hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

৭৭
(ঘ) রাজস্বনীতি
সরকারি ব্যয়

রাজস্বনীতি কল্যাণ রাষ্ট্রের প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠল। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাজস্বনীতি অঙ্গ হিসেবে সরকারি ব্যয়, প্রগতিশীল করব্যবস্থা ও সরকারি ঋণকে ব্যবহার করা হলো। প্রতিরক্ষা, জনপ্রশাসন ও কতিপয় সেবা সরবরাহের মতো গতানুগতিক ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয়কে লেইজে-ফেয়ার রাষ্ট্র ব্যবস্থাও স্বীকার করে নিয়েছে। কল্যাণ রাষ্ট্রে সরকারি ব্যয়ের পরিসীমাকে প্রসারিত করা হয়েছে, যাতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্থিতিশীলতা ও অধিকতর আয়-ন্যায়পরায়নতা অর্জিত হতে পারে। এসব লক্ষ্য অর্জনে ক্রমবর্ধমান সরকারি দায়িত্বের পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চাশ বছরে সরকারি ব্যয় ও কর রাজস্বের মাত্রা বিপুলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বেকার ভাতার মতো সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা (Social Security Benefit), বয়স্ক ভাতা ও শিশু কল্যাণ ভাতার ন্যায় সামাজিক সাহায্য, অনুদান, খাদ্য ও জনগুরুত্বপূর্ণ খাতে ভর্তূকি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গৃহায়ন, যানবাহন প্রভৃতি গণসেবা সরবরাহের কারণে সরকারি ব্যয়ের মাত্রা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত উপযুক্ত সেবাসমূহ শুধুমাত্র গরীবদের প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, সমাজের অন্যান্য শ্রেণীকেও বর্তমানে এগুলো সরবরাহ করতে হয়।

ওইসিডি দেশসমূহে ১৯৬০ সাল হতে ১৯৮২ সালের মধ্যে জাতীয় আয়ের অংশ হিসেবে সরকারি ব্যয় গড়ে ১৫% বৃদ্ধি পেয়ে ৪১.৩% এ দাঁড়য়েছে। ১৯৮৮ সালে তা ৪০% এ নেমে আসে। ১৯৮২ সালে নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে যথাক্রমে জাতীয় আয়ের ৭২% এবং ৬৬% এ পৌছে। ১৯৮৮ সালে তা ৫৮% এবং ৫৯% এ হ্রাস পায়। সরকারি ব্যয় ছিল সর্বনিম্ন পর্যায়ে সুইজারল্যান্ডে (জাতীয় আয়ের ৩০%)। যুক্তরাষ্ট্র সুইডেনের মতো কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণার সাথে ততবেশি সম্পৃক্ত না হলেও সরকারি ব্যয় ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। ১৯৪০ সালে সরকারি ব্যয়ের মাত্রা ছিল জাতীয় আয়ের ১০%, তা ১৯৮৬ সালে ৩৭% এ পরিণত হয়। ১৯৮৮ সালে সরকারি ব্যয় সামান্য কমে ৩৬.৩% এসে দাঁড়ায়। শুধুমাত্র মন্দা ও বেকারত্বের সময় সরকারি ব্যয় বেড়েছে তা নয়, বরং পূর্ণ কর্মসংস্থানের সময়েও সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হয়। তাছাগা ভোগ্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে যে প্রত্যাশার বিস্ফোরণ ঘটেছে, অধিকতর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া তা পূরণ করা সম্ভব নয়।

ওইসিডি দেশসমূহের সরকারি ব্যয় কাঠামোতে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। একটি হচ্ছে প্রতিরক্ষা খাত ও কল্যাণমূলক সামাজিক সেবা দানের ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধি এবং সরকারি বিনিয়োগ ব্যয় হ্রাস। অপরটি হচ্ছে সামগ্রিক ব্যয় হ্রাসের ক্ষেত্রে অস্থিতিস্থাপকতা। যেহেতু অধিকাংশ দেশে প্রবৃদ্ধির হার বেকরত্বের হারের চেয়ে বেশি নয়, সরকারি ব্যয় হ্রাসের যে কোনো পদক্ষেপ সামাজিক বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক স্পর্শকাতরতা জন্ন দেবে। এসব কারণে সরকারি ব্যয় সকল মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। অবশ্য সরকার ব্যয় হ্রাসের জন্য চাপের সম্মুখীন হচ্ছে। কিন্তু আর্থ-সামাজিক লক্ষ্যসমূহের আলোকে অগ্রাধিকার নির্ধারণ ছাড়াই সরকার যখন যেখানে সুবিধা সেখানে সরকারি ব্যয় কাটছাঁটের নীতি অনুসরণ করেছে। তবে তাও বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। আসল জায়গায় কাটছাঁট না করে কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কাটঁছাটের প্রবণতাটাই লক্ষণীয়। সরকারি ব্যয় হ্রাসের খাত নির্ধারণ করতে গেলে সরকারি বিনিয়োগ ব্যয় এবং ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে কল্যাণ খাতে ব্যয় হ্রাস করার প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত হয়ে পড়ে। তবে দেশের প্রবৃদ্ধি সম্ভাবনা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক সমর্থন ব্যাহত না করে এরূপ সরকারি ব্যয় হ্রাসের কর্মসূচি দীর্ঘমেয়াদে অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। তাই দেখা যায় বিপরীতটাই ঘটেছে। এসব কারণে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অনেক দেশের সরকারের পক্ষে বিশাল সরকারি ব্যয় হ্রাস করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

পূর্ব-পশ্চিমের উত্তেজনা হ্রাসের ফলে শান্তির ফসল হিসেবে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় হ্রাস পেয়েছে, সম্পদের অবমুক্তি ঘটেছে। অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে সেই অবমুক্ত সম্পদের সঞ্চালনের ফলে উৎপাদন দক্ষতা ও ন্যায়পরায়নতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সাধারণভাবে সবাই যা অনুভব করেছে নিউইয়র্ক টাইমসের সাম্প্রতিক এক সম্পাদকীয় ভাষায় তা হচ্ছে, ‘পেন্টাগণ ব্যয় হ্রাস সমীচীন বলে মনে করলেও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তা করতে অনীহা প্রকাশ করবে যতক্ষণ না তারা নিশ্চিত হবেন যে, এতে পেন্টাগণের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে না’। এতে দেখা যায়, পেন্টাগণের বিশাল বাজেটের ব্যয় হ্রাস চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর স্বার্থেই করা হয় না। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গবেষণা, অবকাঠামো পরিবেশ প্রভৃতি খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দের মাধ্যমেও সামগ্রিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা সম্পাদন করা সম্ভব। কিন্তু কতিপয় বিশাল কর্পোরেশন যারা প্রভূত রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী তারা অধিকতর সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার পক্ষপাতী।

কৃষি খাতে ভর্তুকি কৃষি পণ্যের দাম উর্ধমুখী রাখার মাধ্যমে বৃহৎ কৃষকদের সহায়তা করে এবং খাদ্যশস্যের উচ্চমূল্যের দ্বারা দরিদ্র জনগণকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। কৃষিতে এ ভর্তুকির মাত্রা হ্রাস করা হলে সার্বিক অর্থনীতি লাভবান হবে। কিন্তু ওইসিডি দেশসমূহে ভর্তূকির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষি ভর্তূকি ১৪.৭% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৩৫.৪%, ইউরোপীয়ান কমিউনিটিতে ৪৪.৩% থেকে ৪৯.৩% এবং জাপানে ৬৪.৩% থেকে ৭৫%। ফলে করদাতাদের উপর যে বিপুল চাপ সৃষ্টি হয়েছে তার পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। জাপানে ভর্তূকির পরিমাণও প্রায় সমপরিমাণ। সম্প্রতি কৃষি সেক্টরে সংস্কার সত্ত্বেও ইইসিতে কৃষি ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। খাদ্যদ্রব্যের উচ্চ মূল্য এবং উৎপাদনে অদক্ষতা বিবেচনা করলে এ খাতে পরোক্ষ ব্যয় আরো বেশি দাঁড়াবে। সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যান হতে দেখা যায়, ওইসিডি দেশসমূহের করদাতা ও ভোক্তাদের কৃষি খাতে ভর্তুকি হিসেবে প্রতি বছর ২৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিতে হচ্ছে। ফাইন্যানসিয়াল টাইমসের এক সম্পাদকীয়তে দুঃখ করে বলা হয়েছে যে, কতিপয় বিশালাকৃতির কৃষি খামারের জন্য অগণিত মানুষকে বিশাল ভর্তুকির ভার বহন করতে হচ্ছে। কিন্তু শিল্পোন্নত দেশেসমূহের রাজনীতিবিদগণ বৃহৎ কৃষি খামারসমূহের রাজনৈতিক আধিপত্যের কাছে এমনভাবে বন্দী যে, কৃষি ভর্তুকি সম্পর্কে উদ্বেগ ও আশংকার কোনো দৃষ্টিগ্রাহ্য ফলাফল আশা করা যায় না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন