hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

৮৯
নিরাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি
উন্নয়ন অর্থনীতিবিদের সামাজিক-ডারউইনীয় এবং উচ্চতর বর্ণ ও জাতিসত্তার তত্ত্বের প্রতি যুক্তিহীন বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তারা মূলত অশ্বেতাঙ্গ ও অইউরোপীয় দরিদ্র দেশসমূহের দারিদ্র্য, অনুন্নয়ন ও রাজনৈতিক গোলামীর কার্যকারণকে ঐসব দেশ ও জনগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও জাতিসত্তার তথাকথিত নিম্নমানের ফসল হিসেবে চিহিন্ত করেছে। ফলে উন্নয়ন সম্পর্কে এক ধরনের নিরাশা জন্ম লাভ করেছে। যুক্তি দেখানো হয় যে, এ দেশসমূহ উন্নয়নের পূর্বশর্তগুলো পূরণ করেনি। এ দেশসমূহের সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধসমূহকে উন্নয়নের উপর্যৃক্ত পূর্বশর্তসমূহ বিনির্মাণের অনুপযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এমনকি জাতিসংঘের একটি কমিটি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত একটি রিপোর্টেও এ ধরনের যুক্তিহীন উচ্চতর বর্ণ ও জাতিসত্ত্বা কেন্দ্রিক মতবাদেরর প্রতি পক্ষপাতিত্ব প্রদর্শন করা হয়েছে। ধারণা দেয়া হয়েছে যে, পাশ্চাত্যেও পুঁজিবাদী দেশসমূহের অনুসরণে দরিদ্র দেশসমূহের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং আইনগত কাঠামোর সংস্কার সাধন করা না হলে উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞদের মাঝেও একই ধরনের অভিমত প্রচলিত যে, কেবলমাত্র উন্নত দেশসমূহের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক দর্শন ও কাঠামো অনুসরণর মাধ্যমেই দরিদ্র দেশের পক্ষে পুঁজি গঠন, উৎপাদন ও ভোগের লক্ষ্যমাত্র অর্জন সম্ভব। ‘পঞ্চাশ দশকের প্রথম দিকে রচিত বিশ্ব ব্যাংকের ১৩টি রিপোর্ট পড়ে কিন্ডেলবার্জার এবং স্পেঞ্জলার এ ধঅরণাই লাভ করেছেন। এদর মধ্যে সবচেয়ে চাঁচাছোলা বক্তব্য দিয়েছেন ইউজিনি স্টেলের; তিনি বলেছেন যে, কেবলমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়ন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমেই দরিদ্র দেশসমূহের উন্নয়ন সম্ভব। এসব দেশকে পশ্চিমের মূল্যবোধ ও সমাজ কাঠামো গ্রহণ করতে হবে। এমনকি পশ্চিমা অর্থনীতিবিদদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম বর্ণবাদী অর্থনীতিবিদ মিরডারও মনে করেন উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য শর্তাবলী, যা ‘আধুনিক ধ্যানধারণা’ নামে অভিহিত, তা দরিদ্র দেশসমূহের নিকট ‘বিজাতীয় ও ভিনদেশী’। তাই দেখা যায় প্রাধান্য বিস্তারকারী ধারণার অনুসৃতি ব্যতিরেকে উন্নয়ন সম্ভব নয়। আর এ আধুনিকতা মানে শুধুমাত্র আধুনিক প্রযুক্তি, আধুনিক বাজারজাতকরণ ও ব্যবস্থাপনার কৌশল গ্রহণই নয়, বরং পশ্চিমা জীবন পদ্ধতি ও বস্তুবাদী মূল্যবোধের আত্মীকরণও।

প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্তসমূহের ‘অনুপস্থিতি তত্ত্বের’ উপর অগ্রহণযোগ্যভাবে অত্যধিক জোর প্রদান উন্নয়ন সাহিত্যে ‘দারিদ্যের দুষ্টচক্র’ ধারণাকে গ্রহণযোগ্যতা দান করেছে। নার্কস একে এভাবে প্রকাশ করেছেন, ‘বৃত্তাকার শক্তিসমূহ একে অপরের উপর এমনভাবে ক্রিয়া-বিক্রিয়া করে যাতে একটি দরিদ্র দেশ দরিদ্রই থেকে যায়-একটি দেশ দরিদ্র থাকার কারণ এটি দরিদ্র”। ‘দারিদ্যের দুষ্টচক্র’ ধারণাটি এমন সংক্রামক রূপ লাভ করে যে, প্রত্যেক উন্নয়ন অর্থনীতিবিদই এ ধারণার জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়ে পড়েছে। অত্যধিক জনসংখ্যা, স্বল্প আয়, স্বল্প সঞ্চয়, স্বল্প বিনিয়োগ, স্বল্প রপ্তানি ও স্বল্প প্রবৃদ্ধির দুষ্টচক্র অতিক্রম করা দরিদ্র দেশগুলোর জন্য সম্ভব হবে না, যেহেতু এদুলো সৃষ্টি হয়েছে ‘আধুনিক ধ্যানধারণা’র অভাবে-এ ধারণাটিই প্রসার লাভ করেছে। তাই এ দেশগুলো নার্কস কথিত ‘অনতিক্রমনীয় নিম্নমাত্রার ইক্যুইলিব্রিয়ামের’ ঘূর্ণবর্তে ঘুরতে থাকবে। এমনকি ভোগকে সংকুচিত করে তারা যেটুকু সঞ্চয় করে, তাকেও তারা পুঁজিতে পরিণত করতে পারে না। কারণ পুঁজিতে পরিণত করার মাধ্যম রপ্তানি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বৃদ্ধিতে তারা অবম। এ দেশগুলো দু’টি ঘাটতি পৌরণে অবম- সঞ্চয়-বিনিয়োগ এবং আমদানি-রপ্তানি ঘাটতি। ফলে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র হতে পরিত্রাণের আশা এদেশগুলোতে সুদূর পরাহত।

‘প্রবৃদ্ধির ধাপ (Stage of growth) তত্ত্বও অন্তর্নিহিতভাবে ‘দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র’ তত্ত্বকে স্বীকার করে নেয়। এ তত্ত্বগুলোতে উন্নয়নের জন্য যে মৌলিক উপাদানগুলোকে ধরা হয়, তা উন্নয়নের এক ধাপ থেকে অন্য ধাপে যেতে বাধা দেয়। বাধা ও অনগগ্রসরতার চক্রটি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকে। উন্নয়ন অর্থনীতি সম্পর্কিত অধিকাংশ লেখাতেই আমরা দেখতে পাই উন্নয়নশীল দেশসমূহের প্রবৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিরাজ করছে এক ধরনের গভীর হতাশা। যেহেতু পাশ্চাত্য জীবনবোধ ও ধরন ব্যতীত অন্য যে কোনো জীবনব্যবস্থা ও পদ্ধতিকে দরে নেয়া হয়েছে উন্নয়নের পরিপন্থি হিসেবে, তাই দরিদ্র দেশসমূহের সীতিম সম্পদ পরিসীমা ও জীবনবোধের সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের কোনো প্রকার চিন্তভাবনা করা হয়নি। পঞ্চাশ দশকের প্রথম দিকে উইলিয়ামসন এক লেখায় স্বীকার করেছেন যে, ‘স্থির মডেল এবং পশ্চিমা সাংস্কৃতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর ধারণা দ্বারা অর্থনীতিবিদগণ এতই আচ্ছন্ন যে তাদের পক্ষে পেশাগতভাবে উন্নয়ন অর্থনীতির বিষয়ে সঠিক ভাবনা ও অবদান রাখার প্রত্যাশা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েচে। অভিজ্ঞতা হতে সুস্পষ্টভাবে দেখা যায় যে, উন্নয়ন সম্পর্কে এরূপ হতাশা ভ্রান্তির ফসল। কেননা ভিন্ন ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে, অবস্থা ও সম্পদভিত্তিক হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন দেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নতি সাধিত হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও দারিদ্র্য রয়ে গেছে এবং প্রবৃদ্ধির ফসল মুষ্টিমেয় কিছু হাতে জমা হয়েছে। উপরন্তু উন্নয়নশীল দেশসমূহে দেখা দিয়েছে বিপুল বহির্বাণিজ্য ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক ভারসাম্যহীনতা। কেন এমনটি হয়েছে তা পরবর্তী আলোচনা হতে সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন