সোভিয়েত রাশিয়া। সেই সোভিয়েত রাশিয়াতেও এই নীতির চরম ব্যর্থতা প্রমাণিত হইয়াছে। সোভিয়েত সরকার কর্তৃক প্রচরিত The New Economic Upsowing of the U.S.S.R নাম রিপোর্ট (১৯৫০) দেখানো হইয়অছে: রাষ্ট্রীয়করণের ফলে চাষাবাদের কাজে শ্রমিকরা ফাঁকি দেয়, চুরিও করে। এই কারণে রাষ্ট্রকে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি বহন করিতে হয়। রিপোর্ট বলা হয়: ১,৮২০০০ জন লোক কাজ না করিয়াই বেতন গ্রহণ করে। ১,৪০,০০০ টি পশু ও প্রায় ১,৫০,০০০ রুবল মূল্যের দ্রব্য বেআইনীভাবে কুলখজ হইতে অপহৃত হয়।

শুধু তাহাই নয়, ঐ রিপোর্টের ১৭৭ ও ১৭৮ পৃষ্ঠায় সমষ্টিগত দায়িত্বে উৎপাদন হ্রাস পায় বলিয়া ব্যক্তিগত দায়িত্বের উপর এবং ‘খন্ড কার্য প্রণালীর’ উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হইয়াছে।[একুশ দফর রুপায়ণ- অধ্যাপক আবুল কাসেম] দীর্ঘ ও একটানা পঞ্চাশ বৎসর পর্যন্ত অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াও রাশিয়া এখন পর্যন্ত ক্রমাগত ব্যর্থতারই মুখ দেখিয়া আসিয়াছে। সেখানকার সরকার করায়ত্ব কৃষি-ব্যবস্থা সর্বাধিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হইয়াছে। কৃষি ব্যবস্থার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ ও সমধিক পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা সহেত্ত্বও সেখানকার ফসল উৎপাদন অত্যন্ত নিম্নস্তরের ও নিম্নমানের রহিয়াছে। ১৯৬৩ সনে প্রায় শতকরা ৭০টি কৃষি ফার্মের বিরাট রকমের খেসরত দিতে হইয়অছে। ১৯৬৫ সনের পরিসংখ্যান হইতে জানা যায় যে, সরকারী কৃষি ফার্মে সামগ্রিকভাবে শতকরা ৪০ কোটি পাউন্ড ক্ষতি হইয়াছে। -(সাপ্তাহিক আইন, ২৩ শে মে, ১৯৭৬ সন)

সমাজতান্ত্রিক চীনের কৃষি জাতীয়করণেরও এই নির্মম পরিণতিই দেখা গিয়াছে। তথায় ১৯৫৫ সনে সর্বপ্রথম জমিক্ষেতকে রাষ্ট্রায়ত্ব করা হয়। কৃষকদের নিকট হইতে নানা প্রকারে কৌশল ও ধোঁকাবাজির সাহায্যে সমস্ত জমি সরকারী নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। কিন্তু ইহার পর কৃষি উৎপাদনের পরিমাণ তীব্রভাবে হ্রাসপ্রাপ্ত হয়। তখনকার চীনা পত্র-পত্রিকায়ও ব্যাপক খাদ্যাভাব ও কঠিন রেশন ব্যবস্থা চালু হওয়ার বিবরণ প্রকাশিত হয়। শহর অঞ্চলে রেশন ব্যবস্থা ক্রমশ কঠোর মূর্তি পরিগ্রহ করে। গামাঞ্চল হইতে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করার ব্যাপারে সরকারকে যেসব সমস্যা অসুবিধার সম্মুখীন হইতে হয়, তাহারও রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশিত হইয়া পড়ে। তাহা হইতে স্পষ্টভাবে বুঝা গিয়াছিল যে জমি জাতীয়করণের ফলে শস্যোৎপাদনের পরিমাণ ব্যক্তিগত মালিকানা ব্যবস্থাধীন উৎপাদন পরিমাণের তুলনায় অনেকখানি হ্রাস পাইয়া গিয়াছে। শুথু তাহাই নয়, কৃষকদের জমি, ক্ষেত সরকার কর্তৃক কাড়িয়া লওয়ার ফলে সাধারণ কৃষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়াছে, তাহা রাজনৈতিক উপায়ে প্রকাশ পাইবার পথ না থাকার দরুন তাহাদের মধ্যে ধ্বংসাত্মক প্রবণতা বৃদ্ধি পাইয়াছে। ফলে তাহারা চাষের জন্তু ধ্বংস করিয়া এই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করে। এই কারণে সেখানে কৃষি জন্তু বহুলাংশে কমিয়া যায়। চীনের পত্রিকা JEN-MIN JEN-POO-তে ১৯৫৭ সনের ২৯শে সংখ্যায় ইহার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশিত হইয়াছিল।

বাংলাদেশেও জাতীয়করণ নীতির চরম ও মারাত্মক ব্যর্থতার সহিত আমরা প্রত্যক্ষভাবে পরিচিত হইয়াছি। যাবতীয় বৃহৎ শিল্পকারখানা ও ব্যবসায়-বাণিজ্যে জাতীয়করণ নীতি অর্থনীতির দিক দিয়াই শুধু দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করে নাই, বরং জাতীয় ণৈতিকতার ক্ষেত্রেও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করিয়াছে।

ইইসব বাস্তব ও প্রমাণ-ভিত্তিক যুক্তিসমূহ সম্মুখে রাখিয়া জাতীয়করণের ফলে জাতীয় কল্যাণ সাধিত হইবার কোন আশা কি কেহই করিতে পারে?

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন