hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলাম ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ

লেখকঃ ড. এম উমর চাপরা

২১৬
সমস্ত উপাদানের সুষম ব্যবহার
প্রত্যেক বক্তির ভিতরের সচেতনতার উপর প্রভাব বিস্তারকারী নৈতিক ব্যবস্থা সম্পদের আমানতদারিতার প্রকৃতি সম্পর্কে তাকে সচেতন করে এবং দক্ষ ও ন্যায়ভিত্তিক বরাদ্দ ও বিতরণের প্রয়োজনীয় মানদণ্ড নির্ণয় করে। এ ব্যবস্থা সর্বজ্ঞানী আল্লাহতায়ালার সামনে তার অবশ্যসম্ভাবী জবাবদিহিতা সম্পর্কেও সচেতন করে তোলে এবং এভাবে তা একটি দৃঢ় উদ্বুদ্ধকারী শক্তি হিসেবে কাজ করে। এতে কোন ব্যক্তি সামজিক কল্যাণ অর্জন ব্যাহত করে নিজের স্বার্থ উদ্ধার ও অগ্রাধিকার পূরণের জন্য উদ্যোগী হয় না। এ ব্যবস্থা বাজারে আসবার আগেই পণ্য ও সেবার উপর দাবির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ কেটে ফেলতে সাহায্য করে। বিকেন্দ্রীকৃত সিদ্ধান্ত গ্রহণসহ মূল্যব্যবস্থা যদি তখন কার্যকর হয়, তাহলে সম্পদ বরাদ্দ আরো বেশি দক্ষ হতে পারে। তবে একটি নৈতিক ব্যবস্থাও অকার্যকর হতে পারে, যদি একই সাথে আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার পুনর্গঠন না হয়। এটা হয় এজন্য যে, কিছু লোক মূল্যবোধের তোয়াক্কা করতে চায় না, যতক্ষণ না আর্থ-সামাজিক পরিবেশ তাদের জন্য কঠিন ও অলাভজনক না হয়। তাছাড়া মূল্যবোধ ব্যবস্থার প্রতি নিবেদিত ব্যক্তিরাও সামাজিক অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে এবং কেবল মানুষ নিজেরা নিজেদের ক্ষেত্রে নয়, বরং যখন দুষ্প্রাপ্য সম্পদ দিয়ে ‘মাকাসিদ’ অর্জনের ক্ষেত্রে অর্থব্যবস্থা কী দিতে পারে এবং কী পারে না, সে সম্পর্কে সচেতন নাও হতে পারে।

সরকারের যদি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হয়, তবে আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার পুনর্গঠন আরো কার্যকরভাবে চালু করা যেতে পারে। সরকার কর্তৃক অর্থনীতির সম্পদ ও প্রয়োজন মূল্যায়ন করা এবং সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে ভোগ ও বিনিয়োগ প্যাটার্নে পরিবর্তনের পরিধি নির্ধারণ করে কৌশলগত নীতি নির্ধারণী পরিকল্পনা এ কাজে সাহায্য করতে পারে। একটি যথার্থ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তখন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও কাঠামোগত সংস্কারের নকশা প্রণয়ন করা যেতে পারে। এসব সংস্কার বিভিন্ন ইসলামী পুনর্বণ্টন স্কিমের কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরো জোরদার করা যেতে পারে, যা ছাড়া কোনো সংস্কারের লক্ষ্যে কোনো প্রচেষ্টাই ফলপ্রসূ হবে না। এসব কৌশলের সম্মিলিত ব্যবহারে বৈষম্য ও ভারসাম্যহীনতা দূরীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। অপচয়মূলক ও অপ্রয়োজনীয় ভোগ থেকে সৃষ্ট সম্পদের উপর চাপ অপসারণ এবং এর ফলে সম্ভব উচ্চতর বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধি বর্তমানে বহু মুসলিম দেশে মুদ্রাস্ফীতির যে চাপ ও মুদ্রা অবমূল্যায়নের যে ধারা চলছে তা রোধে সাহায্য করবে।

ইসলামিক উদ্বুদ্ধকরণ ব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গির আওতায় যদি সমতাবাদী (egalitarian) নীতিসমূহ অনুসরণ করা হয়, তবে তা ধনীদের পক্ষ থেকে তেমন বাধার সম্মুখীন হবে না, যেমনটি তা প্যারেটো অপটিমালিটির প্রতি নিবেদিত আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় হয়ে থাকে। এ নীতিসমূহ আর্থ-সামাজিক অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক অস্থিশীলতা হ্রাসে সাহায্য করতে এবং মুসলিম দেশসমূহের উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনেও অবদান রাখতে পারে। যে সমস্ত দেশে ভোগসামগ্রীর মারাত্মক অভাব এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ভগ্নদশা কাজের মান নিচে নিয়ে যাচ্ছে, সে সমস্ত দেশে ভরপেট খাওয়া মানুষ, স্বাস্থ্যবান এবং ভালোভাবে শিক্ষিত ও উদ্বুদ্ধ জনগণ শ্রমশক্তির মান উন্নত না করে পারে না।

ধনী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মর্যাদার লড়াই বন্ধ করার মাধ্যমে অধিকতর সামাজিক সাম্য কেবল ভ্রাতৃত্ববোধ ও সামাজিক বন্ধনই বৃদ্ধি করে না, অধিকতর সঞ্চয়ও ঘটায়। সঞ্চয়ের একটি অংশ যদিও গরীবদের বর্ধিত চাহিদা পূরণের জন্য ব্যয় হয়ে যায়, তা সত্ত্বেও একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বর্ধিত বিনিয়োগের জন্য লভ্য হতে পারে এবং শ্রমশক্তি, মান উন্নয়ন ও উদ্বুদ্ধকরণের সাহায্যে তা অধিকতর দক্ষতা ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে। অতএব ‘অধিক সাম্য’ এর মানে কম প্রবৃদ্ধি নয়। বিভিন্ন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ও সাম্য যদি তুলনা করা যায় তবে দেখা যাবে, ‘তাদের অর্থনৈতিক সাফল্য ও যে বৈষম্য তারা সহ্য করেছে তার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই’। সে অনুসারে, সাম্যের দিকে অগ্রগতি কমানো হলে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে বলে যে যুক্তি দেখানো হচ্ছে, তাকে ‘কঠিন অর্থনৈতিক উপাত্তবিহীন ধুম্রজাল’ বলে বাতিল করা যেতে পারে। তথাপিও বেশ কিছু দেশের উল্লেখযোগ্য প্রমাণ থেকে দখো যায় যে, বিভিন্ন দেশে অনুসৃত ঘরোয়া অর্থনৈতিক ও সামজিক নীতিসমূহের ফলে কেবল বৈষম্যই বৃদ্ধি পায়নি, বরং দারিদ্র্য আরো প্রকট হয়েছে।

ইসলামীকরণ এভাবে বিভিন্ন মুসলিম দেশে বাজার শক্তির প্রয়োগকে মানবিকীকরণ এবং দুর্লভ সম্পদ ব্যবহারে দক্ষতা ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে। নৈতিক শুদ্ধি এবং কৌশলগত নীতিনির্ধারণী পরিকল্পনা এবং অর্থনৈতিক ও আর্থিক গঠন সম্পদ ব্যবহারে মানবিক দিকটিকে আরো বেশি বিবেকবান করতে পারে, যাতে সামাজিক স্বার্থের গণ্ডি অতিক্রম না করেও ব্যক্তিগত স্বার্থ অর্জিত হয়, এমনকি সে ক্ষেত্রেও যেখানে ব্যক্তিগত ও সামাজিক স্বার্থ একরকম নয়। ইসলামের শিক্ষা অনুসারে সরকারি রাজস্বের সংস্কার সরকারি খাতে করারোপ ও ব্যয় এবং বাজেট ঘাটতি হ্রাসে অধিকতর দক্ষতা ও সাম্য প্রচলনে সাহায্য করতে পারে। এভাবে অপচয়মূলক ও অনুৎপাদনশীল ব্যবহার থেকে চাহিদা পূরণ এবং উচ্চহারে মূলধন গঠন, রপ্তানি ও প্রবৃদ্ধিতে সম্পদ ব্যয়িত হবে।

ব্যক্তিগত সম্পত্তি মুনাফা প্রবণতার স্বীকৃতি এবং সে সঙ্গে ন্যায়ভিত্তিক বস্তুগত প্রতিদান এবং চাহিদা পূরণের জন্য অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তন ও বিবেকপূর্ণ কাজ শ্রমিকদের অধিকতর দক্ষতা এবং বর্ধিতহারে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ প্রণোদনা সৃষ্টি করবে। ভূমি সংস্কার, পল্লী উন্নয়ন ও দেশব্যাপী ক্ষুদ্র ও ব্যষ্টিক শিল্পের বৃদ্ধি উৎপাদনের উপকরণের মালিকানার সম্প্রসারণ এবং আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণে সাহায্য করবে। বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নতি এবং বিনিয়োগ ও রপ্তানির জন্য উৎসাহ ও সুযোগ সুবিধা প্রদান উন্নয়ন তরান্বিতকরণে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। ইসলামী শিক্ষার আলোকে প্রথাগত আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পুনর্গঠন সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে অপচয়মূলক ও অনুৎপাদনশীল ব্যয়ের জন্য ঋণ সুবিধা প্রদান থেকে বিরত থাকতে এসব প্রতিষ্ঠানকে সাহায্য করবে। এভাবে এসব প্রতিষ্ঠান ও উৎপাদনমুখী বিনিয়োগ, বিশেষ করে দরিদ্র শ্রেণরি মধ্যে ব্যবসায়ী প্রতিভাকে অধিক হারে অর্থ যোগান দতে সক্ষম হবে।

এর ফলে ভারসাম্য হ্রাসের প্রচেষ্টাই শুধু শক্তিশালী হবে না, তা ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের মালিকানা সম্প্রসারণের লক্ষ্য অর্জন এবং দ্রুতগতিতে উন্নয়নের জন্য জনগণের বৃহত্তর অংশের শক্তি ওসৃজনশীলতা কাজে লাগাতে সাহায্য করবে। মুদ্রাস্ফীতির চাপ কারেন্ট একাউন্ট ঘাটতি হ্রাস এবং বিনিময় হারের অব্যাহত অধঃগতিরোধ প্রবৃদ্ধি ও কল্যাণের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তথাপিও যেসব দরিদ্র লোক স্বাবলম্বী নয়, তাদের স্বার্থ কেবল সাধারণ ভর্তুকির মাধ্যমে না দিয়ে সংঘবদ্ধ ও অধিকহারে ত্রাণ ও সম্পূরক আয় প্রদানের মাধ্যমে রক্ষা করতে হবে। এসব অর্থ সরকার ও সামাজিক সংস্থাগুলো যাকাত, ওয়াকফ, স্বেচ্ছাভিত্তিক দান এবং বাজেটে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ থেকে মিটাবে। ইসলামী উত্তরাধিকার ব্যবস্থার বাস্তবায়ন অর্থনৈতিক বৈষম্য সর্বনিম্ন পর্যায়ে সীমিত রাখার উদ্যোগকে সহায়তা করবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন