hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

৩৭
পুর্বশর্তসমূহ
উৎপাদন দক্ষতার দিক থেকে পুঁজিবাদ সবচেয়ে কার্যকর ব্যবস্থা বলে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। এ ব্যবস্থাধীনে উদ্যোগ গ্রহনকারী পুঁজিপতি শ্রেণী হচ্ছে সমাজের প্রতিনিধি যারা কী ধরনের দ্রব্যসামগ্রী ও সেবা উৎপাদিত হবে তা নির্ধারণ করে। ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি ও মুনাফার আকর্ষণ পুঁজিপতি শ্রেণীকে কার্যকর ভূমিকা পালনে উদ্ধুদ্ধ করে। বাজার দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য পুঁজিপতি শ্রেণীর জন্য সংকেত হিসেবে কাজ করে। একদিকে মুনাফার আর্কষণ তাকে সর্বোচ্চ শ্রম ও মেধা নিয়োগে উদ্ধুদ্ধ করে, অন্যদিকে অন্যান্য পুঁজিপতিদের সাথে প্রতিযোগিতা মূল্য বাড়িয়ে সমাজকে শোষণ করার প্রবণতা হতে প্রতিহত করে। প্রতিযোগিতা তাকে ব্যয় সংকোচন, অপব্যয় হ্রাস, উৎপাদন উপকরণের খরচ কমাতে বাধ্য করে। ফলে পণ্য উৎপাদনের সর্বনিম্ন খরচই পণ্যের বাজার দামে পরিণত হয়। উপর্যুক্ত বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে এ যুক্তি উপস্থাপন করা যায় যে, উৎপাদক শ্রেণী মুনাফা দ্বারা তাড়িত হলেও প্রতিযোগিতা তাদের অতিরিক্ত দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ থেকে নিয়ন্ত্রণ রাখে এবং এভাবে ভোক্তা তথা সমাজের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে, পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থা হচ্ছে এক ধরনের বাইরের হস্তক্ষেপবিহীন একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা যাতে অপচয়, শোষণ বা অতিরিক্ত মুনাফার কোনো অবকাশ নেই। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও মুনাফার আর্কষণ উদ্যোক্তা শ্রেণীকে অধিকতর দক্ষতা ও দ্রব্যসামগ্রীর মান উন্নয়নে উজ্জীবিত করে। রাশিয়া, পূর্ব ইউরোপের দেশসমূহ এবং চীনের ন্যায় সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতেও এ উপলদ্ধি অধিকতর স্বীকৃতি লাভ করছে। সরকারি খাতের শিল্পসমূহের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও বিশৃঙ্খলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহও অধিকতর দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন শিল্পবিকাশের দিকে বেশ ঝুঁকে পড়েছে।

ব্যক্তিমালিকানাধীন শিল্প ও মুনাফার ভিত্তিতে দেশের শিল্পকারখানার বিকাশ সমাজের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে- এ প্রতিপাদ্যটির সফলতার জন্য কতকগুলো পূর্বশর্ত রয়েছে। তা হচ্ছে, প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ, সামাজিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্ণীত মূল্যবোধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং সরকারের কার্যকর তত্ত্বাবধায়ক ভূমিকা।

সুস্থ প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র অধিকতর কর্মপ্রচেষ্টা ও কর্মদক্ষতা, জন্য অত্যাবশ্যক নয়, বরং মুনাফা অর্জনের আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যও অতীব প্রয়োজনীয়। প্রতিযোগিতা তখনই সুস্থ বলে বিবেচিত হবে, যখন তা অন্য উদ্যোক্তাকে বাজার থেকে উৎখাতের সংকীর্ণ স্বার্থবুদ্ধি হতে উদ্ভূত না হয়ে পণ্যের মান, সেবা বা দক্ষতার ক্ষেত্রে অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবার মানসিকতা দ্বারা উজ্জীবিত হবে। সুস্থ প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র অধিকতর কর্মপ্রচেষ্টা ও কর্মদক্ষতার জন্য আবশ্যক। যদি অসাধু ও দুর্নীতিপরায়ণ বুদ্ধি ও পদ্ধতি দ্বারা প্রতিযোগীরা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন এবং তাদের মনমানসিকতা এ ধরনের নেতিবাচক হীনবুদ্ধি দ্বারা চালিত হয়, তবে সে প্রতিযোগিতাকে সুস্থ প্রতিযোগিতা বলা যায় না। এ ধরনের প্রতিযোগিতা প্রতিযোগী উৎপাদকের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাবের বদলে জিঘাংসার সৃষ্টি করবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, সামাজিক ডারউইনবাদের সর্বগ্রাসী প্রতিক্রিয়ায় প্রত্যেক উদ্যোক্তা প্রতিযোগী অন্য প্রতিযোগীকে বাজার হতে উৎখাতের প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়। তা সম্ভব না হলে সকল উদ্যোক্তা-উৎপাদকশ্রেণী ভোক্তাশ্রেণীকে শোষণের উদ্দেশ্যে অসাধু গাঁটছড়ায় মিলিত হয়। উদ্যোক্তাশ্রেণীর মাঝে অসুস্থ প্রতিযোগিতা প্রকৃতপক্ষে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করে এবং সব মানুষের বিশেষ করে ভোক্তাশ্রেণীর জন্য অকল্যাণ ডেকে আনে। অসাধু প্রতিযোগীদের মধ্যে স্বার্থের কারণে ঐক্যবদ্ধতা একচেটিয়া বাজারের জন্ম দেয় যা শোষণের দুয়ারকে উন্মোচিত করে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বাজার হতে উৎখাতের মাধ্যমে বড় বড় উৎপাদক ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে যোগসাজস করে ক্রমশ বাজার অর্থনীতিতে শোষণের একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করে।

উল্লেখ্য, প্রতিযোগিতা কার্যকর হতে পারে যদি একই পণ্যের বিপুল পরিমাণ উৎপাদক প্রতিষ্ঠান থাকে এবং কারো পক্ষে এককভাবে দ্রব্যমূল্যের উপর প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব না হয়। তাছাড়া উৎপাদক শ্রেণীকে সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রত শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। যদি সমাজে কোনো প্রকার নৈতিক মুল্যবোধ ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত ও কার্যকর না থাকে, যদি স্রষ্টার সামনে জবাবদিহিতার ভয় না থাকে, তবে অধিক মুনাফা অর্জনের লোভ বাজারে নানাবিধ কার্যকলাপের জন্ম দেবে। অসুস্থ প্রতিযোগিতার অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে বাজার দখলের জন্য নানারকম চটকদার বিজ্ঞাপনী প্রচারণা। তাছাড়া রয়েছে একই পণ্যের ক্ষেত্রে সম্মিলিত গবেষণার পরিবর্তে প্রত্যেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আলাদা গবেষণা কার্যক্রমের ফলে খরচ বৃদ্ধির দিক। প্রতিযোগিতামূলক পুঁজিবাদী বাজার ব্যবস্থার এই সব নেতিবাচক দিকের ফলে যে কোনো পণ্যের সামাজিক ব্যয় বৃদ্ধিই স্বাভাবিক ঘটনা।

সরকারি আইনকানুন ও বিধিনিষেধ নৈতিক অনুভূতি ও দায়িত্ববোধের স্থান দখল করতে পারে না। নৈতিক দায়িত্বানুভূতির বিকল্প না হলেও সরকারি বিধিনিষেধের অবশ্যই কিছু কার্যকারিতা রয়েছে যা উৎপাদকশ্রেণীর যথেচ্ছ আচরণকে লাগাম টেনে ধরে-একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু নৈতিক মূল্যবোধের প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্য সমাজে যদি সর্বোচ্চ স্তরে বিরাজ না করে, তবে নানারূপ অসাধুর ব্যবসায়িক কলাকৌশল প্রতিরোধের জন্য আইনের পর আইন রচনা করতে হবে, এমনকি আইনের ফাঁকফোর রোধের জন্য আবার নতুন করে আইন রচনা করতে হবে, যার জন্য সমাজের খরচের দিকটি কোনভাবে কম হবার কথা নয়। এতদসত্ত্বেও আইন ফাঁকি দেবার প্রবণতা ও উৎকোচ প্রদানের মাধ্যমে আইনের বাধা ডিঙিয়ে যাবার প্রচেষ্টা কম হবে মনে করারও কারণ নেই। অর্থাৎ একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সুচারু ও ন্যায়ভিত্তিক পরিচালিত হবার জন্য সামাজিক মূল্যবোধ ও নৈতিক আচরণের কোনো বিকল্প নেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন