hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

১৩৬
বৈধ মানদণ্ড
বৈধ সরকারের প্রশ্নে ইসলামের নিজস্ব সুদৃঢ় মানদণ্ড রয়েছে। সর্বপ্রধান মানদণ্ড হচ্ছে, সরকারের প্রথম জবাবদিহিতা হবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে, যিনি সার্বভৌম আইনদাতা এবং শরীয়াহর সীমারেখার দ্বারা সীমাবদ্ধ। শরীয়াহর বিধান মেনে চলা সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক এবং শরীয়াহ বাসত্মবায়ন সরকারের কাজ। এ বিষয়ে আল-কোরআন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছে, “তোমার প্রভু যা প্রেরণ করেছেন তা অনুসরণ করো এবং আল্লাহ ছাড়া আর কোনাকিছুর কর্তৃত্ব স্বীকার করো না” (৭:৩) এবং “আল্লাহর বিধঅন অনুযায়ী যারা শাসন কার্য পরিচালনা করে না, নিশ্চয় তারা সীমালঙ্ঘনকারী” (৫:৪৫)

যেহেতু শরীয়াহর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে কল্যাণ সাধন করা, বিশেষ কোনো শ্রেণী বা পরিবারের নয়, তাই সরকারের নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব হচ্ছে, সম্পদের দক্ষ ও সুষম ব্যবহারসহ সম্ভাব্য সকল প্রকার ব্যবস্থা অবলম্বনের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা। মহানবী (ﷺ) বলেছেন,

“তোমাদের প্রত্যেকে একজন রাখাল এবং তোমাদের অধীনসত্মদের জন্য তোমাদের দায়ী থাকতে হবে”।

“জনগণের দায়িত্ব যাকে অর্পণ করা হয়েছে এবং সে যদি আনত্মরিকতার সাথে প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ না করে, তবে জান্নাতের সুবাসও তার কাছে পৌঁছাবে না”।

“শেষ বিচারের দিন সমসত্ম মানব সমাজের মাঝে আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় আর সবচেয়ে ঘৃণিত ও আল্লাহ হতে দূরবর্তী হবে জালিম শাসক।”

বৈধতার দ্বিতীয় মানদণ্ড হচ্ছে জনসাধঅরণের নিকট জবাবদিহিতা। কেননা সরকার হচ্ছে আমানত। সরকার পরিচালনাকারী ব্যক্তিগবর্গ হচ্ছেন যুগপৎ আল্লাহ ও জনগণের পক্ষে হতে আমানত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে একবার সাহাবা আবু জার (রা) সরকারের সরকারের উচ্চপদ আকাঙ্ক্ষা করলে তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেছিলেন, “হে আবু জার! তুমি দুর্বল, আর এ পদ হচ্ছে একটি আমানত। হাশরের দিন এ পদ ও মর্যাদা দুঃখ ও অপমানের কারণ হবে তাদের জন্য, যারা উপযুক্ততার ভিত্তিতে এ পদ অর্জন করেনি এবং এর দায়দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেনি”। তাই এ আমানতের সাথে সংগতি রেখে সরকার যেমন সফলতা বা ব্যর্থতার জন্য আল্লাহর কাছে দায়ী, তেমনি জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণের বিষয়েও সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।

সরকার জনগণের পরামর্শ ও সমালোচনার প্রতি যদি মুক্তমন না হয়, তবে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা কার্যকরভাবে পূরণে সরকার সফল হতে পারে না। রাসূলে করীম (ﷺ) তাই গুরম্নত্ব দিয়ে বলেছেন, ‘মুসলমানের ঈমানের অন্যতম দাবি হচ্ছে, শাসক শ্রেণীকে আনত্মরিক সৎ উপদেশ দেয়া, যে উপদেশ শাসকদের তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে সহায়তা করবে’। কিন্তু জনগণ কিভাবে সে দায়িত্ব পালন করবে, যদি তাদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকে; যদি তাদের সরকারি নীতি ও কার্যকলাপের সমালোচনা করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়? যদি শাসকের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা না থাকে, যদি তা জনগণের পরামর্শ গ্রহণে উম্মুখ না হয়, তবে কোনো প্রকার সংস্কার সাধিত হতে পারে না। তাই হযরত আবুবকর (রা) যখন প্রথম খলিফা নির্বাচিত হন, তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তিনি ইসলামের এ অপরিহার্য অনুষঙ্গের বিষয়ে বলেছেন, “যদি আমি সঠিক পথে চলি, তবে আমাকে সাহায্য করুন”। অধিকার ও দায়িত্বের দ্বিমুখী ধারা এর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। শাসনকার্য পরিচালনার নীতি প্রণয়নে অং শগ্রহণ জনগণের অধিকার এবং জনগণকে সে অধিকার দেয়া শাসকের দায়িত্ব। একইভাবে সঠিক নীতি অনুসরণ ও কাজের ক্ষেত্রে জনগণের সাহায্য ও সহযোগিতা গ্রহণ শাসকের দায়িত্ব। একইভাবে সঠিক নীতি ও কাজের ক্ষেত্রে জনগণের সাহায্য ও সহযোগিতা পাওয়া সরকারের অধিকার। আর ভুল নীতি ও কার্যের ক্ষেত্রে সরকারকে সতর্ক করে দেয়া জনগণের দায়িত্ব।

হযরত আবুবকরের উর্পযুক্ত ঘোষণা কোনো বিরল ঘটনা নয়। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রা)ও একই নীতি অনুসরণ করেছিলেন। যখন খলিফাকে কোনো এক ব্যক্তির সমালোচনায় অন্য এক ব্যক্তি বাধা প্রদান করে, তখন হযরত ওমর দৃঢ়তার সাথে ঐ ব্যক্তিকে তার বক্তব্য বলার সুযোগ দিয়ে বলেন, ‘যদি তারা তাদের মনের কথা ব্যক্ত না করে, তবে তারা ভারৈা লোক নয়; আর আমরা যদি তাদের কথা না শুনি, তবে আমরা ভালো লোক নই’। সাধারণ মানুষের খলিফাদের সমালোচনা করার এবং খলিফাদের তা হাসিমুখে বরণ করে নেয়ার অসংখ্য উদাহরণ আছে, যা থেকে দ্বিধাহীনভাবে এ উপসংহারে উপনীত হওয়া যায় যে, জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নেতৃত্বের সমালোচনা অনুণ্ঠচিত্তে স্বীকার করে নেয়ার মনোভাব ছিল মুসলমানদের প্রাথমিক যুগের রাজনৈতিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এমনকি খিলাফতের অবসানের পর যখন বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র চালু হলো, তখনও কিছুকাল যাবত এ ঐতিহ্য বজায় ছিল।

বৈধতার তৃতীয় মানদণ্ড হচ্ছে, আল-কোরআনের নির্দেশ মোতাবেক পারস্পরিক পরামর্শ বা ইসলামী পরিভাষায় ‘শুরা’ ব্যবস্থার সাধারণ পরিবেশ বিরাজ করা (৪২:৩৮)। এটা কোনো ঐচ্ছিক বিষয় নয়, বরং বাধ্যতামূলক। ইমাম ইবনে তাইমিয়া ও শেষ মোহাম্মদ আবদুহু সুস্পষ্টভাবে এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এর অনিবার্য তাৎপর্য হচ্ছে, শরীয়াহর কাঠামের মধ্যে স্বেচ্ছাচার, সামরিক স্বৈরতন্ত্র বা একনায়কতন্ত্রের কোনো অবকাশ নেই। শেখ মোহাম্মদ আবদুহুর ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে শেখ রশিদ রিদা এর কারণ হিসেবে বলেন, “একজন ব্যক্তির চেয়ে একটি দলের ভুল করার সম্ভাবনা অনেক কম। উম্মতের সকল শাসনভার তাই এক ব্যক্তির উপর অর্পণ করা অনেক বেশি বিপদজনক। যে পরামর্শ পর্ষদ বা শুরার কথা বলা হয়েছে তা নিছক অলঙ্কারিক নয়। শাসকের স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধানত্ম অনুমোদনের রাবার স্ট্যাম্পের ভ্থমিকা পালন করা এর কাজ নয়। যা প্রয়োজন তা হচ্ছে, শরীয়াহর কাঠামের মধ্যে জনকল্যাণের সাথে সম্পৃক্ত সকল বিষয়ের উপর ভয়, বাধাহীন মুক্ত আলোচনার জন্য সার্বভৌম এক প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা। ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রণীত সকল কর্মসূচির শাসন বিভাগ কর্তৃক আনত্মরিক ও যথাযথ বাসত্মবায়ন। শুরা ব্যবস্থা দাবি করে, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় প্রত্যক্ষ বা নির্ধারিত প্রতিনিধির মাধ্যমে সর্বাধিক জনগণের অংশগ্রহণ। শুরা ব্যবস্থার কাঠামো কী হবে নিজস্ব পরিস্থিতির ভিত্তিতে উম্মাহ তা নির্ধারণ করবে।

বৈধতার চতুর্থ শর্ত হচ্ছে, আইনের চোখে সকল মানুষের সমতার নীতি এবং সকল প্রকার দুর্নীতিমুক্ত ন্যায়বিচার। আল-কোরআনের ভাষায়, “এবং যখন তোমরা মানুষের মাঝে বিচার করো, তখন তা ন্যায়পরায়ণতার সাথে সম্পাদন কর” (৪:৫৮)। শরীয়াহর বিধান সমাজ বা সরকারের ব্যক্তি বিশেষের পদমর্য়া, সম্পদ বা অবস্থান নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। এর ব্যত্যয় ঘটানোর নাম জুলুম। শেখ মোহাম্মদ আবদুলস্নাহ যথার্থই বলেছেন, জুলুম হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাপ (এরাহ আলা মুনকার)। খলিফা আবুবকর (রা) তাঁর প্রথম ভাষণে যা বলেছিলেন তা এখানে স্মরণযোগ্য, তোমাদের মাঝে দুর্বলতম ব্যক্তি হচ্ছে আমার সামনে সবচেয়ে সবল, যতক্ষণ না তার অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারি। আর তোমাদের মাঝে শক্তিশালী ব্যক্তি হচ্ছে আমার সামনে সবচেয়ে দুর্বল, যতক্ষণ না তার কাছ থেকে আমি অধিকার আদায় করে নিতে পারি। এর অনত্মর্নিহিত অর্থ দাঁড়ায়, সরকারের দমনমূলক শক্তি থাকা প্রয়োজন শুধুমত্র ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং দুর্বল ও দরিদ্রকে তাদের অধিকার আদায়ের সাহায্য করার স্বার্থে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন