hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

১১২
পঞ্চম অধ্যায়ঃ ইসলামী বিশ্বদর্শন ও কর্মকৌশল
সেকুলার বুদ্ধিবৃত্তিক ও বিশ্বদর্শনভিত্তিক কর্মকৌশল অবলম্বন করে উন্নয়নশীল এবং ধনাঢ্য পুঁজিবাদী ও সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো কী কারণে দক্ষতা ও ন্যায়পরায়ণতার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়নি প্রথম চারটি অধ্যায়ে তা আলোচিত হয়েছে। সে কারণে মুসলিম দেশগুলো যদি ‘মাকাসিদ আল-শরীয়াহ’ হাসিল করতে চায়, তাহলে তাদের এসব কর্মকৌশলকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করার কোনো কারণ নেই; কেননা ‘মাকাসিদ আল-শরীয়াহ’-তে স্বাভাবিক মানবকল্যাণের উপাদানসমূহ এতই ব্যাপক যে, অন্য কোনো সেকুলার ব্যবস্থায় তা কল্পনাও করা যায় না। এমনকি কী করতে হবে সে ব্যাপারে কালক্ষেপণের সময়ও মুসলিম দেশগুলোর নেই। ইতোমধ্যেই যথেষ্ট ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। তারা যদি মাকাসিদ অর্জনের উপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার না দেয়, তাহলে আর্থ-সামাজিক অসন্তোষ আরো ঘনীভূত হবে। ফলে তাদের সমাজ খণ্ডবিখণ্ড হয়ে পড়বে।

অতএব মুসলিম দেশগুলোর প্রয়োজন এক ভিন্ন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার, যে ব্যবস্থা ভ্রাতৃত্ব ও মানবকল্যাণের সকল প্রয়োজনীয় উপাদান নিশ্চিত করতে সক্ষম। এ ব্যবস্থা ভারসাম্যহীনতা দূরীকরণেই সক্ষম হবে না, বরং তা সম্পদের এমনভাবে পুনর্বণ্টন করবে, যাতে একই সঙ্গে দক্ষতা ও ন্যায়পরায়ণতা উভয়ই অর্জিত হয়। এ ব্যবস্থায় অংশগ্রহণকরীগণ এর নীতিমালাসমূহ মেনে চলবে এবং তাদের সর্বোত্তম গুনাবলীর বিকাশ ঘটাবে। এতে তারা শুধু নিজের স্বার্থই নয়, বরং সমাজের স্বার্থও রক্ষা করবে। এ ব্যবস্থা ততক্ষণ পর্যন্ত সফল হবে না, যতক্ষণ না তা ব্যাপক আর্থ-সামাজিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। পুনর্গঠনের মাধ্যমে সমাজের দুরূহ হতে পারে, যদি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের মাধ্যমে সমাজের ক্ষমতার কেন্দ্রগুলোকে এমনভাবে উপযোগী করে তোলা না হয়, যেখানে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এ ব্যবস্থার মূলনীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে অবৈধ সুবিধা নিতে পারে।

দুর্লভ সম্পদ ও তার বণ্টনের মধ্যে এমনভাবে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে, যাতে দক্ষতা ও ন্যায়পরায়ণতা উভয়ই অর্জিত হয়। এ জন্য যা দরকার, তা হলো রাষ্ট্র বা বাজারের উপর গুরুত্ব না দিয়ে মানবগোষ্ঠীর উপর নজর দেয়া। মানুষ একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জীবন্ত ও অপরিহার্য উপাদান। লক্ষ্য ও লক্ষ্য অর্জনের হাতিয়ার সবই মানুষ। অতএব, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের সামাজিক কল্যাণের লক্ষ্যে সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আত্মস্বার্থ অর্জনের লক্ষ্যে তাদেরকে সংশোধিত ও উদ্বুদ্ধ করা না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাজার অর্থনীতির ‘অদৃশ্য হাত’ অথবা কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার ‘দৃশ্যমান হাত’ দ্বারা আর্থ-সামাজিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কিছুতেই সফল হতে পারবে না। এককভাবে মানুষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও তার প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে অনুপ্রেরণা পায়। সুতরাং, সংস্কার হতে হবে এমন যা অর্থব্যবস্থাকে পরিশুদ্ধ করে, জীবনাচার ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত শক্তিকে এমনভাবে পুনর্গঠিত করে, যাতে সম্পদের উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ কমিয়ে আনা যায় এবং অন্যায়, শোষণ ও অস্থিতিশীলতা সম্পূর্ণ নির্মূল করা না গেলেও ব্যাপকভাবে হ্রাস করা যায়। এগুলো যদি না করা যায়, তাহলে কোনো একক মানুষের সংস্কার কার্যকর হতে পারে না। অতএব মানুষ এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান। এ উভয় বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো ব্যবস্থার কর্মকৌশলে যখন কেবলমাত্র বাজার শক্তি বা রাষ্ট্রের উপর প্রধানত জোর দেয়া হয়, তখন শেষ পর্যন্ত তা মানুষের অধঃপতন ডেকে আনে ও দুর্দশা বৃদ্ধি করে, হতে পারে, তা মানুষের সমস্যার সমাধানের মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই করা হয়।

অর্থনৈতিক ব্যবস্থা একটি বিশ্বদর্শনের উপর ভিত্তি করে গড়ে না উঠলে মানুষ ঐ ব্যবস্থার লক্ষ্য এবং তা অর্জনের উপায় হতে পারে না। কারণ এ দর্শন সমস্ত বিবেচনার কেন্দ্রবিন্দুতে গুরুত্বের ঈর্ষণীয় অবস্থানে মানুষকে পুনঃস্থাপিত করে এবং তাকে কেন্দ্র করেই সমস্ত কিছু আবর্তিত হয়। পুঁজিবাদী ও সমাজবাদী কোনো বিশ্বদর্শনেই মানুষকে এ ধরনের গুরুত্ব দেয়া হয়নি এবং ডারউইনবাদ বা দ্বান্দ্বিকতাবাদে মানব ভ্রাতৃত্ববোধ, আর্থ-সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সম্পদের আমানতের প্রকৃতির বিষয়ে যে অন্তর্নিহিত বিশ্বাস থাকা প্রয়োজন তাও স্থান পায়নি। এতে ‘যোগ্যতমরাই সেরা’ অথবা ‘শ্রেণী সংগ্রাম’ এবং ‘চাহিদার সর্বোচ্চ তৃপ্তি’ বা ‘জীবনের বস্তুবাদী অবস্থা’ ইত্যাদি বিষয়ের উপর অত্যধিক ও অতিরঞ্জিত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এসব দর্শনে সমাজের স্বার্থে কাজ করার জন্য মানুষকে নিয়োজিত করার কোনো উদ্বুদ্ধকরণমূলক ব্যবস্থা নেই। সমাজের স্বার্থ কেবল আত্মস্বার্থ সিদ্ধি ও প্রচেষ্টার মাঝেই নিহিত নয়, বরং সে জন্য অন্যের উপকারার্থে ব্যক্তিগত লাভ ও আয়েশ বিসর্জন দেয়ারও প্রয়োজন। এসব বিশ্বদর্শন সংঘাত ও অধিকারের দাবিকেই জোরালো করে এবং শুধু সম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে অদক্ষতা ও অবিচারেরই জন্ম দেয় না, তা স্বপ্নভঙ্গ, অপরাধ, পারিবারিক ও সামাজিক ধস এবং পরিশেষে মানুষের অধঃপতনও ডেকে আনে।

অর্থ ও ব্যাংকব্যবস্থা আধুনিক কালের অর্থনীতির উপর এত ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে যে, এদের ইতিবাচক সমর্থন ছাড়া কোনো অর্থব্যবস্থা তার শক্তি ও সামর্থ্যকে ধরে রাখতে বা আর্থ-সামাজিক লক্ষ্য অর্জনে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে না। সুতরাং, সকলের জন্য ক্ষতিকর অতিরিক্ত ভোগ, বেকারত্বও মুদ্রাস্ফীতি যাতে ঘটতে না পারে, তেমনি ভারসাম্যহীনতা ও বাড়াবাড়িকে পরিহারকল্পে অর্থ ও ব্যাংকব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। সাধারণভাবে এ ব্যবস্থা এমন হতে হবে যাতে প্রয়োজন পূরণ করা যায়, উচ্চহারে উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি এবং উৎপাদন ব্যবস্থার ব্যাপকভিত্তিক মালিকানা নিশ্চত হয়। এ ধরনের একটি সুস্থ ও ন্যায়বিচারমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রণয়ন করা কি সম্ভব? এ অধ্যায়ের মূল লক্ষ্য এ কথারই ই্ঙ্গিত দেয় যে, হ্যাঁ, তা করা সম্ভব। এ ব্যবস্থার শিকড় নিহিত থাকবে ইসলামী বিশ্বদর্শনে। একে কিভাবে সুনির্দিষ্ট নীতিমালায় রূপান্তরিত করা যায়, সে সম্পর্কে ষষ্ঠ থেকে একাদশ অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ইসলামের বিশ্বদর্শন ও কর্মকৌশল মাকাসিদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। এ দর্শন কৌশল মুসলিম দেশগুলো যেসব সমস্যার সম্মুখীন, তার একটি ন্যায়ভিত্তিক ও কার্যকর সমাধানের নীলনকশা প্রদানে সক্ষম। তবে এজন্য ইসলামের শিক্ষাসমূহ অনুসরণ ও সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকা জরুরি। যেহেতু বহু মুসলিম দেশের অর্থনীতি এখনো উন্নয়নের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, সেহেতু তাদের অর্থব্যবস্থা ও অর্থনীতির জন্য একটি নতুন নকশা ও দিকনির্দেশনা অনুসরণ করতে খুব একটা অসুবিধা হবে না। অবশ্য কাল পরিক্রমার সাথে সাথে তা করা উত্তরোত্তর কঠিন হয়ে পড়বে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন