hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

১৩৪
হারানো সুযোগ
পরাধীনতা থেকে মুক্তি তথা জাতীয় স্বাধীনতা অর্জন মুসলমানদের মধ্যে আশার আলো সঞ্চার করেছিল। আশা করা হয়েছিল, জাতীয় সরকার ইসলামী মূল্যবোধ ও উন্নয়ন দর্শনের ভিত্তিতে জনগণের কল্যাণের জন্য নিষ্ঠার সাথে কাজ করবে। কিন্তু এ আশা পূরণ হয়নি। স্বাধীনতা লাভ শুধুমাত্র বিদেশী শাসকদেরই অপসারণ করল। অধিকাংশ মুসলিম দেশেই তাদের স্থঅন দখল করে নেয় সামরিক স্বৈরাচার ও জনসমর্থনহীন শাসকগোষ্ঠী। জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি এদের কোনো সহমর্মিতা ছিল না। এদের কেউ কেউ সমাজতন্ত্র বা জাতীয় প্রতিরক্ষার নামে সমগ্র অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বার প্রানেত্ম নিয়ে আসে। স্বাধীনতা সত্ত্বেও ঔপনিবেশিক অতীতের অপছায়া সেকুলার, প্রতারক ও দুর্নীতিপরায়ণ আমলাতন্ত্রের মাঝে মূর্ত হয়ে উঠল। ভূস্বামী বৃহৎ শিল্প পরিবার ও সামরিকতন্ত্রের কায়েমী স্বার্থের সাথে আমলাতন্ত্র গাঁটছড়া বাঁধল।

স্বাধীনতার পর উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়নের ভার পড়ল আমলাতন্ত্রের উপর। কিন্তু এ দায়িত্ব সূচারুরূপে সম্পন্ন হয়নি। ইসলাম বা এর বৈপস্নবিক আর্থ-সামাজিক ন্যায়নীতির কর্মসূচি প্রণয়ন একটি কঠিন কাজ, তার তুলনায় অনেক বেশি সহজ অন্ধভাবে পাশ্চাত্যের অর্থনৈতিক পন্ডিতদের ব্যবস্থাপত্র অনুসরণ করা। উন্নয়ন অর্থনীতি রচিত হয়েছে পাশ্চাত্যের সেকুলারতার মতবাদের আবহে। আর্থ-সামাজিক ন্যায়নীতি ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রতি এর কোনো সুদৃঢ় অঙ্গীকার নেই। পরস্পর বিরোধী বিভিন্ন অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপত্রকে নৈতিক মানদন্দের ছাকনিতে ছেকে সঠিক পন্থা তথা স্থিতি ও সমতার ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথ বেছে নেয়ার কোনো কার্যকর প্রক্রিয়া পাশ্চাত্য অর্থনীতির মধ্যে স্বভাবত বিদ্যমান নেই। তাই অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো সমাজতন্ত্র ও মুক্তবাজার অর্থনীতি লিবারেলিজম ও এন্টি-লিবারেলিজমের ঢেউয়ের দোলায় দোলুল্যমান হয়ে রইল মুসলিম দেশসমূহের অনুসৃত নীতি। সৃষ্টি হলো অনিশ্চয়তা ও অসামঞ্জস্যতা। অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হলো এসব দেশের অর্থনীতির। অর্থনৈতিক উন্নয়নকে তরান্বিত করার জন্য এসব দেশে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা হলো। কিন্তু অবাঞ্ছিত ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয়কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে নৈতিক বিবেচনা প্রয়োগ করা প্রয়োজন ছিল তা অবহেলা করা হলো। ফলশ্রুতিতে সৃষ্টি হলো সম্পদ ঘাটতি। এ ঘাটতি পূরণের জন্য মুদ্রা সরবারাহ বৃদ্ধি এবং অভ্যনত্মরীণ ও বৈদেশিক ঋণের দ্বারস্থ হওয়াকে ইতিবাচক পদড়্গেপ বলে মনে করা হলো। যারা এ ধরনের অসমীচীন নীতির বিরোধিতা করল তাদেরকে আধুনিকতার বিরোধী হিসেবে এমনকি মৌলবাদী নীতির বিরোধীতা করল তাদেরকে আধুনিকতার বিােধী হিসেবে এমনকি মৌলবাদী অভিধায়, অভিহিত করা হলো। ফলেই যদি বৃড়্গের পরিচয় হয়, তবে সেকুলার উন্নয়ন অর্থনীতি যে ফলের জন্ম দিলো, তা ছিল তিক্ত ও ব্যয়বহুল, যা প্রসব করল বিশাল সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও বৈদেশিক লেনদেন অসমতা, বৈদেশিক ঋণের গুরম্নভার এবং সামাজিক অস্থিরতা।

স্বাধীনতা লগ্নে দিগনত্মরেখায় সাধারণ মানুষ সুবহে সাদেরকে যে কিরণ রেখা দেখতে পেয়েছিল, তা ভোরের আলোয় প্রস্ফূটিত হয়ে উঠল না। তাদের সমস্যার জগদ্দল পাথর আগের মতোই রয়ে গেল। জীবনের ন্যূনতম প্রয়োজনের ঘানি তারা টানতে লাগল। বৈষম্য আরো উর্ধ্বগামী হলো। আর্থ-সামাজিক ইনসাফ প্রতিষ্ঠা স্বপ্নই রয়ে গেল। অতিরিক্ত বাজেটের ঘাটতির রথ টেনে নেয়ার জন্য দেদার টাকা ছাপাতে হলো। মুদ্রাস্ফীতির দানব গ্রাস করে নিল মুসলিম জনপদসমূহকে। বিশাল বৈদেশিক লেনদেন ঘাটতি বৈদেশিক ঋণের উপর নির্ভরশীলতা বাড়িয়ে তুলল। বৈদেশিক ঋণ ও সাহায্যদাতা গোষ্ঠীর যাতাকলের ফাঁদে আটকে পড়ল মুসলিম দেশসমূহ। এসব বিদেশী পুঁজির বেনিয়াদের রয়েছে ইসলামের বিরম্নদ্ধে ক্রুসেডি মনোভাব। ইসলামী নীতিমালা ও কর্মসূচি অবলম্বনকে প্রতিহত করার জন্য এমন কোনো চাপ নেই, যা তারা প্রয়োগ করে না। মুসলিম দেশসমূহে প্রবৃদ্ধি, ন্যায়নীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশলিতা আনয়নে ইসলামের যে বিপুল সম্ভাবনাময় ভ্থমিকা রয়েছে তা উপলদ্ধি করার শক্তি তাদের ছিল না।

একটি শানিত্মবাদী ও সমৃদ্ধশালী ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন পূর্ণ হলো না। এমনকি অধিকাংশ মুসরিম দেশ কোন প থে ধাবিত হচ্ছে, কী তাদের নিয়তি, তাও অনির্ধারিত রয়ে গেল। ইসলামের প্রতি আনত্মরিকতাহীন যে মৌখিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়, তাতে গণমানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার কোনো প্রতিফলন নেই। অথচ হতাশ জনগণ সমাজ পরিবর্তনের জন্য উদগ্রীব। সময়ের দাবি ও দেয়ালের লিখন পড়ে নেবার জন্য মুসলিম নেতৃত্বের এটাই উপযুক্ত সময়। নেতৃবৃন্দের এখন প্রয়োজন জুলুম উৎখাতের জন্য ইসলামী পুনর্জাগরণের লড়্গ্যে কাজ করা। সময়ের এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যারা সাড়া দেবে, তারা জনতার রম্নদ্ররোষ হতে রক্ষা পাবে। ইতিহাসে নিজেদের জন্য উজ্জ্বল অবয় স্থান অধিকার করে নিতে পারবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, যেসব মুসলিম নেতৃবৃন্দ ইসলামের পক্ষে কথা বলেন, তারাও ইসলামী শাসিত্ম বা ফৌজদারী ব্যবস্থা প্রবর্তনের বাইরে আর কোনো কথা বলেন না। ফলে কঠোর শাসিত্ম প্রদানের ভয়ঙ্কর রূপের আড়ালে মানবতাবাদী ইসলামের শানিত্মময় তরম্নছায়া হারিয়ে যেয়ে মানুষের মনে প্রবল ভ্রানিত্মর সৃষ্টি হয়েছে। ইসলামের ধারণা ও প্রয়োজনীয় নীতির প্রতি এতে সামান্যতম সুবিচারও করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে ইসলামের ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য শাসক শ্রেণী উল্লেখযোগ্য কিছুই করেনি। ইসলামের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, হক, ইনসাফ ও আর্থ-সামাজিক ন্যায়বিচারের সুষম কাঠামো প্রতিষ্ঠা, কিন্তু তার পূর্বেই শাসিত্মর ব্যবস্থার কথা বলা বা প্রবর্তন করা বস্তুত ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেবারই সমতুল্য।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন