hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের অর্থনীতি

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ)

৬৩
বাড়তি মূল্য ও ইসলামী অর্থনীতি
উপরের আলোচনা হইতে এ কথা প্রমাণিত হইয়াছে যে, একমাত্র শ্রমই সম্পদ উৎপাদন করে না, মূলধন এবং আরো অনেক কিছু সম্পদ উৎপাদনে অংশ গ্রহণ করিয়া থাকে। কিন্তু মার্কসের মতে একমাত্র শ্রমই মূল্যোৎপাদন করিয়া থাকে।[Labour can make value-মার্কসের একটি প্রসিদ্ধ কথা] তাঁহার মতে পণ্যদ্রব্যের সঠিক বিনিময়-মূল্য এবং বিক্রয় দমের (Selling Price) মধ্যে যে ব্যবধান থাকিয়া যায়, তাহাই হইতেছে ‘বাড়তি মূল্য’ (Surplas value) আর পুঁজিদার ইহাই অর্জন করে মজুরের প্রাপ্য কাড়িয়া লইয়া। এই বাড়তি মুল্যই (Surplus Value) হইতেছে পুঁজিবাদের ভিত্তিমূল- ইহাই পুঁজিদার সৃষ্টি করে, মানব-সমাজকে সর্বহারা শ্রমিক ও পুঁজিদার-এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করে। শেষ পর্যন্ত ইহা হইতেই শ্রেণী বৈষম্যের সৃষ্টি হয় এবং শ্রেণী মাথা চাড়া দিয়া উঠিয়া সুস্থ সমাজকে চূর্ণ করে।

মার্কসের এই অভিযোগ মুলতঃই পুঁজিবাদী সমাজের বিরুদ্ধে এবং এই অভিযোগ যে সম্পূর্ণ সত্য তাহাতে বিন্দুমাত্র সন্দহ নাই। পুঁজিবাদী সমাজে ব্যক্তিগত মালিকানা নিরংকুশ ও ধন-সম্পদের উপর শংকাহীন কর্তৃত্ব ভোগ করার অপ্রতিরোধ্য অধিকার থাকে। অপরকে বঞ্চিত করিয়া শোষণ করিয়া যতকিছু সম্পত্তি করায়ত্ত করা হয়, ব্যক্তি তাহারই একমাত্র মালিক হইয়া বসে। আর সমাজতান্ত্রিক সমাজে সমস্ত ধন-সম্পদ ও যাবতীয় মানুষের বেলায় পুঁজিবাদী সমাজ ও সমাজতান্ত্রিক সমাজ অভিন্ন হইয়া দাড়ায়। এই উভয় সমাজই শোষণমূলক।পূঁজিবাদী সমাজে বাড়তিমূল্য পুঁজিদার নিয়া নেয়, কিন্তু সমাজতান্ত্রিক সমাজে তাহা কি রাষ্ট্রের একচেটিয়া দখলে চলিয়া যায় না? কিন্তু ইসলামী সমাজে এইরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হইবার কিছু মাত্র অবকাশ থাকে না।

প্রথমত: ইসলামী সমাজে সম্পদ-উৎপাদনের মূল লক্ষ্য ও দৃষ্টিভঙ্গিতেই আমূল পরিবর্তন ঘটে। সেখানে কেহ ভোগ-সম্ভোগের জন্য, বিলাসিতা ও জাঁক-জমকের জন্য ধন উৎপাদন করে না, করে জনগণের সার্বিক প্রয়োজন পুরণের জন্য, জাতীয় সম্পদ বৃদ্ধির জন্য, যেন তাহা নির্বিশেষে সকলেই মানুষের কল্যাণে প্রয়োগ করিয়া আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। কাজেই শোষণ আর বঞ্চনা করার কোন চেষ্টাই সেখানে কেহ করিতে পারে না।

দ্বিতীয়ত: মজুর শ্রমিকদের জীবিকা-নির্বাহের যাবতীয় প্রয়োজন পূর্ণ করার উপযোগী মজুরী দেওয়া, মজরদের প্রতি এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি অন্যান্য কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করার পরও পুঁজিমালিক ও কারখানা মালিক যাহা কিছু লাভ করিবে, তাহা দ্বারা সে নিজের ভোগ বিলাসিতা ও সুখ-শয্যের আয়োজন করিতে পারিবে না। জোঁকের মত অর্থ শোষণ করিয়া সমাজে সর্বহারা শ্রেণীর উদ্ভাবন করিতে পারিবে না। কাজেই সেখানে অর্থ সম্পদের উপর আমানতদারী অর্থে ব্যক্তিগত মালিকানা স্বীকৃত হইলেও তাহা মানুষের পক্ষে কোনক্রমই মারাত্মক হইতে পারে না। বরং তাহাতে সামগ্রিকভাবে গোটা সমাজ ও রাষ্ট্রেরই কল্যাণ সাধিত হওয়া অবধারিত।

তৃতীয়ত: ইসলামী সমাজে সম্পদ-উৎপাদনে ব্যাপারে মজুর-শ্রমিক ও মালিক পুঁজিদারদের পরস্পরের মধ্যে কোনরূপ শত্রুতামুলক প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হয় না, পণ্যোৎপাদনের উদ্দেশ্যে উভয়ের মধ্যে পরিপূর্ণ সহযোগিতা স্থাপিত হয়। কুরআন মজীদে পরস্পর সহযোগিতার ভিত্তিতে জাতীয় কল্যাণমূলক প্রত্যেকটি কাজ আঞ্জাম দেওয়ার জন্য স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে:

(আরবী)

তোমরা সৎ ও পরহেজগারীমূলক সকল কাজে পরস্পরের সহযোগিতা কর, পাপ ও আল্লাহদ্রোহিতামূলক কোন কাজেই তোমরা কেহ কাহারো সহযোগিতা করিও না।[আয়াতটি ইসলামী সমাজের সমগ্র ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তাই অর্থনীতির ক্ষেত্রেও অবশ্যই প্রযোজ্য হইবে।]

কাজেই ইসলামী সমাজের শিল্প-বাণিজ্য-কৃষি ইত্যাদি কোন ক্ষেত্রেই মজুর-শ্রমিক এবং মালিক ও পুঁজিদারদের মধ্যে শত্রুতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার সৃষ্টি হয় না, কেহ কাহাকেও শত্রু বা প্রতিদ্বন্দ্বী বলিয়া মনে করে না। বরং সেখানে সকলেই মানুষের সঠিক কল্যাণ-সাধন, সমাজ ও রাষ্ট্রের পক্ষে প্রয়োজনীয় পণ্যের উৎপাদন এবং সকলে মিলিয়া এক আল্লাহর হুকুমত কায়েম করার ব্যাপারে পরস্পরকে বন্ধু, সহযোগী ও সহকর্মী বলিয়া মনে করে। আর এই কাজ সম্পন্ন করার জন্য ইহাতে নিজের যোগ্যতা ও সামর্থানুসারে প্রত্যেকেই অংশ গ্রহণ করে। ইসলামী অর্থনীতির মূল ভাবধারা হইতেছে পরিপূল্ণ সহযোগিতা এবং সামঞ্জস্য বিধান; হিংসা, বিদ্বেষ বা শত্রুতামূলক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়।

মার্কসের মতে ধনিকদের ‘বাড়তি মূল্য’ লাভ করিতে হইলে তাহাদিগকে তিনটি শর্ত পূরণ করিতে হয়। তাহা হইতেছে শ্রমিকদের বেতন কম করা, শ্রমিকদের কার্যকাল বৃদ্ধি করিয়া অতিরিক্ত পণ্যোৎপাদন করিয়া লওয়া এবংউৎপাদিত দ্রব্রের অত্যধিক মূল্য গ্রহণ করা। কিন্তু ইসলামী শিল্পনীতিতে এইরূপ কোন শর্ত কিছুতেই কার্যকর হইতে পারে না। কাজেই ইসলামী সমাজে অনুরূপ শর্তের পলে বাড়তি মূল্য লাভ করিয়া শোষণের পাহাড় সৃষিট করা কোনক্রমেই সম্ভব হইতে পারে না।

এই কারণে ইসলামী সমাজে সীমাবদ্ধ পরিমাণ মুনাফা লাভ করার অবকাশ থাকা সমাজের পক্ষে কোন দিক দিয়াই ক্ষতিকর হইতে পারে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন