hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

১২
মাকাসিদ আল-শরীয়াহ
‘মাকাসিদ আল-শরীয়াহ’ (এ পুস্তকে সংক্ষেপে ‘মাকাসিদ’ ব্যবহার করা হবে) হচ্ছে শরীয়াহর সীমার মধ্যে থেকে ‘ফালাহ’ ও হায়াতে তাইয়্যেবা বাস্তবায়নের জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন তার সব কিছুই। শুরুতে গাজালীর যে উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে তাতে দেখা যায়, মাকাসিদ হচ্ছে ঈমান, জীবন, বু্দ্ধিবৃত্তি, বংশধর ও সম্পদের সংরক্ষণ ও উন্নতি সাধনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার সবই।

গাজালী বিজ্ঞতার সাথেই মাকাসিদের তালিকায় ঈমানকে শীর্ষে রেখেছেন। কারণ ইসলামী বিষয়বস্তুতে ঈমান হচ্ছে মানবকল্যাণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ঈমান মানুষের সম্পর্ককে একটি যথার্থ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করে এবং মানুষের সকল কল্যাণ নিশ্চিত করতে সহায়তা করার জন্য পরস্পরের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ ও সযত্ন মিথস্ক্রিয়ায় সক্ষম করে তোলে। এতে আরো রয়েছে একটি নৈতিক পরিশোধন পদ্ধতি (moral filter) যাতে ভ্রাতৃত্ব ও আর্থ-সামাজিক সুবিচারের মানদণ্ড অনুসারে সম্পদের বরাদ্দ ও বিতরণ করা হয়। এছাড়া একটি উদ্বুদ্ধকরণ ব্যবস্থায় (motivating system) চাহিদা পূরণ এবং আয় ও সম্পদের সুষম বণ্টনের লক্ষ্যের সাথে তাকে সম্পৃক্ত করে। মানবীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তথা গৃহস্থালী, সংস্থার বোর্ড মিটিং, বাজার অথবা কেন্দ্রিয় রাজনৈতিক পরিষদ ইত্যাদি নির্বিশেষে সকল ক্ষেত্রে ঈমানকে অনুপ্রবিষ্ট করা না গেলে সম্পদের বরাদ্দ ও বণ্টনের ক্ষেত্রে দক্ষতা ও ন্যায়পরতা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না এবং সামষ্টিক অর্থনীতিতে ভারসাম্যহীনতা ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা অথবা অপরাধ, বিবাদ-বিসংবাদ, উত্তেজনা ও অস্থিরতার বিভিন্ন লক্ষণসমূহ দূর করা যাবে না।

নৈতিক পরিশোধনের পথ অবলম্বন ব্যতীত দক্ষতা ও ন্যায়পরতার সংজ্ঞা নির্ণয় সম্ভব নয়। ফ্রাঙ্ক নাইট যথার্থ বলেছেন, ভৌত বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হলো ‘বস্তু না সৃষ্টি করা যায়, না ধ্বংস করা যায়’। ভৌত মাপকাঠিতে মোট আউটপুট (output) সর্বদাই ও ইনপুটের (inupt) সমান হবে। অতএব দক্ষতার সঠিক সংজ্ঞা আউটপুট ও ইনপুটের অনুপাতের মধ্যে নির্ণীত হবে না, বরং তা হবে কার্যকর আউটপুট (useful output) এবং মোট আউটপুট অথবা ইনপুটের অনুপাতের ভিত্তিতে। এর অর্থ হচ্ছে দক্ষতা পরিমাপের জন্য দরকার এর প্রয়োজনীয়তার (usefulness) পরিমাপ। পরবর্তীতে এ গ্রন্থে যুক্তি উপস্থাপিত হবে যে, যদি সকলের কল্যাণ সাধন উদ্দেশ্য হয়, তা হলে ব্যক্তিগত অগ্রাধিকার ও মূল্য কোনো পরিমাপক হতে পারে না। পরিপূরক হিসেবে সমাজসম্মত নৈতিক পরিশোধন পদ্ধতি প্রয়োজন। যদি নৈতিক মানদণ্ড ছাড়া দক্ষতা সংজ্ঞায়িত করা কঠিন হয়, তাহলে এসব ব্যতীত ন্যায়পরতার (equity) সংজ্ঞা নির্ণয় করা আরো কঠিন হবে।

গাজালী সম্পদকে তালিকার সর্বনিম্নে স্থান দিয়েছেন, কারণ তা নিজেই চূড়ান্ত বিষয় নয়; বরং সেটি হচ্ছে একটি মাধ্যম মাত্র যা মানবকল্যাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সম্পদ নিজে কোনো সাহায্য করতে পারে না, যদি না তার বরাদ্দ দক্ষতার সাথে এবং বণ্টন ন্যায়পরায়ণতার সাথে করা হয়। অভীষ্ট সম্পদ অর্জন এবং কেন্দ্রিয় রাজনৈতিক সংস্থা পরিচালনার জন্য কতিপয় নৈতিক মানদণ্ড প্রয়োজন, যার ইঙ্গিত আগেই দেয়া হয়েছে। যদি সম্পদ নিজেই একটি চূড়ান্ত বিষয় হয়, তাহলে তার পরিণাম হবে অবিচার, ভারসাম্যহীনতা ও পরিবেশগত অনাচার, যা অবশেষে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের অধিকাংশের কল্যাণকে সংকুচিত করবে। মধ্যবর্তী তিনটি লক্ষ্য-জীবন, বুদ্ধিবৃত্তি ও বংশধর-মানুষের নিজের সাথে সংশ্লিষ্ট, আর এসবের কল্যাণ সাধনই শরীয়াহর উদ্দেশ্য।

এ তিনটি বিষয়ের উন্নতির লক্ষ্যে যে নৈতিক প্রতিশ্রুতির সুস্টষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা সম্পদের বরাদ্দ ও বণ্টনের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেতে পারে। কিন্তু তা সেকুলের পরিবেশে কেবলমাত্র মূল্য ও বাজারের ক্ষেত্রে প্রয়োগ সম্ভব নয়। কেবল মাত্র ধনী ও উচ্চবিত্তদের নয়, বরং সকল মানুষের জীবন, বুদ্ধিবৃত্তি ও বংশধরদের সংরক্ষণ ও উন্নতি বিধান করতে হবে। সকলের ক্ষেত্রে এ তিনটি জিনিসের উন্নতির জন্য যা কিছু করা দরকার, তা একটি ‘প্রয়োজন’ (need) হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তা পূরণ করার জন্য সম্ভাব্য সব কিছু করতে হবে। যেমন-পর্যাপ্ত পুষ্টি, বস্ত্র, আধ্যাত্মিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতির জন্য যথাযথ পরিচর্যা ও শিক্ষা, বাসস্থান, একটি সুষ্ঠু ও ভৌত পরিবেশ (ক্রমহাসমান উত্তেজনা, অপরাধ ও দূষণ), চিকিৎসা সুবিধা, আরামদায়ক পরিবহন, সকল আবশ্যকীয় পারিবারিক ও সামাজিক বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য যথেষ্ট অবকাশ এবং সৎ পন্থায় উপার্জনের সুযোগ থাকতে হবে। সম্পদের বরাদ্দ ও বণ্টনের অবশ্যই একটা নির্দেশনা থাকতে হবে, যা এতসব বিষয়ে ও অন্যান্য আবশ্যকীয় প্রয়োজন পূরণে সাহায্য করবে। এ সকল প্রয়োজন পূরণের ফলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উভয়ই শান্তিপূর্ণ, স্বস্তিকর, সুস্থ ও দক্ষ হিসেবে গড়ে উঠবে এবং ‘ফালাহ’ ও ‘হায়াতে তাইয়্যেবা’ বাস্তবায়ন ও তাকে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে ব্যাপক অবদান রাখতে সক্ষম হয়ে উঠবে। যে বরাদ্দ ও বণ্টন ‘ফালাহ’ ও ‘হায়াতে তাইয়্যেবা’ বাস্তবায়নে সাহায্য করে না, যা উপরে উল্লিখিত ইবন আল কাইয়্যেমের উদ্ধৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং যা বিজ্ঞতার পরিচায়ক নয়, তাকে দক্ষ ও ন্যায়পরায়ণ বলে বিবেচনা করা যায় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন