hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

৩৫
বিকৃত অগ্রাধিকার
যখন প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণের অভাবে বাজার অর্থনীতিতে সন্তোষজনক অবস্থা বিরাজ করতে দেখা যায় না, তখন বাজারে উৎপাদনের বেলায় অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিকৃতি ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। আয় ও সম্পদের বিশাল বৈষম্য ও সামাজিক ঐকমত্যহীনতার কারণে যখন সামাজিক অগ্রাধিকার বাজার অর্থনীতিতে কোনো স্থান পায় না, তখন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সম্পদের যে অদক্ষ ও অন্যায্য ব্যবহার ঘটবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ধনিক শ্রেণীর বিশাল ক্রয় ক্ষমতার বদৌলতে তাদের খামখেয়ালিপূর্ণ বিলাসিতা পূরণের জন্য সীমিত সম্পদের অপচয়ের কারণে গরীব মানুষ অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজন পূরণ হতে বঞ্চিত থাকে। প্রফেসর স্যামুয়েলসন তাই উল্লেখ করেছেন, ‘লেইজে ফেয়ারের তথাকথিত প্রতিযোগিতামূলক বাজার অর্থনীতি ক্ষুধার্ত, বিকলাঙ্গ ও অপুষ্ট শিশুর জন্ম দেয়, যারা বড় হয়ে তাদের মতো পুষ্টিহীনতায় আক্রান্ত শিশুর জন্ম দেবে এতে আশ্চর্যের কিছু নেই’। তাঁর ভাষায়, প্রজন্মের পর প্রজন্ম এমনকি সমগ্রভবিষ্যৎ জুড়ে এই লেইজে ফেয়ার পুঁজিবাদ আয় ও সম্পদ বৈষম্যের নিদর্শক জ্যামিতিক রেখাকে (Lorenz curves) অপ্রতিহতভাবে চালিয়ে নেবে’। তিনি আরো বলেন, “অর্থনীতিবিদ এডাম স্মিথের কোনো অধিকার নেই একথা বলার যে, মুক্তবাজার অর্থনীতির ‘অদৃশ্য হাত’ অন্ধ ব্যক্তিস্বার্থ দ্বারা চালিত মানুষের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে শেষ পর্যন্ত সামাজিক স্বার্থ বিকাশ সাধনের দিকে নিয়ে যাবে। অর্থনীতিবিদ এডাম স্মিথ এ ধরনের প্রতিপাদ্যের অনুকূলে কোনো প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি। শুধু তাই নয় ১৭৭৬ সাল হতে এ পর্যন্ত এ ধরনের ধারণার সপক্ষে কেউ কোনো প্রমাণ্য দলিল পেশ করতে পারেনি”। The Affluent Society নামক গ্রন্থে গলব্রেথ অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে অর্থনৈতিক সম্পদের বিভিন্ন উৎপাদন খাতে বণ্টন ব্যবস্থা অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট; সেখানে ধনিক শ্রেণীর মাঝে বিভিন্নভাবে সৃষ্ট কৃত্রিম প্রয়োজন ও চাকচিক্যময় অপ্রয়োজনীয় ভোগবিলাসের খাতে বিপুল সম্পদের অপচয় এমনভাবে ঘটছে যাতে সম্পদভান্ডারে টান পড়ে গেছে। ফলে মৌলিক ও অত্যাবশ্যক প্রয়োজনসমূহ পূরণের জন্য সম্পদের সংকুলান করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষা, গৃহায়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য সেবাখাতসমূহ যার সাথে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের বর্তমান ও ভবিষ্যতের কল্যাণ ও অগ্রগতি জড়িত তা চরমভাবে অবহেলিত হচ্ছে।

সামাজিক অগ্রাধিকারসমূহকে বাজার অর্থনীতিতে প্রতিফলিত করার উপায় উদ্ভাবনের কোনো পন্থা রয়েছে কি? এ প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, উপযোগবাদী দর্শনভিত্তিক প্রচলিত অর্থনৈতিক মতবাদ যার ভিত্তি সামাজিক ডারউইনবাদ বা কল্যাণ অর্থনীতি- যেটাই হোক না কেন, উপর্যুক্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে অক্ষম। এ মতবাদে মানুষের জন্য কোনো নির্দেশনা নেই এবং বিশ্বব্যবস্থার সেকুলার ব্যাখ্যার প্রেক্ষাপটে বাজার শক্তিসমূহই অর্থনৈতিক সম্পদের বিলিবণ্টনে একমাত্র নিয়ামক শক্তি হবে, যৌক্তিকভাবে একথা মেনে নেয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। কেননা ধর্মীয় নির্দেশনার অনুপস্থিতিতে যদি কোনো কিছুর উপর নির্ভর করতে হয়, তবে একমাত্র বিকল্প হিসেবে মেনে নিতে হয় বাজার শক্তিসমূহের ক্রিয়া-বিক্রিয়ার উপর নির্ভরতা। কারণ যদি কোনো ব্যক্তি, দল বা শ্রেণীকে সামাজিক অগ্রাধিকার নির্ণয়ের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়, তবে তাদের ইচ্ছা অনিচ্ছা, পছন্দ-অপছন্দ তারা সমগ্র সমাজের উপর চাপিয়ে দেবে। এমতাবস্থায় বাজার শক্তিসমূহের উপর নির্ভরতাই তুলনামূলকভাবে শ্রেয়তর বিবেচিত হওয়া স্বাভাবিক। সামাজিক অগ্রাধিকার নির্ণয়ের ঐকমত্য সৃষ্টির কোনো পন্থা উদ্ভাবনের নীতিতে পুঁজিবাদী অর্থনীতির বাজারব্যবস্থা স্বীকার করে না। যেহেতু উচিত বা অনুচিত সম্পর্কে বাজার অর্থনীতিতে কোনো নির্দেশনা নেই, তাই স্বাভাবিকভাবে মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বীয় স্বার্থকে সর্বতোভাবে পরিপূরণের দিকে ধাবিত করে। সমাজের সকল মানুষের কল্যাণ ও স্বার্থ নিশ্চিত হচ্ছে কিনা-এ ধরনের মূল্যবোধভিত্তিক বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক দর্শনে স্বীকৃত নয় বিধায় সমগ্র উৎপাদন ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সমাজের বিভিন্ন মানুষের স্ব-স্ব অর্থনৈতিক স্বার্থকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে থাকে। অর্থনীতিবিদ শুমেকার (Schumacher) এর ভাষায়, বাজার অর্থনীতি প্রকৃত প্রস্তাবে সামাজিক অঙ্গীকারমুক্তভাবেই ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দান করে। ক্রেতা বা বিক্রেতা কেউই মুক্তবাজার অর্থনীতিতে নিজেদের স্বার্থ ছাড়া অন্য কোনো কিছুর প্রতি দায়বদ্ধ নয়। অধিকন্তু পুঁজিবাদ ব্যক্তিগত অগ্রাধিকারকে সামাজিক রূপ দান করে এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই সম্পদের সামাজিক পুনবণ্টনের বিরোধী। ফলে দেখা যায়, বাজার অর্থনীতির চাহিদা ও সরবরাহভিত্তিক ত্রুটিপূর্ণ দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ ব্যবস্থা সরকারের কিঞ্চিত হস্তেক্ষেপের সাথে যুক্ত হয়ে মানুষের আত্মস্বার্থকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডকে অগ্রাধিকারের খাতে প্রবাহিত করার ফল হিসেবে সমাজের সকলের জন্য অভাব পূরণ ভিত্তিক কাঠামোগত পরিবর্তন অর্থনীতিতে আনা সম্ভব হয় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন